ভিখারির কান্না!😥
নমস্কার বন্ধুরা,,,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক বেশি ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আজ আপনাদের মাঝে ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি সবার ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক...
ভিখারির কান্না শুধুমাত্র শারীরিক কষ্টের বা ক্ষুধার জন্য নয়, এর মধ্যে মনের গভীরে জমে থাকা এক ধরনের হতাশা, অবমাননা এবং পরিত্যাগের বেদনা থাকে। তারা এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে থাকে যেখানে তাদের মানবিক মর্যাদা এবং সন্মান হারিয়ে যায়। তারা সমাজের চোখে প্রায় অদৃশ্য, যেন তাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। এ কারণে তাদের কান্না কেবল এক ব্যক্তির যন্ত্রণারই প্রকাশ নয়, এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক অনৈতিকতার চিত্র।
![]() |
---|
এই শহরের ব্যস্ত রাস্তায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করে। খুলনা ফুটওভার ব্রিজের পাশে এক কোণে বসে থাকে আনোয়ার নাম করে এক ভিখারি। তার বয়স ষাটের কাছাকাছি। তার শরীরে এক টুকরো ময়লা চাদর, কঙ্কালসার দেহ, চোখ দুটো কোটরের ভেতর যেন ঢুকে গেছে। একসময় সে ছিল গার্মেন্টস কর্মী, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ছোট্ট এক ভাড়া বাড়িতে সুখে-দুঃখে দিন কাটাতো।
কিন্তু হঠাৎই সব বদলে যায়। একদিন কারখানায় আগুন লাগে। আগুনে সব কিছু ছাই হয়ে যায়, তার শরীরও কিছুটা পুড়ে যায়। মালিক ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, তারে কাজ থেকেও বের করে দেয়। তখন টাকার অভাবে সংসারের খরচ জোগাতে না পারায় তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। তাদের একটি সন্তান ছিল, তাকেও সে সাথে করে নিয়ে যায়। সন্তানকে নিয়ে যেয়ে সে আরেকজনের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করে। তখন আনোয়ার সর্বহারা হয়ে রাস্তায় নামল।
![]() |
---|
প্রথম প্রথম সে কাজ খুঁজেছে, কিন্তু শারীরিক দুর্বলতার কারণে কেউ তাকে কাজে নেয়নি। শেষে ভিক্ষাই হয়ে উঠল তার একমাত্র সম্বল। দিনের পর দিন ফুটপাথে বসে হাত পাতার লজ্জা সে ভুলে গেছে। একদিন দুপুরে একটা মেয়ে এসে তার সামনে দাঁড়ায়, হাতে একটা খাবারের প্যাকেট নিয়ে। মেয়েটা তাকে খাবার প্যাকেটা দিয়ে বলল, "চাচা, খান !"
অনেকদিন পর কেউ যেন মমতার স্পর্শ দিলো তাকে। তার চোখে পানি এসে গেল। কাঁপা কাঁপা হাতে খাবারের প্যাকেটটা নিলো, প্যাকেটটা খুলে খাবার বের করে মুখে দিলো এক কামড়। আর ঠিক তখনই পাশ থেকে কেউ একজন বলল, "ওরে! তুই ভিক্ষুকদের খাওয়াস কেন? এরা তো অলস, কাজ করতে চায় না!"
![]() |
---|
কথাটা শুনে আনোয়ার থমকে গেল। সে কি অলস ছিল? এই ভাঙা শরীরটা নিয়ে সে কি সত্যিই আর কিছু করতে পারত? নিজেরা চিন্তা করে দেখেন তো। এই কথা শিনে আনোয়ারের চোখ দিয়ে টপ টপ করে জ্বল পড়তে লাগলো, গলায় যেন খাবারের একটা দলা আটকে গেল। জীবনের নির্মম সত্যটা যেন আবার মনে করিয়ে দেওয়া হলো তাকে—গরিবরা দোষী, দুর্বলরা অপরাধী। সমাজ তাদের বিচার করে, কিন্তু সাহায্যের হাত বাড়ায় না।
আনোয়ার চুপচাপ আবার মাথা নিচু করে বসে পড়ল। আর ভাবতে থাকলো এই শহরটা তার নয়, এই পৃথিবীও নয়। সে শুধু অপেক্ষা করে, আরেকটা নির্মম দিনের জন্য। যে দিনটা হবে এই পৃথিবীতে তার শেষ দিন।😥
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি কাল আবার দেখা হবে নতুন আরেকটি পোস্ট নিয়ে। ততখন সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
সমাপ্ত |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.