চাকরি যুদ্ধে প্রথমবার ( শেষ পর্ব).
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
|
---|
চাকরি যুদ্ধে প্রথমবার ( পর্ব:-১).
মসজিদ থেকে যোহরের নামাজ আদায় করে চলে আসলাম কলেজের মেইন গেটে। ৩ টায় পরিক্ষা শুরু হবে, ২:২০ মিনিটের দিকে গেইট খুলে দেওয়া হলো৷ শত শত পরিক্ষার্থী ভিতরে প্রবেশ করতে লাগল। পিপীলিকার দল যেভাবে সারি বদ্ধ দল নিয়ে চলতে শুরু করে, আমরা যেন সেভাবে চলতে থাকলাম। গেট থেকে বেশ কিছুটা দূর যাওয়ার পর কলেজ ভবণ চোখে পরল। মূলত, স্কুল, কলেজ ভবণ পাশাপাশি। সমস্যা হলো সিট খুজে বের করা। এতো মানুষের ভিতর, নোটিশ বোর্ডে গিয়ে আমার রোল খুজে পাওয়া অনেকটা মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া আঙটি খোজার মতো অবস্থা। কিন্তু কি করা যায়, সিট তো দেখতে হবে৷ আমি কোনো রকম ভির ঢেলে ভিতরে ঢুকে নোটিশ বোর্ডের একটা ছবি তুলে নিলাম। যাতে দূরে এসে রোলটা খোজা যায়। কয়েকটা ছবি তুললাম যাতে একটা থেকে বোঝা না গেলে অন্যটা থেকে বোঝা যায়।
![]() | ![]() |
---|
অনেক কষ্টে দেখতে পেলাম আমার সিট কোথায়। আমার সিট পরছিল, কলেজ ভবণের চতুর্থ চলায় ৪০০৪ নাম্বার রুমে। সিট খুজে পাওয়ার পর আমরা সবাই ভিতরে ঢুকতে শুরু করলাম। একজন দায়িত্বশীল লোক হ্যান্ড মাইক নিয়ে আওয়াজ করে বলে দিচ্ছিল কোন বিল্ডিং কলেজ আর কোনটা স্কুল ভবন। এরপর যার যেখানে সিট পরেছিল সে সেখানে চলে যাচ্ছি। পরিক্ষার হলে প্রবেশ করে আমি আমার রোল অনুযায়ী সিট নাম্বারটা খুজে নিলাম। এরপর নিজের জায়গায় বসলাম। আমার বেশ ভয় এবং নার্ভাসনেস কাজ করতেছিল। জীবনের প্রথমবার চাকরির পরিক্ষা দিতে আসছি, কি যানি হয়৷
![]() | ![]() |
---|
যেহেতু পরিক্ষার হলে কোনো ধরনের ডিভাইস বা মোবাইল কাছে রাখা নিষেদ্ধ। এজন্য আমার ফোনটা একজন ভাইয়ের ব্যাগে রেখে সামনের দিকে রেখে আসা হলো। এরপর আমাদের রুমে একজন স্যার প্রশ্ন নিয়ে চলে আসলেন। এরপর যথারীতি পরিক্ষা নিয়ম মতো বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হলো। ঠিক ৩ টায় পরিক্ষা শুরু হলো। ৪ টায় শেষ। এক ঘন্টা পরিক্ষা ছিল। ৮০ টা MCQ প্রশ্ন। যার মধ্যে ৩০ টা নন ডিপার্টমেন্ট এবং ৫০ টা ডিপার্টমেন্ট প্রশ্ন ছিল। সবগুলোর উত্তরই বৃত্ত ভরাট করে পূরণ করতে হবে। প্রথমে আমি আগে প্রশ্ন নিয়ে ডিপার্টমেন্ট অংশটা পূরণ করে তারপর নন ডিপার্টমেন্ট অংশটা পূরণ করেছিলাম। পরিক্ষা শেষ হলে সবাইকে বাইরে চলে আসতে বলল। আমিও পরিক্ষা শেষ করে বাইরে চলে আসলাম। শত শত মানুষ যখন গেট দিয়ে বের হচ্ছিল বিশাল এরিয়া যেন মানুষের শুধু মাথা দেখা যাচ্ছিল। জীবনের এক বাস্তবতার সামনে দাড়িয়ে ছিলাম।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
এরপর আমি হেটে মেইন গেটে চলে আসলাম। আমাদের বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করলাম। এরপর তারা আসল। যদিও আমার পরিক্ষা তেমন একটা ভালো হয় নাই। জীবনের প্রথমবার পরিক্ষা দিলাম, তাও আবার প্রিপারেশন ছাড়া। বন্ধুদের সাথে কিছু মুহূর্তটা ধরে রাখছে ছবি তুললাম। এরপর আমরা ফিরে আসার উদ্দেশ্যে হাটা দিলাম। মূলত ভিতরে প্রায় ১ কিলোমিটার এরিয়া নিয়ে কোনো যানবাহন চলে না, এটা যেহেতু সেনাবাহিনীদের এরিয়া এজন্য বিশাল সিকিউরিটি দেওয়া।
হেটে আমরা মেইন রাস্তায় চলে আসলাম। যদিও আমাদের এখনই মেসে চলে আসার কথা ছিল। কিন্তু আমরা বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, এখন যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়ায় বই মেলা হচ্ছে, তাহলে বই বেলাতে ঘুরে আসা যাক। যার ফলে আবার আমরা চলে গেলাম বই মেলাতে। সেটা নিয়ে অন্য কোনো পোষ্টে আলেচনা করা যাবে।
চাকরি পরিক্ষা দিয়ে জীবনের অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম৷ আসলে প্রতিটা ক্ষেত্রে নিজেকে যুদ্ধ করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়৷ কোনো কিছু এমনি এমনি জীবনে চলে আসে না। প্রতিটা সফলতার পিছনে রয়েছে হাজারও বেদনার গল্প। আজকে এই পর্যন্তই আবারও দেখা হবে নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
টুইটার শেয়ার লিংক :-
https://x.com/DrawingBd1/status/1892526703647535159?t=fpz3bnLymo4dUiVTeFZR6Q&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
জীবনে প্রথমবার চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন এবং সেখানে গিয়ে অনেক নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েছেন পরীক্ষা খুব একটা ভালো হয়নি যেমনটা পোস্ট করে বুঝতে পারলাম তবে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয় যেহেতু প্রথমবার ছিল পরবর্তীতে আশা করছি আরো ভালো করবেন,,।
আপনার পোস্টটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো এবং আমি একটু পিছনের দিকে চলে গেলাম বেশ কয়েক মাস আগে আমি কয়েকটা আবেদন করেছিলাম চাকরি পরীক্ষার জন্য যদিও এখনো অনার্স কমপ্লিট করা হয়নি আরো দুই বছর বাকি আছে, তবে ওই যে ইচ্ছা থাকে না কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোথাও থেকে একটা সাড়া পেলাম না,,, অবশ্যই চাকরি পরীক্ষা দিতে গেলে আমিও হয়তো আপনার মতামতন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারব ইনশাআল্লাহ। ভালো লাগলো পোস্টে পড়ে ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।