বোনের মেয়ের জন্য পুতুল কেনা।
"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম"
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্
জীবনের চলার পথে কিছু কিছু সময় দায়িত্ব বয়স মানে না। নিজের শখ, ভালো লাগাগুলো বিলিন করে দিয়ে অন্যের মুখে একটুকু হাসি ফুটাতে হয়৷ বলতে চলেছি আমার জীবনের কিছু খন্ড গল্প৷ নিজে এখনও পড়সশুনার গন্ডি পার করে চাকরি জীবনেও যেতে পারি নাই৷ কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় পালন করতে হচ্ছে হাজারও দায়িত্ব। যেখানে নিজের ইচ্ছা , স্বপ্নগুলো হারিয়ে যাচ্ছে কোনো এক মরুভূমির ধুলার মধ্যে। পারিবারিক সমস্যার কারণে কয়েক বছর আগেই নিজের সকল খরচ, পড়াশুনার খরব নিজেকেই জোগার করতে হয়৷ পাশাপাশি পরিবারকেও বিভিন্ন সময় সাহায্য করা লাগে। আল্লাহ তায়ালার অনেক রহমত যে তিনি এখনও আমাকে সকল দিক ব্যালেন্স করে চালানোর সক্ষমতা দিয়েছেন।
গত বছর নিজের টিউশন করানোর টাকা দিয়ে বড় বোনের বিয়ে দিয়েছিলাম। আব্বুর নিজে তেমন কোনো উপার্জনের ক্ষমতা না থাকায়, আমি নিজে টিউশন করে এবং স্টিমিটে কাজ করে আমার পড়াশুনা চালায়৷ পাশা পাশি পরিবারকে সাহায্য করি। এজন্য নিজেই বোনের বিয়ের সকল খরচ বহন করেছিলাম। বিয়ের কয়েক মাস পরে আমাদের পরিবার খুশিতে মেতে ওঠে কারণ, বোনের বাবু হবে সংবাদটা পায়। গত বছরের জুলাই মাসের ২২ তারিখে আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে আমার বোনের একটা মেয়ে হয়। মানে, আমি মামা হলাম। নিজে ছোট হয়েও বড় বোনের বিয়ে দিতে পেরে আমি অনেক খুশি৷ আরও খুশি হলাম, যখন ভাগিনীর মুখটা দেখলাম।
এখন বয়স ৬ মাস পার হয়েছে। বসা শিখে গিয়েছে। প্রতিদিনই ভিডিও কলে দেখি। গত মাসে যখন ঢাকা থেকে বাড়ী এসেছিলাম তখন, আপু বললো ভাগিনীর জন্য একটা টেডিবেয়ার বা পুতুল কিনে নিয়ে যেতে। আমি আমার একটা জরুরি কাজে একদিন কুষ্টিয়া গিয়েছিলাম। সেদিন ভাবলাম একটা টেডি কিনে নিয়ে যায়। দোকানে গিয়ে তেমন কোনো টেডি পছন্দ হচ্ছিল না৷ অনেকগুলো দোকান আমি ঘুরলাম। একটা দোকানে গিয়ে মেটামুটি অনেকগুলো টেডি দেখলাম। এরপর একটা মাঝারি সাইজের পুতুল নিলাম।
![]()
|
---|
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
|
"পুতুল কেনার সময়"
যেহেতু ভাগিনী ছোট যাতে ধরে রাখতে পারে বা বসে খেলা করতে পারে, এরকম একটা সাইজের টেডি কিনে নিলাম। এমন অনেক সময় গিয়েছে, নিজের ইচ্ছা মতো কোনো কিছু কিনি নাই টাকার অভাবে। কিন্তু যখন আমার বোন বা ভাইয়ের ছেলে মেয়েদের জন্য কিছু কিনতে বলে, তখন যত কষ্টই হয় আমি সেগুলো তাদেরকে কিনে দেওয়ার চেষ্টটা করি। আসলে এর মাঝেই আমি আমার প্রকৃত সুখটা খুজে পায়। আমার গত একটা পোষ্টে আপনারা দেখেছেন, আমার বড় ভাইয়ের মেয়ের জন্মদিন পালন করতে। আমাকে বাবা বলে ডাকে। এজন্য আমিও তাকে নিজেট মেয়ের মতোই ভালোবাসি।তার আবদারগুলো পূরণ করার চেষ্টটা করি।
আমাদের সবারই উচিত, জীবনের কিছুটা সময় নিজের খুশি, ভালো লাগাগুলো অন্যের খুশি বা পছন্দ পূরণের মাধ্যমে খুজে নেওয়ার। নিজের সাধ্য মতো পরিবারকে খুশি রাখা। ভাই বোনদেরকে দেখাশুনা করা তাদের আবদার মেনে নেওয়া। আমি মনে করি এটা পালনের জন্য কোনো বয়স দরকার নাই। প্রয়োজন একটা সুন্দর মন আর চেষ্টটা। তাহলেই সবার সাথে সুন্দর সম্পর্ক রেখে নিজে হাসি খুশি থাকা যায়।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোষ্টটা পড়ার জন্য এবং আপনাদের মূল্যবান মতামতটা জানানোর জন্য।
আপনার বোনের মেয়ের জন্য পুতুল কেনা এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করা জীবনের প্রকৃত অর্থকে বুঝতে সাহায্য করে। কখনোই বয়স বা পরিস্থিতি আমাদের দায়িত্ব পালনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, এবং আপনি সেটাই প্রমাণ করেছেন। আশা করি আপনি সবসময় এইভাবে হাসি-খুশি থেকে আরও ভালো কাজ করবেন। এত সুন্দর একটি বিষয় বস্তু আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমরা আমাদের কষ্টটা তখন সার্থক করতে পারি যখন পরিবার কিংবা নিজের প্রিয় মানুষের পেছনে নিজের কষ্ট করা উপার্জিত পয়সা আমরা খরচ করতে পারি আপনি আপনার উপার্জন করার পয়সা দিয়ে আপনার বোনের বিয়ে দিয়েছেন সেই সাথে নিজের পড়াশোনার দায়িত্বটাও আপনি চালিয়ে যাচ্ছেন।
আসলে বোনের বাচ্চা হওয়াটা আমাদের জন্য অনেক বেশি গর্ভের একটা বিষয় হয়ে ওঠে কারণ তখন মনের মধ্যে একটা আনন্দ জাগে যে বাচ্চা হলে আমাকে মামা বলে ডাকবে এই বিষয়টা আসলে অন্যরকম একটা অনুভূতি যেটা হয়তোবা আমি আপনাকে বলে বোঝাতে পারবো না আপনি আপনার বোনের জন্য একটা পুতুল কিনেছেন যেটা দেখতে সত্যিই সুন্দর অসংখ্য ধন্যবাদ নিজের মনের অনুভূতি এবং বোনের আনন্দ আমাদের সাথে ভাগাভাগি নেয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
সব সময়ই চেষ্টটা করি ছোটদেরকে খুশি রাখতে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।