গরমকালে পেট ঠান্ডা রাখতে আম মাখা
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আমি বেশ ভালোই আছি। আজ আপনাদের সাথে গরমের একটি বিশেষ ফল নিয়ে গল্প করবো।
গরমের এক বিশেষ ফল হল আম। গাছে মুকুল আসা থেকে শুরু করে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি কখন আমগুলো বড় হবে । তারপর একটু বড় হওয়া থেকেই শুরু হয়ে যায় সেই আম দিয়ে বিভিন্ন রকমের রেসিপি তৈরি করার বহর। আমডাল, আমের চাটনি, আম তেল, আমের আচার, আমের জেলি, আম পোড়া শরবত , আম সত্ব আরোও কত কি যে আমরা বানাই এই আম দিয়ে তার কোনো সীমা নেই।
এইসবের মধ্যে একটি হলো আম মাখা । একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর টক জিনিসের প্রতি ভালোবাসা না থাকলেও ছোটো বয়সে প্রায় সকলেই টক জিনিস খেতে খুব পছন্দ করি। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে টক জিনিস খেতে যে বেশ পছন্দ করি সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এর আগেও আমি অনেক ধরনের টক ফল মাখা করার ধাপ গুলি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। তাই আজ চলে এসেছি আপনাদের সাথে আম মাখার ধাপগুলো শেয়ার করে নিতে।
এই আম প্রসঙ্গে কত কথাই যে মাথায় আসছে তা হয়তো লিখে শেষ করতে পারবো না। ছোটবেলায় আমার আম কুড়াতে যাবার এক বিরাট নেশা ছিল। আমাদের বাড়ির পাশেই অনেক বড় একটা আম বাগান ছিল। আমি আর আমার পাশের বাড়ির এক বান্ধবী মিলে ভোর বেলায় আম কুড়াতে যেতাম। আম খেতে যতটা না বেশি ভালো লাগতো, তার চেয়েও শতগুণ বেশি ভালো লাগতো আম কুড়াতে যেতে। আর ঝড়ের সময় ব্যাগ নিয়ে আম কুড়াতে যাওয়ার মজাই ছিল আলাদা। আর আমি এই আম কুড়ানোই বেশ এক্সপার্ট ছিলাম। ঝড় হলেই বাবা আম কুড়াতে যেতে দিত না পাছে ডাল ভেঙে মাথায় পড়ে। তবে বাবার চোখ এড়িয়ে ঠিক চলে যেতাম। কোনো কোনো দিন বাড়ি ফিরে মায়ের হাতে ভীষণ মারও খেতাম। তবে তাও ঝড়ের সময় আম কুড়াতে যাওয়া বন্ধ হতো না। আপনাদের কারোর এরকম অভিজ্ঞতা থাকলে অবশ্যই জানাবেন।
গরমকালে দুপুরবেলায় খাবার খাওয়ার পর একটু আম মাখা খেতে বেশ ভালোই লাগে। তাই আজ দুপুর বেলায় আমি আম মাখা করেছিলাম। তারপর আমি, বৌদি, বৌদির বোন ও আমার মাসির মেয়ে মিলে বেশ মজা করে সেটা উপভোগ করেছিলাম।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে আম মাখা করেছিলাম----
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | আম | ২টো |
২ | কাসুন্দি | ৩ চামচ |
৩ | কাঁচা লঙ্কা | ২টো |
৪ | লবণ | স্বাদ অনুযায়ী |
৫ | চিনি/চিনির গুঁড়ো | পরিমাণ মতো |
ধাপ ১ :
প্রথমে আম দুটোকে ভালোভাবে খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
ধপ ২:
এরপর একটা কোড়ানি দিয়ে আম দুটোকে ঝিরিঝিরি করে কেটে নেব।
ধাপ ৩ :
এরপর পরিমাণ মতো লবণ পাত্রের এক পাশে নিয়ে লঙ্কা গুলো কে ভালোভাবে মিশিয়ে নেব।
ধাপ ৪:
এরপর কোচানো আমের সাথে লঙ্কা ও লবণ মিশিয়ে নেব। সেই সাথে পরিমাণ মতো চিনি বা চিনি গুঁড়ো দিয়ে দেব। আম যদি বেশি টক হয় তাহলে বেশি পরিমাণে চিনি দিতে হবে আর যদি কম টক থাকে তাহলে অল্প দিলেই হবে। চিনি গলতে যেহেতু একটু বেশি সময় লাগে তাই আমি চিনির গুঁড়ো ব্যবহার করেছিলাম।যদিও চিনির গুঁড়ো দেওয়ার সময় আমার ছবি তোলা হয়নি।
ধাপ ৫:
এরপর এরমধ্যে দিয়ে দিয়েছিলাম কাসুন্দি। আমি তিন চামচ মতো কাসুন্দি দিয়েছিলাম। কাসুন্দি দিলে আম মাখার স্বাদ ও গন্ধ দুইই যেন পরিবর্তন হয়ে যায় ।
ধাপ ৬:
ভালো করে মেখে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আমাদের আমি মাখা। ফাইনাল লুক-----
আমরা তিন-চারজন মিলে খুব মজা করে দুপুর বেলায় আম মাখা টা উপভোগ করেছিলাম।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
তোমার পোস্ট দেখে আমার ছোট বেলাকার কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় ঠিক এই সময়ে গাছের ছোট ছোট আম গুলো যখন পড়তো আমরা সেই আম কুড়িয়ে বেড়াতাম। বাড়িতে এনে সেই আম দিয়ে এই রকম করেই মাখিয়ে সকলে মিলে খেতাম। তবে তোমার মত হয়তো এতো ভালো হতো না। গরম কালে আমি বিভিন্ন রকম জিনিস বানিয়ে খেতে খুবই ভালো লাগে। তোমার আম মাখা দেখে আমার জিভে জল চলে আসছে। গরম কালে এইরকম আম মাখা শরীরের পক্ষে খুবই স্বাস্থ্যকর। আম মাখা প্রত্যেকটা উপকরণ সহ ছবি প্রত্যেকটা ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।