পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ সংকটে
সফলতা শব্দটির সংজ্ঞা পাল্টে যাচ্ছে। বর্তমান সমাজের যা পরিস্থিতি তাতে সফল হওয়াটা বড় কঠিন। আর এই সাফল্য অর্জনের উপায়টাও বড় এলোমেলো। একজন মানুষের কোন কোন যোগ্যতা থাকলে সে সফলতা অর্জন করবে তাও বলা বড় কঠিন। দুদিন আগে আমাদের রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতির গরমিল এর কারণে ভারতবর্ষের সুপ্রিম কোর্ট থেকে যে রায় বেরিয়েছে সেখানে ২০১৬ সালের ssc পরীক্ষা দ্বারা নির্বাচিত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের মেধাতালিকা বাতিল করা হয়েছে। এবং নতুন করে সেই সকল শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের পরীক্ষা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। প্রথম দিকে এই রাই গ্রহণযোগ্য বলে মনে হলেও এখন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই সকল চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন দেখে বোঝা যাচ্ছে যে নির্বাচন পদ্ধতিতে বিশাল পরিমাণে গাফিলতি ছিল যে গাফিলতীর ফল সকলকেই ভোগ করতে হচ্ছে।
সব থেকে বড় কথা পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে চাকরির প্রার্থী নির্বাচনে যদি গাফিলতি থাকে তবে সেই দায়ভার পরীক্ষা সংস্থার নাকি মন্ত্রিপরিষদের। কিন্তু এই যে বিরাট গাফিলতি এর ফলে সমাজের উঁচু তলা থেকে নিচুতলের সকল মানুষের আর্থিক সংকট দেখা দেবে। যে সকল মানুষরা তাদের কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের জন্য কোন সমবেদনাই আমাদের কাছে নেই। কারণ একবারের জন্য আমিও ভুলে গিয়েছিলাম যে এই সকল মানুষদের মধ্যে হয়তো সকলেই ভুল পথ অবলম্বন করেনি অযোগ্য প্রার্থী থাকলেও এর মধ্যে যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যাও কম নয়। তাই আজ এই পোষ্টটির মধ্যে দিয়ে আমি সেই যোগ্যপ্রার্থীদের আন্দোলনে সামিল হতে চাইছি যাতে করে এই পোস্টটি পড়ে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার যে দুরবস্থা তা যেন সকল মানুষের কাছে পৌঁছায়। বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা না থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়বে। আর সমাজের সকল স্তরের মানুষের সাধ্য নেই যে তারা বেসরকারি স্কুলে তাদের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করবে। রাজ্যের নিম্ন স্তরের মানুষের কাছে শিক্ষা গ্রহণের পথ একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে ।
কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সবসময়ই সমাজের সকল স্তরের মানুষের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত না হলে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোন ত্রুটি থাকলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সমাজের নিম্নস্তরের মানুষরা। যেহেতু তাদের আর্থিক বল নেই এবং শিক্ষার বল এবার ভেঙে যাবে আগামী ভবিষ্যতে তাদের জীবন আরও কঠিনতর হয়ে উঠবে। প্রতি পদক্ষেপে তারা সমাজের উচ্চতর মানুষের কাছে লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত হবে। এ যেন নতুন অভিসন্ধি তৈরি হচ্ছে সমাজের নিচুস্তরের মানুষদেরকে আরো নিচে ঠেলে দেওয়ার। এ যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে অক্ষর জ্ঞানহীন করে রাখার এক অভিসন্ধি।
সব থেকে বড় কথা বর্তমানে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত যে সকল মানুষ পথে নেমে আন্দোলন করছে তাদের সাথে সমব্যথী হওয়া তো দূরের কথা আমাদের দেশের প্রশাসন ব্যবস্থা তাদের প্রতি যে অন্যায় ও অবিচার চালাচ্ছে তা যেন অসহনীয়। মানুষের যেন মনুষ্যত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। সমাজ যাদের ওপর ভর করে তৈরি হয় অর্থাৎ যে সকল শিক্ষক শিক্ষিকা গন একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে সমাজে শিশুদের শিক্ষা প্রদান করে আজ তাদের কপালে জুটছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের থেকে লাথি ,ঘুসি।
একবার যদি ভেবে দেখি আমাদের সমাজে যারা উচ্চপদস্থ চাকুরীজীবী যেমন ডাক্তার উকিল সকলকেই এই স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা। আজ তারা এসে দাঁড়িয়েছে পথে। আজ তারাই সবথেকে বেশি লাঞ্ছিত বঞ্চিত ও অপমানিত হচ্ছে রাজ্যের প্রশাসনের কাছে।
একদমই তাই দিদি পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা একদমই অবনতি ঘটেছে। এখন যেকোনো মানুষের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাওয়াটা একদম ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ শিক্ষিত হয়েও এই সমাজে তার কোনরকম মূল্য নেই। মাঝে মাঝে আমারও খবরের নিউজ থেকে একটু অবাক লাগে। আমিও কিছুদিন আগে দেখছিলাম প্রশাসনের শাসন কর্তারা আজ কোন শিক্ষকদের লাথি ,ঘুসি, চড় মারছে। আসলে প্রশাসনের লোকেরা গায়ে পুলিশের পোশাক পড়ে নিজেদের কিভাবে সেটা আমি জানি না এটা অনেক ক্ষেত্রেই হয়েছে। তবে ওনারা কোন শিক্ষায় শিক্ষিত সেটাও আমি জানি না আজ যেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজে পুলিশের রক্ষা করতে হয়েছে আজ তিনি একজন শিক্ষককে লাথি মারছে। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। আজ দেশ কোন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে কিংবা ভবিষ্যতে কি হবে আমরা কেউই জানিনা কিন্তু এমন এমন ঘটনা ঘটছে নিজেদেরই খুব খারাপ লাগছে।