নিমন্ত্রণ
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
আজকে সারাদিন কাজের খুব ব্যস্ততা। বেশ কিছু দিন ছুটি কাটিয়ে আবার ও শুরু করে দিয়েছি কাজ। হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও আজকে দুই জায়গায় নিমন্ত্রণ ছিল। গত সোমবার দিন আবারো আমাদের মধ্যে থেকে একজনকে হারিয়েছি সম্পর্কে আমার মাসি শাশুড়ি হয়। গত সোমবার দিন যখন দীঘা থেকে বাড়ি ফিরলাম খানিকক্ষণ পর যখন ফ্রেশ হয়ে শাশুড়ি মা রাতের খাবার দিচ্ছিল তখনই শাশুড়ি মায়ের মুখ থেকে জানতে পেরেছিলাম শাশুড়ি মায়ের জেঠ তুতো দিদি মারা গেছেন। শুনে খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম। তবে অনেক বয়স হয়েছিল ওনার। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর যখন কারো ছেলে ,মেয়ে, বউ মা ,কেউ না দেখে তখন হয়তো মানুষের অবস্থা বলে এইরকম পর্যায়ে এসে দাঁড়ায়। মাসি দেখার কেউ ছিল না। অনেকদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
মাসির ও ঠিক তেমনি অবস্থা হয়েছিল। কথায় আছে ধন-সম্পত্তি থাকলেও মানুষের দেখার লোক থাকে না। মাসির হাজারো ধন সম্পত্তি ছিল। তবুও তার মৃত্যুটা অন্যের বাড়িতেই হয়েছিল। তবে মৃত্যু যেমন ভাবে হোক না কেন। সেটা সব সময় দুঃখের হয়। এর আগেও মাঝে একদিন শোনা গিয়েছিল মাসি নাকি মারা গেছেন ।কিন্তু কোন কারণবশত আবার উনি সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মানুষের মৃত্যুর পর তার ধন-সম্পত্তি নিয়ে কাড়াকাড়ি লেগে যায়। মাসির ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই হয়েছে। তবে সবকিছুই আমার কানে শোনা।
মাসির ৫ জন মেয়ে আর তিন জন ছেলে।দুই মেয়ে আমাদের কৃষ্ণনগরে থাকেন। মেয়েদের মায়ের কাজ তিন দিনে হয়। তাই মাসির দুই মেয়ের তরফ থেকে আমাদের নিমন্তন্ন ছিল। দুই বাড়িতেই একসাথে তো খাওয়া যায় না। গতকাল দুই বোন একসাথে মায়ের কাজ করেছিল। কিন্তু খাবার ব্যবস্থা করেছে আলাদা আলাদা । মাসির ছোট মেয়ের বাড়িতে দুপুরবেলায় খাওয়া দাওয়া করেছি। আর এক মেয়ে সেও দুপুরবেলায় খাবার ব্যবস্থা করেছিল ।কিন্তু আমরা যেহেতু ছোট মেয়ের বাড়িতে দুপুরবেলায় খেতে গিয়েছিলাম ।তাই আরেকজনের বাড়িতে রাত্রিবেলা খেতে গিয়েছিলাম। দুপুরবেলায় যাদের বাড়িতে খেয়েছি সমস্ত কিছুই খুব ভালোভাবে হয়ে গেছে। কিন্তু দুপুরবেলায় গিয়ে দিদির বাড়িতে খেতে গিয়েছিলাম সেখানে গিয়ে দেখি সমস্ত কিছুই প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন বসে রয়েছে। এছাড়া সমস্ত খাবার দাবার শেষ হয়ে গেছে। ভাত একদম শেষ। আমাদের বসিয়ে রেখে তবে ভাত রান্না করলো। কোনরকমে আমরা ভাত আর যা ছিল সেই সব দিয়ে খেয়েছিলাম ।এছাড়াও আলোর ব্যবস্থা তো ছিলই না। ফোনে ফ্লাক্স জ্বালিয়ে আমরা দুজনে রাতের খাবার খেয়েছিলাম ।এর সাথে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মশার কামড়। যাইহোক আমাদের কোন রকমে খেতে দিয়ে ওরা নিজেরা গল্প করতে ব্যস্ত ।তাই আমি আর আমার বর দুজনেই হুটো পাটা করে অর্ধেক খাবার সেরেই মশার কামড়ের হাত থেকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠে পড়েছিলাম।
ওদের যখন গল্প শেষ হলো তখন ওরা তো আমাদের দেখে অবাক। আমাদের দেখে চেচাচ্ছে আর বলছে যে আমাদের তো ডাকবে এখনো অনেক কিছু দেওয়া বাকি আছে। দুই বোনের বাড়িতে একই রকমের খাবার মেনু ছিল। ভাত, লাল শাক ভাজা, শুক্তো ,ভেজ ডাল, বাঁধাকপির তরকারি ,মাছ ,চাটনি ,মিষ্টি ,দই। তবে দুই বাড়িরই রান্না খুব ভালো হয়েছিল। দুপুরবেলায় খুব তৃপ্তি ভাবেই খেয়েছিলাম। আজকে এই ছিল আমাদের দুই বাড়িতে নিমন্ত্রণের মুহূর্ত।
আজ এইখানে শেষ করছি ।আবার পরবর্তী গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।