হঠাৎ করে ইচ্ছা পূরণ,,, ❤️
Photo edited by canva
প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি সবাই ভালো আছেন, আর আমিও বেশ ভালো আছি। হাত চলে আসলাম আপনাদের মাঝে আমার একটা ইচ্ছা পূরণের গল্প নিয়ে, শেয়ার করব করব বলে আর করা হয়নি, তবে আজ ফোনের গ্যালারি ঘাটতে গিয়ে মনে পড়ে গেল,,কারণ কিছু কিছু ব্যাপার থাকে যেগুলো স্মৃতি হয়ে থাকে সব সময়।
আজ থেকে কিছুদিন আগে,হাজবেন্ডের সাথে গিয়েছিলাম বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স শপিংমলে,যদিও আগে থেকে জানা ছিলো না হঠাৎ করেই উদ্দেশ্য ছিল ঘুরতে যাওয়া আর সেই সময়ে যাওয়া হয়েছিলো,তবে এর আগেও একটা ইচ্ছা ছিলো মেয়ের জন্য একটা স্বর্নের কানের দুল তৈরি করবো,,।
তবে,সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারে মনে চাইলেই স্বর্ণের কিছু তৈরি করা অসম্ভব,সোনা এমন একটা ধাতু যে টা মন চাইলেই সংরক্ষণ করা যায় না। আর বর্তমানে যে স্বর্ণের দাম এত পরিমাণে বেড়েছে যা অকল্পনীয়।
তবুও আমার মত যাদের স্বর্ণের প্রতি একটু বেশি আগ্রহ আমার মনে হয়, তাদের আমার মত মাথায় ধান্দা থাকে কখন একটু স্বর্ণ তৈরি করব। ছোটবেলা থেকে আমার স্বর্ণের প্রতি একটু বেশি আগ্রহ এটা ওটা তৈরি করা, ছোট থেকেই আমি টাকা জমাতাম আমার একটা মাটির ব্যাংক ছিলো,আমার জীবনে প্রথম ছিলো ওই মাটির ব্যাংক আর ওটা ভেঙ্গে আমি সর্বপ্রথম স্বর্ণের একটা আংটি তৈরি করেছিলাম,,।
আর সেখান থেকে একটু টাকা জমানোর পরেই মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে এটা দিয়ে কি তৈরি করবো,স্বর্ণের কোন জিনিস টা হতে পারে আমার এই টাকার মধ্যে,,। আর যে নেশাটা এখনো রয়ে গিয়েছে।তাই হঠাৎ করে ঘুরতে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে ও মনে মনে ইচ্ছা হলো এটাই সুযোগে ইচ্ছা টা পূরণ করা, বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম মেয়ের জন্য একটা কানের দুল কিনবো, আর আজ এই স্বর্ণের দোকান গুলো দেখে আর নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না।
আমার মনে হয়, এখানে আসার পরে আমি বেশি সময় কাটিয়েছি স্বর্ণের দোকান গুলোতে ঘুরে ঘুরে দেখতে আমার খুব ভালো লাগছিলো,কথায় আছে না দেখার মধ্যেও চোখের একটা শান্তি আছে,,তো ব্যাপারটা খানিক টা এরকম। এখানে স্বর্ণের এমন কোন জিনিস নেই যে টা পাওয়া যাবে না যেহেতু এটা সবচেয়ে বড় শপিং মল এখানে স্বর্ণের ব্যবহারিত সকল প্রকারের জিনিস রয়েছে। মানে আমার তো দেখতে ইচ্ছা করছিলো এত সুন্দর সবকিছু।
এরপরে, হাসবেন্ডকে একটু বুঝিয়ে বললাম হয়তো এরকম ঘুরতে আর নাও আসতে পারি, স্বর্ণের দোকানে যাওয়া হলেও হয়তো এই জায়গা থেকে আর কেনা হবে না, তাছাড়া আমার খুব ইচ্ছা মেয়ের জন্য ছোট্ট একটা কানের দুল কিনবো আর সে টা যখন এত বড় একটা শপিং মলে এসে পড়েছি তাহলে কষ্ট করে হলেও কিনে দেওয়ার জন্য। যদিও টাকার পরিমান টা আমিই দিবো বেশি তবে তার অনুমতি খুবই প্রয়োজন।
প্রথমে একটু হ্যাঁ না করেছিলো,পরবর্তীতে রাজি হয়েছে এবং এখান থেকে আমি একটা ছোট্ট কানের দুল নিয়েছি এ কানের দুল টা কিছুদিন আগে কিনা তখন স্বর্ণের ভরি ছিল এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আর বর্তমান এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ভরি।ছোট্ট হলেও দাম কিন্তু আমার কাছে বেশ চড়া ছিলো,এটা ছিল বাহির থেকে আনা,তাই আমার কাছে একটু বেশি পছন্দ হয়েছিলো আর সবকিছু দিয়ে এটার দাম পড়েছিলো ১৩ হাজার টাকা,,,
তবে আমার কাছে মনে হয় টাকা জমিয়ে স্বর্ণ তৈরি করা খুব একটা ক্ষতি হয় না কারণ, যে পরিমাণের দাম বেড়েছে তাতে সমস্যায় পড়লে স্বর্ণটা বিক্রি করে দিলে মোটা অংকের টাকা পাওয়া যাবে তখন।। আর আমার কাছে এর থেকেও বড় ব্যাপার হচ্ছে আমার কাছে স্বর্ণের ব্যবহারিত জিনিস তৈরি করতে ভীষণ ভালো লাগে।
যদিও এত এত স্বর্ণের জিনিস এর কাছে আমার এই ছোট্ট জিনিস টা এতই ছোট যে দেখানো যায় না, তবে সত্যি কথা বলতে আমি ঐদিন ভীষণ খুশি ছিলাম আজ ও খুশি লাগছে,,নিজের চেষ্টা দ্বারা ছোট্ট ইচ্ছা টা কে পূরণ করতে পেরে,,তবে এটা তো অবশ্যই সত্যি হাসবেন্ড পাশে না থাকলে হয়তো বা সম্ভব হতো না।
সে দিনের এই দিনটা আজও ফোনের গ্যালারিতে স্মৃতি হয়ে আছে, এত সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের গহনা ছিলো,যেগুলো দেখে যেন ভীষণ ভালো লাগছিলো,,আর এরই ভেতর দিয়ে আমি আমার এই ছোট্ট কানের দুল টা কিনতে পেরে আরো ভীষণ আনন্দিত লাগছিলো।
যাইহোক, আমার ভীষণ ভালো লাগলো আমার সেই ছোট্ট ইচ্ছা পূরণের গল্পটা শেয়ার করতে পেরে,,ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো একটা সময় সঞ্চয় হয়ে দাঁড়াবে হয়তো আমার কাছে না হলেও আমার সন্তানদের কাছে।।আর তখন ওদের এই খুশিতে নিজেও খুশি থাকবো,সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।।
আপনারা যদি আপনাদের ফ্যামিলি টা কে মধ্যবিত্ত বলেন তাহলে কি হবে তার পরেও যতটুকু আছেন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন তবে স্বর্ণ কেনার ব্যাপারটা অনেক বেশি টাফ হয়ে যায় কেননা বর্তমান সময়ে যে পরিমাণের স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই বলেছেন আমাদের মত মানুষদের পক্ষে কেনার সম্ভাবনা।
কিন্তু তারপরেও আপনার মেয়ের জন্য একটা কানের দুল কিনেছেন যার দাম পড়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা আসলে টাকা জমিয়ে স্বর্ণ কিনে রাখা তা ভালো কেননা পরবর্তী সময়ে এটা সেল করে আবার বিপদ আপদ থেকে উদ্ধার করা যায় অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে হঠাৎ করে পাওয়া আপনার উপহার বা আপনার ইচ্ছে পূরণের গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।
আপনার ইচ্ছা পূরণের গল্পটি খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো যখন সত্যি হয় তখন তো খুব আনন্দদায়ক হয়। বিশেষ করে যখন পরিবারের সবার সহায়তা থাকে। আপনার মেয়ের জন্য স্বর্ণের কানের দুল কেনার মতই বিশেষ। প্রিয়জনের সঙ্গে এভাবে ছোট ছোট সুখের মুহূর্ত শেয়ার করতে পেরে আপনি যেভাবে খুশি তা খুব সুন্দর। যেন করি ভবিষ্যতেও এই ছোট্ট ছোট্ট ইচ্ছা গুলো পূর্ণ হবে এবং আপনার পরিবারের জন্য আরো অনেক আনন্দের মুহূর্ত আসবে।