দুই সন্তান কে নিয়ে যে ভাবে কাটছে আমার দিন।
Photo edited by canva
আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছি, সকল বাধা বিপদ বেরিয়ে যে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পেরেছি তাতে এই সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করছি।
![]() |
---|
এইতো দিন যাচ্ছে আমার,এতদিন ছিলাম এক বাচ্চার মা এখন দুই জন মাথার উপরে দায়িত্ব আরও বেশি বেড়ে গেছে আর বাসায় একটা ছোট বেবি থাকা মানে তার পেছনেই সারাক্ষণ লেগে থাকা,,,যেহেতু তার বয়স মাত্র ছয় দিন এখনো সে নবজাতক, আর এই সময়টা তে একটা মায়ের উপর দিয়ে যে পরিমাণে থাকো যায় এমনিতেই সে অনেক বেশি মানসিক ও শারীরিক ধকল যায় তাতে সে একদম ফিট থাকতে পারে না।
তবুও দিন শেষে আমার কোথাও গিয়ে মনে হয় আমি বেশ তৃপ্তি নিয়ে ভালো আছি। দুই টা বাচ্চা আমার পাশে, ভাবছিলাম এই বয়সে দুইটা বাচ্চার মা হয়ে গিয়েছি, কত শত কিছুই না সামলাতে হবে আমাকে এতদিন একজন ছিল আর এখন দুই জন, তাদের কত শত বায়না থাকবে কত কিছু আমাকে মেনে না নিলেও নিতে হবে।হয়তো রাগ হবে অভিমান হবে তবুও কোথায় গিয়ে আবার একটু শান্তি পাবো।
![]() |
---|
মনে হয় এসব সহ্য করার নামই হচ্ছে মা,যেহেতু বর্তমান সময়টা তে আমার আম্মু কাছে আছে, শাশুড়ি ও বাসায় আছে দেখে একটু কম হচ্ছে কষ্ট, কারণ এখন কিছু চাওয়া মাত্রই হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছি,,। হসপিটাল থেকে বাসায় আসার পরে আজকে সকাল টা একটু ভালো বোধ করছিলাম।
বেশ ছয় দিন পরে নিজের মুখ টা আয়নায় দেখলাম অনেক টা বলা যায় বুড়ি হয়ে গিয়েছি এই কয়দিনের ইন্টিবায়োটি নিতে নিতে,তবুও শুকরিয়া সুস্থ হয়েতে দাঁড়াতে পেরেছি, ইদানিং কোন রান্নাবান্নার চিন্তা আমাকে করতে হয় না, তবে সংসার যেহেতু এই কয়েক মাসে গুছিয়ে নিয়েছি তাই চিন্তা এমনিতেই চলে আসে, ডাক্তার রেস্টে থাকতে বলেছে আমাকে কেন জানি বিছানায় থাকতে পারছি না, মনে চায় সংসারের সবকিছু ঠিকঠাক আছে নাকি একটু ঘুরে ঘুরে দেখি।
যদিও আমার কাছে এই কয়দিনে বেশ এলোমেলো মনে হচ্ছে, তাই আজ একটু নিজের হাতেই সকাল বেলা চা তৈরি করলাম, বাকি কাজ আমার আম্মু এবং শাশুড়ি আম্মাই করে আমি শুধু বিছানায় শুয়ে শুয়ে দিন পার করছি আর দুই বাচ্চার একটু যত্ন নিচ্ছি।
মেয়ের আজ বায়না ধরল একটু নুডুলস খাবে, তবে সেটা আমার আম্মু রান্না করলে হবে না আমাকেই করতে হবে, মেয়ে এমন বায়না শুনে আমি আর স্থির থাকতে পারলাম না নিজের হাতে নুডুলস রান্না করলাম,,এরপরে মেয়েকে একটু বেঁধে দিলাম, এই ছয় দিনে আমি ওর কাছে থাকতে পারিনি আমার যে কি পরিমাণে খারাপ লেগেছে সেটা বুঝাতে পারবো না।
বাসায় আসার পরে মেয়ের গায়ে হাত দিতে কেন জানি চোখের কোনে পানি চলে এসেছে, যদিও আমি বাসায় না থাকার কারণে আমার মেয়ের যত্ন কোন অংশেই কম হয়নি, আমার শাশুড়ি আম্মা আমার মেয়েকে তার সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে যত্ন করেন সব সময়, তবুও ওই যে কথায় আছে না মায়ের মন, যদিও নতুন বেবিকে পেয়ে আমি খুশি তবুও প্রথমটার জন্য আমার বুকটা যেন ফেটে যায় একটুতে এই।
তাই আজ অনেক সময় নিয়ে মেয়ে একটু যত্ন করলাম, এরপরে গেলাম ছেলের দিকে, তার চাকরি হচ্ছে এখন শুধু খাওয়ার ঘুম সারাদিনে এত ঘুমায় টেনে তোলারও উপায় নেই, তবে তার পিছনেও কিন্তু অনেক সময় দিতে হচ্ছে আমাকে।
সময় মত থাকে খাওয়ানো,তাকে ঘুম পাড়ানো তার ছোট ছোট হাত পায়ের যত্ন নেওয়া, নিজের পাশাপাশি তাকেও সর্বক্ষণ খেয়াল নিতে হচ্ছে আমাকে,,আর এই করে করে কখন যে সকাল থেকে বিকাল হয়ে যাচ্ছে আমি নিজে ও টের পাচ্ছি না।
তবে দিনশেষে মনে হচ্ছে, দিন টা ভীষণ ভালো কাটছে সবাইকে সাথে এবং কাছে পেয়ে, যদি আম্মু এক সপ্তাহ পরে চলে যাবে তবে যতদিন সে কাছে আছে ততদিন নিজেকে এবং মনটা ভালো রাখার চেষ্টা করছি। যদিও জানি ধীরে ধীরে নিজেকে পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে সবকিছু মানিয়ে নিতে হবে। তাই যখন যেভাবে যে রকম দিন যাচ্ছে সেটা কে অনেক বেশি ভালো মনে করছি।বাকি টা আল্লার ইচ্ছা।
আর হ্যাঁ দোয়া করবেন যখন যে পরিবেশে থাকে না কেন যেন প্রতিনিয়ত আপনাদের সাথেই থাকতে পারি। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
এটা সত্যিই চাপের ।দুটি বাচ্চাকে সামলানো খুব সহজ কথা নয়। আমার বাড়িতেও আমার ছোট বোনের দুটি বাচ্চা বড়টি ছেলে ও ছোট টি মেয়ে আমরাও সব সময় ওদের নিয়ে ব্যস্ত থাকি। তবে বড়টা যদি একটু বুদ্ধিমান হয় তবে ওদের সামলানোটা আরেকটু সহজ হয়। দুই সন্তানকে নিয়ে ভালো থাকবেন ওদের যত্ন নেবেন যতটা পারবেন বড়টাকে বেশি সময় দেওয়ার চেষ্টা করবেন যেন ওর মনে না হয় ওর ছোট বোনু এসে ওর ভালোবাসা কমে গেছে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি দুই সন্তানকে নিয়ে আপনার আগামী যাত্রা যেন সুন্দর হয়।
একদম ঠিক মনের মতন একটা কথা বলেছেন, আমি সবসময় চেষ্টা করবো আমার মেয়েকে ভালোবাসার জন্য আগের মত করে, কারণ আমি চাইনা ও কখনো এইটা চিন্তা করুক ছোট ভাই এসে ওর ভালোবাসা কম হয়ে গিয়েছে,,।
আপনার পোস্টটি সত্যিই হৃদয়স্পর্শী। মা হওয়ার যে দায়িত্ব এবং ভালোবাসা, তা বোঝা যায় আপনার লেখায়। আমি দোয়া করি আপনি এবং আপনার দুটি সন্তান সবসময় সুস্থ এবং সুখী থাকেন। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এটা অনুভব করতে পারছি যে দুটি সন্তানকে সামাল দিতে আপনার অনেক ধকল যাচ্ছে। তার পাশাপাশি আপনার ছোট সন্তান একদম ছোট। আসলে মায়ের ওপরে অনেক দায়িত্ব থাকে হোক সেটা বড় বা ছোট সন্তান। তার পাশাপাশি দুটি সন্তান নিয়ে থাকাটা অনেক কষ্টকর। আমি সব সময় প্রার্থনা করি আপনার দুটি সন্তান অনেক ভালোভাবে থাকুক সুস্থ থাকুক। এবং সময় বের করে সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নবজাতক শিশুর ঘরে থাকা মানেই হচ্ছে সব সময় তার পিছনে একজন মানুষ নিয়োজিত থাকা কখন তার কি প্রয়োজন সে তো আর মুখে বলে প্রকাশ করতে পারবে না রান্নার মাধ্যমে প্রকাশ করবেন মাঝে মাঝে দেখা যায় বাচ্চারা ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব পায়খানা করে দেয় কিন্তু তারা বলতে পারে না কিন্তু একজন মা কতক্ষণ পর পর যখন সে বাচ্চাকে প্রতিনিয়ত চেক করে তখন সে এটা বুঝতে পারে।
সব সময় পূরণ করতে হবে এটাই স্বাভাবিক সবকিছু আবারো আগের মতো ঠিক হয়ে যাবে এখন হয়তো বা হঠাৎ করে এলোমেলো লাগছে কিন্তু আপনি খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু গুছিয়ে নিতে পারবেন ধন্যবাদ নিজের সন্তানদেরকে নিয়ে কাটানো আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।