ঝিলিক দিদির বৌভাতের অনুষ্ঠান

in Incredible India5 days ago

বেশ অনেকদিন আগে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করেছিলাম ঝিলিক দিদির বিয়ের গল্প। আজকে ঝিলিক দিদির বৌভাতের অনুষ্ঠানের মুহূর্তগুলো শেয়ার করব। দিদির বিয়ে হয়েছে বহরমপুরে। ঝিলিক দিদির বিয়ে নিয়ে আমার সমস্ত অনুভূতিগুলো আমি সেই পোস্টে লিখেছিলাম। দেখতে দেখতে বৌভাতের দিন ও চলে আসলো। ওদের বিয়ে ছিল বৃহস্পতিবার আর বৌভাত হয়েছিল শনিবার।

Snapchat-1487344948.jpg

শনিবার যেহেতু খাওয়া-দাওয়া পুরোপুরি নিরামিষ। তাই আমার যাওয়ার অতটা ইচ্ছা ছিল না কিন্তু ঝিলিক দির মা এতবার বলেছে যে না করতে পারিনি। এমনকি সকাল এর দিকে যখন মনে হল যে যাবনা, তারপরেও ঝিলিক দিদির মা এতবার ফোন করে যাওয়ার জন্য বলল যে রাজি হতেই হল। আসলে এত ভালোবেসে যদি কেউ বলে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই মুখের উপর না বলা যায় না।

20250222_184456.jpg

আমার সাথে আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে অর্থাৎ সহেলী দি রাও যাচ্ছিল। অর্থাৎ ওর মা বাবা আর ও। তাই আমাদের গল্প করার একটা সঙ্গ জুটে গিয়েছিল। যদিও আমরা না গেলে ওরাও কিন্তু যেত না। দুপুর বেলা দিকে ভেবেছিলাম একটু রেস্ট করব কিন্তু সেই সময় হয়নি। বিকেলের দিকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা পাঁচটা নাগাদ।

20250222_211901.jpg

তার আগেই ঝিলিক দিদির মা আমাদের প্রত্যেক বাড়ির জন্য গোলাপ ফুল আর মাথায় দেওয়ার জন্য সুন্দর ফুলের মালা পাঠিয়ে দিয়েছিল। আমাদের রেডি হতে হতে এতটা টাইম চলে গেল যে গাড়ি ছাড়তে গিয়ে বেশ দেরি হয়ে গেল।। মোটামুটি তখন সাড়ে পাঁচটা পার হয়ে গেছে।

20250222_205910.jpg

বহরমপুর যেতে বেশ ভালোই সময় লাগলো আসলে সবাই মিলে যেতে একটু টাইম লাগে বেশি। তারপর মাঝ রাস্তায় একটা রেস্টুরেন্ট দেখে একটু ব্রেক নেওয়া হয়েছিল। সেখানে আমরা সবাই বিস্কুট চা কফি খেয়েছি। এসব পড়তে পড়তে হঠাৎ করে রেস্টুরেন্টের একটা কোনায় দেখতে পেলাম খাঁচার মধ্যে রাখা দুটো সাদা সাদা পাখি।

প্রথমে তো আমি পাখি দুটোকে ভেবেছিলাম শোপিস। পাখি দুটো দেখে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না যে ওটা আসল পাখি। পাখি দুটো এতটাই সুন্দর দেখতে। আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে ওদের ছবি তুলে নিয়েছিলাম। কেউ যদি জেনে থাকেন এটা কি পাখি, অবশ্যই আমাকে জানাবেন।

Snapchat-1403156989.jpg

ওখানে ব্রেক নেওয়ার পর আমরা আবার রওনা দিলাম। বহরমপুরে পৌঁছতে পৌঁছতে সাড়ে আটটা বেজে গিয়েছিল। সাথে সাথে আমরা লজ এ ঢুকে পড়লাম। ঢোকার সময় আমাদের সকলকে গোলাপ ফুল দেয়া হচ্ছিল।তারপর দিদির সাথে দেখা করলাম। আমরা কন্যাযাত্রী । তাই আমাদের জন্য জলখাবারের ও আয়োজন করা হয়েছিল।

সকলকে ব্যাগের মধ্যে করে একটা করে বাক্স দেয়া হচ্ছিল সাথে জলের বোতল। তার মধ্যে অনেক কিছুই খাবার ছিল। কিন্তু আমরা তখন সেগুলো খাইনি। বরং বেরিয়ে এসে পকোড়া আর লস্যি খাচ্ছিলাম। লস্যিটা এত দারুন খেতে ছিল, যে আমরা দুবার করে নিয়েছিলাম। এর সাথে ফুচকাও বসেছিল। কিন্তু আমরা ওই দিকে যাইনি।

20250222_211949.jpg

গল্প করতে করতে এসব খাওয়া-দাওয়া চলছিল। তারপর আমরা অনেক অনেক ছবি তুললাম। দিদির সাথে জামাইবাবুর সাথেও ছবি তোলা হল। নিজেরাও অনেকগুলো ছবি তুললাম। আর এরপর চলে গেলাম খাওয়া-দাওয়ার দিকে। খাওয়া-দাওয়ার মেনু মোটামুটি ভালই ছিল।

1000229141.jpg

তবে আমার কেমন যেন অতটাও পছন্দ হয়নি। আমার মনে হচ্ছে আমাদের শহরের মানুষের আপ্যায়ন ক্ষমতা অনেক বেশি। ওই জায়গার আপ্যায়নের থেকেও হয়তো আমাদের এখানকার আপ্যায়ন বেশি হয়েছে। সেটা বুঝতে পেরেছিলাম।

20250222_221124.jpg

যাইহোক সবকিছু সমান হয় না। মেনে নিয়ে এগোনোই কাজ। খাওয়া দাওয়া শেষ করে এসে দিদি যেখানে বসেছিল, ওখানে আমরা বেশ অনেকক্ষণ গল্প করলাম। যতক্ষণ না সবাই ওখান থেকে বার হচ্ছে কারোর পক্ষে সম্ভব না একা চলে আসার। সবাইকে জড়ো করতে করতেই সময় কেটে গেল। এরপর হঠাৎ ওই লজ থেকে বেরিয়ে এসে দেখি, সহেলী দির মা অর্থাৎ যাকে আমি জেঠি বলে ডাকি। সে সামনে রাখা টোটোর ড্রাইভারের সিটে বসে পোজ দিয়ে ছবি তুলছে।

20250222_224502.jpg

সেজেগুজে এত সুন্দরী ড্রাইভারকে দেখে আমরা তো রীতিমতো হাসাহাসি শুরু করলাম। ঈশান দৌড়তে দৌড়াতে টোটোর প্যাসেঞ্জারের সিটে বসে পড়ল। আর আমরা মজা করে বলতে লাগলাম টোটো ভাড়া কত দিতে হবে। ওখানেই কিছুক্ষণ হাসাহাসি করে সময়টা কাটলো। আমাদের সাথে ঝিলিকদের মা-বাবা দুজনেই গিয়েছিল। আমি আগে দেখেছি মেয়েদের বৌভাতে ,মেয়ের মা আসতো না। কিন্তু এখন যুগ বদলেছে, যুগের সাথে মানুষ এখন অন্ধবিশ্বাসগুলো সরিয়ে ফেলছে।। আমার সত্যিই খুব ভালো লেগেছিল এই উদ্যোগ দেখে।

20250222_224456.jpg

মোটামুটি ওখান থেকে আমরা ১১:৩০ টায় বেরিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত দেড়টা বেজে গেছে। সত্যি কথা বলতে অনেকদিন পরে এরকম ভাবে কন্যাযাত্রী গিয়েছি।। তাও আবার সবাই মিলে। তাই সত্যি অনেক মজা হয়েছে। আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে প্রত্যেকটা মুহূর্ত ক্যাপচার করে রেখেছিলাম। আজ শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগলো।

20250222_214338.jpg

কত সহজেই অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটা মেয়ে নিজের সমস্ত কিছু ছেড়ে নিজের চেনা সহজ ছেড়ে একটা অচেনা জায়গার বাসিন্দা হয়ে গেল। ভেবেই অবাক লাগে। ভগবান সত্যিই মেয়েদের অনেক সহ্য ক্ষমতা দিয়েছে। আর অনেক শক্তি দিয়েছে। বিষয়গুলো সমাজের চোখে খুব ক্ষুদ্র হতে পারে, কিন্তু আমি যখনই প্রতিটা পয়েন্ট নিখুঁতভাবে ভাবি, আমার কাছে অবাক লাগে। আজ এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন।

Sort:  
Loading...
Loading...
 2 days ago 

ঝিলিক দিদির বৌভাতে আপনারা অনেক বেশি আনন্দ করেছেন। আগে থেকেই আপনাদের জন্য মালা এবং গোলাপ ফুল পাঠিয়ে দিয়েছিল যেটা জানতে পারি আসলে বেশ ভালই লাগছিল সবার সাথে গল্প করা খাওয়া-দাওয়া করা অনেক বেশি আনন্দ করা বিয়ে মানেই হচ্ছে আনন্দ সবাই মিলে অনেক বেশি আনন্দ করবে এটাই স্বাভাবিক সবার বিয়ের দাওয়াত খেয়ে বেড়াচ্ছেন আপনার বিয়ের দাওয়াত আমাদেরকে কবে দিবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.24
JST 0.029
BTC 79625.05
ETH 1522.47
USDT 1.00
SBD 0.82