ভন্ডামী আর ধোঁকাবাজি সম্পর্কে জানুন ।।
বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দাও সবার মাঝে-
বেশ কয়েক দিন ধরে একটি বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখার চিন্তা করতেছি। কিন্তুু লেখা হচ্ছে না। তার কারন হলো যে বিষয়টা নিয়ে ব্লগটা লিখবো সে বিষয় নিয়ে ব্লগটা লেখা ঠিক হবে কিনা সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। অবশেষে চিন্তা করলাম যে,সত্যটা মানুষের জানা দরকার। সত্য প্রকাশ না করলে মানুষ জানবে কিভাবে। যে বিষয়টা নিয়ে ব্লগ লেখবো সে বিষয়ে আমার পড়াশোনা করার কারনে মোটামুটি ভালোই ধারনা আছে। কমপক্ষে কোনটা ভালো কোনটা মন্দ সেটা বুঝতে পারি। আজকে যে বিষয়টা আপনাদের সামনে প্রকাশ করবো এটা যে একটা মন্দ কাজ, এটা যে ধর্মীয় গোঁড়ামী, এটা যে ভন্ডামী, এটা যে ধোঁকাবাজি কেউ সে বিষয়ে পড়াশোনা না করলেও সেটা বুঝতে পারবে। তারপরও আমাদের সমাজে আমাদের নাকে ডগায় এক শ্রেনীর লোক ধর্মকে পুজি করে,মানুষকে ভুল তথ্য দিয়ে সেই কার্যক্রম গুলো করে যাচ্ছে। আমরা দেখেও কোন প্রতিবাদ করি না বরং চুপ করে মুখে তালা দিয়ে মাথা নত করে চলে যায়। একটি দেশ,একটি সমাজ খারাপ কাজের জন্য ধ্বংস হয় না। বরং অন্যাই দেখেও প্রতিবাদ না করে অন্যাই যারা সহ্য করে তাদের জন্য দেশ সমাজ ধ্বংস হয়।
আমি প্রতিদিন অফিসে আসা যাওয়ার সময় মাজার জাতীয় একটি একতলা ভবনের সামনে দিয়ে আসতে হয়। কমপক্ষে দৈনিক তিনবার আমার চোখে সেই ভবনটি পড়ে। রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়ার সময় ভবনটি যতটুকু দেখা যায়,রাস্তার সামনের দিকে একটি রুমে লাল কাপড় দিয়ে ঢাকা একটি কবর আছে এমন বুঝা যায়। রাস্তার সাথে একটি দানবক্সও আছে। কোন সাইবোর্ড বা নেইম প্লেট নেই। যার কারনে এটা কি সেটা আমি ঠিকভাবে বুঝতে পারছিলাম না। আর কোন মানুষকে জিঙ্গেসও করি নাই। এভাবেই দুই বছর অতিক্রম হয়ে গেলো।
গত দুই তারিখ সন্ধার সময় বারান্দায় বসে কমিউনিটির কিছু কাজ করছিলাম। পোষ্ট করে কমন্টে করছিলাম। কিন্তুু ঢোলের বাজনার আওয়াজে রুমে বসে থাকতে পারছিলাম না। তারপর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম ঐ মাজার জাতীয় ভবনটি থেকে আওয়াজ আসতেছে। চিন্তা করলাম একবার গিয়ে স্বচক্ষে দেখে আসা দরকার। আসলে সেটা কি ও সেখানে কি হয়। তাই সন্ধার পরে মোবাইলটা হাতে নিয়ে মাক্স পড়ে বিষয়টা জানতে বের হলাম। সেখানে গিয়ে যা দেখলাম,তাতে আমর দুই চোখে দেখে সেটা বিশ্বাস হচ্ছিলো না।
আমি সেখানে গিয়েই কিছু ফটোগ্রাফি নিলাম। আপনারা উপরের ফটোগ্রাফিতে অবস্থাটা দেখেন। একটি কবরের সামনে মহিলা পুরুষ এক সাথে হয়ে ঢোল বাশিঁর তালে কিভাবে নাচানাচি করছে। শরীরে সাদা কাপড় আর মাথায় গামছা বাঁধা মহিলা টি আর লম্বা চুল ওলা কোমড়ে গামছা বাঁধা লোকটি বেশি নাচানাচি করছিলো। আর চারপাশে ছোট বাচ্ছা,মহিলা-পুরুষ দাড়িয়ে তাদের এসব কান্ড দেখতেছে। ইসলাম ধর্মে এসব কান্ড কখনো যায়েয নেই। যাদের ভিতরে ইসলামের সঠিক জ্ঞান রয়েছে তারা কখনো এগুলো সাপোর্ট করবে না। নিঃসন্ধেহে এগুলো ভন্ডামী ছাড়া আর কিছু নয়। এগুলো করে মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি,প্রতারনা করা হচ্ছে। পর্দার আইন তো মানছেই না বরং সমাজের মধ্যে আরো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। ঢোল বাঁশির আওয়াজে বাচ্ছারা পড়াশোনা করতে পারছে না, অসুস্থরা কষ্ট পাচ্ছে,ছোট বাচ্ছারা ঘুমাতে পারছে না। আবার শব্দ দূষণও হচ্ছে।
আমি রাস্তা থেকে এই ফটোগ্রাফি গুলো করেছিলাম। লম্বা একটি ভবন। তার চার পাশে লাল নীল বাতি জ্বালানো হয়েছে। ভিতরে লাল কাপড় দিয়ে একটি কবরকে ডেকে রাখা হয়েছে। আবার চারপাশে আলু , পেঁয়াজ, বালতি,ড্রাম ও দেখা যায়। কবরের উপরে লাল নীল কাগজ ঝুলতেছে। ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী কবরকে পাকা করে উপরে ছাদ ছাদ দেওয়া যায়েজ নেই। যেহেতো এখন লাশ চুরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই,কোন প্রাণীও কবর খুঁড়ে লাশ তুলে ফেলার সম্ভাবনা নেই সুতরাং এগুলো করা ঠিক না। কবরের মধ্যে মোমবাতি,আগড় বাতি জ্বালানো,নিশান লাগানো,কবরে সিজদা করা এগুলো ইসলাম ধর্মে নেই। যারা মারা যায় তাদের মৃত্যুর তারিখে গান বাজনা করা, নাচানাচি করা সম্পূর্ণ হারাম। এগুলো যারা করে তারা ধর্মীয় বিষয়ে মূর্খ।
আমি বেশ কিছুক্ষণ দাড়িয়ে তাদের এই কর্মকান্ড গুলো দেখলাম। এলাকার মানুষ কেউ কিছু বলছে না। তারা এসব করে রাস্তা ব্লক করে ফেলেছে। মানুষ হাটতে পারছে না। তারপরও কেউ কিছু বলছে না। লম্বা চুল ওলা ছেলেটা এমন ভাবে নাচানাচি করছে,আমি ধারনা করছি সে যে কোন সময় অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। অনেকের কাছে শুনতে পেলাম যে তারা নাকি আছরের নামাজের পর থেকেই সারা এলাকায় ঘুরে ঘুরে এমন ভাবে নাচানাচি করছে। আর এগুলো করার কারন হলো উপরের ছবিতে যার কবর দেখা যাচ্ছে, ঐদিন তার মৃতুবার্ষিকী। একজন মানুষের মৃতুবার্ষিকীতে এসব কর্ম করছে,নাউজুবিল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করুন।
বাহিরে কিছুক্ষন নাচানাচি করে ঢোলবাঁশি দলবল নিয়ে তারা ভিতরের দিকে গেলো। আমি ভিতরের দিকে যেতে কিছুটা লজ্জাবোধ করলাম। এখানে আমি কাউকে চিনি না,জানি না। দুই একজন পরিচিত থাকলে ভালো হতো। একটু সাহস নিয়ে ভিতরে যাওয়া যেতো। ভিতরে কি আছে সেটা বুঝতে পারছিলাম না। অবশেষে বুকে সাহজ যুগিয়ে বড় একটি নিঃশ্বাস নিয়ে ভিতরের দিকে গেলাম। চিকন একটি রাস্তা দিয়ে ভিতরের দিকে যেতে হয়। ভিতরে গিয়ে যা দেখলাম সেটা আরো বড় ভন্ডামী। ভিতরের দৃশ্য সম্পর্কে জানতে হলে,দয়া করে পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন....চলবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | ভন্ডামী আর ধোঁকাবাজি সম্পর্কে জানুন ।। |
স্থান | পশ্চিম লামাপাড়া, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০২ /০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
এটা তো এ দেশেই সম্ভব। এটা হলো চোরের দেশ। ভন্ডামী তো এ দেশের রক্তে রক্তে মিশে গেছে। গান করা আর বাজনা করা তো আর এক ভন্ডামী। এই ভন্ডামীর কিছু অংশ বখরা পায় উপর তলার মানুষ গুলো যেই কারনে তারা থাকে অন্ধ। ধন্যবাদ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জী আপু ঠিক বলেছেন,ভন্ডামীর একটা লিমিটি থাকা দরকার। মানুষ এগুলো কেন বুঝে না। ধন্যবাদ।
ইদানিং ধর্মকে পুঁজি করে এই ধরনের কর্মকাণ্ডগুলো বেড়ে চলেছে। আমার কাছেও এটি ভন্ডামি মনে হয়। কারণ এগুলো ইসলামে জায়েজ নয়। বেশ ভালো করেছেন ভাইয়া এই বিষয়গুলো তুলে ধরে। এগুলো আমাদের জানা উচিত। ভালো লাগলো আপনার ব্লগটি পড়ে।
মানুষ সব কিছু বুঝে,অরিজিনাল গুলো খুজে বের করে। অথচ এই দিকটা কেউ খুঁজে দেখে না। ধন্যবাদ।
আসলে ভাইয়া আমাদের দেশটাই ভন্ডামি। আমাদের দেশে এগুলো নিয়ন্ত্রণের কোন উপায় নেই। আসলে যে নিয়ন্ত্রণ করবে সেই যদি এগুলোর মধ্যে লিপ্ত থাকে তাহলে তো আর কিছুই করার থাকে না। আর এই গান বাজনার জন্য সাধারণ লোকজনের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
মানুষ যদি সচেতন না হয়,তাহলে এগুলো নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ।
অনেক সময় অনেক ভন্ডামি আমরা চোখের সামনে দেখি। কিন্তু অনেক সময় কিছু করার থাকে না। শুধু দেখে যাই আমরা। আর কিছু কিছু মানুষ আছে যারা এই ভন্ডামিগুলোকেই বিশ্বাস করে। আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক সুন্দর করে আপনি প্রতিটি বিষয়ে উপস্থাপন করেছেন। আশা করছি সবাই আরো বেশি সচেতন হবে।
আরেকটা পর্ব আছে,সেটার মধ্যেও ভন্ডামির কিছু চিত্র তুলে ধরবো। যেন মানুষ কিছুটা হলেও সতর্ক হয়। ধন্যবাদ।