স্বপ্নের দীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ পর্ব 2
সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করার জন্য সবচাইতে যে সময়টা উত্তম সেটা হচ্ছে শীতকাল। বিশেষ করে নভেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিন ভোমর করা সবচাইতে নিরাপদ এবং উত্তম। কারণ এই সময়টাতে সমুদ্র একটু শান্ত থাকে। উত্তাল সমুদ্রের মধ্যে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করাটা নিরাপদ নয়। এ সময় সমুদ্রে নৌকা কিংবা ট্রলার ডুবে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সাধারণত সেন্টমার্টিন ট্যুরের যে প্যাকেজগুলো দেওয়া হয় সেগুলো নভেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সীমিত। সেন্টমার্টিন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আমার ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমি গিয়েছিলাম মার্চ মাসে। এই সময়টাতে মানুষ একটু কম যায় এবং অন্যান্য বিষয়গুলো সাশ্রয়ী হয় তাই এই সময়টা চিহ্নিত করেছিলাম। সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করার জন্য প্রায় সাত থেকে আটটি বিশাল বিশাল জাহাজ রয়েছে যেগুলো সমুদ্রপথে আপনাকে সেন্ট মার্টিন নিয়ে যাবে। সাধারণত টলারের চেয়ে এ জাহাজগুলোতে ভ্রমণ অনেকটা নিরাপদ।
জাহাজে করে সেন্ট মার্টিন জেটিতে নামার পর আমাদের অন্তরে যে অনুভূতিটা ছিল সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। সেন্ট মার্টিন সম্পর্কে এতদিন বিভিন্ন ভিডিও কিংবা টিভিতে জানতে পেরেছিলাম। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সেন্টমার্টিনের অনেক গল্প শুনেছি এবং ইউটিউবে অনেক ভিডিও দেখেছি সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য সম্পর্কে। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের গল্প পড়তাম অনেক বেশি তিনি তার বিভিন্ন গল্পের মধ্যে সেন্ট মার্টিন নিয়ে অনেক প্রশংসা করেছেন। সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে তিনি বিভিন্ন রকমের নাম দিয়েছেন। রূপালী দ্বীপ, দারুচিনির দ্বীপ, নারিকেল জিঞ্জিরা ইত্যাদি নামে সেন্ট মার্টিন পরিচিত। সেন্ট মার্টিন যেটিতে নেমে প্রথমেই আমরা বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকতের এরিয়া এবং যেটিতে বসে। যেটি থেকে নামার পর আমাদের সর্বপ্রথম কাজ ছিল আমাদের যে টুরিস্ট গাইড নাম্বারটা দিয়েছে তার মাধ্যমে আমাদের হোটেলের রুমের খোঁজ নেওয়া। কারণ আমরা যেহেতু আগে থেকে রুম বুকিং করে দিয়ে এসেছিলাম তাই আগে আমরা তাকে ফোন দিয়ে রুমের ব্যাপারে সন্ধান নিলাম। অবশেষে মোটামুটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট জেটির পাশে অপেক্ষা করার পর আমাদের টুরিস্ট গাইড চলে এলো এবং সে আমাদের নির্ধারিত গন্তব্যে নিয়ে গেল।
সেন্ট মার্টিনের যে রিসোর্টে আমরা উঠেছিলাম সেটাতে গিয়ে প্রথমে এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় হলো। তাকে দেখে কেন জানি আমার মনে হয়েছিল উনাকে প্রথমে আমি আগে কোথাও দেখেছি। ওনার নাম জিজ্ঞাসা করলাম তিনি বলল উনার নাম পারভেজ। তখন আমার মনে পড়লো আমার এক বড় ভাইয়ের বন্ধু যিনি সেন্ট মার্টিনে রিসোর্টের ব্যবসা করে ওনার নাম পারবেজ।আমি উনাকে আমার সেই বড় ভাইয়ের পরিচয় দিলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কি উনাকে চিনেন কিনা???সাথে সাথে পারভেজ ভাই উত্তর দিল হ্যাঁ সে তো আমার বন্ধু।অবশেষে কার বয়স বাই বললো যে তুমি যদি আগে পরিচয় দিয়ে আসতে তাহলে হয়তোবা রিসোর্টের ভাড়ার কোন প্রয়োজন হতো না। যেহেতু আমরা এডভান্স ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে রুম বুকিং দিয়ে এসেছি তাই এখন আর ভাড়া ক্যান্সেল করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু তবুও রাতে পারভেজ ভাই আমাদের জন্য সুন্দর একটা বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করেছিল।
অতঃপর কোন রকমে ব্যাগটা রুমের রেখে হালকা মুখ হাত ধুয়ে বের হয়ে পড়লাম স্বপ্নের দ্বীপ সেন্টমার্টিন এ চারপাশ ঘুরে দেখার জন্য। প্রথমেই আমাদের রিসোর্টের আশেপাশে যে এরিয়া গুলো আছে সেগুলো ঘুরে দেখলাম। আমাদের রিসোর্ট যেহেতু সমুদ্র সৈকতের একদম নিকটে ছিল। তাই আমরা বেশ কিছুক্ষণ সময় আমাদের রিসোর্ট এর আশেপাশের এলাকাতে ঘুরে কাটালাম। সেন্টমার্টিনের সমুদ্রসুখ ওদের পানি এতটাই স্বচ্ছ ও সুন্দর ছিল যে মনে হচ্ছিল এখনই ঝাঁপিয়ে পড়ি। কিন্তু পানির লোভে পড়ে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়লেই হবে না, সাঁতার যদি জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই সমুদ্রের পানিতে নামাটা বিপদজনক। তাই এই চিন্তা পরবর্তীতে ক্যানসেল করলাম। অবশেষে অপেক্ষা করতে থাকলাম সন্ধ্যা পর্যন্ত কারণ সন্ধ্যা হলেই চাঁদ উঠবে এবং জোসনার সময় সেন্টমার্টিন দেখতে দারুন লাগে।
সেন্টমার্টিন এর অভিজ্ঞতা এবং সুন্দর দৃশ্য সম্পর্কে আপনাদেরকে আরও একটি ব্লগে প জানাবো।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি করার জন্য আরও একটি নতুন বিষয় নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।
!upvote 40
This post was manually selected to be voted on by "Seven Network Project". (Manual Curation) Your post was promoted on Twitter by the account josluds
the post has been upvoted successfully! Remaining bandwidth: 0%
thanks for support
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
এই সেন্টমার্টিনের নাম অনেক শুনেছি ও পড়েছি। আমার অনেক বন্ধুরাও গিয়েছিলো। শুধু আমি-ই এখন পর্যন্ত যেতে পারলাম না। তবে শিগগিরই ইনশাআল্লাহ যাবো আল্লাহ তায়ালা যদি নেন।
আপনার লিখিত ভ্রমন গাইড খুবই ভালো লাগলো, অনেক অজানা বিষয়ে জানা হয়ে গেলো। সেজন্য অবশ্যই আপনি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন
অবশ্যই সুযোগ পেলে একদিন ঘুরে আসবেন ইনশাআল্লাহ