জেনারেল রাইটিং: কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে খারাপ প্রভাব

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে খারাপ প্রভাব নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

সোর্স

আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে দেশের কৃষি খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন।আর এই পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃষি কাজ অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে।এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কৃষি খাতে ফসলের উৎপাদন ও বেড়েছে কয়েক গুণ। অতীতে মানুষ অনেক পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করেছিল, কিন্তু তাদের বিশালাকার পরিশ্রমের মাঝে ও তেমন একটা বেশি ফসল উৎপাদন হতো না। তখন ছিল না কোন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না কোন ধরনের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। তখন তারা নিজেরাই নিজেদের বুদ্ধি খাটিয়ে ফসল উৎপাদন করেছিল ‌। কিন্তু বর্তমান সময়ে সরকারি ভাবে কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কৃষি গবেষণাগার থেকে প্রতিনিয়ত কৃষকদের কে বিভিন্ন ধরনের উপদেশ প্রদান করা হচ্ছে।

এর ফলে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হতে পারছে এবং দেশে কৃষি খাত অনেক টা এগিয়ে যাচ্ছে। যাইহোক, আগের দিনের থেকে বর্তমান সময়ে সব কিছুর মধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে অনেকেই অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিশেষ করে আমাদের দেশের খেতে খাওয়া মানুষ গুলো অনেক বেশি সমস্যায় ভুগছেন। কেননা, অতীতে যখন কোন ফসল খেতে কাজ করা হতো, তখন ফসর খেতে কাজ করার জন্য অনেক শ্রমিক প্রয়োজন হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে তেমন একটা শ্রমিকদের প্রয়োজন হয় না। এখন সব কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এরফলে শ্রমিক এবং খেতে খাওয়া মানুষ গুলো অনেক কিছু বঞ্চিত হচ্ছে।

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম আমাদের বাড়ির আশেপাশের যে কয়েকজন কৃষক মানুষ রয়েছে তারা সব সময় গ্ৰামের খেটে খাওয়া মানুষদের কে সাথে নিয়ে কৃষি কাজ করতো, এর ফলে খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর পরিবার বেশ দুর্দান্ত ভাবে চলে যেত। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে এসব একদম পুরোপুরি ভাবে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এখন ফসল উৎপাদন করার কাজে তেমন একটা শ্রমিকদের প্রয়োজন হয় না। এখন কৃষি কাজের সব কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।আর দিন দিন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের চাহিদা অনেক বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরফলে একজন খেটে খাওয়া মানুষের পরিবার পরিচালনা করতে অনেক বেশি কষ্ট হয়ে পড়েছে।

ছোট বেলায় যখন ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের সময় চলে আসতো তখন আমি দেখতাম কয়েক মাস জুড়ে ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের কাজ চলতো।আর এই পুরো কাজ গুলো খেটে খাওয়া মানুষের মাধ্যমে পরিচালিত হতো।এর ফলে কৃষকদের পাশাপাশি শ্রমিকরা ও কিছু টা লাভবান হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সব কিছুর পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বর্তমান সময়ে এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো মাঠের ধান গুলো বাসায় চলে আসতেছে এবং একই সাথে ধান গুলো বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মাড়াই করা হচ্ছে।এর ফলে শ্রমিকদের প্রয়োজন খুবই কম হচ্ছে। এতে করে আমাদের দেশের বেশির ভাগ শ্রমিক নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।

আমাদের দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে জমি নেই। বর্তমান সময়ে যাদের একটু জমি রয়েছে, শুধু মাত্র তারাই লাভবান হতে পারছে। বাকি সব মানুষ বিভিন্ন ধরনের দুর্দশায় দিন পার করছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে, এই বিষয়ে আমরা তেমন কেউ খেয়াল করছি না। এটা আসলে আমাদের জন্য মোটেও কাম্য নয়। আমাদের সকলের উচিত সর্বস্তরের মানুষ কে এক সাথে নিয়ে একত্রিত ভাবে বসবাস করা।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।