স্বরচিত কবিতা:- "শীতের গ্রামীণ জীবন"
শীত চলে এসেছে, এবং তার সাথে চলে এসেছে এক বিশেষ আমেজ। শীতের হিমেল হাওয়া, কুয়াশায় ঢাকা গ্রাম, মৃদু সূর্যের আলো এবং পিঠা-পুলির গন্ধ—এই সব কিছু মিলিয়ে শীতের সময় গ্রামীণ জীবনে এক অদ্ভুত সৌন্দর্য সৃষ্টি হয়। গ্রামে শীতের প্রকৃতি যেমন সুন্দর, তেমনি মানুষের মনেও এক ধরনের শান্তি এবং আনন্দ এনে দেয়। ঘর-আঙিনা, মাঠ, পুকুর, নদী—প্রতিটি স্থান শীতের দিনে নতুন রূপে ভরে ওঠে। ছোট-বড় সবাই মিলে শীতের আনন্দে মেতে ওঠে, আর প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে দিন কাটায়। তাই, আজ আমি আপনাদের সাথে শীতের গ্রামীণ জীবন নিয়ে একটি কবিতা শেয়ার করতে যাচ্ছি, যা এই বিশেষ সময়ের শান্তি, রূপ এবং সৌন্দর্য তুলে ধরবে। আশা করি, কবিতাটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে এবং শীতের আসল অনুভূতি আপনার মনেও জাগাবে।
"শীতের গ্রামীণ জীবন"
মোঃ ফয়সাল আহমেদ
শীতের সকালে গ্রামে আসে হিমেল হাওয়া,
কুয়াশায় ঢাকা সারা গ্রাম, চুপে চুপে ছায়া।
পাখিরা গায় গান, আকাশে উড়ে চলে,
মাঠে ধানগাছ যেন সোনা রাঙিয়ে আলো ঝরে।
পিঠা-পুলির গন্ধে ভরে ওঠে বাড়ির উঠান,
চুলোর ধোঁয়া উঠছে, গ্রামে চলে সঙ্গীতের গান।
মা আর ঠাকুমা গাঁথে রুটি, পিঠে-ভাজা,
সরষে বাটির স্বাদে প্রাণ উড়ে যায় বাজনা।
পুকুরের জলে ফুটে ওঠে ভোরের রাশি,
কুয়াশা মুছে যায়, সুরের মতো নাচে সাথী।
শিশির ভেজা ঘাসে পা পড়লে,
শীতল ছোঁয়ায় প্রাণ ভরে ওঠে মেলে।
বাঁশের খুঁটিতে ঝুলে থাকে শীতের রং,
মাটির গন্ধে মিশে থাকে দুপুরের ঢঙ।
গ্রামের ছোট্ট পথে হাঁটতে হাঁটতে,
মন শান্ত হয়ে যায়, একা একা রাত কাটে।
বৃদ্ধ দাদু বসে আছেন উঠোনে,
চোখে স্মৃতির ছবি, হাতে পাতা কোমলে।
ছোটরা মাঠে খেলছে, হাসছে ঝড়ের মতো,
তাদের হাসির রেশ ছড়ায়, গ্রামে মিষ্টি রোদ।
নদীর ধারে গবাদিপশু হাঁটে ধীরে,
পাঠশালার বাচ্চারা গায় গান একসুরে।
গাছের পাতা ঝরে পড়ে মাটির বুকে,
শীতের সকালে সব কিছু যেন সুখে সুরে।
চায়ের কাপে ধোঁয়া ওঠে ধীরে ধীরে,
আলোর কণা ফুটে ওঠে কুয়াশার ভিতরে।
পাশের বাড়ি থেকে ডাক, "আসো খেতে!"
শীতের সকালের আহ্বান হৃদয়ে মেতে।
শীতের গ্রামীণ জীবন এমনই রঙিন,
এই দৃশ্য মনে গেঁথে থাকে সারাদিন।
প্রকৃতির কোলে শীতের রূপ,
গ্রামের মানুষ হাসে, সুখের ধূপ।
কবিতাটির মাধ্যমে শীতের গ্রামীণ জীবনের শান্তিপূর্ণ এবং সুন্দর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। শীতের সকালে গ্রামে আসা হিমেল হাওয়া, কুয়াশায় ঢাকা গ্রাম, পাখির গান এবং সোনালী আলোতে ধানগাছের ঝরঝরে রং, সব কিছুই একটি স্বপ্নিল দৃশ্যের সৃষ্টি করে। গ্রামে মা এবং ঠাকুমার হাতে তৈরি পিঠা-পুলি, চুলোর ধোঁয়া, এবং সরষে বাটির স্বাদে বাড়ির উঠান ভরে ওঠে এক অসাধারণ উষ্ণতা এবং আনন্দে।শীতের ভোরে পুকুরের জলে ফুটে ওঠা রাশির দৃশ্য, শিশিরভেজা ঘাসে পা রাখা, এবং গ্রাম্য রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মন শান্ত হয়ে ওঠে। গ্রামের বৃদ্ধ দাদু স্মৃতিতে ডুব দিয়ে উঠোনে বসে থাকেন, আর ছোটরা মাঠে খেলে একে অপরকে হাসাতে থাকে। নদীর ধারে গবাদিপশু ধীরে হাঁটে, আর শিশুরা স্কুলে গান গায়।শীতের সকালের চায়ের কাপ থেকে উঠা ধোঁয়া, কুয়াশার ভিতরে ফুটে ওঠা আলো, এবং পাশের বাড়ি থেকে আসা খাওয়ার আহ্বান—এসব দৃশ্য শীতের গ্রামীণ জীবনের এক গভীর অনুভূতি তৈরি করে, যা জীবনের আনন্দ ও শান্তির প্রকাশ। গ্রামে শীতের সময় প্রকৃতি, মানুষ এবং জীবন যেন একসাথে মিলেমিশে এক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে স্থিত হয়।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ পরিবেশ সম্পর্কে সুন্দর একটি কবিতা লিখে ফেলেছেন। যে কবিতার মধ্যে গ্রামীণ পরিবেশের শীতের প্রত্যেকটা বিষয়কে স্বাভাবিকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতা পড়ে মনে হচ্ছিল যেন শীতের গ্রাম বাংলার পরিবেশকে নিজ চোখে অবলোকন করছিলাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আগামীর চমৎকার সব কবিতা লেখার জন্য। এটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
শীতকালে দিনগুলো উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই গ্রামীণ পরিবেশে যেতে হবে।সেখানে অন্যরকম একটা প্রশান্তি কাজ করে।যাইহোক আপনার মন্তব্য পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে।
কি সুন্দর করে শীতের পরিবেশ এবং শীতের সমস্ত আবেগ অনুভূতি দিনকাল যাপন নিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। প্রতিটি লাইনে আমাদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে নিত্য কথা তুলে ধরেছেন। আর গ্রামীণ জীবন তুলে ধরেছেন বলেই আরো বেশি করে জীবন্ত হয়ে উঠেছে কবিতাটা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দিদি।
শিতের গ্রামীণ জীবন নিয়ে খুবই সুন্দর কবিতা লিখেছেন। কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার কবিতার ভাষাগুলো ছিল অসাধারণ।
ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শীতের গ্রামীণ জীবন অসাধারণ লাগে।বিশেষ করে মিষ্টি রোদের মধ্যে বসে থাকতে আরো বেশি ভালো লাগে ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটা কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনি সত্যি অনেক বেশি সুন্দর করে কবিতা লিখতে পারেন। আর আজকেও খুব সুন্দর করে একটা কবিতা লিখেছেন আপনি। আসলে চেষ্টা করলে সবকিছুই সম্ভব। আর আপনি প্রতিনিয়ত কবিতা লেখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলেই এত সুন্দর কবিতা লিখতে পারছেন।