তিনবছরের মধ্যে প্রথম দর্শন।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
যেকোন জিনিস প্রথমবার দর্শন বা প্রথমবার দেখার মধ্যে আলাদা একটা অনূভুতি বা মজা আছে। বিশেষ কিছু হলে কিন্তু দর্শটা স্মরণীয় হয়ে থাকে। কিছু কিছু মূল্যবান বা দামী বস্তুুর দর্শনে একটু অপেক্ষা করাই লাগে। আর সেলিব্রেটিদের দেখা পাওয়া তো অন্য এক বিষয়। যাইহোক আসল ঘটনায় আসি। মূল ভাবটা এখনই প্রকাশ করব না। সম্পূর্ণ টা পড়লে বুঝতে পারবেন। বিষয়টি শুনে একটু হাসি পেলেও পেতে পারে আপনাদের। বিষয়টি এমন আমাদের জিনিস কিন্তু আমরা নানা সমস্যার জন্য ব্যবহার করা তো দূরে থাক দেখতেই পারি না। প্রথম থেকে শুরু করি চলেন। গতকাল আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ইয়াকুব আলী স্যার ক্লাসে শেষে বলল আগামীকাল তোমাদের সকাল ৮ টার মধ্যে কলেজে আসতে হবে। এই শীতে ৮ টাই কলেজে একটু বাড়াবাড়ি না এটা। আমাদের ক্লাস ঐ ৯ টা থেকে ছিল।। কারণ জিজ্ঞেস করতে স্যার বলল আগামীকাল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) থেকে আমাদের কলেজে আসবে একটা ডকুমেন্টারি তৈরি করতে। সেখানে আমরা ছাএরা ল্যাবে ব্যবহারিক কাজ করছি এইরকম অবস্থায় ভিডিও ধারণ করবে। সবাই যেন পরিপূর্ণ কলেজ ড্রেস পড়ে সময় মতো কলেজে চলে আসি সেটা পূণরায় বললেন।
আমার বাড়ি থেকে কলেজে মোটামুটি ঐ ৩৫-৪০ মিনিট লাগে। কিন্তু শীতের সকাল বেলা হাইওয়ে তে গাড়ি অনেক কম থাকে। সেজন্য আর কী একটু দ্রুত বের হয়েছিলাম বাড়ি থেকে। তাড়াতাড়ি চেষ্টা করেও পারিনি সময় মতো বাড়ি থেকে বের হতে। বাড়ি থেকে বের হয় ৭:৩০ এর সময়। তখনও বেশ ভালো কুয়াশা ছিল বাইরে, আর ঠান্ডার কথা তো বলবই না। কিন্তু কী আর করার স্যার বলেছে যেতে। হাইওয়েতে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর একটা ইজিবাইকে উঠে পড়লাম। মোটামুটি কলেজে গিয়ে পৌঁছেছি ৮:৩০ এর দিকে। গিয়ে দেখি স্যার আসেনি। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই স্যার এসে বললেন টেলিভিশন এর লোকেরা একটু পর আসবে। তো সেই সময়টুকু স্যার ক্লাস নিলেন। ঘন্টাখানেক ক্লাস করার পর ১০ টার দিকে স্যার বললেন তোমরা ইলেকট্রিক্যাল হাই ভোল্টেজ ল্যাবে যাও। কিছুক্ষণ পর আমি এবং ডকুমেন্টারির লোকেরা যাব।
তো চলে গেলাম হাইভোল্টেজ ল্যাবে। সেখানে গিয়ে তো রীতিমতো আমাদের চক্ষু চড়োকগাছ। হা হা এই কথা কেন বলছি কারণ আছে। এইবার আসবে ঐ প্রথম দর্শনের বিষয়টি। প্রথম সেমিষ্টার থেকে এই হাইভোল্টেজ ল্যাবে যাওয়া আসা। সবসময়ই দেখেছি ক্লাসের একপাশে বড় বড় টেবিলের উপর কিছু মেশিন বা যন্ত্র কাপড় দিয়ে ঢাকা। স্যারের কাছে জিজ্ঞেস করতেই আমাদের বলে ওগুলো হাইভোল্টেজ যন্ত্রপাতি যেগুলো ব্যবহারিক এর জন্য ব্যবহার করা হয়। তখন ভেবেছিলাম হয়তো পরে যখন এই সাবজেক্ট পাব তখন হয়তো ঐগুলো দেখতে পারব ব্যবহার করতে পারব। কিন্তু আমার ধারণা ভুল। বড় ভাইদের থেকে শুনতে পাই ওগুলো নাকী যুগ যুগান্তর থেকে ঐভাবেই আছে ব্যবহার করা হয় না হি হি। মানে শো করে রাখা আর কী। কিন্তু আজ গিয়ে দেখি হাইভোল্টেজের ঐ মেশিনগুলোর উপর কাপড় নেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং সেগুলো সংযোগ করা হয়েছে। কারণ ঐ,আজ ডকুমেন্টারি হবে। সরকার এতো টাকার জিনিস দিয়েছে এখন উনারা এসে যদি দেখেন সেগুলো কাপড় দিয়ে ঢাকা দেওয়া ব্যবহার করা হয় না। তাহলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে সেজন্য আর কী ঐগুলো প্রস্তুত করা।
তো আমি এবং আমার বন্ধুরা এগিয়ে গেলাম মেশিনগুলোর দেখি। মোটামুটি একেবারে কাছ থেকে প্রতিটা হাইভোল্টেজ মেশিন দেখলাম এবং ছবি তুললাম। এই তিনবছরে প্রথমবার আমাদের কৌতূহল মিটে গেল যে ঐ কালো কাপড়ের নিচে আছে কী। বাকিটা সময় আমরা ঐ হাইভোল্টেজ মেশিনগুলোর কাছেই কাটিয়েছি। সৌভাগ্য যখন হয়েছে দেখে রাখি। কারণ আবার এগুলো দেখতে পারব কীনা জানা নেই। এগুলো ছাএদের ব্যবহারিক এর জন্যই দেওয়া। কিন্তু আমরা সেটা করতে পারি না। যদিও এগুলোর পেছনে স্যারদের খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না। কারণ ঐ হাইভোল্টেজ মেশিন গুলো ব্যবহার করার জন্য যে প্রটেকশন ডিভাইস দরকার সেগুলো নেই। আবার এগুলো ব্যবহার করার জন্য দক্ষ শিক্ষক দরকার সেটারও ঘাটতি আছে। আর যেহেতু হাইভোল্টেজ মেশিন একটু ভুল করলে কী হতে পারে বুঝতেই পারছেন। সেজন্য যথেষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন হয়। সবমিলিয়েই ধরেন এই তিন বছরে এই প্রথমবার যন্ত্রগুলোর দর্শন পেলাম।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | ডিসেম্বর ,২০২২ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
ব্যাপারটা বেশ মজার।
ও রকম কিছু মেশিন আমাদের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছিল। ওগুলো হাত দেয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল কারন চালোনোর মতো লোক আর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা ছিল না। যাক সৌভাগ্য আপনার একটু দেখার অন্তত সুযোগ হয়েছে 🤗
হা হা। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাইরে কলেজ জীবনে এরকম কত মেশিন ছিল যে গুলোর ব্যবহার আজও জানি না, আমার টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্টে বেশ কয়েকটি মেশিন ছিল যদিও সেগুলো চালু করা হতো না কারণ পুরো বিল্ডিং একটা কম্পন সৃষ্টি হতো, তবুও কলেজ থেকে বের হওয়া মধ্যে একদিন করে হলেও সবগুলোর মেশিনের ব্যবহার সম্পর্কে জেনেছি এটা সৌভাগ্য ছিল। অনেক মিশিনি এভাবে সাজিয়ে রাখা হয়, কারণ ছাত্রদের হাতে গেলে ও জিনিস বেশি দিন টিকে না 😂
কথা খারাপ বলেন নাই। তবে ওভাবে রাখলে তো নষ্ট হয়ে এমনেও যাবে।
যাক, দেখেই শান্তি পান, ধরে কিছু অঘটন ঘটিয়ে লাভ নাই।আপনার জন্য আমরাও সবাই দেখার সুযোগ পেলাম।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
হা হা। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।।