হৃৎপিণ্ড (দ্বিতীয় পর্ব)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমান চৌধুরী এবং ডাক্তার রহমান মিলে অরুপের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। এবং সব ফর্মালিটি পূরণ করে। এক্ষেত্রে অরুপের পরিবারের কোনো আপওি ছিল না। এবং নিজের ছেলের হার্ট অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন হবে এর জন্য তারা কোনো অর্থ দাবি করেনি। উল্টা আমান সাহেব দিতে গেলে উনারা সেটা ফিরিয়ে দেয়। যাইহোক নির্দিষ্ট দিনে ডাক্তার রহমান পিয়াসের দেহে অরুপের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করে। পিয়াস অনেকটা সুস্থ হয়ে যায়। তবে অরুপের হৃৎপিণ্ড পিয়াসের দেহে প্রতিস্থাপন করার পর থেকে অরুপ আর আগের মতো চলাফেরা করতে পারত না। খুব দ্রুতই ক্লান্তি চলে আসত। বেশি কথাও বলতে পারত না। পিয়াসের বাবা মা অদিতি এটা নিয়ে সবাই অনেক টেনশনে থাকলেও ডাক্তার রহমান বলেন আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু পিয়াস ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পিয়াস একপর্যায়ে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে যায়। সেই সময়ে অদিতি পিয়াসকে অনেকটা এড়িয়ে চলত। পিয়াসের মা মোটামুটি দেখাশোনা করত পিয়াসের। তবে ডাক্তার রহমান পরামর্শ দেয় একজন ভালো নার্স নিয়োগ দেওয়ার জন্য। যেন পিয়াসের অবস্থা বুঝে সবসময় সঠিক ব্যবস্থাটা নিতে পারে। এতে পিয়াসের বাবা মা রাজি হয়ে যায়। ডাক্তার রহমান একজন মধ্য বয়স্কা নারীকে পাঠায় পিয়াসদের বাড়িতে পিয়াসের নার্স হিসেবে। ঐ মহিলাটার বয়স আনুমানিক ৩৫-৪০ হবে। মহিলা বেশ লম্বা, গায়ের রং ফর্সা। দেখলে মনে হয় না বয়স অতো হবে। ঐ মহিলা মানে নার্সের নাম ছিল সাবিনা বেগম। যেহেতু ডাক্তার রহমান পাঠিয়েছে সেজন্য নার্স এর বিষয়ে কোনো তদন্ত করেনি পিয়াসের পরিবার কোনো কিছু জানতেও চাইনি।
সাবিনা বেগম সার্বক্ষণ সেবা করতে থাকে পিয়াসের। পুরো ২৪ টা ঘন্টা দেখাশোনা করে পিয়াসের। পিয়াসের মা মাঝে মাঝে আসে অদিতিও আসে মাঝে মাঝে। পিয়াসের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন এর পর থেকে অদিতি অনেকটা এড়িয়ে চলে পিয়াসকে। ছেলের এই অবস্থা পিয়াসের বাবা আমান চৌধুরী নিজের ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আবার। নার্স সাবিনা বেগম এই সুযোগটাই নেয়। দিনরাত সেবা করতে থাকে পিয়াসের। পিয়াস নিজের মায়ের মতোই সম্মান করত সাবিনা বেগমকে। পিয়াসের খাবারের রুটিন, কখন কী ঔষধ, কখন হাঁটতে হবে, সবকিছু খেয়াল রাখত সাবিনা। পিয়াসও এটা খেয়াল করে নার্স সাবিনা আসার পর থেকে তার মা আর তার ঘরে খুব একটা আসে না। ক্রমাগত সাবিনা এবং পিয়াস অনেক ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়। সাবিনা আস্তে আস্তে পরিবারের একজন সদস্য হয়ে উঠে। একপর্যায়ে পিয়াস তার মা এবং অদিতির চেয়ে নার্স সাবিনা বেগমকে বেশি প্রাধান্য দিতে শুরু করে।
এই বিষয়টা আমান চৌধুরী খেয়াল করে। তবে তিনি কিছু বলেন না। কারণ তিনিও তার স্ত্রী এবং পুএবধুর পরিবর্তন খেয়াল করেছেন। আমান চৌধুরীও এখন নার্স সাবিনাকে অনেক বিশ্বাস করে। বাইরে কোথাও গেলে তার ছেলের দায়িত্ব দিয়ে যায় নার্স সাবিনা বেগম এর উপর। আবার কখনো পিয়াসের খবর নেওয়ার প্রয়োজন হলে সাবিনা বেগমকেই ফোন দেয়। বিষয়টা মোটেও ভালোভাবে নেয় না অদিতি এবং পিয়াসের মা। একদিন দুপুরে সাবিনা বাইরে গেছে পিয়াসের ঔষধ আনতে ঐসময়ে অদিতি এবং পিয়াসের মা পিয়াসকে গিয়ে বলে
হ্যা রে পিয়াস এখন আমাদের থেকে ঐ নার্স তোর কাছে বেশি আপন।
পিয়াস বলে এই কথা বলছ কেন তোমরা।
অদিতি বলে কেন বলব না। তুমি এখন আমাদের তো দেখতেই পারো না। সবকিছু ঐ নার্সকে বলো।
পিয়াস রেগে যায় এবং বলে কেন বলব না বলতে পারো। আমার এই অবস্থা হওয়ার পর থেকে তুমি বা মা দিনে কতবার এসেছ আমার কাছে। অন্যদিকে ঐ মহিলা ঐ নার্স সার্বক্ষণিক আমার দেখাশোনা করে।
এই কথা শুনে অদিতি এবং পিয়াসের মা দুজনই রাগ করে চলে যায়।।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যাক অবশেষে তাহলে সেই গরীব ছেলের হার্ট প্রতিস্থাপন করলো ৷ কিন্তু তার পরেও তো শুরু হলো আরেক যন্ত্রণা ৷ এত সুন্দর সংসার একজন নার্সের জন্য খারাপ হতে চলেছে ৷ যা হোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
আসলে ব্যাপারটা এমন হওয়াই উচিত। খারাপ সময়ে যে পাশে থাকে প্রায়োরিটি লিস্টে তাকে উপরে রাখাই উচিৎ।
যাইহোক ভালো হচ্ছে গল্প। এগিয়ে নেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।🖤✌️