জিটিএ ভাইস সিটি।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি আজকে ভাইস সিটি গেমের নিয়ে কিছু মজার ঘটনা শেয়ার করব । আপনারা প্রত্যেকেই কখনো না কখনো ভাইস সিটি গেমের নাম শুনেছেন বা খেলেছেন৷ এই গেমটি ছিলো আমার ভীষণ প্রিয়। আমি যখন গেমটি খেলতাম তখন এক'দু ঘন্টার আগে উঠতাম না।
তখন আমি পড়ি ক্লাস নাইনে। আমার কম্পিউটার ছিলনা কিন্তু আমার দুইটা বন্ধুর কম্পিউটার ছিল। একজনের ছিলো ডেক্সটপ আরেক জনের ছিলো ল্যাপটপ। এদের মধ্যে একজনের নাম ছিল অন্তর, যাকে মামা বলে ডাকতাম। ওর ছিলো ডেক্সটপ। আর ওর টেবিলের ড্রয়ারে অনেক অনেক গেমের ডিস্ক থাকত সবসময়। আরেক বন্ধু ছিল সোহাগ (@ashikur50) ওর ল্যাপটপে ভাইসিটি গেম টা থাকতো সবসময়। আমি স্কুল শেষ করে বাসায় না গিয়ে কোনদিন অন্তরদের বাড়ি আবার কোনদিন সোহাগদের বাড়িতে গিয়ে গেম খেলতাম। প্রচন্ড নেশা হয়ে গিয়েছিলো।
আমরা শিডিউল দিয়ে খেলতাম। একজন ১০ মিনিট ১৫ মিনিট খেলার পরে আরেকজন। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা গেম খেলতাম। ভাইস সিটি গেমের ড্রাইভিং করতে আমার দারুন লাগতো। বিভিন্ন টাস্ক গুলোও পূরণ করতাম কিন্তু টাস্ক পূরণ করা থেকে আমার ড্রাইভ করে ঘুরে বেড়ানো টাই ছিল বেশি প্রিয়। আর অস্ত্রের দোকানে গিয়ে অস্ত্র কিনতাম প্রচুর। অস্ত্র কেনা শেষ হলে আমি সবসময়ই দোকানদারকে ওই অস্ত্র দিয়েই মেরে রেখে আসতাম। হাহাহাহা।
এলোপাথাড়ি ড্রাইভ করতে খুব ভাল লাগত। একটা মজার ব্যাপার হলো একটা টাস্ক আছে যেখানে অ্যাম্বুলেন্সে করে একটা রোগীকে বাঁচাতে হয়। ঐটা পুরন করার জন্য অ্যাম্বুলেন্স এমনভাবে চালাইতাম যে পথে যারা থাকতো তারাই অ্যাক্সিডেন্ট করত৷ একটা রোগীকে বাঁচাতে গিয়ে অনেক জনকে মেরে ফেলতাম কারণ সময়ের মধ্যে যেতে হবে। আর কিছু সুপার কার ছিল সেগুলো প্রচণ্ড গতিতে চালানো যেত। ওগুলো নিয়ে চোখের পলকে পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়া যেত। পুলিশের সামনে যদি কাউকে মারা যায় তাহলে তখনই একটা কেস হয়ে যায়। আর পুলিশের গাড়ি নিয়ে নিলে পুলিশ মামা পিছুই ছাড়ে না । মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে পুলিশের গাড়ি কেড়ে নিয়ে পুলিশকে পিছে পিছে নিয়ে ঘুরতাম।
যখন অতিরিক্ত কেস হয়ে যেত তখন চারদিক থেকে পুলিশ আসতো আর হেলিকপ্টার থেকেও গুলি করতো। তখন অবশ্য একটা বুদ্ধি ছিল। অনেক গুলো চিটকোড মুখস্ত করে রেখেছিলাম। যেগুলো ব্যবহার করে সহজেই পুলিশকে বোকা বানিয়ে কেস রিমুভ করা যেত। শুধু কেস রিমুভ না। পানির উপর দিয়ে গাড়ি চালানো, ট্যাংক নামানো, ভারি অস্ত্র আর আনলিমিটেড অ্যামো, গাড়ি উরিয়ে নিয়ে যাওয়া । এছাড়া বিভিন্ন রকমের সুবিধা ছিল যেগুলো চিট কোড ব্যবহার করলে পাওয়া যেত। গাড়ি কিছুক্ষণ চালালে তো গাড়ির অবস্থা বারোটা বেজে যেত। একটা চিটকোড ছিল যেটা দিয়ে গাড়ি ও নতুন করে ফেলা যেত। আমি কিছু চিটকোড শেয়ার করছি আপনাদের সাথে।
- FIGHTFIGHTFIGHT
- LEAVEMEALONE
- CATSANDDOGS
- NUTTERTOOLS
- PANZER
- COMEFLYWITHME
FIGHTFIGHTFIGHT চিট কোড টা ব্যবহার করলে দেখবেন সবার মধ্যে গ্যাঞ্জাম লেগে গেছে। আপনার আশেপাশের সবাই মারামারি করছে নিজেদের মধ্যে। খুব মজার এটি। লিভ মি এলোন (LEAVEMEALONE) কোডটা ব্যবহার করলে দেখবেন যতগুলো কেস ছিল সব রিমুভ হয়ে গেছে। পুলিশ মামুকে বোকা বানানোর দারুন একটা কোড। CATSANDDOGS কোডটি ইউজ করলে দেখবেন আশেপাশের পরিবেশ চেঞ্জ হয়ে গেছে। দুর্যোগপূর্ণ একটা পরিবেশ বিরাজ করছে চারিদিকে। এটা বেশ ভালই লাগে। এরপর NUTTERTOOLS কোড ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভারী ভারী অস্ত্র অটোমেটিক আপনার কাছে চলে আসবে। এরপর PANZER কোডটি ব্যবহার করলে ভারি ট্যাংক নামবে । সেটা দিয়ে আপনি ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারবেন। আর এরপর আসে COMEFLYWITHME, এটা অনেক মজাদার একটি চিট কোড। এটা ব্যবহার করলে আপনার গাড়ি আকাশে উড়বে।
আরো অনেক অনেক চিটকোড আছে প্রায় ১০০ এর উপরে সম্ভবত, আমার সঠিক জানা নেই। আমি ওইসময় চিট কোড গুলো খাতায় লেখা রাখতাম। অনেকগুলো মুখস্থ ও ছিল। এখন সব মনে নেই। যেগুলো মাথায় ছিল সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। যাইহোক ওই দিনগুলো আসলেই অনেক সুন্দর ছিলো৷ নিশ্চিন্তে গেম খেলতাম ঘন্টার পর ঘন্টা। নিজের একটা কল্পনার জগত ছিল গেমের মধ্যে। অনেক ভালো লাগতো। আচ্ছা, আজ তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আসলে ভাই ভাইস সিটি গেমটি খুবই পপুলার ছিল। আমিও খেলেছি, তবে এই গেমের একটা রুগীকে বাঁচানোর জন্য অনেক মানুষকে মারা হতো, বিষয়গুলো সত্যি অসাধারণ ছিল। আজকে আমাদের সাথে খুবই সুন্দর হবে গেমটি নিয়ে আলোচনা করলেন ভালো লাগলো।
ভাই এই পোস্ট পরে যেমন হাসি পেয়েছে তেমনি কিছু স্মৃতি ও মনে পরে গেলো। কতো বার যে স্কুল ফাকি দিয়ে সাইবার ক্যাফে গিয়ে এই গেম খেলেছি তা বলার বাহিরে। এতো ভালো লাগতো আমার কাছে এই গেম। অনেক মার খেয়েছি। এক রুগি বাঁচাতে যেয়ে সুস্থ মানুষ মেরে দিতেন হাহাহাহা। এটা পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ।
ছোটবেলায় গেম খেলার প্রতি আমারও অনেক আসক্তি ছিল। তবে এই ধরনের গেম খেলা হয়নি কখনো। একজন রোগীকে বাঁচাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত অনেকেই মেরে ফেলতেন। পুরো গেম প্ল্যানিং গুলো খুবই ইন্টারেস্টিং লেগেছে। সবচেয়ে মজা লেগেছে পুলিশকে বোকা বানানোর ব্যাপারটি। এই ধরনের গেম যেহেতু কখনো খেলা হয়নি তাই খুব একটা আইডিয়া নেই। তবে আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ মজা পেয়েছি ভাইয়া।
ভাইসিটি গেমের খুব নাম শুনেছি এক সময়। তবে কখনো খেলার সৌভাগ্য হয়নি। আমার এক স্টুডেন্ট বলতো এই গেমের কথা। সে তার কম্পিউটারে এই গেম খেলতো। আমার কোনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ না থাকায় সেই সময়ে এই গেম আর খেলার সুযোগ হয়নি।
2011 প্রথম কম্পিউটার শেখার পরে ২০১৪ থেকে নিজের ল্যাপটপ কিনে ফেলেছিলাম । তবে একটা বিষয় যা কখনো আকর্ষন করেনি তা হলো কম্পিউটার গেম । মনে হয় তখন অনেকটা বড় হয়ে গেছিলাম। আমার ল্যাপটপে আমার ছোট ভায়েরা খেলা করতো অথচ আমি কখনো টাচ করেও দেখিনি । এখন গেম নিয়ে যা কিছু শুনি অথবা পড়ি এগুলো সব সময় আমার মাথার উপর দিয়েই যায় । তবুও আপনার লেখা পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম ।
ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ভাইস সিটি গেম খুব পপুলার ছিল, সবাই এই গেমটি খেলার জন্য পাগল ছিল। আমি খেলিনি তবে আমার বন্ধু টাকা দিয়ে কম্পিউটার দোকানে গিয়ে গেম খেলতে। যাই হোক আপনি সোহাগ ভাইয়ের বাড়িতে এসে গেমটি খেলতেন।১০/১৫ মিনিট করে করে ঘন্টার পর ঘন্টা এভাবে খেলতেন। সেই দিন গুলো খুবই আনন্দের ছিল। ভাল লাগলো আজকের পোস্টটি পড়ে।
Hello friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
কেনো জানি মনে হচ্ছে এই গেমসটা আমি প্লেস্টেসন এ খেলেছি।যদিও ঠিক সবটা মনে নেই।
মানুষ স্বাদে কি আর পুলিশের অভ্যাস খারাপ বলে।😜
ভাইয়া আপনার ক্লাস নাইনের বছরটা অনেক আনন্দেই কেটেছে। ভাইসিটি গেইম খেলে ভালই মজা করেছেন। কিন্তুু যে দোকান থেকে অস্ত্র কিনতেন সেই অস্ত্র দিয়ে আবার দোকানদারকেই মেরে ফেলেতেন, এটা তো ঠিক হলো না। আবার একজন রুগিকে বাচাতে গিয়ে শত শত মানুষকে একসিডেন্ট করে ফেলতেন হা হা হা। পোষ্টটি পড়ে মজা পেলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইস সিটি গেম আমারো অন্রক পছন্দের ছিল।আমাদেত হাই স্কুলে কম্পিউটার ল্যাবে একটা ল্যাপটপ ছিল ওটাতে জানিনা কেনো গেইম টা রাখা হয়েছিল।আমাদের ক্যাপ্টেন ক্লাস এর জন্য ল্যাব থেকে মাঝে মধ্যেই আনতো আমরা ক্লাস না করে গেইম খেলতাম।অসাধারন লাগতো।