জি,পি (জেনারেল প্র্যাকটিশনার) সম্পর্কে সাধারণ ধারণা , শেষ পর্ব
আসসালামুআলাইকুম,
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।গত পর্বে ইংল্যান্ডে জি,পি সম্পর্কে প্রথম পর্ব নিয়ে একটি আলোচনা করেছিলাম।আজকে তার শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম।আজকে আবারও মনে করিয়ে দিলাম , আমাদের শরীরের যেকোন রকমের সমস্যা দেখা দিলে প্রথমে আমরা যাদের কাছে যাই তাদেরকে জি পি বলা হয়।এই দেশে ডাক্তারের পরিবর্তে জি পি শব্দটি ব্যবহৃত হয় যা এন, এইচ, এস (NHS) অর্থাৎ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর অন্তুর্ভুক্ত যা পুরোপুরি সরকারের আন্ডারে।তবে হাসপাতালের ডাক্তারদের কে আপনি জি পি বলতে পারবেন না, তাদেরকে ডাক্তারই বলতে হবে।যাই হোক আজকে জি পি এর বাকি ধারণাটুকু আপনাদেরকে দেব, আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূলপর্বে।
আমাদের লোকাল জি পি সেন্টার
আগেই বলেছিলাম প্রাথমিকভাবে আমাদের শরীরের কোন সমস্যা দেখা দিলে প্রথমেই জি পির কাছে যাই।এরপর অবস্থা গুরুতর হলে জি পি হসপিটালে রেফার করেন। আর এখানে আপনি যে এলাকার জিপির সাথে নাম রেজিস্টার করেছেন সেই এলাকার জিপির কাছেই আপনাকে প্রথমে যেতে হবে, অন্য এলাকার জিপি আপনাকে দেখবে না। তাই আপনি যদি কোন এলাকায় টেম্পোরারি বা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমে জিপির খাতায় নাম রেজিস্টার করতে হবে।তা না হলে হঠাৎ আপনার শরীরের কোন সমস্যা দেখা দিলে আপনাকে জি পি দেখবে না, তখন হসপিটালে যেতে হবে কোন গুরুতর সমস্যা ছাড়াই। রেজিস্টারের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট থাকলে তা দেখাতে হবে, না থাকলে অন্যান্য কিছু কাগজপত্র দেখাতে হবে।এদেশের নাগরিক অথবা লিগ্যাল ভাবে বসবাস করছেন কিনা তা প্রমান করতে হবে। সব কিছু ঠিকঠাক দেখাতে পারলে আপনার নাম জিপির খাতায় উঠে যাবে।
আমাদের লোকাল জি পি সেন্টার
জিপির খাতায় নাম ওঠার পরে প্রত্যেকের নামে একটি করে প্রোফাইল সেট করে রাখা হয়, যেখানে তার যাবতীয় তথ্যাদি সেভ করে রাখা হয়, যেমন নাম, ডেট অফ বার্থ, নাগরিকত্ব, ঠিকানা। এমনকি কবে, কখন কোন জি পি আপনাকে দেখেছে, কি ওষুধ দিয়েছে, রুগীর যাবতীয় হিস্টরি সেখানে সেভ করা থাকে। তাই জিপি এর কাছে গেলে জি পি প্রথমেই নাম ও ডেট অফ বার্থ জিজ্ঞেস করে রুগীর প্রোফাইলে ঢুকে যান। এরপর যে সমস্যা হয় তা শুনে প্রেসক্রিপশন করে দেন এবং তা প্রোফাইলে আবার সেভ করে রাখেন, যেন পরবর্তীতে আবার অন্য কোন জিপি এর কাছে গেলে তার কোন সমস্যা না হয় রুগীর পুর্বের হিসটোরি খুঁজে বের করতে।আরেকটি সুবিধা হচ্ছে তাদের নিজস্ব একটি অ্যাপস আছে, ঐ অ্যাপস এর মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোফাইলে ঢুকতে পারবেন।কোন ওষুধ লাগলে আপনি ওইখানে অর্ডার করতে পারবেন অথবা কোন কিছু জানতে হলে কমেন্টস করে জি পি কে জানাতে পারবেন, জি পি ও রিপ্লাই দিয়ে দেন। ওষুধ অর্ডার করলে বাসায় ডেলিভারি দিয়ে যায়। আপনি যদি ফ্রি ওষুধ পেয়ে থাকেন তবে কোনো পয়সা লাগবে না, আর ফ্রি না হলে ঐ অ্যাপসে আপনার ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ড এড করতে হবে পেমেন্ট এর জন্য। এক্ষেত্রে যাদের প্রতি মাসে ওষুধ লাগে সেক্ষেত্রে অ্যাপসগুলো ওষুধ শেষ হওয়ার দশ দিন আগে থেকেই ওয়ার্নিং দিতে থাকে, " আর দশ দিনের মধ্যেই আপনার ওষুধ শেষ হয়ে যাবে, এখনই অর্ডার করুন"। কত সুবিধা দেখুন ঘরে বসেই আপনার কাঙ্খিত ওষুধগুলো পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যেগুলো বেশি দরকারি বা ফ্রিজে যে সকল ওষুধ রাখতে হয় তার জন্য আপনাকে অবশ্যই ফার্মেসীতে গিয়ে সাথে সাথেই আনতে হবে, কারণ ডেলিভারি দিতে দুই-এক দিন সময় লাগে।
বন্ধুরা আশা করছি আমার এই দুই পর্বের ধারাবাহিক পোস্ট টি পড়ে এদেশের জিপি এবং ওষুধ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। আরও কিছু জানতে চাইলে অবশ্যই আমাকে কমেন্টস এর মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করতে পারবেন।
Photographer | @tangera |
---|---|
Device | I phone 13 Pro Max |
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।
পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR

হাসপাতালের ডাক্তারদের জিপি বলা যাবে না বেশ কঠোর নিয়ম মনে হচ্ছে। এছাড়া জিপির খাতায় আগে থেকে নাম রেজিস্টার করা থাকতে হবে না হলে জিপি দেখবে না। অর্থাৎ যে কেউ হঠাৎ এসেই জিপিকে দেখাতে পারবে না। বেশ দারুণ লাগল ওখানকার চিকিৎসার পুরো সিস্টেম টা।।
জিপি শুধু নরমাল রোগী গুলো দেখে থাকেন, আর হাসপাতালে ডক্টররা সিরিয়াস রোগী গুলো দেখে থাকেন এটাই হল পার্থক্য। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ার জন্য।
আসলে আমি তো আগের পর্ব টি পড়ি নি ৷ তবে লন্ডনের নিয়ম কানুন বেশ আলাদা ৷ প্রতিটি লাইন বেশ ভালো ভাবে পড়লাম ৷
ওই দিকের চিকিৎসা নিয়মটা ভালো লাগলো ৷ মানে যে এলাকাতে বাস করেন ৷ সে এলাকার জি পি কে দেখাতে হবে ৷
ঠিক তাই, যে এলাকায় বসবাস করবেন সেই এলাকার জিপির কাছেই আপনাকে যেতে হবে আগে, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমরা বাংলাদেশে তাদেরকে ডাক্তার বলি আপনাদের ওইখানে ডাক্তারকে জিপি বলা হয়। এর আগের পর্বটাও আমি পড়েছিলাম। দেখছি অনেক বেশি সুবিধা। প্রথমেই রেজিস্ট্রেটের খাতায় নিজের নাম পরিচয় দিয়ে রেজিস্টার করতে হয়। বাহ আমার দেখছি নিজস্ব অ্যাপস রয়েছে। যার মাধ্যমে ওষুধ অর্ডার করতে পারেন। আবার ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ার আগে থেকেই সিগনাল দিতে থাকে। অনেক সুবিধা দেখছি। আপনার পোস্টগুলো পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারছি। যা আগে কখনো জানতাম না।
অনেক ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
আপনার প্রথম পর্বটি আমি দেখেছি আপু। আজকে আবার ** জি,পি (জেনারেল প্র্যাকটিশনার) সম্পর্কে সাধারণ ধারণা** সম্পর্কে শেষ পর্বটি দেখলাম। যাইহোক সবমিলিয়ে আমাদের বাংলাদেশ আর ইংল্যান্ড এর মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আকাশ পাতাল তফাৎ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া নিয়মিত আমার পোস্টগুলো পড়ার জন্য।