জেনারেল রাইটিংঃবিষন্নতা ।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
কেমন আছেন সবাই ? আশাকরি ভালো আছেন। প্রত্যাশা করি সবসময় যেনো ভালো থাকেন। আজ ৪ঠা মাঘ,শীতকাল ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১৮ ই জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি জেনারেল রাইটিং আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
হাড়কাঁপানো শীত যাকে বলে, এবার তেমন শীত নেই বললেই চলে। মাঘ মাস চলছে, কিন্তু শীতের তীব্রতা নেই। এই সময়ে যে ধরনের তাপমাত্রা বিরাজ করে, তার চেয়ে ৩/৪ ডিগ্রী তাপমাত্রা বেশী দেশের বিভিন্ন জায়গায়, বলছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে আবহাওয়াবিদদের মতে, এমাসেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে। তখন রাতের তাপমাত্রা বেশ কমতে পারে। আবহাওয়ার বিরুপ প্রক্রিয়া আমাদের ঋতু বৈচিত্র্য ছন্দপতন ঘটিয়ে চলছে। পৃথিবী দিন দিন উষ্ণ হয়ে যাচ্ছে, তারেই লক্ষন দেখছি আমরা। বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো। আশাকরি বরাবরের মত সাথেই থাকবেন। শিরোনাম দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, আজকের জেনারেল রাইটিং এর বিষয়। হ্যাঁ বন্ধুরা, আজকের বিষয় "বিষন্নতা "।
মানুষের জীবন সমান্তরালে চলে না! উঠা নামা আছে। নানা বাঁক আছে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হয়। মানুষের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কত কিছুই ঘটে। আনন্দ -বেদনা, হাসি-কান্না, শারীরিক সুস্থতা -অসুস্থতা,ভালো লাগা- মন্দ লাগা প্রভৃতি হাত ধরাধরি করে চলে। যেন এই রোদ এই বৃষ্টি। অনেক কারনেই মানুষ অসন্তুষ্টিতে ভোগেন,একাকিত্বে ভোগেন, কোন কারনে প্রচন্ড শকট হয়ে যায়, স্বাভাবিক হতে পারে না! চেহারার চিন্তার ছাপ, নিজেকে একা ভাবে - গুটিয়ে নেয়। হতাশায় নিমজ্জিত হয়। এ ধরণের মানুষরাই বিষন্নতায় ভুগছেন। তার চেহারায় বিষন্নতার ছাপ ফুটে উঠে। আমরা অনেকেই ধরতে পেয়ে বলি, তোকে আজ বিষন্ন দেখাচ্ছে!!
কোন কারনে মানুষ বিষন্ন হতেই পারে। তবে এই বিষন্নতা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলেই ব্যাপারটি ভয়ের। বিষন্নতা একপ্রকার মানসিক রোগ। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে শেষ পরিনতি হতে পারে আত্মহত্যা!! আত্মহত্যাকারিরা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই বিষন্নতায় ভুগে থাকেন। হঠাৎ করে কিন্তু একজন মানুষ আত্মহত্যা করে না, করতে পারে না! দীর্ঘ সময় ধরে বিষন্নতা ভোগেন আত্মহননকারি ব্যক্তি।
আপনারা জানেন, আমি একসময় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। আমাদের কাজ ছিল পথ শিশুদের নিয়ে। খুব কাছ থেকে দেখেছি অনেক বিষন্ন শিশুকে। বাবা-মার পৃথক হওয়া, অভাব, নির্যাতন-নিপীড়ন, হারিয়ে যাওয়া, চোখের সামনে দূর্ঘটনা দেখতে পাওয়া, নিজেকে বঞ্চিত মনে করা,স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসায় ঘটে যাওয়া ঘটনা,পারিবারিক - আর্থিক কারণ ও কর্ম পরিবেশ সহ অনেক কিছুই একজন মানুষের বিষন্নতার কারন।
বিষন্নতার শিকার ব্যক্তি বেশির ভাগ সময় মন খারাপ করে থাকে। কোন কিছুই তাদের ভালো লাগেনা। অনিদ্রা,খাওয়ার অরুচি,শরীরের হঠাৎ ওজন কমে বা বেড়ে যাওয়া, তারা কোন কাজে মন বসাতে পারে না। অস্থির, খিটমিটে মেজাজ, অল্পতে রেগে যায় তারা। শারীরিক ভাবে দূর্বল হয়ে পড়ে- চিন্তাশক্তি লোপ পায়। সর্বপরি আত্নহত্যার চিন্তা করতে থাকে। তারা ভাবে আমার কেউ নেই। এই পৃথিবীতে বেঁচে থেকে কি লাভ!!
আগেই বলেছি, বিষণ্ণতা একটি মানসিক রোগ। এই রোগ প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্ভব। যথাযথ পদক্ষেপ ও চিকিৎসায় এই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।ঘরোয়া ভাবেই এই রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। যদি নিয়মিত ঘুমানো ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে। নিয়মিত যোগব্যায়াম-হাটাহাটি করে থাকে।নিজেকে যদি কাজের সাথে যুক্ত করে , একা ফিল করতে না দিয়ে মানুষের সাথে বেশি করে মিশতে পারে, হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারে তাহলেই সম্ভব । এজন্য আপনজনদের ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিষন্নতা শিকার ব্যক্তির পাশে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই বিষন্নতা কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যাবে একজন মানুষ। তাতেও না হলে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞর শরণাপন্ন হওয়া খুব জরুরি।
আমাদের সমাজ বাস্তবতায় শিশু-কিশোর ও নারীরা বিষন্নতার শিকার বেশি হয়ে থাকে।এ ব্যাপারে৷ সজাগ থাকতে হবে। আসুন বিষন্নতা মুক্ত পরিবার ও সমাজ গড়ে তুলি।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
বিষন্নতা প্রাথমিক ভাবে তেমন সমস্যা মনে না হলেও, দীর্ঘস্থায়ী বিষন্নতা মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে। এমনকি এটা মারাত্মক শারীরিক জটিলতার দিকে যেতে পারে। এরকম বিষন্নতা দেখা দিলে প্রথমেই এর কারন সমূহ বের করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। যাইহোক আপনি বেশ গুছিয়ে চমৎকার পোস্ট উপহার দিয়েছেন আপু।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু বিষন্নতা অনেক খারাপ জিনিস। তবে আমাদের সবার উচিত এই বিষন্নতা থেকে সব সময় দূরে থাকে। বেশ ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে শিক্ষা মূলক একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বিষন্নতা সত্যিই একটি গুরুতর মানসিক সমস্যা, যা অনেক সময় আমাদের অজান্তেই আমাদের জীবনে প্রবাহিত হয়ে থাকে। এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। এই বিষন্নতা প্রতিরোধ এবং প্রতিকার খুবই জরুরি। পরিবার ও সমাজের সমর্থন, ভালোবাসা এবং সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে একজন ব্যক্তি এই অবস্থার সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হতে পারে।মূল্যবান এই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Daily task
আপনার এই কথাটি আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে বিষন্নতা আসলে একটা মানসিক রোগ। এই রোগ যখন দীর্ঘস্থায়ী হয় তখন একটা মানুষের একদম ভয়ানক পরিস্থিতির শিকার হয়ে যায়। একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক লেখা লিখেছেন। আপনার এই পোস্টটি পড়ে অনেকে অনেক কিছু জানতে পারবে।
বিষন্নতা মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিতে পারে। তাই এর দ্রুত ট্রিট্মেন্ট করা দরকার। ধন্যবাদ আপু।
https://x.com/selina_akh/status/1880670054997766421
বিষন্নতা একটি মানসিক ব্যধি।এই ব্যধি দীর্ঘস্থায়ী হলে একজন মানুষের নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে।এটা মোটেই কাম্য নয়।আমাদের সবার উচিত বিষন্নতাকে কাটিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা।ধন্যবাদ আপু চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
অনেক সময় আমরা বিষন্নতাকে তেমন পাত্তা দেই না। তখনই খারাপ কিছু হয়। তাই দ্রুত এর সমাধান করা দরকার। ধন্যবাদ আপু।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্ট আজ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বিষন্নতা একটি জটিল সমস্যা। আর এই সমস্যা থেকে মানুষ আস্তে আস্তে গভীর ডিপ্রেশনে চলে যায়। পরবর্তীতে এক সময় এটা মানসিক রোগ সমস্যা ধারণ করে।আসলে আপু অনেক সময় মানসিক সমস্যাগুলো ধরা যায় না। তবে এ সমস্যাগুলোকে প্রশ্রয়দিয়েদিয়ে ভালো থাকতে হলে এ সমাধান খুঁজে বের করা দরকার। আর তার পাশাপাশি একজন ভালো চিকিৎসকের সাথে কনসাল্ট করা দরকার।
ঠিক তাই দ্রুত পদক্ষেপ নিলে বিষন্নতার সমাধান করা সম্ভব। ধন্যবাদ আপু।