জেনারেল রাইটিংঃবাংলাদেশ রেলওয়ে ও যাত্রীসেবা।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।প্রত্যাশা করি সবাই সবসময় ভালো থাকেন,নিরাপদে থাকেন। আজ ১২ই মাঘ ,শীতকাল,১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি জেনারেল রাইটিং আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
গ্রামে এসেছি। শীত একটু বেশি। তবে গতকালের চেয়ে আজ একটু কম। সব মিলে অনেকদিন পর এসে ভালোই লাগছে। বন্ধুরা, রেল পথে যাত্রি সেবা নিয়ে আজকে আমার জেনারেল রাইটিং। মানুষের যাতায়াতের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম রেল পথ। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-পঞ্চগড় বা চিলাহাটি বা রংপুর বা কুড়িগ্রাম বা লালমনিরহাট রুটে ট্রেনের যাত্রি সেবা নিয়েই আমার আজকের লেখা। আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।
কাছে বা দূর যাত্রায় আনন্দদায়ক ও নিরাপদ যাত্রা ট্রেন যাত্রা। অধিকাংশ যাত্রীর প্রথম পছন্দ রেল পথ। ট্রেন যাত্রা এত জনপ্রিয় যে চাইলে আপনি টেকেট পাবেন না। আগেই প্ল্যান করে টিকেট করতে হয়। আগে অধিকাংশ টিকেট কালোবাজারিদের হাতে চলে যেত। বিভিন্ন উদ্যোগের কারনে সেটা কিছুটা রোধ করা সম্ভব হলেও পুরোপুরি এখনো হয়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চেকিং এর ব্যাপারে আরো বেশি তৎপর ও প্রযুক্তি নির্ভর হতে হরে। কালোবাজারি থেকে টিকেট কিনে যারা রেল ভ্রমণ করেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত রেল আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে।বর্তমানে কালোবাজারিতে টিকেট কিনে যারা ট্রেন ভ্রমণ করেন তাদের সনাক্ত করা কিন্তু এখন অনেক সহজ। যেহেতু টিকেটে এন আই ডি নাম্বার ও মোবাইল নাম্বার উল্লেখ থাকে। শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার কার্যকর করলেই ট্রেনের কালোবাজারি টিকেট রোধ পুরাপুরি সম্ভব হবে এবং যাত্রিরা ট্রেনের টিকেট না পাওয়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে কিন্তু আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রেলপথে যাত্রী সেবা যখন দিন দিন উন্নতি হচ্ছে আর আমরা পিছিয়ে পড়ছি। উপরে উল্লেখিত রুটে যদি কেউ ট্রেন ভ্রমণ করে থাকেন, দেখবেন ট্রেনের বগি ময়লা-অপরিস্কার বসার সিট বা সিটের হাতল ভাঙ্গা। বগিতে ময়লা ফেলার বিন নেই। টয়লেট অপরিস্কার,টিসু-সাবান থাকে না! কখনো কখনো পানিও থাকে না! প্রতিবার ট্রেন ভ্রমণের সময় আমি ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ডকে অবহিত করি। তখন কিছুটা সমাধান পাওয়া যায়। কিন্তু কথা হচ্ছে তাদের অবহিত করতে হবে কেন? রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোন হেলদোল নেই! নন এসিতে প্রচুর স্টান্ডিং যাত্রি ।কখনো কখনো এসি বগিতেও স্টান্ডিং যাত্রি, হাটাচলা করাই মুশকিল হয়ে যায়!! এছাড়া টয়লেটের আশেপাশের ফাঁকা জায়গায়ও স্টান্ডিং যাত্রিতে ভরা থাকে,টয়লেটে যেতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ ব্যাপারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোন হেলদোল নেই! যাত্রি সেবার ব্যাপারে তাদের নুন্যতম মনোযোগ নেই। অথচ যাত্রী অধিকার সেবা পাওয়া।
এছাড়া ট্রেন লেটের কথা নাই বা বললাম! গত ২৪ জানুয়ারি একতা এক্সপ্রেস ট্রেন,ঢাকার কমলাপুর রেল ষ্টেশন যথাসময়ে ছেড়েও প্রায় ৩ ঘণ্টা লেটে আমার গন্তব্য পার্বতীপুরে এসে পৌঁছাতে পেরিছি। এছাড়া ট্রেনের খাবারের মান যাচ্ছে তাই! নন এসি বগির মোবাইল চার্জার পয়ন্ট গুলো নষ্ট। এসি বগিতে মোবাইল চার্জ দিতে মানুষ চলে আসে। একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা। আনন্দময় ট্রেন ভ্রমণ সব মিলে নিরানন্দ হয়ে উঠে।ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম রুটের ট্রেনের সাথে দেশের উপরে উল্লেখিত রুটের তুলনা করলে আকাশ পাতাল তফাৎ! অথচ সরকার ঘোষিত মূল্যে টিকেট কেটে যাত্রিরা ট্রেন ভ্রমণ করে। এক দেশে দুই নিয়ম থাকতে পারে না। চলতে পারে না!! এই বৈষম্য রোধ করা এখনেই দরকার। ট্রেনের টিকেট পাওয়া যায় না! তারপরেও ট্রেন নাকি লোকসানি খাত!! ভাবতেই অবাক লাগে কি ধরণের অপেশাদার আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
আনন্দময় ও নিরাপদ ট্রেন ভ্রমণ এভাবে চলতে থাকলে আমার আস্থার রেলপথ ভ্রমণ একদিন যাত্রীদের আস্থা হারিয়ে ফেলবেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সময় থাকতে এখনেই যাত্রী সেবার দিকে পদক্ষেপ না নিলে যাত্রীদের রেলপথের উপর আস্থা হারাতে আর বেশি দিন সময় লাগবে না!!যাত্রীসেবার মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশাকরি।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
Daily task
https://x.com/selina_akh/status/1883567280052990198
সত্যিই দেশের ঢাকা- চট্টগ্রাম রুট আর ঢাকা-পার্বতিপুর/লালমনিরহাট/ রংপুর রুটের ট্রেনে সেবার মানের অনেক বেশি পার্থক্য চোখে পরে! কতৃপক্ষের কোনো হেল-দোল নেই এসব নিয়ে। আর লেট এর কথাও তো না ই বলি। নন-এসি বগিতে হকারদের অবাধ বিচরণ ও বেশ অস্বস্তিকর! এসব কারণে আমি বাসেই জার্নি প্রেফার করি।
বাস জার্নি করতে পারি না আপু। তাই সকল কিছু সহ্য করে ট্রেনেই যাতায়ত করতে হয়। ধন্যবাদ আপু।
বিশেষ করে আমাদের দেশের রেলওয়ে সিডিউল সিস্টেম টি একদম বাজে অবস্থা। আমাদের দেশের ট্রেন গুলো সময় মতো উপস্থিত হতে পারেন না। এছাড়া ও আমাদের দেশের ট্রেন গুলো খুব একটা উন্নত প্রযুক্তির নয়। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য সব দেশের ট্রেন গুলো একদম উন্নত মানের।
ঠিক তাই ট্রেনের সেবার মান খুবই বাজে। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।
ট্রেন যাএা আমার নিজেরও খুব পছন্দ। এর অবশ্য বেশ কয়েকটা কারণ আছে। তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের অবস্থা খুবই বাজে। এরমধ্যে আপনি কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন। ট্রেন লেট করে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আর ট্রেনের খাবারের কথা আর বললাম না। যাকে বলে দামে ভালো মানে অখাদ্য হা হা। আর টিকিট ছাড়া যাএী তো আছেই।
ঠিক তাই। আর আমারও ট্রেন জার্নি পছন্দ ।কিছু কারনে। বাস জার্নি ভালো লাগে না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ট্রেনে ভ্রমণ করার মধ্যে একটি আলাদা ভালোলাগা থাকে৷ আমি ট্রেনে ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি৷ তবে ট্রেনের যে ব্যবস্থাপনা রয়েছে সেগুলো একেবারেই খারাপ অবস্থা ৷ আমরা যখন কক্সবাজারে যাচ্ছিলাম তখন সেখানে ট্রেনে আসার কথা একসময়৷ তবে সেই ট্রেন কয়েক ঘন্টা লেট করে এসেছিল৷ যা একেবারেই অপ্রীতিকর একটি ঘটনা৷ এগুলোর কারণে প্রতিনিয়ত মানুষজন অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছে৷
কেবল ঢাকা চট্টগ্রাম ট্রেন জার্নি আরামদায়ক। আর সব লাইনের ট্রেনের একই অবস্থা।