জেনারেল রাইটিংঃ ঢাকার বায়ূ দূষণ।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।প্রত্যাশা করি সবাই সবসময় ভালো থাকেন,নিরাপদে থাকেন। আজ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,হেমন্তকাল। ১১ ই ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ । আজ একটি জেনারেল রাইটিং আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
সারাদেশেই মোটামুটি শীত প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকা শহরও শীতের বাইরে নেই। গত ৩/৪ দিন থেকে শীত অনুভূত হচ্ছে। আর শীত আসলেই ঢাকার বাতাসের বারোটা বেজে যায়। বাতাস হয়ে উঠে মানুষের শ্বাস নেওয়ার অনুপযোগি। প্রিয় বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ বায়ূ দূষণ নিয়েই আমার জেনারেল রাইটিং। এই আর্টিকেলটি লেখার আগে একটু পড়াশুনা করতে যেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম, শুধু মাত্র বায়ূ দূষণের কারণে সারা বিশ্বে প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।আর এই ৭০ লাখের বেশির ভাগ মানুষেই উন্নয়নশীল দেশ গুলোর। উন্নত দেশ গুলো বায়ূ দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ায় তারা সুফল পাচ্ছে। যত বিপদ আমাদের।
বিশ্বের বড় বড় শহর গুলোর মধ্যে বরাবরেই দূষিত বাতাসের শহর গুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা। কিন্তু শীত আসলেই শীর্ষস্থান অধিকার করে থাকেন। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার স্থান দ্বিতীয়। এ সময়টা ১ থেকে ১০ এর মধ্যে অবস্থান থাকবে বরাবরেই। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর অনুযায়ি আজ ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। স্কোর অনুযায়ি যা অস্বাস্থ্যকর। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগি নয়। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। স্বাস্থ্য বিষেযজ্ঞরা এ সময়ে মাস্ক পরে ঘরের বাইরে বের হতে জনসাধারণকে পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশে একটি সমীক্ষার রিপোর্টে জানা গেছে ১৫ বছর আগেও শ্বাসকষ্ট রোগির সংখ্যা ছিল অনেক কম। বর্তমানে সে সময়ের তুলনায় এখন কয়েক গুণ রোগী বেশি। বায়ূ দূষণের শিকার সবচেয়ে বেশী হয়ে থাকে শিশু ও বয়স্করা। এছাড়া বায়ুদূষণের কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপায় কি বায়ূ দূষণ থেকে বাঁচার? সহজ কথা নির্মল বায়ূর ব্যবস্থা। বায়ূ বা বাতাস যাতে দূষিত হতে না পারে তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। এটা একমাত্র করতে পারে সরকার। শুধু লোক দেখানো কার্যক্রম না যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে। এবং নাগরিক হিসেবে দায় আমাদেরও আছে। বায়ূ দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে আমাদের একটি আইন আছে। কিন্ত বাস্তবে এর প্রযোগ নেই। যদি প্রয়োগ থাকতো তাহলে শীতকালে বায়ূ দূষণের অন্যতম প্রধান যে কারণ ইট ভাটা । সেই ইটভাটা যত্রতত্র তৈরি হত না। ঢাকার চারিপাশে ইট ভাটা দিয়ে ঘেরা। এছাড়া শিল্প-কল-কারখানা গুলো চলছে অইনের তোয়াক্কা না করে। আর অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকান্ড ধুলো-বালির নগরে পরিনত করেছে ঢাকা শহরকে, যা বায়ূদূষণের কারণ। এছাড়া বড় বড় গাছ পালা না থাকা ও জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলেও বায়ূ দূষণ হচ্ছে। শীতকালে কেন ঢাকা শহরের বায়ূ অস্বাস্থ্যকর একটি উদাহরণ দিয়ে আমার আজকের লেখা শেষ করবো।
শীত মানেই পিঠা-পুলির উৎসব। এসময়ে ঢাকা শহরের রাজপথ থেকে অলি গলি হাজারে হাজারে পিঠার অস্থায়ী দোকান। শুধু পিঠা না মাছ ও মাংসের কাবারের দোকানও আছে। এসব দোকানে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ ও কয়লা।কাঠ ও কয়লার ধোঁয়ায় এখন ঢাকা শহরের অস্থির অবস্থা। অথচ আইন হিসেবে এসব বেআইনী। বন্ধের কোন উদ্যোগ নেই। বরং এসব দোকানে এখন পিঠা-কাবাব খাওয়ার মাধ্যমে শীত উদযাপন হচ্ছে। সরকারের উচিত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে ঢাকার বায়ূ দূষণ রোধ করা। আসুন নাগরিক হিসেবে বায়ূ দূষণ প্রতিরোধে জনমত গড়ে তুলি এবং সরকারকে আইনী প্রয়োগে বাধ্য করি। বায়ূ দূষণের হাত থেকে "ঢাকা"কে বাঁচাই,বাংলাদেশকে বাঁচাই এবং পৃথিবীতে বাঁচাই।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/selina_akh/status/1866821008025588102
daily task
পৃথিবীতে বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা শীর্ষে রয়েছে। তবুও মানুষ রয়েছে একমাত্র পেটের দায়ে। ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে হলে ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলকে অর্থনীতির কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। তাছাড়াও জন সচেতনতা সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে এই ক্ষেত্রে।
ঠিক তাই ভাইয়া ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরনণ ও জন সচেতনতাই পারে এই দূষণ রোধ করতে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ঢাকার যে অবস্থা ধুলাবালির জন্য রাস্তায় বের হওয়ার উপায় নেই। শুধু কী ধুলাবালি সাথে গাড়ির কালো ধোয়া ফ্রি। যেটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর বাংলাদেশে আইনের উদ্যোগ এমনটা ভাবা হয়তো বোকামি।
শুধু আইন করে এই সমস্যার সমাধান হবে না। সেই সাথে দরকার জন সচেতনতা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বায়ু দূষণের কথা আমরা প্রতিনিয়ত শুনে আসছি এবং এই বায়ু দূষণ খুবই খারাপ একটি জিনিস৷ তবে এই বায়ু দূষণ সেই সকল জায়গায় বেশি হয় যে জায়গায় মানুষের সংখ্যা বেশি এবং যানবাহনের সংখ্যা বেশি৷ ঢাকা শহরের কথা তো আর কি বলব৷ সেখানে যে পরিমাণ মানুষ তার চেয়েও বেশি গাড়ি এবং কলকারখানা৷ এর ফলেই পুরো শহর এখন বায়ু দূষণের কাছে হেরে গিয়েছে৷ আজকে আপনি সবকিছু আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷