খেজুরের রস ও নিপা ভাইরাস।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,আশাকরি সবাই ভালো আছেন।সবাই ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি সবসময়। আমিও ভালো আছি। আজ ৪ঠা পৌষ, শীতকাল,১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রীস্টাব্দ।
বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিং এ আজ হাজির হয়েছি সচেতনতামূলক পোস্ট নিয়ে। চলছে শীত কাল। শীতকালে পিঠা পুলি খাওয়ার পাশাপাশি আমরা খেজুরের রস খেতেও বেশ পছন্দ করি। সকাল বেলা এক গ্লাস খেজুরের রস পরম প্রশান্তি একে দেয় শরীর ও মনে। শীতকাল আর খেজুরের রস যেনো একে অন্যের পরিপুরক। তাছাড়া খেজুরের রসে রয়েছে শর্কর ,প্রোটিন ,ফ্যাট ও বিভিন্ন মিনারেল।যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। তাছাড়া খেজুরের রস খেলে প্রচুর এনার্জি পাওয়া যায়। তাই খেজুরের রসকে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংকসও বলা হয়। বাংলাদেশের যশোর জেলায় সব চেয়ে বেশি খেজুরের রস উৎপন্ন হয়। তারপরের স্থান রাজশাহী।
খেজুরের গুড় বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার। পিঠাপুলি তৈরিতে ব্যবহার করা হয় খেজুরের গুড়। খেজুরের গুড়ের পিঠা বেশ সুস্বাদু হয়ে থাকে। আর এই খেজুরের গুড় তৈরি করা হয় খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে। খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয় সারা রাত ধরে। এক বিশেষ পদ্ধতিতে খেজুরের গাছ কাটা হয়। খেজুরের গাছ এই বিশেষ পদ্ধতিতে কাটার জন্য বিশেষ লোকের প্রয়োজন। যারা খেজুর গাছ কাটেন তাদের বলা হয় গাছি। গাছিরাখেজুর গাছ কেটে এমনভাবে মাটির হাড়ি গাছের সাথে বেঁধে দেন যাতে সারা রাতের রস সেই হাড়িতে জমা হতে পারে। পরদিন খুব ভোরে সুর্য উঠার আগেই সেই হাড়ি নামানো হয় গুড় তৈরি করার জন্য বা কাঁচা রস বিক্রি করার জন্য।
আমরা সবাই কম বেশি খেজুরের রস খেয়েছি।আমার বেশ মনে আছে ছোট বেলায় আমাদের যখন বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতো ডিসেম্বর মাসে।তখন পরিবারের সবাই মিলে গ্রামের বাড়ি যেতাম। আব্বা খুব সকালে রস বিক্রেতাকে বাড়িতে নিয়ে আসতেন সকাল সকাল আমাদেরকে খেজুরের রস খাওয়ানোর জন্য। শহরেতো তেমনভাবে আর রস পাওয়া যায় না সেজন্য। আমরা সব কাজিনরা মিলে গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে পরতাম উঠানে সেই রস খাওয়ার জন্য। কি যে আনন্দ হতো।
যে রস আমরা তখন বেশ নিশ্চিন্তে খেতাম, আর এখন সেই রস খাওয়া নিষেধ করছেন পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কেননা এই রসেই পাওয়া গেছে নিপা নামক ভাইরাস। এই ভাইরাস বাদুরের মুখের লালা ও মলমূত্রের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে খেজুরের রসে কিভাবে এলো সেই ভাইরাস ।যেহেতু খেজুর গাছে হাড়ি বেঁধে সারা রাত ধরে রস সংগ্রহ করা হয়। আর সেই হাড়ি খোলা থাকে তখন বাদুর সেই রস যখন খায় তখন বাদুরের লালা থেকে নিপা ভাইরাস রসে মিশে যায় । তাই কাঁচা রস খেলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। তাই কাঁচা খেজুরের রস না খাওয়াই ভালো। তবে জ্বাল দিয়ে গুড় করে খাওয়া যাবে। কিন্তু অনলাইনে অনেকেই নিরাপদ খেজুরের রস বলে বিক্রি করছে। তারা বলছে মশারি দিয়ে হাড়ি ঢেকে দিয়ে তারা খেজুরের রস সংগ্রহ করে। কিন্তু সেই কাঁচা রস ও খেতে নিষেধ করছেন পুষ্টিবিদরা। তাই আমরা নিজের সুস্থ্য রাখতে হলে বা নিপা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে হবে।
আসুন আমরা সবাই নিপা ভাইরাস সম্পর্কে নিজে সচেতন হই।
অন্যকেই সচেতন করি।
কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখি।
অন্যকেও বিরত থাকতে বলি।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
তারিখ | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পাড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শীতের সময় খেজুরের রস খেজুরের গুড় এগুলো সবারই খুবই প্রিয় খাবার। প্রতিবছরই সকালে ঘুম থেকে উঠে খেজুরের রস খাওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু গাছীদের কারণে অনেক সময় অসাবধানতার বসাতে বাদুরের লালা খেজুরের রসে গিয়ে অনেক জায়গা নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে ।সেজন্য এটা সচেতনতামূলক ভাবে খাওয়া উচিত।
https://twitter.com/selina_akh/status/1737159088738611687
গত বছরই খেয়েছি খেজুর রস।তবে নিপা ভাইরাসের উপস্থিতি সামনে আসার পর সচেতন মানুষেরা এই রস খায় না।আর।তবে এখন গাছিরা জাল দিয়ে ঢেকে রাখে খেজুর হাড়ি।খেজুর গুড় খুব মজাদার হয়ে থাকে।আপনার ছোটবেলার খেজুর রস খাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করেছেন বেশ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে আপনার পোস্টটি না পড়লে জানতেই পারতাম না যে এমন ভয়ানক একটি বিষয়। নান বাড়ি যদিও যশোর, তারপরও আমি কিন্তু এখন অবদি জীবনে কোন দিন খেজুরের রস খেয়ে দেখিনি। আশা করবো এখন থেকে খেজুরের খাওয়ার ব্যপারে সবাই বেশ সচেতন থাকবেন। ধন্যবান আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার পোষ্টের টাইটেল পড়তেই কেমন যেন অবাক হলাম, তাই ঝটপট ভিতরে পড়ে ফেললাম।নিপা ভাইরাসের কথা জানা ছিল না, আসলেই খেজুর রস খুবই সুস্বাদু।ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি,আমাদের বাড়ির গাছ আমার বাবা-ই কাটতেন।এখন অবশ্য সবই স্মৃতির মতো আমার কাছে, যাইহোক নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে অবশ্যই এটি এড়িয়ে চলা ভালো।ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপু।