জেনারেল রাইটিং || বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধ করি

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago




হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আপনাদের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক্স নিয়ে আলোচনা করব। আমার আলোচনার বিষয় থাকবে বেপরোয়া গাড়ি চলাচল।


1000006753.jpg




যত দিন যাচ্ছে, তত যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে চলছে। মানুষজন প্রতিনিয়ত ইঞ্জিন চালিত বাইক থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের মোটর চালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়িয়ে চলেছেন। সকলের চান নিজের শখের একটা মোটরসাইকেল আবার অনেকেই চান নিজের ইনকামের সোর্স হিসাবে একটি ইঞ্জিন বা ব্যাটারি চালিত গাড়ি। আর এভাবেই শত শত মানুষের প্রয়োজনে গাড়ি বেড়ে চলেছে এবং রাস্তায় অতিরিক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের দিনের তুলনায় এখন যথেষ্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। রাস্তা অনেক উন্নত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বলতে পারি আলহামদুলিল্লাহ গাড়ি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধি হয়নি মানুষের সচেতনতার বিকাশ। হাই রোডে কিভাবে গাড়ি চলাচল করতে হবে, সেই রুলস মেনে চলার মত মন মানসিকতা সৃষ্টি হয়নি মানুষের। রাস্তায় যদি ১০০% গাড়ি চলাচল করে তার মধ্যে ৯০% মানুষ গাড়ি চলাচলের নিয়মগুলো মান্য করতে চায় না। বড় বড় বাস গুলো দেখা যায় এক কোম্পানির বাসের সাথে অন্য কোম্পানির বাসের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে। কিন্তু তারা কখনো ভুল করে বুঝতে চায়না বাসের মধ্যে থাকা মানুষগুলো একটা একটা জান। তাদের এই বেপরোয়া গাড়ি চালাতে গিয়ে যদি বাই চান্স একটু এক্সিডেন্টের সম্মুখীন হয় তাহলে এতগুলো মানুষের জীবন কোন পর্যায়ে যাবে। যদি বাস উল্টে যায় তাহলে এতগুলো মানুষের পরিবারের অবস্থা কোন পর্যায়ে দাঁড়াবে। বাসের মধ্যে থাকা অনেক মানুষ আনন্দ মনে করে কিন্তু এটা ভুল। অবশ্যই ডাইভারদের নিয়ন্ত্রণে গাড়ি চালানোর কথা বলতে হবে।

প্রতিনিয়ত আমরা রোড এক্সিডেন্ট এর কথা শুনছি এবং দেখছি অনেক মানুষের চোখের অশ্রু বিসর্জন। এরপরেও কেন মানুষ বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে থাকে। অনেক সময় খেয়াল করা যায় জিনিস বহন করার ট্রাকগুলো ওভার লোড করে মালামাল বহন করে থাকে। তারা একটু ভাবতে চায় না তাদের গাড়ি কতটুকু জিনিস বহন করতে সক্ষম আর তারা কত নিয়েছে। একটা কথা সবসময় মনে রাখতে হবে। লিমিটের বাইরে যা করবেন সেটাই ক্ষতি সৃষ্টি করবে। গাড়িতে ওভারলোড মালামাল বহন করা রিক্সের ব্যাপার। বেপরোয়া ভাবে দ্রুতগতিতে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো সেটাও রিক্সের ব্যাপার। ট্রাফিক সিগনাল না মান্য করে চলা সেটাও রিক্সের ব্যাপার। একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। আমাদের স্বচক্ষের সামনে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। মিডিয়াতে আমরা অনেক দুর্ঘটনার খবর শুনে থাকি। এরপরেও যদি আমাদের মধ্যে শিক্ষা না হয় তাহলে আমরা কেমন বিবেক আলা মানুষ।

বর্তমান সময়ে অনেক মোটরসাইকেল চালানো ভাই বোনেরা রয়েছে, হাইরোডে উঠলে মোটরসাইকেল চালানোতে পাল্লা দেওয়া কাজে লিপ্ত হয়। অকারণে মোটরসাইকেল জোরে চালিয়ে লাভটা কি। দুই চাকার উপর নিজের জীবনটা। যদি একটু সিটকে গাড়ি পড়ে যায় তাহলে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হতে হবে অথবা মৃত্যু চলে আসবে। মোটরসাইকেলটা আনন্দের জন্য বিলাসিতার জন্য মনে না করে প্রয়োজনীয় গাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। অপ্রয়োজনে বিলাসিতা করতে গিয়ে মানুষের বিপদ সৃষ্টি হয়। আর এখন তো কিছু কিছু ছেলেদের দেখা যায় পাকনা গজিয়ে গেছে। মোটরসাইকেলে উঠে পাগলামি করে গাড়ি চালাই। আবার পাগলামি করে গাড়ি চালাতে গিয়ে ছিটকে পড়ে যায় রাস্তার উপর। যে একবার দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে সে আশা করি দ্বিতীয়বার আর এই বোকামি মাথায় নিবে না। কিন্তু তাদের দুর্ঘটনা দেখে তো আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।

প্রত্যেকটা যানবাহন চালানোর নির্দিষ্ট রুলস রয়েছে। এছাড়াও হাইরোডে ট্রাফিক সিগন্যাল ও রাস্তার সুন্দর নাম শৃঙ্খলা রয়েছে। কিন্তু বেপরোয়া চলাচল করা মানুষগুলো কোন রুলস মানতে চায় না। নিজে তো বিপদের সম্মুখীন হয়ে চলে আরো মানুষের বিপদের মধ্য নিয়ে আসে। মিডিয়াতে কিছুদিন আগে একটা ভিডিও লক্ষ্য করে দেখলাম একজন পাগলামি করে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে পেছনের মোটরসাইকেল তার গাড়িতে বেঁধে যায় এবং পিছনে থাকা দুই যুবক এমনভাবে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে গেল মনে হয় না তারা আর আগের মতো সুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাতে পারবে। এদিকে অটো রিক্সা রিক্সা ভ্যান চালকেরা বেশিরভাগ ও সচেতন হয়ে থাকে। তারা পথের মধ্যে কিভাবে নিজেদের গাড়ি চালাতে হয় সেটা কখনোই বোঝার চেষ্টা করেনা। রানিং গাড়ি দেখে নিজেরা একটু থামবে সেটাও চেষ্টা করে না। পথের মধ্যে যখন তখন গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলে। একটু ফাঁকা পেলে তার মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে বসে থাকে। আর এভাবে ট্রাফিক জ্যাম দুর্ঘটনা সবকিছু সৃষ্টিতে খারাপ ভূমিকা রাখে। অনেক হাই রোডে কিছু কিছু গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে সমস্ত যানবাহন চালকেরা মনে করে আমরা কি মানুষ না, এ রাস্তায় গাড়ি চালানো আমাদের কি অধিকার নেই। তবে বিষয়টা কিন্তু সেইটা নয়। একজনের চালাতে দিলে শত শত জন হাই রোডে উঠে আসবে এবং ট্রাফিক জ্যাম সৃষ্টি করবে এছাড়াও এক্সিডেন্টের সমস্যা বেড়ে চলবে।

তাই আমি আমার মতামত এটাই দিয়ে বলতে চাই। আমরা যারা হাইরোডে অথবা গ্রামীণ রাস্তায় যে কোন জায়গাতে গাড়ি চালায় না কেন অবশ্যই সে গাড়ি চালানোর রুলস মেনে চলতে হবে। আমাদের ছোট ভাইয়েরা যারা রয়েছে বা আত্মীয়-স্বজন যারা রয়েছে তাদেরকে গাড়ি চালানোর রুলস মেনে চলার উপদেশ দিতে হবে। অনেক জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে সেগুলো তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। আমরা যারা অভিভাবক রয়েছি তাদের মাথায় চিন্তা রাখতে হবে ছোটদের হাতে গাড়ি দেবোনা। অপ্রয়োজনে গাড়ি দিয়ে বিপদ ডেকে আনার কোন মানে হয় না। অনেক পিতা-মাতা বিলাসিতার জন্য সন্তানদের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দেন। আমি মনে করি মোটরসাইকেল তুলে দেওয়া মানে মরণ এর রাস্তা চিনিয়ে দেওয়া। বিশেষ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া আপনার সন্তানদের গাড়ি চালানো থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন। এছাড়া হাইরোডে যারা গাড়ি চালাবো তারা সজাগ থাকবো। যারা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায় তাদেরকে গতিরোধ করি এবং নির্দিষ্ট রুলসের আইনে নিয়ে আসি। এছাড়া যারা আইন-শৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে তাদের অবশ্যই আরো কঠোর হতে হবে। রাস্তায় যারা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছে সেটা দেখা মাত্র থামানোর চেষ্টা করতে হবে। এতে অনেকের জীবন বেছে যেতে পারে। আবার অনেক মানুষ পঙ্গুত্ব জীবন থেকে বেঁচে যেতে পারে। তাই সর্বোপরি আমাদের বেপরোয়া গাড়ি চলাচল থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে হবে। এত সুন্দর জীবন গড়ার সুযোগ থাকবে সবার জন্য।




বিশেষ বিশেষ তথ্য


ব্লগিং ডিভাইসমোবাইল ফোন
বিষয়জেনারেল রাইটিং
আলোচনার বিষয়বেপরোয়া গাড়ি চলাচল
আমার ঠিকানাগাংনী-মেহেরপুর
বর্তমান অবস্থানঢাকা সাভার
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার@helal-uddin
ধর্মইসলাম
দেশবাংলাদেশ



7YHZyBadGPMGPpmSAvnvPWhbR1Eo9nKWN6xzUJNzgxziWYVj97UYc69tRU1c57mVzP13faqGYpEjuFHprQCfZqg6aqpXGjX5CvGtK4DeHp...9hpdsiq4Gci8DoxLdGGsuPNV6A9q1ix4kAGE8RYya7ZwRGxyiWRCNL76EtziJLHwwz9gTz9wqhHP85AxA5FDGdEEDbrQhMniBMZNWdC7GFjraWA5sNwAcGshuY.png


পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ij42VfeLLLL7WCxzYedv2KU7aUqHk3RNyfwHxuumhaYnHGG1dsqAWnhgxDavkADTEGBJEwSdb572op7FjANMqWxnMxgRucn6JYEH18dx32zBsGYg8oAuC5Quz1do2uNbdFiF3z6Lk1Hw8qJ8jcr6SQ85SbvCaLy5VUwHxx3SRmPnXqteex2eVHV2cAzT5iwMRSwwYpQBkt5B8W7bPzGLjyAxm.gif



আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ হেলাল উদ্দিন। আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুরে। আমার বর্তমান ঠিকানা,ঢাকা সাভার বিশ-মাইল। আমি একজন বিবাহিত ব্যক্তি। কর্মজীবনে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী।


IMG-20241121-WA0015.jpg




2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif


Sort:  
 2 months ago 

আমার আজকের টাস্ক

1000006759.jpg

1000006757.jpg

1000006755.jpg

 2 months ago 

রাস্তায় নিজে সাবধানে চলাচল করলেও মাঝে মাঝে ভয় হয় হঠাৎ করে অন্য গাড়ি এসে ধাক্কা মেরে দিবে বলে। সত্যি আমাদের দেশে ইঞ্জিন চালিত যানবাহন অনেক বেশি হয়ে গেছে। তবে রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাতে বেশিরভাগ বাচ্চাদের দেখা যায়। এতে কিন্তু আমাদের মত অভিভাবকরা দোষী। কেননা অভিভাবক যদি বাচ্চাদের হাতে গাড়ি না দেয় তাহলে তারা আর এভাবে গাড়ি চালাতে পারে না। যারা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায় তাদেরকে যদি ভালো কথা বলা হয় উল্টে তারাই রাগ দেখায়। আপনি খুবই সুন্দর সুন্দর কথা লিখেছেন ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

এটা আপনি ঠিক ধরেছেন আপু।

 2 months ago 

অতিরিক্ত যান বহনের ফলে দিন দিন এক্সিডেন্ট বেড়ে চলেছে। এছাড়াও কিছু মানুষ বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে এই জন্য আরো বিপদ সৃষ্টি হয়। তবে এটা সত্য এত কিছু জানার পরেও মানুষ যেন বোকার মত রুলস না মেনে চলাচল করে থাকে। তাই এই বিষয়ে আমাদের সবার সজল হওয়া দরকার।

 2 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া প্রতিনিয়ত খবরে দেখতে পাচ্ছি দুর্ঘটনা।

 2 months ago 

দিন দিন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে যে সকল অদক্ষ চালক রয়েছে তারা কোনোভাবেই যেন গাড়ি ভালোভাবে চালাতে পারে না৷ তারা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাতে থাকে৷ এর ফলে অনেক জায়গায় অনেক ধরনের দুর্ঘটনা হয়ে থাকে৷ এর ফলে অনেক মানুষ তাদের জীবন হারিয়ে থাকে৷ যা আর কখনোই ফিরে আনা সম্ভব নয়৷ তাই সবাইকে উচিত সচেতন থাকা৷ আজকে আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷

 2 months ago 

একদিকে অতক্ষতা আরেকদিকে অলসতা।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.24
JST 0.029
BTC 82134.59
ETH 1557.43
USDT 1.00
SBD 0.76