অতিরিক্ত ওজন শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
আমরা সাধারণত দেখতে পাই বা বুঝতে পারি যে আমাদের স্বাভাবিক ওজনের থেকে একটু ওজন বেড়ে গেলেই আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে অনেক বেশি কষ্ট হয়। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হলে যেমন শ্বাসকষ্ট, ফ্যাটি লিভার আর মেয়েদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিভিন্ন গাইনো সমস্যা হলে দেখা যায় সবার আগে ডাক্তার বলে যদি ওজন বৃদ্ধি হয়ে থাকে তাহলে ওজন কমাতে হবে। কারণ আমাদের এই ওজন বেশি হওয়ার কারণেই আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম রোগ বাসা বাঁধে। আর এই রোগ বাসা বেঁধে একতলা দোতলা তিন তলা করে করে অনেক বড় বিল্ডিং তৈরি করে ফেলে। যা ভাঙ্গা অনেক বেশি কষ্টকর। আবার অনেক ক্ষেত্রে এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব হয় না। আর এই ওজন বৃদ্ধি ছেলেদের শরীরের জন্য যেমন ক্ষতিকর মেয়েদের শরীরের জন্য আরও দ্বিগুণ ক্ষতিকর হয়ে থাকে। কারণ মেয়েদের শরীর অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকে তাছাড়া মেয়েদের শরীরের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। এমনকি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আসার জন্য মেয়েদের শরীরকে যথেষ্ট সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর রাখার খুবই প্রয়োজন হয়। আর দেখা যায় মেয়েরা যদি একটু মোটা হয়ে যায় তাহলে সবার আগে তাদের এইসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
আর এখনকার সময় তো দেখা যায় মেয়েদের জন্য নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হতে থাকে যা মেয়েদের শরীরের ভেতরে থাকে আর বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না, এবং শরীর সুস্থই মনে হয়। যেহেতু আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার ফলেই আমাদের ওজন বৃদ্ধি হয় তাই আমাদের শরীরের এই অতিরিক্ত চর্বি আমাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় কারণ এই চর্বি যখন আমাদের ফুসফুসে গিয়ে জমা হয় তখন আমাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার কিডনিতে এই চর্বি গিয়ে জমা হতে পারে। যার ফলে কিডনি সঠিকভাবে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে মূত্র উৎপাদনের কাজ করতে পারে না, আবার লিভারে যদি গিয়ে চর্বি জমা হয় তাহলে আমাদের রক্ত পরিশোধনের কাজ, খাদ্য পরিপাকের কাজ করে আমাদের শক্তি সঞ্চয় করতে ব্যাহত হয়ে যায় যার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়। এছাড়াও মেয়েদের ক্ষেত্রে পি সি ও ডি, বিভিন্ন রকম সিস্ট, হরমোন ভারসাম্যহীনতা, এবং তলপেটে চর্বি জমার কারণে বিভিন্ন সমস্যা হতে দেখা যায়। তাই বোঝাই যাচ্ছে চর্বি আমাদের শরীরে কতটা ক্ষতি করে। তাই আমাদের সবাইকে শরীর সুস্থ রাখতে হবে এবং সঠিক ওজন সবসময় বজায় রাখতে হবে আর খেয়াল রাখতে হবে যেন আমাদের শরীরে কোনরকম অতিরিক্ত চর্বি না জমতে পারে।
আমাদের যাদের ওজন প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইতিমধ্যে বেড়ে রয়েছে, তাদের ওজনও ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেললে আবার পুনরায় স্বাভাবিক ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব হবে। আর ওজন কমানো খুব একটা কঠিন কাজ নয়। ওজন কমানোর জন্য আমাদের খুব সহজ কয়েকটা কাজ করতে হবে যার ফলে ওজন ধীরে ধীরে কমে যাবে এবং আমাদের শরীর আরো বেশি সুস্থ এবং সতেজ হয়ে উঠবে। তার জন্য শুধুমাত্র আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি সুন্দর করতে হবে। আমাদের প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ভালো করে ফ্রেশ হয়ে খালি পেটে এক গ্লাস উষ্ণ গরম জল খেলে আমাদের পেটের ভেতরটা সুন্দরভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। তারপর কম করে আধঘন্টা থেকে এক ঘন্টা যেকোনো ধরনের পছন্দসই ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরকে সতেজ করতে হবে। এই ব্যায়াম করার কারণে আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে শরীরের প্রত্যেকটি অংশ সুস্থ স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং অপ্রয়োজনীয় চর্বি কমতে শুরু করবে। এরপর আমরা সারাদিন যেসব খাবার খাব সেগুলো সব পরিমাণ মতো খেতে হবে যেমন পেটের চার ভাগের তিনভাগ খাবার খেয়ে পূরণ করা যাবে। কিন্তু একভাগ অবশ্যই খালি রাখতে হবে। সম্পূর্ণ ভোরে খাবার খেলে শরীরকে অপ্রয়োজনীয় কষ্ট দেওয়া হবে। আর আমাদের খাবারগুলি অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে। কারণ অতিরিক্ত মসলা এবং অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
প্রতিদিন অন্তত একবাটি সবজি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। তবে অবশ্যই আমাদের দুই বেলা পরিমাণমতো বুঝে খাবার খেতে হবে। এবং রাতে একটু কম খাবার খেতে হবে। অনেকেই ভাবে খাবার না খেলে ওজন কমে যাবে কিন্তু খাবার না খেলে কখনোই ওজন কমে না, উপরন্ত খাবার না খেলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। পরিমাণ মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েই আমাদের সুস্থ স্বাভাবিকভাবে ওজন কমানো উচিত। সময়মতো খাবার খেয়ে বিকাল বা সন্ধ্যার দিকে যদি সম্ভব হয় তবে আবার আধা ঘন্টা হাটাহাটি বা ব্যায়াম করতে পারলে শরীর আরো বেশি ভালো অনুভব হবে। অবশ্যই সারাদিনে অনেক বেশি জল পান করতে হবে যাতে আমাদের খাবার ভালোভাবে হজম হতে পারে। আর জল আমাদের শরীরের চর্বি কমাতে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেক গুন সাহায্য করে। এখন আমরা অনেক আধুনিক হয়ে গেছি এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর পরিমাণে এমন ভিডিও দেখতে পাওয়া যায় যেখানে ওজন কমানোর অনেক ভালো ভালো উপায় এবং অনেক ভালো স্বাস্থ্যকর খাবার রেসিপি পাওয়া যায় যাতে আমাদের ওজন সহজেই কমে যেতে পারে। আর সেগুলো দেখে প্রতিদিন চেষ্টা করলেও আমরা খুব সহজেই তাড়াতাড়ি আমাদের ওজন কমিয়ে সঠিক সুস্থ স্বাভাবিক ওজনে ফিরে আনতে পারবো। আমাদের ওজন সঠিক থাকলে এবং আমরা যদি সুস্থ সতেজ থাকি তাহলে আমাদের কাজের প্রতিও ভালো মনোযোগ আসবে। শরীর আমাদের অনেক বড় মূল্যবান সম্পদ তাই শরীর সুস্থ থাকলে আমাদের জীবনের সবকিছুই ভালো হতে থাকবে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
বেশ উপকারী এবং দারুন কিছু কথা লিখেছেন আপু। শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেলে শরীর অনেকটা নাজুক হয়ে যায়। কোন কাজ করতেই কষ্ট হয়। আর এমনটা আমার হচ্ছে। হরমোনের সমস্যার কারণে মূলত শরীরের অনেক বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর এজন্য সুস্থ একটা ডায়েট চাট ফলো করলেই ভালোভাবে সুস্থ হওয়া যায়। সেটা জানা আছে তবে সব সময় নিয়ম মেনে করা যায় না বিধায় মেয়েদের জন্য সব কিছুই বেশি কষ্টকর হয়ে পড়ে। লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু।
অনেক সুন্দর কথা বলেছেন আপু কোন কিছু অতিরিক্ত ভালো না। আর সেটা যদি হয় স্বাস্থ্য তাহলে তো মহা বিপদ। আমরা যারা রোগা চিকন তারা ভাবি মোটা হলে হয়তো কতই ভালো হতো। কিন্তু যারা অতিরিক্ত মোটা অর্থাৎ ওজন বেশি এদের বাইরে থেকে কিছু বোঝা যায় না কিন্তু ভিতরে অনেক কষ্ট। আপনি খুবই সুন্দর সুন্দর কথা তুলে ধরেছেন আপু। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু।
অতিরিক্ত স্বাস্থ্য হওয়া আবার অতিরিক্ত স্বাস্থ্য কমে যাওয়া উভয়ের শরীরের জন্য ক্ষতির বিষয়। তাই উচ্চতা অনুযায়ী ওজনের ব্যালেন্সটা যদি ঠিক থাকে তাহলে সুস্থ শরীর রাখার সুযোগ থাকে। এছাড়াও সুস্থ থাকতে অনেক কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন সবার। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো আপু।
আমাদের সব সময় স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ক্ষতির বড় কারণ। আর যাদের বেশি মেদ বা ভুড়ি হয়ে গেছে তাদের অতিরিক্ত চর্বি জমে যায়। এই চর্বি শরীর নষ্ট করার মেইন কারণ হয়ে যায়। অনেক সুন্দর লিখেছেন গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা চেতনা নিয়ে। ভালো লাগে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সামনে পেলে।