জীবনের সময় হিসাব।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের জীবনের যদি হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাবে আমাদের জীবনটা অনেক ছোট। আর এই ছোট জীবনের সময়ও অনেক কম। আসলে আমরা জন্মের পর কতটা সময় বাঁচবো এবং কতটা সময় মানুষের সংস্পর্শে থাকবো এবং প্রিয় মানুষের সাথে কতটা সময় কাটাতে পারব সেটা একদমই অনিশ্চিত। কারন আমাদের জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই, যখন তখন যেকোনো সময় আমরা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারি। আর সেটা হতে পারে যে কোন বয়সেই মানে আমরা যে কোন বয়সে যে কোনো সময়েই মৃত্যুবরণ করতে পারি এবং এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পৃথিবী ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হতে পারে। আমাদের যেহেতু জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই এবং এই পৃথিবী ছেড়ে আমাদের এক না একসময় চলে যেতেই হবে তাই যতটুকু সময় এই পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব আছে ততটুকু সময়ে আনন্দ এবং হাসিখুশিতেই সময় কাটানো উচিত। আমাদের সবসময় চেষ্টা করা উচিত আমাদের প্রিয় মানুষের সাথে যথাসম্ভব ভালো সময় কাটানো এবং ভালো কর্ম করতে থাকা। আসলে দিন যত যাচ্ছে আমাদের গড় আয়ু প্রতিনিয়ত কমেই চলেছে। আর তাছাড়াও বর্তমানে দেখা যায় বিভিন্ন ভাবে দুর্ঘটনায় এবং নানান প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়েই মানুষ অনেক বেশি মারা যাচ্ছে।
আজকাল বার্ধক্য জনিত কারণে মারা যেতে খুব কমই দেখা যায়। আমরা গোটা একদিন অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ ঘন্টা দিন এবং ১২ ঘন্টা রাত পাই।আর এই দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা বলা যায় ৭ থেকে ৮ ঘন্টাই বিভিন্ন কর্মে ব্যস্ত থাকি অনেকের তো আবার ১২ ঘন্টার অতিরিক্ত কর্মে ব্যস্ত থাকতে হয়। অর্থাৎ জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় আমরা বিভিন্ন কর্মেই ব্যয় করে থাকি। এছাড়াও আমরা রাতে প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমিয়ে সময় কাটাই অর্থাৎ জীবনের বাকি অর্ধেক সময়ের আরও অর্ধেকটা সময় আমরা ঘুমিয়ে ব্যয় করে থাকি। ধরা যাক আমাদের গড় আয়ু ৬০ বছর, এই ৬০ বছরের অর্ধেক দিন হিসেবে জীবনের অর্ধেক সময় অর্থাৎ ৩০ বছর আমাদের বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্য দিয়ে ব্যস্ত সময় যায়। এবং বাকি সময় অর্থাৎ রাতে ঘুমের জন্য জীবনের আর অর্ধেক সময় অর্থাৎ এই ৩০ বছরের অর্ধেক ১৫ বছর আমরা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিই। বাকি যে সময় আমাদের জীবনে থাকে সেই সময়টা যদি আমরা রাগারাগি করে নষ্ট করে দিই তাহলে প্রিয় মানুষের জন্য কোন সময় অবশিষ্ট থাকবে না। তাই সেই সময়টা চাইলেই আমরা আমাদের প্রিয় মানুষের সাথে এবং আত্মীয় সজনের সাথে সুখে শান্তিতে সময় কাটাতে পারি বা ভালোভাবে থাকতে পারি। আমরা মানুষ বড়ই জটিল এবং অবুদ্ধিমান।
আমরা আমাদের মূল্যবান সময় মানুষদের সাথে মিলেমিশে সুন্দর সময় না কাটিয়ে ঝগড়া, হিংসা এবং বিভিন্ন খারাপ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এই ঝগড়া-বিবাদ করে মানুষের মুখ দেখাদেখি বন্ধ করার থেকে ভালো আমরা যতদিন বেঁচে থাকি ততদিন সবাই মিলে অনেক ভালো সময় কাটানো এবং বিপদে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা। আমরা সবাই রক্তে মাংসে গড়া মানুষ অথচ আমরা প্রত্যেকটি মানুষের জাতপাত ভেদাভেদ করে এবং ধর্ম নিয়ে হিংসা ঝগড়া অশান্তি করেই জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে চলেছি। আমরা যদি মানুষের এত জাত ভেদাভেদ করে সময় নষ্ট না করি এবং সবাই মিলে মিশে সুখে দুঃখে একে অপরের পাশে থাকার চেষ্টা করি তাহলে জীবনটা আরো সুন্দর এবং সহজ সরল হতে পারবে। এছাড়াও আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা করা উচিত যে আমাদের সকল ধর্মকে সমান ভালবাসা এবং মর্যাদা দিয়ে একে অপরের উৎসবে যোগ দেওয়া। এবং প্রত্যেকের উৎসবকে সুন্দরভাবে পালন করা। একে অপরের উৎসব সুন্দরভাবে পালন করতে সাহায্য করলে আমরা প্রত্যেকেই সব ধর্ম মিলিয়ে অনেক বেশি উৎসব পালন করতে পারব এবং সবাই মিলে একসাথে আনন্দ করার এবং ভালো সময় কাটানোর সময় পাবো। আমরা আমাদের জীবনে যেমন কর্ম করবো সেই কর্মের প্রভাব টাই এই পৃথিবীর বুকে থেকে যাবে স্মৃতি হিসেবে।
তাই আমরা যদি প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি সময় ভালো কর্মে এবং একে অপরকে ভালোবাসার মাধ্যমে জীবনের সুন্দর সময় কাটাতে পারি তাহলে এই সময়টাই হবে অনেক বেশি মূল্যবান। আমাদের জীবনের সময় যেহেতু অনেক কম তাই আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করব আমাদের কাছের মানুষকে নিয়ে সবসময় সুখে থাকার এবং সুন্দর মুহূর্ত তৈরি করার। এছাড়াও সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ রেখে অসময়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করলে তখনই আমাদের জীবন সার্থক হবে। আমাদের জীবনে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে ঘুমটা অবশ্যই প্রয়োজন। তাই পরিপূর্ণ একটা ঘুম সবসময় সুন্দর ভাবে দিতে হবে, তবে বিভিন্ন কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের সময় বের করে নিজেদেরকে ও প্রিয় মানুষকে অবশ্যই সময় দেয়ার চেষ্টা করতে থাকতে হবে। আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্ত ও প্রতিটা সময় যদি আমরা সুন্দরভাবে ব্যয় না করতে পারি তাহলে আমাদের সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তখন হয়তো আমাদের বার্ধক্য বয়সে চিন্তা আসবে যে আমরা সারা জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলেছি। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে যেন আমরা প্রতিনিয়ত ভালো কর্মের মাধ্যমে আমাদের জীবনের পুরো সময়টা ব্যবহার করতে পারি।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
আসলে আপু জীবন সত্যিই অনেক ছোট, তাই প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। রাগ, হিংসা না করে প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোই শ্রেষ্ঠ বলে মনে করি। ভালো কর্ম ও ভালোবাসায় জীবন কাটালে তবেই তা সত্যিকারের সার্থক হবে। সুখী থাকতে হলে একে অপরের পাশে দাঁড়ানো জরুরি বলে আমি মনে করি।ধন্যবাদ আপু ভালো থাকুন।