শিশুদের নিরাপত্তা দিতে আমরা কতটা ব্যর্থ?
মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে আজ লজ্জা লাগে। আমরা কি আদৌ মানুষ হতে পেরেছি? আমাদের সমাজ আজ নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ে পতিত। ন্যায়-অন্যায়, নৈতিকতা-অনৈতিকতার পার্থক্য আজ অস্পষ্ট হয়ে গেছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে আজ অনৈতিকতা, অমানবিকতা এবং নিষ্ঠুরতা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, আমাদের শিশুদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারছি না। শিশুরা আজ তাদের আপনজনের কাছেও নিরাপদ নয়। এ কী নিষ্ঠুর সমাজ আমরা গড়ে তুলেছি? এ কী নরকীয় পরিবেশে আমরা বাস করছি?
সম্প্রতি মাগুরা জেলার একটি ঘটনা আমাদের সমাজের চরম বর্বরতা এবং নৈতিক পতনের চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। মাত্র কয়েকদিন আগে, মাগুরা জেলার একটি শিশু, আছিয়া, তারই আপনজনের হাতে নির্মমভাবে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শুধু ধর্ষণই নয়, তাকে এতটা শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে যে, চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেনি। গতকাল এই শিশুটি মারা গেছে। এই ঘটনা শুধু একটি শিশুর মৃত্যু নয়, এটি আমাদের সমাজের নৈতিক মৃত্যুরও প্রতিচ্ছবি। আমরা কীভাবে এমন পশুত্বপূর্ণ আচরণকে প্রশ্রয় দিচ্ছি? কীভাবে আমরা আমাদের শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছি? আছিয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া আরেক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এই ঘটনাগুলো শুধু আলাদা আলাদা ঘটনা নয়, এগুলো আমাদের সমাজের একটি ভয়াবহ রূপকে তুলে ধরে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও শিশুরা শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই সামনে আসে না। সামনে না আসার পেছনে মূল কারণ হলো আমাদের সমাজের কিছু অমানুষের অমানবিকতা এবং নিষ্ঠুরতা। তারা তাদের অপরাধকে ঢাকতে চায়, সমাজের চোখে ধুলো দিতে চায়। কিন্তু এই ধুলো আমাদের চোখে পড়বেই, কারণ শিশুদের কান্না আর চিৎকার চেপে রাখা যায় না।
শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র, সমাজ এবং পরিবার সবার দায়িত্ব। কিন্তু আজ আমরা সবাই এই দায়িত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি। রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন থাকলেও তার সঠিক প্রয়োগ নেই। সমাজের নৈতিকতা আজ ধ্বংসের মুখে। পরিবার, যেখানে শিশুরা সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা, সেখানেও আজ তারা হুমকির মুখে। আপনজনের হাতেই আজ শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ কী নিষ্ঠুর পরিণতি।শিশুদের প্রতি এই অমানবিক আচরণ শুধু তাদের শারীরিক ক্ষতি করছে না, তাদের মানসিক বিকাশকেও ধ্বংস করছে। একটি শিশু যখন নির্যাতনের শিকার হয়, তখন তার মধ্যে ভয়, অবিশ্বাস এবং হতাশা বাসা বাঁধে। এই শিশুটি বড় হয়ে কীভাবে একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলবে? কীভাবে সে বিশ্বাস করবে এই সমাজে? আমরা যদি আজ আমাদের শিশুদের রক্ষা না করি, তাহলে আগামী দিনে আমাদের সমাজ আরও নিষ্ঠুর এবং অমানবিক হয়ে উঠবে।এই সমস্যার সমাধান শুধু আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সম্ভব নয়। আমাদের সমাজের নৈতিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র, সমাজ এবং পরিবার সবারই এগিয়ে আসতে হবে।
শিশুদের প্রতি এই নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে না পারলে আমাদের সমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমরা যদি আজই সচেতন না হই, যদি আজই এই সমস্যার সমাধানের জন্য এগিয়ে না আসি, তাহলে আমাদের সমাজ একদিন সম্পূর্ণরূপে নৈতিকতা এবং মানবিকতা হারিয়ে ফেলবে। শিশুদের কান্না থামাতে হবে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। এটাই আমাদের দায়িত্ব, এটাই আমাদের কর্তব্য। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি নিরাপদ এবং সুন্দর সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে প্রতিটি শিশু নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারে।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
এসব বিষয়ে কথা বলতেও ঘৃণা হয় ভাইয়া।এসব নিয়ে কিছু বলতে চাই না।এদেশে এসব নিয়ে কথা বলল্লে শৈরাচারে দোষর ট্যাগ নিতে হবে নইলে পুলিশের পিটুনি খেতে হবে।
X-Promotion
বর্তমানে এ বিষয়টি নিয়ে অনেক তোলপাড় এবং মনের ভিতর অনেক কষ্ট লুকিয়ে আছে সবার। আসলে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব। কিন্তু আজকের সমাজে তারা কোথাও নিরাপদ নয়, যা খুবই দুঃখজনক। আইন থাকলেও এর সঠিক প্রয়োগ নেই। তাই আমাদের নৈতিকতা ফিরিয়ে আনা অতিব জরুরী।ধন্যবাদ ভাই সময়োপযোগী একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ।
সত্যি ভাইয়া আমরা এমন সমাজে বাস করি যেখানে শিশুদের কোন নিরাপত্তা নেই। আর এরা মানুষ নয় পশু।আসলে যাদের জ্ঞান আছে তারা কখনো এমন কাজ করতে পারে না। আমাদের সবারই উচিত এগুলো সমাজ থেকে দূুৃ্র।
শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ, তাদের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু আজ সমাজে তারা সবচেয়ে বেশি অসহায় ও বিপদে।ন্যায়বিচার আর সচেতনতা ছাড়া এই অবস্থা বদলাবে না।এর জন্য প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ যেটা আমি মনে করি। ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকবেন।
সম্প্রতি যে ধরনের ঘটনা ঘটে গেল তাতে আবার শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি চোখের সামনে এসে গেল। এর আগেও বিভিন্ন সময় প্রমাণিত হয়েছে যে শিশুরা কখনোই নিরাপদ নয়। সেই দিক থেকে সবসময় শিশুদেরকে একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দেওয়াই আমাদের কাজ। কিন্তু আমরা যে তা পারছি না তা আবার প্রমাণিত হয়ে গেল। ঘটনাটি দেখবার পর থেকেই ভীষণ মন খারাপ হচ্ছে। আমাদের পৃথিবীতে আমরা আসলে কেউই সুরক্ষিত নয়।
শিশুরাও এখন আর কোথাও নিরাপদ নয়। আপনি জনের কাছেও এখন আর কেউ নিরাপদ নয়। এটা হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ। আর তাদেরকে নিরাপদ রাখা আমাদের সব থেকে বড় এবং প্রধান কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আর এসব কিছুর জন্য ন্যায় বিচার হওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কঠোর পদক্ষেপ অবশ্যই নেওয়া দরকার। না হলে দিন দিন পরিস্থিতি আরো বেশি খারাপ হয়ে যাবে।