আমার সাথে ঘটে যাওয়া এক অদ্ভুত মজার কাহিনী
নমস্কার বন্ধুরা
আজ আমি আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হলাম আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমার আজকের পোস্টটিতে আমি মূলত ,আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি মজার কাহিনী শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
চলুন তবে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
তখন আমি সবেমাত্র ১২ ক্লাসে উঠেছি, আর সেই সাথে মনে মনে লাড্ডু ফোটাও শুরু হয়েছে, হাহাহা। আমার বয়সী ছেলেমেয়েরা দেখি চুটিয়ে প্রেম করছে। আর সেই গল্প মাঝে মধ্যে কানের আশেপাশে এসে শুনিয়েও যাচ্ছে। এসব শুনে মনে মনে তো একটু শখ জাগবেই, হি হি হি।
এখন মনে যখন শখ জেগেই গেছে, কিছুতো একটা উপায় বার করতে হবে । বেশ কিছুদিন গভীর ভাবে চিন্তা করতে থাকলাম, এবার একটা বয়ফ্রেন্ড জোগাড় করতেই হবে। আর বন্ধু - বান্ধবীদের কানের গোড়ায় গিয়ে ভালো মতন গল্প শুনিয়ে আসতে হবে।
কিন্তু কাকে বয়ফ্রেন্ড বানানো যায়!! এটা তো খুবই ভাবনার বিষয়। বন্ধুদের মধ্যে থেকে বেশ কিছু প্রপোজালও এসছে ওই একই সময়ে কিন্তু, কোনো ছেলেকেই ঠিক ভালো লাগছে না। কিন্তু ভালো না লাগালে তো হবে না, একজনকে তো জোর করে ভালো লাগাতেই হবে । যে করে হোক সবাইকে দেখাতে হবে তো, কি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম একবার ভেবেই দেখুন, হিহিহি।
এরপর ঠিক করেই নিলাম, এক সপ্তাহের মধ্যেই বয়ফ্রেন্ড তৈরি করবো, হা হা হা।শুভ্র নামে এক বন্ধুকে কস্ট করে একটু একটু ভালো লাগাতে শুরু করলাম। কারণ বন্ধুদের মধ্যে তাকেই একটু আলাদা রকমের মনে হতো, কিন্তু সেই আলাদা রকম যে এতই আলাদা রকম তা তো আমি আর বুঝতে পারিনি।
যাই হোক, শুভ্র আমাকে বেশ কিছুদিন আগেই তার তরফ থেকে প্রপোজালটা দিয়েই রেখেছিল। তখন ঠিক পাত্তা দেয়ার প্রয়োজন মনে করিনি। কিন্তু এখন তো পাত্তা দিতেই হবে , কিচ্ছু করার নেই আর।তাই নিজে থেকেই বললাম," চল পড়ার পর একদিন পার্কের থেকে ঘুরে আসি"সেই শুনে তার মনেও হালকা লাড্ডু ফুটল। একটু মুচকি হাসি দিল বলল ,"ঠিক আছে কালই চল"।
আমি ভাবলাম বাহ্, বেশ ভালই হলো, একটু নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। রাতে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে এসএমএস করে বলল ,"কালকে একটা স্পেশাল ব্যাপার ঘটবে "আমি ভাবলাম কি নাকি!হয়তো গোলাপ ফুল দিয়ে প্রপোজ করেই বসলো। এসব ভেবে মনে মনে তো খুব খুশি হচ্ছিলাম। ভাবলাম নিয়েই নেব কাল গোলাপটা। তারপর গিয়ে দেখি একি কান্ড!
বলল" আজ তোর হাতটা পরীক্ষা করে দেখব ,এটাই হল গিয়ে স্পেশাল ব্যাপার"। আমি ভাবলাম হাত পরীক্ষা করে দেখবে, মানে কি বলতে চাইছে? ঠিক বুঝতে পারলাম না। তখন ভালো করে জিজ্ঞেস করতে গেলে বলল "আমি এখানে বসে আছি তুই আমার পিছনে গিয়ে দাঁড়া"। আমি মনে মনে ভাবলাম, হয়তো লাথি টাথি মারতে বলবে। তারপর দেখি বলছে" তার মাথাটা একটু ম্যাসেজ করে দিতে ,এটা নাকি ভবিষ্যতে খুব কাজে দেবে, তাই শিখিয়ে নিচ্ছে, তার নাকি প্রতিনিয়ত এরকম একজন লোকের দরকার ,তাই সে রিলেশনে আসতে চাই", শুনে তো আমার মাথা থেকে গোলাপ ফুলের ভুত তুত উড়ে গেল ।বয়ফ্রেন্ড একটা বানাতে হবে, সে কথাটাও এক মাইল দূরে গিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আসলাম।
ছোটবেলায় আমার এক দাদা আমাকে দিয়ে এই একই চাকরি করাতো, তাই এটা যে কতটা কষ্টদায়ক একটা কাজ ,সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি। তাই আর রিস্ক নিলাম না। এক মুহূর্তেই আমি তাকে, অন্য কিছু বানানোর কথা বাদ দিয়ে, হুট করে ভাই বানিয়ে ফেললাম, হি হি হি।
বললাম," এবার রাখি - বন্ধন উৎসবে তোকে একটা রাখি পড়াবো"। আর তুই যদি চাস তোর পিছনে গিয়ে তোকে একটা লাথি মারতে পারি। শুনে সেও তো খুব ভয় পেয়ে গেল। মনে মনে হয়তো ভাবলো," কি ভয়ংকরী রে বাবা"। তাই সেও আর কিছু বলার সাহস পেল না ,দিদি হিসেবেই মেনে নিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, একটা ভাই তো পাতিয়েই আসলাম, কিন্ত এটা দেখার পর আমার প্রেম করার ইচ্ছা একেবারেই উড়ে গেল। তাই বয়ফ্রেন্ড বানানোর ভূত টাও দৌড় দিল। ভাবলাম," থাক বাবা আর দরকার নেই , বন্ধু-বান্ধবীদের দেখানোর জন্য বয়ফ্রেন্ড বানাতে গিয়ে ,শেষে কে আবার মাথা ম্যাসেজ করিয়ে নেবে। এত কষ্ট কে করবে!! তাই আর শেষ পর্যন্ত আমার, বয়ফ্রেন্ড বানানো আর হলো না হাহাহা।
হা হা হা... গল্পটা খুব ইন্টারেস্টিং ছিল। মানুষ প্রেম করে কি জন্য আর এই ছেলে প্রেম করেছে কি জন্য। মাথা ম্যাসেজ করে দেয়ার জন্যও যে একটা গার্লফ্রেন্ড দরকার, এটা আমি জীবনে প্রথম শুনলাম। যাইহোক ছেলেটা যথেষ্ট ইন্টারেস্টিং ছিল বলে আমার মনে হয়।😂😂
ইন্টারেস্টিং না ছাই ছিল সে আমি বুঝতে পারছিলাম 🤧🤧🤧🤧।
হাহাহা এটা কি ছিলো। আমি তো ভেবেছিলাম এবার মনে হয় প্রেম হয়েই গেলো। এখন দেখি হলোই না। বেশ মজাদার এক ঘটনা ছিলো আপনার। বয়ফ্রেন্ড বানাতে বানাতে শেষে ভাই বানিয়ে ফেললেন। হাহাহা।
হ্যাঁ ভাই, বয়ফ্রেন্ড বানাতে বানাতে ভাই বানিয়ে ফেলেছিলাম হি হি হি।
আপনার গল্পটি পড়ে খুব মজাই পেলাম। বন্ধু-বান্ধবের বয়ফ্রেন্ড আছে সে হিসেবে আপনিও একটি বয়ফ্রেন্ড চেয়েছেন। আসলে বয়ফ্রেন্ড বানাতে হলে মনের সাথে মিলতে হবে। আপনার এক দাদাকে ভাই বানিয়ে ফেললেন। সে আর আপনার সাথে প্রেম করা হলো না। যাইহোক লাস্ট পর্যন্ত বয়ফ্রেন্ড বানাতে পারলেন না। আসলে সবার জীবনে কমবেশি এরকম ঘটনা আছে।
হ্যাঁ আপু তখন তো ছোট ছিলাম অতটা বুঝতাম না যে ,বয়ফ্রেন্ড বানাতে গেলে মনের মিলটা দরকার। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
হা হা গল্পটি পড়ে খুব মজাই পেলাম। যাইহোক মনের মধ্যে চিন্তা আসলো আপনার একটা গার্লফ্রেন্ড ঠিক করবেন। তবে পছন্দ না হলে কখনো গার্লফ্রেন্ড ঠিক করা যায় না। যদিও অনেকজন আপনাকে প্রপোজ করেছে সেগুলো আপনার পছন্দের লোক ছিল না। তবে বেশি মজা লাগলো যে লোকটি আপনাকে প্রপোজ করে বলল পাশে থাকবে। আপনি সেই লোকটিকে বললেন পিছে লাথি মারবেন। লাস্ট পর্যন্ত গার্লফ্রেন্ড আর হলো না আপনার। আপনার পোস্ট পড়ে ভাল লাগল এবং মজাই ফেলাম।
গার্লফ্রেন্ড না ভাই ,বয়ফ্রেন্ড বানানোর কথা ভাবছিলাম।
মাথা ম্যাসেজ করানোর জন্য ও আজকাল ছেলেরা দেখছি গার্লফ্রেন্ড বানায়। যদিও ফ্রেন্ডদেরকে দেখানোর জন্য আপনি বয়ফ্রেন্ড জোগাড় করতে চেয়েছিলেন কোন রকমে কিন্তু পারলেন না উল্টো দাদা বানিয়ে চলে আসলেন তাকে হা হা হা। এটা কিন্তু খুবই মজার বিষয় ছিল দিদি। একেবারে ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় শেয়ার করেছেন পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ। যাইহোক ভালোই লিখেছেন বলতে হচ্ছে।
বিষয়টি পড়ে আপনার মজা লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।