বড় পর্দায় খেলা দেখা||মজার মুহুর্ত
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও বেশ ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে একটি মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করব।
আপনারা জানেন ফুটবল বিশ্বকাপ চলছে।পুরো বিশ্ব কাপছে ফুটবলের জ্বরে।বাড়ি,অফিস,চায়ের দোকান সব খানেই চলছে ফুটবলের আড্ডা।পুরো দেশ প্রধাণত দুইভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে।কেউ আর্জেন্টিনা তো কেউ ব্রাজিল এর ভক্ত।
অন্যান্য দলের সমর্থক ও আছে কিছু কিছু কিন্তু তাদের সংখ্যা অতি নগণ্য।আর্জেন্টিনা ব্রাজিল সমর্থক রাই সংখ্যা গরিষ্ঠ।প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই শোভা পাচ্ছে আর্জেন্টিনা,ব্রাজিলের পতাকা।অনেকেই তো আবার পাল্লা দিয়ে পতাকা বানাচ্ছে,কার পতাকা কত বড়।ফেসবুকের নিউজফিড জুড়ে ঘুরছে ফুটবল অ্যানালাইসিস।নিজের প্রিয় দলের দুর্বলতা,সক্ষমতার ব্যাখা দিচ্ছে সবাই। আবার একদলের সমর্থক রা অন্য দল এর সমর্থকদের টিপ্পনী কাটছে।
যাই হোক, আমি যাকে বলে সিজনাল বা মৌসুমী ফ্যান।বিশ্বকাপ ছাড়া সারাবছর আমার ফুটবলের সাথে কোন সম্পর্ক থাকে না। বিশ্বকাপের যে সব ম্যাচ দেখি তাও না,শুধু মাত্র ব্রাজিলের ম্যাচ গুলোই দেখা হয়।আবার ব্রাজিলের যে সব ম্যাচ দেখি তাও না, যে ম্যাচে জেগে থাকতে পারি সেটাই দেখি।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে এলাকায় অনেকগুলো প্রজেক্টর লাগানো হয়েছে।আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় এগুলোকে বড় পর্দা বলে। কয়েকদিন থেকেই এলাকার বন্ধুরা বলতেছে বড় পর্দায় খেলা দেখবে।বড় পর্দায় খেলা দেখার মজাই নাকি আলাদা।কিন্তু আমি বরাবরই ভেটো দিচ্ছিলাম।
ভেটো দেওয়ার কারন আমি প্রচুর অলস,ঘুম কাতুরে এই শীতের রাতে বাইরে যাওয়ার থেকে লেপের মাঝে শুয়ে বই পড়া টা আমার কাছে বেশি আনন্দের।কিন্তু ব্রাজিলের দ্বিতীয় ম্যাচে আর ভেটো দিতে পারলাম না।কারন দেওয়ার মত অজুহাত পেলাম না।অগত্যা যেতেই হল।সবাই মিলে ঠিক করলাম গরু হাটি তে খেলা দেখব।কারন ওখানকার প্রজেক্টরে সব থেকে ক্লিয়ার খেলা দেখা যায়।
খেলা রাত ১০টায়।সবাইকে ১০টা ৫০ এর মাঝে গলিতে আসতে বললাম।সবাই গলিতে আসার পর সবাইকে নিয়ে রওনা দিলাম।তবে আমাদের মাঝে আর্জেন্টিনা সমর্থক ও ছিল।তারা প্রথম থেকেই আমাদের খোচাচ্ছিল।কিন্তু আমি সবাইকে তর্ক করতে নিষেধ করলাম।
এরপর গরু হাটি গিয়ে দেখি পা রাখার জায়গা নেই,এত ভিড়।কোনমতে একটু জায়গা নিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম।আমি ভেবেছিলাম যত লোক তার ৫০ভাগও যদি ব্রাজিল সাপোর্টার হয় তাইলে অনেক ব্রাজিল সাপোর্টার এসেছে খেলা দেখতে,কিন্তু সময় যত যেতে লাগল তত বুঝতে পারলাম আমার আশেপাশের ৮০ভাগ লোক আর্জেন্টিনার সমর্থক।ব্রাজিল বেশ ভাল খেলছিল,কিন্তু তারপরেও তারা দুয়ো দিচ্ছিল।
প্রথম অর্ধের বিরতির সময় পাশে দেখি বাদাম-বুট বিক্রি হচ্ছে।আর সেখানে এত লোকের ভিড় যে বিক্রেতা দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন।আমিও ৩০ টাকার বাদাম কিনে ভাগ করে দিলাম সবাইকে।এরপর দ্বিতীয় অর্ধের খেলা যত যেতে থাকল ব্রাজিল সমর্থক রা তত মনমরা হতে লাগল আর আর্জেন্টিনার সমর্থক রা ততই চিল্লাতে থাকল।তারপর যখন ব্রাজিলের গোলটি অফসাইড ধরা হল তখন তো সেখানে টেকাই দায়।এরপর যখন ব্রাজিল গোল দিল তখন আমরা শুরু করলাম চিল্লানো।আমার তো গলা বসে গেছে চিল্লাইতে চিল্লাইতে।এক ভাই দেখি আরেকজনের ঘাড়ে উঠে পতাকা উড়াচ্ছে।
এ এক অন্য অনুভূতি।কোন দল অ্যাটাকে গেলে সবাই মিলে চিল্লানো,গোল মিস হলে হতাশা,ফ্রিকিকের সময় পিনপতন নীরবতা সব মিলিয়ে মিনি স্টেডিয়াম এর অনুভূতি।আলসেমি করে বাসায় বসে থাকলে এই অনুভূতি থেকে বঞ্চিত হতাম।দারুক কেটেছে সময় টুকু।
ফটোগ্রাফার | বৃত্ত |
---|---|
ডিভাইস | পোকো এক্স ২ |
লোকেশন | গরুহাটি,গোবিন্দগঞ্জ |
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
পুরো বাংলাদেশ বর্তমান কাপছে এই ফুটবল খেলা নিয়ে ৷ তবে দাদা আমিও ব্রাজিল ম্যান কিন্তু সেই ছোট বেলা থেকে ব্রাজিল আমার প্রিয় দল ৷ যদিও দুটি খেলাই মোবাইল হতে দেখেছি ৷
তবে সবাই মিলে বড় পর্দায় খেলা দেখার মজাই আলাদা ৷ এই শীতে চাদর গায়ে সাথে বাদাম আহা!!! জমবে খেলা ৷
দারুন লাগল আপনার বড় পর্দায় খেলা দেখার অনুভূতি টা ৷
ধন্যবাদ দাদা
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমি নিজেও প্রতিটা ম্যাচ পর্দাতে গিয়েই দেখি।যদিও সিজনাল বাট সবার সাথে একসাথে খেলা দেখে আলাদা একটা মজা পাই।খেলাটা উপভোগ করা যায় অনেক ভালোভাবে।
এ বছর গরুহাটিতে খেলা দেখা হয়নি।তবে আর্জেন্টিনা যদি ফাইনালে যায় ইনশাআল্লাহ বাসায় গিয়েই খেলাটা দেখবো।
ভামোস আর্জেন্টিনা 🇦🇷
আশা করি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা এল ক্লাসিকো দেখব ফাইনালে।ফোর্সা সেলেসাও।
ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার খেলার দিন ঘুমানো যায় না।কাল একটু আর্জেন্টিনার খেলা দেখেছিলাম,আমার মনে হচ্ছিলো হার্ট বিট বেড়ে যাচ্ছে।তারপর আর খেলা দেখিনি।তবে মনে হয় সবাই মিলে বড় পর্দায় খেলা দেখার মজাই আলাদা। বাদাম ওয়ালাদেরও বেশ ভালো লাভ হয়েছে 😜।
প্রচুর লাভ।সামনে দিন ভাবতেছি ঝালমুড়ি বিক্রি করব।
এখন সারা দেশ দুভাগে বিভক্ত।ব্রাজিল ও আর্জেনটিনা। আমিও ব্রাজিলার সাপোর্টার। সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ
আরে আপনিও তো দলের লোক তাইলে।আমিও ব্রাজিল সমর্থক।
এখন কাতার বিশ্বকাপ চলতেছে । চারদিকে বিশ্বকাপ খেলার উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে। একা একা মোবাইলে বা, টিভিতে খেলা দেখতে ভালো লাগে না। বন্ধু বান্ধব পাড়ার সকলের মিলে একসাথে খেলা দেখার মজায় আলাদা। তাই বড় পর্দায় প্রয়োজন ।আসলে সকলের সাথে বড় পর্দায় খেলা দেখার আনন্দ অনুভূতি সত্যি খুবই অন্যরকম। এত সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
বিশ্ব এখন খেলা নিয়ে ব্যস্ত আছে। আর আমাদের দেশে দুই দল ই বেশি দেখা যায়। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। খেলা নিয়ে আর কি বলব?? খুব উত্তেজনায় কাটে। আপনার দেখা খেলার অনুভূতি পড়ে আমার মনে হচ্ছে আমিও বুঝি আপনাদের ওখানেই ছিলাম। 😂খেলা নিয়ে অনুভূতি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।