ফুচকা খাওয়ার বাজে অভিজ্ঞতা। shy-fox 10%
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন? ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আজ আমি কোন রেসিপি নিয়ে আসিনি আজ আমি ফুচকা খাওয়ার বাজে অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আমার মেয়ের প্রাইভেট টিচার বিকাশ কুমার বর্মন আজ তিন বছর ধরে একটানা আমার দুই মেয়েকে পড়াচ্ছেন। স্যার মানুষ হিসেবে খুবই ভালো তাই টিচার পরবর্তন করা হয়নি, তিন বছরে মোটামুটি স্যারের সাথে আমাদের বেশ ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে উনি আমাকে দিদি বলে ডাকেন,আমাকে নিজের বোনের মতোই সন্মান করেন। আমারা কখন কোথায় যাই তা আগে থেকে স্যারকে বলে রাখি যে আমারা এতদিনের জন্য অমুক জায়গায় ঘুরতে যাবো। কয়দিন আগে আমু রংপুর এ ঘুরতে গিয়েছিলাম আমার কাকার বাসায় তাই স্যারকে বলেছি যে আমরা কয়দিন থাকবো না রংপুর এ ঘুরতে যাবো। স্যার রংপুর যাওয়ার কথা শুনেই বললেন যে দিদি রংপুর এ গেলে অবশ্যই কারমাইকেল কলেজের সামনের ফুচকা খেয়ে আসবেন ওখানকার ফুচকা খুবই সুস্বাদু।
আমাদের স্যার কারমাইকেল থেকে পড়াশোনা করেছেন উনি ওখানকার সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানেন তাই এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম।রংপুর এ যাওয়ার পর স্যার আবার একদিন ফোন দিলো বললো দিদি ফুচকা খেতে গেছিলেন? আমি বললাম না স্যার আজকে বিকেলে যাবো স্যার আবারও ফুচকার প্রশংসা শুরু করে দিলেন এক পর্যায়ে কিছুটা বিরক্তবোধ থেকেই ভাবলাম যে আর দেরি না করে আগে কারমাইকেল এ গিয়ে ফুসকা খেয়ে আসি। যেমন কথা তেমন কাজ ছুটে চললাম ফুচকা খাওয়ার উদ্দেশ্যে।
লোকেশন
রাস্তায় যেতে না যেতেই শুরু হয়ে গেলো বৃষ্টি এত পরিমাণে বৃষ্টি কোথাও না দাঁড়ালে পুরো ভিজে যাচ্ছিলাম সবাই। তাড়াতাড়ি করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ হাতের নাগালে পড়ে আমরা সবাই দৌড়ে গিয়ে ওখানে দাঁড়াই। এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো অবস্থা দেখতে যাবো কারমাইকেল তার আগেই দেখা হলো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ভালোই হলো এটাও দেখা হয়ে গেলো বৃষ্টির জন্য।
একটু বৃষ্টি কমার পর আমরা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে কারমাইকেল এর উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়ি অল্প সময়ে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাই দেখে দেখে একটা ফুসকার দোকানে গিয়ে বসি। দোকানের আশেপাশের পরিবেশ খুব একটা ভালো ছিল না, বৃষ্টি কাঁদা দিয়ে একটা বাজে অবস্থা ছিল তারপরও খেতে হবে কিছু করার নেই। দোকানে মূল্য লেখা ছিল এক প্লেট ডিম ফুচকার দাম ৫০ টাকা করে।তারপর ছয় প্লেট ফুসকা আমরা অর্ডার করি।
লোকেশন
বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষায় আছি নামকরা ফুচকা খাওয়ার জন্য খুবই এক্সাইটেড ছিলাম কখন ফুচকা হাতে পাবো। অপেক্ষার পালা শেষ হলো কাঙ্ক্ষিত ফুচকা আমাদের হাতে এসে পৌঁছালো প্লেট দেখে তো মনে হচ্ছে না জানি কি কি আইটেম দিয়ে ফুচকা বানিয়ে দিয়েছে খেতে মনে হয় অনেক সুস্বাদু হবে দেখে আর দেরি না করে একটা ফুচকা মুখে তুললাম মুখে দেওয়ার পর কেমন কেমন জানি লাগলো তারপর চিবোতে লাগলাম কিন্তু সহজে চিবোনো যাচ্ছে ভাবছি শসা তো এত শক্ত হওয়ার কথা নয়,প্লেটের সাদা সাদা কুঁচানো শসা গুলো খুব ভালো করে হাতে নিয়ে দেখি ওমা এ তো শসা নয় কাঁচা পেঁপে কুঁচি না আছে ঠিকমতো পেঁয়াজ আর না আছে শসা সব পেঁপে দিয়ে ভরা।
তখন আমি দোকানদারকে সুন্দর করে বললাম ভাই শসার পরবর্তে এত পেঁপে দিয়েছেন কেন তখন উনি উত্তরে বললো আপু শসার দাম অনেক বেশি তাই কাঁচা পেঁপে দিয়েছি আমি বললাম দাম বেশি বলে আপনি পেঁপে দিয়ে চালিয়ে দেবেন? তখন উনি বললো আমি যদি বলতাম ফুসকার দাম ১৫০ টাকা প্লেট তাহলে কি আপনি আমার দোকানে খেতেন?আমি তো শুনেই হতবাক এ বলে কি আমি আর কোন উত্তর না দিয়ে সবাই চুপচাপ ভদ্র চিত ভাবে খু্ব কষ্টে খেলাম, না আছে লবণ না আছে ঝাল টাকটাও খুব বাজে ছিল কি আর করা টাকা দিয়ে কেনা জিনিস ফেলতে তো আর পারিনা নাক মুখ বন্ধ করে খেয়ে ৩০০ টাকা দোকানদারের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওখান থেকে উঠে চলে আসি।
লোকেশন
মনে মনে স্যারের উপর একটু রাগ হলো এই তার নামকরা কারমাইকেল এর ফুসকার স্বাদ আমি এরকম বিশ্রী স্বাদের ফুসকা কোনদিন খাইনি, জিনিসের দাম বেশি বলে কি খাবারের মান খারাপ হবে সে ভালো মানের খাবার তৈরি করে দাম টা একটু বেশি করে নিতে পারতো। বর্তমানে মানুষ দামের চেয়ে আগে খাবারের মান নিশ্চিত করে, বাংলাদেশের সব জিনিসের দাম বেশি এটা দেখতে দেখতে আমরা অভস্ত্য হয়ে পড়ছি। যেখানেই যাই সেখানেই দাম বেড়ে গেছে কি একটা অবস্থা।
এই ছিল আমার ফুচকা খাওয়ার বাজে অভিজ্ঞতা, আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।
ফটোগ্রাফার | @bristychaki |
---|---|
ডিভাইস | Vivo Y30 |
হাহাহা।এরকম হয় মাঝে মাঝে।আসলে সব দিন টেস্ট সমান হয়না। বেচারা স্যার এর সম্মান টা ডুবাইল ফুচকাওয়ালারা।আর না হয় স্যারের টেস্ট টাই বাজে।আপনাদে শুধু শুধু পরিশ্রম আর টাকা গুলো নষ্ট হল।তবে আমাদের উপকার হল।কখনো রংপুর গেলে ওখানে খাব না।
এটা ঠিক যে সবসময় টেস্ট একরকম হয়না কিন্তু এতাটাও বাজে হবে বুঝতে পারিনি। কি আর করা অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে আর কখনো ওখানে কারো কথায় যাবো না, তবে বাসায় এসে স্যারকে কিছু বলিনি উনি লজ্জা পাক এটা আমি চাইনা। ধন্যবাদ।
আসলে বাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আসলে মাঝে মধ্যে এইরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। আর ফুচকা হচ্ছে ফেবারিট একটি খাবার।যদি খারাপ লাগে তা হলে মনটা খারাপ হয়ে যায়।এই জন্য আমি অপরিচিত দোকান থেকে কোন সময় ফুচকা খায় না। কারণ ফুচকা মধ্যে টক ভালো না হলে কখনোই খাওয়া হবে না আমার। তারপরও আপু স্যার কে বলতে পারবেন আপনার অভিজ্ঞতা কথা। তাছাড়া আপনার স্যার এর আফসোস থেকে যেত। আমরাও জেনে রাখলাম কারমাইকেল কলেজ এর অভিজ্ঞতার কথা। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া মাঝে মাঝে বাজে অভিজ্ঞতাও অর্জন করা উচিত। স্যার কে শুধু বলেছি যে কারমাইকেল এর ফুসকা খেয়েছি, কিন্তু খুব বাজে ছিল এটা বলনি তাহলে স্যার মন খারাপ করবে তাই।ধন্যবাদ ভাইয়া।
স্যারের প্রশংসার কারনে ছয় প্লেট ফুচকা অর্ডার দিলেন না হয় আগে দুপ্লেট অর্ডার দিয়ে টেস্ট করে নিতেন নিশ্চয়ই।কি আর করা টাকাও গেল আর বিচ্ছিরি টেস্টের ফুচকাও খেতে হল।
আপু আমরা ছয়জন একসাথে গেছিলাম,তাই ছায় প্লেট ফুসকা অর্ডার করা হয়ছিল।আর বুঝতে পারিনি যে টেস্ট এত খারাপ হবে তাই একবারেই অর্ডার করা হয়েছিল। আপনার আইডিয়া টা এর পরের বার অন্য কোথাও কাজে লাগাতে হবে। ধন্যবাদ আপু।
হা হা,,আপি তারপর কি স্যার কে বলতেন খুব সুস্বাদু ছিলো ফুচকা গুলো।আমি অবাক শশার পরিবর্তে পেঁপে। তাই আরো বেশি মজা হয়েছে🤪🤪।মনে চাইছিলো আপনার জন্যও দুই প্লেট নিয়ে আসতে হা হা😜😜
হি হি হি, খারাপ বলেন নি আপু পেঁপে আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী সেদিক বিবেচনা করে খুব ভালো বলাই যায় তাই না, দুই প্লেট বেশি নিয়ে এসে স্যারকে খাওয়ানো লাগতো 😅😅 ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
একটু বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছেন তাইতো আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আর এই বাস্তবতাটির পূর্ব ধারণা থেকে গেল, যা অনেকজনকে এই বিষয়ে সচেতন করতে পারবে। তাই আপনার পোস্ট বলতে গেলে সকলের জন্য একটি সচেতন মূলক ও উপকারী পোস্ট। আজকাল জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে নানান ভেজাল লক্ষ্য করা যায়। তাই এই দিকে আমাদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। আর ফুচকা আমার খুবই প্রিয় তবে আমাদের এলাকায় খুব কম ফুচকা পাওয়া যায়।