প্রেমের বন্ধনে "পরকীয়া"|||~~
একগুচ্ছ রজনীগন্ধার শুভেচ্ছা সবাইকে। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভাল আছি। আর আপনারা সবাই সবসময় ভালো থাকবেন। এটাই প্রত্যাশা।
♥পরকীয়ার প্রলোভন♥
আজ কদিন ধরে মন খারাপের বাতাস বইছে।মনের গহীনে।বাতাসের হুহু শব্দে বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে মনের আকাশ।হাজারো কথার মালা দুশ্চিন্তা হয়ে ওঠা নামা করছে হৃদপিন্ডের প্রগাঢ় রক্তধারায়। আর সংগোপনে লুকিয়ে থাকা ছোট ছোট প্রকোষ্ঠ গুলো খুলে যাচ্ছে আর ভরে উঠছে শূন্যতার অসাড়তায়।প্রিয়জনের অবহেলা আর অবজ্ঞা হৃদয়ের চির ধরেছে। এক অসহনীয় যন্ত্রণা।তিলে তিলে ক্ষয় দিচ্ছে দিনের পর দিন।কিছু কিছু চরিত্র আর কিছু বায়োবীয় মধুর সম্পর্ক হৃদয়ের জমিনে গভীর দাগ কেটে যায় চিরতরে।চাইলেও ভোলা যায়না এই সম্পর্ক গুলো এই প্রিয় মানুষগুলোকে জীবনভর চোর কুঠুরিতে ঘাপটি মেরে বসে ঘুন পোকার মতো কুটকুট করে কাটে। সময় এর শরীরে রঙিন আঁচল ফেলে, ঠোঁটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে অনবরত মিথ্যা বুলি নিঃশেষ করে দিচ্ছে অনামিকার দেহ-মন এবং মস্তিষ্ক। এতোদিনের প্রেম এত দিনের ভালোবাসা মধুর আলিঙ্গনের মুখরিত থাকা।সবকিছু ভুলে কিভাবে পারলে,পরকীয়ায় আসক্ত হতে। এসব ভেবে ভেবে অনামিকা বেশ অস্থির হয়ে উঠেছে।সেই কলেজ জীবন থেকে ভালোবাসতো আকাশকে।আকাশের মতই গভীর ও বিশাল ছিল অনামিকার প্রেম।প্রায় ৮ বছর রিলেশনশিপে থাকার পর দু'জনের পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হল।এখনো দু বছর পদার্পণ হয়নি।এরই মাঝে আকাশ পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে গেছে অন্য নারীদের সাথে।একাধিক নারীর সাথে পরকীয়ার সমস্ত সকল প্রমাণাদি অনামিকার কাছে সুস্পষ্ট। যে মানুষটার জন্য,এত এত পরিশ্রম, এত এত ত্যাগ, আর সেই মানুষটা সেই প্রেমিক পুরুষ টা কিভাবে আমাকে ঠকাতে পাচ্ছে। এই যন্ত্রণায় কুরে কুরে খাচ্ছে অনামিকাকে।
বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছে অনামিকা।তার স্বামী আকাশ একাধিক নারীর সাথে যৌন মিলন করেছে, তার আড়ালে। এবং বিভিন্ন নারীদেরকে নানাভাবে প্রলোভন দেখাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আর এগুলো অনামিকা সব জানতে পারতেছে তার মোবাইল ফোন থেকে। অনামিকা কৌশল করে আকাশের ফোনকে ক্লোন করে নিয়েছে নিজের ফোনে।আর তাই আকাশ যে কারো সাথে কথা বলুক না কেন যে ধরনের কথা বলুক না কেন ভিডিও কল অডিও কল সব কিছুই দেখতে পায় শুনতে পায় অনামিকা।আর এভাবেই আকাশের কুকীর্তি সব চোখের সামনে ভেসে আসে অনামিকার।
তার পরেও আকাশের হুংকার কমেনা।আকাশ নিজেকে অনেক বুদ্ধিমান ভাব লেও বউয়ের বুদ্ধির কাছে এসে একেবারে শিশু।তারপর ক্লোন করে ফোনের যাবতীয় তথ্য, প্রতিটি সেকেন্ড, এর তথ্য পায় অনামিকা।প্রযুক্তির আশীর্বাদ অথবা অভিশাপ যাই বলুন না কেন।তাইতো এখন অনামিকার সংসারে অশান্তি আর অশান্তি।চরিত্রহীন স্বামীদের নিয়ে যেমনটা হয়।আকাশ যেকোনো বয়সে নারীদেরকেই তার ফাঁদে ফেলার নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে।এবং তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে শারীরিক মিলন করা।এভাবে দিনের পর দিন সে একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।এবং দিনের পর দিন অনামিকা এগুলো দেখে স্বামীর হাতে পায়ে ধরে, নানাভাবে বুঝিয়ে সুন্দরভাবে সংসার করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।আজ অনামিকা বড় অসহায়,তার চরিত্রহীন স্বামীর এসব প্রেমলিলায়।কয়দিন কতজন মেয়েকে সে এভাবে বুঝিয়ে-শুনিয়ে স্বামীর কাছ থেকে আড়াল করবে।ছোট ছোট বাচ্চা মেয়েদের প্রতি ও তার অনেক বেশি লোভ।তার স্বামী আকাশের ব্যাপক পরিচিতি আছে।সমাজের চোখে সে এক সম্মানীয় বিচক্ষণ ব্যক্তি।তার স্বামীর সম্মান এর কথা ভেবে, নিরবে আত্মঘাতী দিতে চায় অনামিকা। সে হাজারো অনুনয় বিনয় করে স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করে যখন ব্যর্থ হয়েছে, ঠিক তখনই সে আত্মহত্যার কথা চিন্তা করছে বারবার।
গতকাল রাতে অনামিকা আপু যখন আমাকে কল দিয়ে তাহার এই সমস্ত কথাগুলো শেয়ার করলো তখন আমি প্রায় আকাশ থেকে পড়লাম।আপু একজন কলেজের প্রভাষক।তার পরেও সে আত্মঘাতী দিতে চায় শুধু স্বামীর জন্য।তাইতো গতকাল রাতে মোটিভেশন দিয়ে আপুর মনবল কে আরো দৃঢ় করার চেষ্টা করেছি। এবং স্বামীকে তিনি যতটা ভালোবাসেন, তার চেয়েও বেশি ভালবাসতে বলেছি নিজেকে। আপুকে বেঁচে থাকতে হবে নিজের জন্য।
মর্যাদায় গড়ি সমতা,,
এই শ্লোগানটি যতদিন নারী-পুরুষের মধ্যে উপলব্ধি হবে না। ততদিন পর্যন্ত আমাদের সংসার জীবন গুলো প্রায় এরকম অবস্থা বিরাজ করবে।আসুন আমরা সবাই আপুর জন্য দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তার সংসারের সুখ শান্তি আবার ফিরিয়ে আনে। তাদের প্রেম যেন আবারো জাগ্রত হয়, সেই কলেজ জীবনের প্রেমের মত।ফুলের মতো স্নিগ্ধ সুন্দর সুভাসিত হোক আকাশ ও অনামিকার জীবন।
পরকীয়ার প্রলোভনে পড়ে আর যেন কারো সংসার না ভেঙে যায়। আসুন পরকীয়াকে প্রতিহত করি।তবে প্রেমকে নয়। কারণ প্রেম সত্য, প্রেম সুন্দর, প্রেম পবিত্র।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
বরাবরের মতো আজকেও আপনি খুবই সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনি আজকের কবিতা যে টপিক্স,"পরকীয়া "এটা বর্তমান সমাজে একটি ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন সময় পুরুষ মহিলাদেরকে, আবার মহিলা পুরুষদেরকে, কোন লোভনীয় অফার এর মধ্য দিয়ে এই পরকে জড়িয়ে যাচ্ছে। অথবা নিজের খারাপ নফসের মধ্য দিয়ে এই পরকে জড়িয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সমাজে এটা অহরহ ঘটে চলেছে। আর এর মধ্য দিয়ে অহরহ সংসার ভেঙে যাচ্ছে।
ভাইয়া আজ কবিতা পোস্ট করিনি এটা একটি মেয়ের গল্প।বাস্তবতার নিরিখে।একটু মন দিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন।তবে আপনার সুন্দর মন্তব্য আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে।♥♥
আপু আপনি আজ যে ঘটনাটি শেয়ার করেছেন তা সত্যি দুঃখজনক একটি ঘটনা। আকাশ ও অনামিকার আট বছরের ভালোবাসা এভাবে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে, দেখে খুব কষ্ট পেলাম। আকাশের এমন নোংরা মন-মানসিকতা কে ধিক্কার জানাচ্ছি। তবে আপু অনামিকা যেহেতু একজন স্বাবলম্বী নারী, সেহেতু আকাশের মত একজন নোংরা মনের মানুষের জন্য নিজের জীবন নিঃশেষ করে দেওয়ার কোন মানেই হয় না। তবে আপনার পরামর্শ যথার্থই আপু, প্রথমত আকাশকেই বেশি করে ভালবাসতে হবে, তারচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে নিজেকে।
আসলে এটা তো একজন অনামিকার গল্প। প্রতিদিন এরকম হাজার হাজার অনামিকার গল্প মুকুলেই ঝরে যাচ্ছে। কজনই বা তার খোঁজ রাখি বলুন।♥♥
আসলে মানুষ কেন যে এমন হয় সেটাই আমার মাথায় আসেনা। নিজের সম্মানটুকু নিজে ডোবানোর কোন মানে হয়?? তবে অনামিকা আপু যথেষ্ট ভালো মনের মানুষ তাই বোধহয় সবকিছু জানার পরেও নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে । তার স্বামীর সম্মানের কথা চিন্তা করে সে এই বিষয়টি নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে ধৈর্য ধরার ক্ষমতা দান করেন।
একদম ঠিক বলেছেন অনামিকা আপু আকাশ ভাইয়াকে অনেক বেশি ভালোবাসে এবং তার এই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার কথা ও কাজে।
♥♥
আসলে আপু এটা সবচেয়ে কষ্টের মূহুর্ত যখন দেখা যায় আমার প্রিয় মানুষ টা আমার আড়ালে অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। এবং এমন ভাবে আচরণ করছে যেন কোনো কিছুই হয়নি। আপনার বর্ণনা করা অনামিকা আপুর কথাটা ভেবে নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। উনার অনূভুতি এখন হয়তো আমাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব না। ঠিক বলেছেন আপু মর্যাদায় গড়ি সমতা।
যেকোনো সম্পর্কের মধ্যে থাকতে হবে শ্রদ্ধাবোধ,, থাকতে হবে মর্যাদা, থাকতে হবে স্নেহ সুলভ আচরণ, থাকতে হবে বিশ্বাস, তবেই পূর্ণতা পায় ভালোবাসা। তবে পূর্ণতা পায় প্রেম।♥♥