"স্ট্রিট ফুড: রাস্তায় পাওয়া মজার খাবারের গল্প"
হ্যালো বন্ধুরা আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন।হ্যাঁ আমিও ভালো আছি। আমি ফয়সাল,আজ আপনাদের মাঝে "স্ট্রিট ফুড ব্লগ" নিয়ে হাজির হলাম।আশা করছি সম্পূর্ণ ব্লগ জুড়ে আপনারা আমার সাথে থাকবেন। চলুন তাহলে শুরু করি...
আপনারা সবাই জানেন,কিছুদিন আগেই আমি আমার প্রাণের শহর সিরাজগঞ্জে ফিরে এসেছি।আমাদের সিরাজগঞ্জ শহর অনেক ছোট একটি শহর।এ শহরের সব কিছু যেন গোছালো।এ শহরের মতো গোছালো শহর অন্য কোথাও আমি আর খুঁজে পাইনি। সিরাজগঞ্জ শহরের প্রতিটি কোনায় রয়েছে হাজারো হাজারো স্মৃতি।সিরাজগঞ্জে আসলেই শহরের অলিগলি দিয়ে আমি ঘুরে বেড়াই।সেই সাথে শহরের যত স্ট্রিট ফুট আছে, সেগুলোর স্বাদ উপভোগ করি।গতকাল রাতে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেছিলাম বাজার স্টেশন।বাজার স্টেশনে সব সময় মানুষের ভিড় থাকে। কারণ এই জায়গাটি শহরের ব্যস্ততম একটি জায়গা।বাজার স্টেশনে উল্লেখযোগ্য জিনিস গুলোর মধ্যে স্ট্রিট ফুড অন্যতম।
তো গতকাল রাত আটটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাজার স্টেশনে চলে আসলাম।আসতে সময় লেগেছে মাত্র ৮ মিনিট।বাজার স্টেশনে এসেই আমার সব চেয়ে প্রিয় স্ট্রিট ফুডকার্টে চলে আসলাম।আপনারা যে ফুডকার্ট দেখতে পাচ্ছেন এটি সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন এর ঠিক পিছনেই অবস্থিত। এই ফুডকার্ট চালায় দুইজন।মনির এবং মালিক,তারা দুই ভাই। তারা দুইজন মিলে সিরাজগঞ্জে এই জায়গায় প্রায় ৫/৬ বছর ফুডকার্ট চালাচ্ছে। তারা বিকেল চারটায় ফুডকার্ট চালু করে রাত বারোটা পর্যন্ত খাবার বিক্রি করে। এখানে পাওয়া যায় চিকেন সমুচা,নরমাল সমুচা,কলিজা সিঙ্গারা,চিকেন বার্গার, ভেজিটেবল রোল এবং হালিম। প্রত্যেকটা খাবার অত্যন্ত সুস্বাদু।তারা প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার টাকার উপর বিক্রি করে।
প্রথমে চলে আসি তাদের চিকেন সমুচা এবং নরমাল সমুচা নিয়ে।তাদের সমুচা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।এত মজা লাগে এই সমুচা যা বলার মত না।যে একবার খেয়েছে সে প্রতিবার আসতে বাধ্য। প্রতি পিস নরমাল সমুচার দাম ৫ টাকা, আর চিকেন সমুচার দাম ১০ টাকা। দাম অত্যন্ত কম।কিন্তু খেতে খুবই মজা।সমুচার সাথে থাকছে আনলিমিটেড টমাটো সস্।যখন সমুচায় সস্ ভরিয়ে মুখের ভিতর দিয়ে একটা কামড় মারি মনে হয় যেন অমৃত খাচ্ছি।
এবার চলে আসি কলিজা সিঙ্গারায়। ছোটবেলা থেকেই কলিজা সিঙ্গারা খেতে আমি খুব পছন্দ করি।সিঙ্গারাই খাসির কলিজা ব্যবহার করা হয়।যেন সকল ধর্মের মানুষ এই সিঙ্গারার স্বাদ গ্রহণ করতে পারে।সিঙ্গারাটি এত মজা লাগে যা বলার মত না।সিঙ্গারার ভিতর ২ পিস কলিজা দেওয়া হয় এবং পেঁয়াজ দেওয়া থাকে।খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। প্রতি পিস কলিজার সিঙ্গারার দাম মাত্র ১৫ টাকা। সাথে থাকতে আনলিমিটেড টমেটো সস্।
ভেজিটেবল রোল, সেখানকার ভিজিটেবল রোলের একটা বিশেষত্ব হচ্ছে এখানে যে সবজি ইউজ করা হয় একদম টাটকা।মনে করেন, সকালে বাজার থেকে টাটকা সবজি কিনে দুপুরের মধ্যেই তারা ভেজিটেবল রোল তৈরি করে বিকেলে বিক্রি করতে আসে।প্রতিদিনের তৈরি করা ভেজিটেবল রোল প্রতিদিনের শেষ হয়ে যায়।এজন্য ভেজিটেবল রোলগুলো খেতে খুবই মজা। প্রতি পিস ভেজিটেবল রোলের দাম মাত্র ১০ টাকা। সাথে থাকছে আনলিমিটেড টমেটো সস্।
চিকেন বার্গার, অন্য অন্য রেস্টুরেন্ট থেকে এখানকার চিকেন বার্গার আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।খেয়ে অনেক তৃপ্তি পেয়েছি।বার্গারের ভিতর যে চিকেনটা দেয় এটার সাইজ অনেক বড়।এবং অনেক ভালোভাবে সিদ্ধ করা।এজন্য খেতে খুবই মজা পাওয়া যায়। প্রতি পিস চিকেন বার্গার দাম মাত্র ৬০ টাকা।
হালিমের ছবি তুলতে ভুলে গেছিলাম।এখানে খাসির মাংসের হালিম পাওয়া যায়।খেতে খুবই মজা।আমি মাঝেমধ্যেই এখান থেকে হালিম কিনে নান রুটি দিয়ে খাই। প্রতি বাটি হালিমের দাম মাত্র ৭০ টাকা। পাঁচ ছয় টুকরা মাংস পাওয়া যায়।আমার পেট ভরা ছিল তাই গতকাল রাতে হালিম খাইনি।আমি নিয়েছিলাম শুধু চিকেন সমুচা ও কলিজা সিঙ্গারা।মন মত খেয়ে পেট পূজা করে আবার হাঁটতে হাঁটতে বাসায় চলে আসলাম।
আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করলাম।আবার অন্য কোনদিন অন্য কোন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
প্রত্যেকটা ছবি তোলার লোকেশন এবং ডিভাইসের নামঃ
Device:Samsung A33 (5G)
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
ফোনের বিবরণ
মোবাইল | Samsung A33 (5G) |
---|---|
ধরণ | "স্ট্রিট ফুড: রাস্তায় পাওয়া মজার খাবারের গল্প" |
ক্যমেরা মডেল | A33 (48+8+5+2) |
ক্যাপচার | @mohamad786 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ |
X-Promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ফটোগ্রাফির পাশাপাশি মনের এবং মালিক এর সুন্দর ব্যবসার বিষয় বর্ণনা করেছেন। বর্তমান সময়ে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রাস্তার পাশে এমন অনেক সুন্দর রেসিপি তৈরি করা মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে। বেশ ভালো লাগে এই জাতীয় রেসিপিগুলো খেতে। বিশেষ করে শীতের সন্ধ্যাবেলায় তো জমে ওঠে এই সমস্ত দোকানগুলো। আমারও ভালো লাগে। অনেক ভালো লাগলো দারুন দারুন ফটোগ্রাফিক পাশাপাশি বিস্তারিত গল্প শেয়ার করেছেন দেখে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
সিরাজগঞ্জ শহরে আমার এখনো যাওয়া হয়নি, তবে আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম শহরটি অনেক সুন্দর এবং সাজানো গোছানো। আপনি স্টেশন বাজারে গিয়ে একটি স্ট্রিট ফুডের দোকানের বিভিন্ন খাবার নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপহার দিলেন। বিশেষ করে এধরনের খাবারগুলো আমরাও ভীষণ পছন্দ করি। আপনি বেশ গুছিয়ে পোস্টটি উপস্থাপন করেছেন এবং আপনার বর্ণনা ভীষন সাবলীল ছিল। অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
কখনো যদি সুযোগ হয় একবার সিরাজগঞ্জ শহর ঘুরে যাবেন।সিরাজগঞ্জ শহরটি খুবই গোছালো।
অনেক মজার গল্প শেয়ার করেছেন। রাস্তার পাশে এমন অনেক বিক্রেতারা এমন ঝাল ঝাল ভাজা রেসিপি বিক্রয় করে থাকেন। আমার খুবই ভালো লাগে কিন্তু প্রচন্ড গ্যাসের জন্য এগুলো খাওয়া কম হয়। আপনার গল্প করতে গিয়ে মনির আর মালিকের বাস্তব জীবন সম্পর্কে কিছু জানতে পারলাম। তবে ৫ টাকায় সমুচা পাওয়া যায় এটা অবাক করা বিষয়।
৫ টাকার সমুচা তাও আবার খেতে অনেক মজা,সাথে আছে আবার আনলিমিটেড টমেটো সস।
শহর এলাকার অলিগলিতে অনেক ধরনের স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়। যদিও এগুলো তেমন একটা স্বাস্থ্যসম্মত নয় তবে মাঝেমধ্যে খেতে ভালোই লাগে। আমারও মাঝেমধ্যে এগুলো খাওয়া হয়। আপনার ক্যাপচার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে তো বেশ লোভনীয় লাগছে। কলিজা সিঙ্গারা টা কখনো খাওয়া হয়নি। তবে হালিম আমার বেশ পছন্দের। সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
কলিজা সিঙ্গারা একবার খেয়ে দেখবেন খেতে খুবই মজা।আমার অনেক প্রিয়।
আমি প্রায় সন্ধ্যা বেলাতে এই জাতীয় খাবারগুলো বাজার থেকে খেয়ে থাকি। অনেক ভালো লাগে বিভিন্ন আইটেমের খাবারগুলো। বেশ বর্ণনার সাথে বিক্রেতাদের বিক্রয়-কাহিনী উপস্থাপন করেছেন। খুব ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট দেখার পাশাপাশি বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরে।
আপনার মন্তব্যটি পড়েও আমার অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।