বসন্ত মেলায় একদিন।
হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি @purnima14 বাংলাদেশী,
আজ- ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, বুধবার, ২০২৫ খ্রিঃ।
কভার ফটো
কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আমি আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করে থাকি। আজ এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। মেলায় ঘুরাঘুরি করতে আমরা তো সবাই পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকেই মেলায় ঘুরতে আমার ভালো। মেলা মানে লোকের সমাগম। বসন্তকাল তো আমাদের মাঝে এসে গেছে। ইট, কাঠ, পাথরের শহরে কোকিলের ডাক, ফুলের গন্ধ কিছুই পায় না। প্রতিদিন ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় রাস্তায় পাতা ঝরে পড়ার দৃশ্য দেখতে পাই। তাতেই বোঝা যায় বসন্ত এসে গেছে। বসন্ত হলো ঋতুর রাজা। বসন্ত কাল আসলেই বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। মেলায় নাম দেওয়া হয় ফাল্গুনী মেলা অথবা বসন্ত মেলা। সেদিন আমরা মেসমেটরা মিলে বসন্ত মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে ঘোরাঘুরির মুহূর্ত আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
হঠাৎ করে শুনতে পাই পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে বসন্ত মেলা বসেছে। এই মাঠে নানান সময় নানান ধরনের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। খুব একটা বড় জায়গা নয় এটা। এখানে মেলা ছোট করে উদযাপন করা হয়। বড় মেলাগুলো সব শিল্পকলা একাডেমী কিংবা পৌরসভা তে বেশি হয়ে থাকে। আমার পাশের রুমের বড় আপু রুম ছেড়ে একেবারে চলে যাবে। তাই শেষ দিনের মতো তার সাথে একটু ঘুরাঘুরি করতে চাইলাম। সেই সূত্রেই আমরা হাঁটতে হাঁটতে পাঁচ জন মিলে মেলায় গিয়েছিলাম।
সেদিন সকাল থেকে আমার বেশ শরীর খারাপ। কলেজে গিয়ে কিছুটা সময় থাকার পর শরীর খারাপের কারণে আমি কলেজ থেকে চলে এসেছিলাম। আমি মূলত খুব অসুস্থ না হলে কখনোই কলেজ বাদ দেই না। সারাদিন বেশ অসুস্থ তাই কাটছিল। সন্ধ্যাবেলায় ট্রেনে করে বাবার আসার কথা ছিলো।ট্রেন স্টেশনটা মেলার পাশেই। সেজন্য ভাবলাম যায়। মেলাও দেখা হয়ে যাবে বাবার সাথেও দেখা হয়ে যাবে। বাবা না আসলেও হয়তো যেতে হতো কারণ আপুর সাথে আবার কখনো দেখা হবে কিনা সেটার কোন ঠিক নেই। মাঝে মাঝে ভাবি, এই মেস লাইফে এসে কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়। কত নতুন মানুষ চিনতে পারি। সময়ের কারণে তারাও আবার অচেনা হয়ে যায়।
বাবা আসার ১ ঘন্টা আগেই আমরা মেলায় চলে যায়। মেলায় তেমন লোকসমাগম ছিল না সেদিন। মেলা চলবে ২৯ তারিখ পর্যন্ত। সেজন্য এত তাড়াতাড়ি আর খুব একটা লোক হয়নি। মেলায় গিয়ে বেশ কিছু স্টল দেখতে পাই। কুষ্টিয়ার সব মেলাতেই দেখি এরকম স্টল বসে। আমরা এক একটি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকি। মেলায় নাগরদোলা এবং ছোটদের খেলার জন্য খেলার রাইড এসেছিল। যেহেতু জায়গা অনেক কম সেহেতু বেশি কিছু এখানে আসেনি। যখন মেলায় ঘোরাঘুরি করছি ততক্ষণে আমার গায়ে জ্বর। হাঁটতে হাঁটতে বেশ কিছুক্ষণ ধরে মেলার চারিপাশ ঘুরে ঘুরে দেখলাম। সেদিন যেন মেলায় গিয়ে একটুও ভালো লাগছিল না। মেলায় ঘুরতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো।তারপরেও আপুদের কিছু বুঝতে না দিয়ে তাদের সাথে ঘোরাঘুরি করতে থাকি।মেলায় ঘর সাজানোর বেশ কিছু ওয়ালমেট দেখতে পায় আমার কাছে বেশ ভালই লাগছিলো।সেদিন যেন কিছুই কিনতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না। আপুরা কিনছিলো আমি দেখছিলাম।
ঘুরতে ঘুরতে আমরা একটি সুন্দর দোকানে প্রবেশ করি। দোকানটা বিভিন্ন ধরনের জিনিস দিয়ে সাজানো ছিলো।দোকানের আয়না গুলো এবং ঘর সাজানোর বিভিন্ন ঝাড়বাতি আমার খুব পছন্দ হয়। আপু দোকান থেকে একটু ওয়ালমেট কিনছিলাম। তারপর আমরা হাঁটতে হাঁটতে প্রবেশ করি ড্রেসের দোকানে। খুব সুন্দর সুন্দর ড্রেস দেখতে পাই। একটা শাড়ি তো আমার খুব পছন্দ হয়। লাল সাদা রঙের শাড়ি এমনিতে আমার ভালো লাগে। লাল সাদা রংয়ের শাড়িটি দেখে খুব কিনতে ইচ্ছে করছিলো।যেহেতু কিছু কেনার তেমন ইচ্ছা ছিল না তাই খুব বেশি টাকা নিয়ে যায়নি। আর আমি স্টুডেন্ট আমাদের কাছে আত টাকা একবারে থাকেনা। সাইটের দাম চাইছিল তিন হাজার টাকা। ২০০০ টাকা দিলে হয়তো দিয়ে দিতো।শাড়িটা খুব সুন্দর ছিলো।আপুরাও কয়েকটি শাড়ি দেখলো। কেউ আর শাড়ি কিনলাম না। তারপর চলে আসলাম ক্লিকের দোকানে। ক্লিপ চুড়ি সবই ছিলো। আমি একটি ক্লিপ কিনে নিলাম শুধু।
তারপর একটু ঘোরাঘুরি করে আমরা বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেই। তার আগে সবাই মিলে কিছু খাওয়ার কথা ভাবছিলো।আমি হঠাৎ করে বলেও ঠিক আমি কিছুই খাব না। আমি খুবই চঞ্চল একটা মেয়ে। আপু আমার চুপচাপ থাকা দেখে বলছিলো,তোমার কি হয়েছে কেয়া?তুমি কি খুব অসুস্থ? আমি বললাম না আপু এমনিই ভালো লাগছে না। তারপরেও আপু বসে গিয়েছিলো আমার শরীর খারাপ লাগছে। তারপর কেউ কিছু খেলো না। সবাই মিলে মেলা থেকে বেরিয়ে আসলাম। তারপর আমি আর আমার আরেক মেসমেট মিলে স্টেশনে আসলাম। সেখানে বাবার জন্য অপেক্ষা করলাম। আর অন্যরা তাদের কিছু কেনাকাটার জন্য মার্কেটে গেলো।বাবার সাথে দেখা করে বাবার থেকে খাবার নিয়ে আবার আপনাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সাথে সামিল হলাম। তারপর তাদেরকে কেনাকাটা শেষ করে সবাই মিলে একসাথে রুমে ফিরলাম।
শরীর খারাপ না হলে মেলা দেখাটা হয়তো আরো সুন্দর হতে। যাইহোক আমাদের সাথে কাটানো সেসদিনটা বেশ ভালোই ছিলো।
আজ এই পর্যন্তই।
ছবির বিবরণ
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া
প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।
আমি কে !
আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।
@purnima14


বসন্ত মেলাতে কোনদিন যাওয়া হয়নি তুমি গিয়েছিলে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। সেটা যেহেতু পছন্দ হয়েছিল তাই কিনে আনতে পারতে। মেলায় যাওয়ার আগে ক্লিপ ভেঙে গিয়েছিল তাই ক্লিপ কেনা হয়েছে ! অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বসন্ত মেলা তো বেশ জাঁকজমকভাবেই বসেছে দেখছি। সেই মেলায় বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগছে। এই ধরনের মেলাগুলোতে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে বেশ ভালোই লাগে। আর এই মেলায় তো অনেক রকমের স্টল বসেছে দেখছি। তাই সেখানে সময় কাটাতে বেশ ভালই লাগবে। আর পাশে রেল স্টেশন বলে আপনার ঘুরে আসতে সুবিধা হয়েছে।
বসন্ত মেলায় খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন আপু। আসলে মেলাতে গেলে মন-মানসিকতা এমনিতে অনেক ভালো হয়ে যায়। ধন্যবাদ মেলায় ঘুরাঘুরি করা থেকে শুরু করে নিজের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বসন্ত মেলায় কখনো যাওয়া হয়নি। এই ধরনের আয়োজন আমাদের এদিকে খুব একটা করা হয় না। আপনি বসন্ত মেলায় খুব চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ভালো লাগলো দেখে। নাগরদোলায় অনেকদিন ওঠা হয় না। সুন্দর কিছু মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
বসন্ত মেলায় গিয়ে দেখছি খুবই সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। আর আপনার কাটানো পুরো মুহূর্তটা অনেক সুন্দর ছিল। শরীর খারাপের কারণে ভালোভাবে ঘুরাঘুরি করতে পারেননি, আর খাওয়া-দাওয়া করতে পারেননি। এমনিতে কিন্তু এরকম মেলা গুলোতে গেলে মনটাও খুব ভালো হয়ে যায়। তুমি শরীর খারাপ হয়ে গেলে কিছুই ভালো লাগেনা। ঘুরে ঘুরে দেখেছিলেন শুনে ভালো লাগলো।
বসন্ত মেলায় কাটানো সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লেগেছে। পুরো মুহূর্তটা ছিল অনেক বেশী সুন্দর। আর এত অপরূপ কিছু ফটোগ্রাফি দেখে আরো ভালো লেগেছে। মেলায় ঘুরাঘুরি করার সময় কেনাকাটা করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আপনার অসুস্থতার কারণে আর কিছু খাওয়া হয়নি কারোরই। যাইহোক ধন্যবাদ এটা শেয়ার করার জন্য।
আসলে এখনো আমাদের এখানে বসন্ত মেলা শুরু হয়নি। আপনাদের এই কুষ্টিয়ায় তো দেখছি আগে থেকেই বসন্ত মেলা শুরু হয়ে গেছে। আসলে আপনার এই মেলা দেখার পুরো বর্ণনাটা পড়ে মনে হচ্ছে যেন আমিও বসন্ত মেলায় আছি। এত সুন্দর সুন্দর ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বসন্ত ঋতু টা সবার কাছে অন্যরকম একটা অনূভুতির নাম।তবে বসন্ত উপলক্ষে কুষ্টিয়া তে যে এমন মেলা হয় এটা জানতাম না একেবারেই। দারুণ লাগল দেখে। মেলায় গিয়ে সময় টা বেশ সুন্দর কাটিয়েছেন আপু। সবমিলিয়ে চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।।