দূর্গা প্রতিমা দেখার অনুভুতি 🥰
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
বাড়িতে আমাদের মন্দিরে পূজা হয় তাই সব আত্নীয় স্বজন বাড়িতে গমগম করে আর পূজোয় কখনো বের হওয়া হয়না প্রতিমা দেখার জন্য। উপোস থেকে পূজার আয়োজনে অংশগ্রহণ করে অঞ্জলি দেয়ার পর মন চায় না আর কোথাও যেতে।
এবারের পূজোয় আমরা কোন ডেকোরেশন করুনি তাই বাচ্চাদের মন খারাপ।ডাক ছারা অন্য কিছুর আয়োজন করা হয়নি বক্স করা হয়নি বলে বাচ্চাদের খুব মন খারাপ।তাই তাদেরকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাওয়া দরকারী মনে হলো।
গত বছর নবমীতে ভাইয়ের মেয়ে দেখতে গিয়ে প্রতিমা দর্শন করে বেশ ভালো লেগেছিল তাই তখনি ঠিক করেছিলাম যে গত বছর ও বের হবো প্রতিমা দেখতে।বরের সাথে বাইকে যেতে পারলেও যাওয়া হয়না কারণ পরিবারে অন্য সদস্যদেরকে রেখে একা একা ঘোরাটা দৃষ্টিকটু।
সব বাচ্চাদের রেখে একা ঘুরতে ভালো লাগে না তেমন।
কথায় আছে এবং আমার জীবন থেকে প্রমাণিত যা নিয়ে আগে থেকে আশা করি তা পূরণ খুব কম হয় কোন না কোন ঝামেলা লেগে থাকে।এবারও পূজোয় মনে শান্তি নেই। পূরা পূজাটাই অশান্তিতে কেটেছে। ভয়ে ভয়ে।পূজোর সময় গুলো কেমন জানি উল্টোপাল্টা। মা দূর্গারও যেন বড্ড তারা এবার মর্তলোক থেকে বিদায় নেয়ার।সব গুলো তিথি খুব তারাতারি ছিলো।আমাদের কে রাত তিন,চারটায় উঠে পূজোর আয়োজন করতে হয়েছে। একদম সকাল নয়টার মধ্যে পূজো শেষ অন্জলি শেষ তার আগেও হয়েছে কোন কোন দিন।
ছেলের বেশ মজায় কেটেছে কারণ তারা ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরেই অন্জলি দিতে পেরেছেন। আমাদের কষ্ট হয়েছে কিন্তুু পূজা শেষ সারাদিন ফ্রি সময়।আত্নীয় স্বজন নেই বল্লেই চলে। কেউ আসেনি এবার।বাড়ির লোকজন ছারা কেউ নাই আর পূজোর আত্মীয়।
ভাবলাম সবাই মিলে ঘুরে আসা যাক গাইবান্ধা শহরের প্রতিমা দর্শনে। যে কথা সেই কাজ আমরা একটা অটোকে বলেছিলাম আসার জন্য। সবাই রেডি হয়ে তিনটায় বের হয়েছি পূজো দেখতে।আমরা অটোতে মোট আটজন ছিলাম আর বাইকে আমার মেয়ে ও ওর কাকাই, কাকাইয়ের ছেলে ছিলো।
গাইবান্ধা শহরে এই প্রথম পূজায় ঠাকুর দর্শন আমার।বেশ কয়েকটা ঠাকুর দেখলাম।পুলিশ, আনছান, সেনাবাহিনী,আনসার ও অন্যান্য বাহিনীর নিরাপত্তার কড়া চাদরে ঢাকা।ঘুরলাম তবে খুব একটা ভালো লাগলো না। শহরের রাস্তা গুলোগে এতোটা জ্যাম লেগে গিয়েছে আর একটু পর পর অটোতে উঠা নামা করে করে নাজেহাল অবস্থা। প্রতিমা গুলো খুব ভালো লাগলো।
কোথাও কোথাও মেয়েরা নেচে গেয়ে আনন্দ করছে আর সবাই তা উপোভোগ করছে যা খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে।আমাদের সব কয়েকটা প্রতিমা দর্শন করে করে রাত নয়টা বেজে গেছে বুঝতে পারিনি।এর ফাকে একবার আইসক্রিম খাওয়া হয়েছে।
এবার ভাবলাম সিংগারা খাওয়া যাক কারণ আমরা পূজোর কয়েক দিন নিরামিষ খাই তাই গাইবান্ধার বিখ্যাত দোকান রমেশ ঘোষের দোকানে গেলাম।এই দোকানের সিংসারা খেতে আমার খুব ভালো লাগে তবে রস মুঞ্জরি এই দোকানের নাম করা।মিষ্টি কেউ খেতে চায় না।
সিংঙ্গারা অর্ডার করতেই বল্লেন সিঙ্গারা হবে না হবে বা কি করে দোকানে তিল ধরার জায়গা নেই।লোকে লোকারন্য অবস্থা। অবশেষে আমরা রস মুঞ্জরি খেলাম বাধ্য হয়ে।রস মুঞ্জরী খাওয়ার পর আমার জা চা খাবে। সে চায়ের পাগল তাই পাশের একটি চায়ের দোকানে গিয়ে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খেলাম সবাই মিলে।দাড়িয়ে চা খেতে বেশ ভালোই লাগলো কারণ বসে থেকে থেকে কোমড় লেগে গিয়েছিল।
চা খাওয়ার পর সাবাই পান খেলাম।মাঝে মাঝে পান খেতে বেশ মজা লাগে।পান খাওয়া শেষ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আসার পথে মাঝে মাঝেই পূজোর গেইট ও ডেকোরেশন দেখা পেলাম কিন্তুু কেউ আর নেমে যেতে চাইলো না তাই আর কেউ গেলাম না।
সোজা বাড়ির পথে আসতে গিয়ে আমাদের গ্রামের একটি পূজা সেই প্রতিমা দর্শনে গেলাম এবং গুড়ের জিলিপি নিলাম।দেবরের ছোট ছেলের জন্য খেলনা কিনে নিয়ে চলে আসলাম বাড়িতে।এসে দেখলাম আমাদের মন্দিরে আরতি হচ্ছে। বাড়িতে না গিয়ে আরতি দেখতে মন্দিরে গেলাম এবং আরতি দেখলাম কিছু সময় ধরে তারপর ক্লান্ত শরীরে রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম। আমার শান্তির একটা জায়গা আমার বিছানা।
চব্বিশ ঘন্টা আমার বিছানায় আমি থাকি।বাহিরে মহাপ্রলয় হলেও আমি আমার বিছানা ছারতে চাই না।শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম শহরের পূজোর থেকে গ্রামের পূজো ভালো এতো লোকের ভীর নেই আর কখনো শহরে যাবো না পূজা দেখতে।গ্রামের পূজো গুলো দেখতে বের হবো।আসলে একা নিরিবিলি পরিবেশে থাকার কারণে বেশি মানুষ ও কোলাহল একদমই ভালো লাগে না।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
অনেক সুন্দর একটা অনুভূতি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন। তোমাদের মাধ্যমে কিন্তু আমার আগে অনেক কিছু জানার সুযোগ পায় আপনাদের সুন্দর এই ধর্ম বিষয়ে। ঠিক তেমনি অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দিয়েছেন আপনি। এত সুন্দর ভাবে পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
সুন্দর অনুভূতি আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন৷ বাড়ির পূজোর আমেজ আলাদা। সেখানে নিজেদের ব্যস্ততা অবশ্যই থাকে৷ তার মধ্যে ভালো লাগাও অন্যরকম থাকে৷ তবে শহরের পূজায় খুব ভিড় হয়৷ তা সত্যিই নেওয়া যায় না। আপনাদের পুজোর গল্প পড়ে খুব ভালো লাগছে৷
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।