নাটক রিভিউঃ " মন দুয়ারী "
28-02-2025
১৬ ফাল্গুন , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো দিনশেষে ভালো থাকাটাই হলো সবচেয়ে বড় বিষয়। আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে নাটক শেয়ার করার। আজকে যে নাটকটি শেয়ার করবো সেটির নাম হচ্ছে মন দুয়ারী। আশা করছি আজকের নাটকটি আপনারা উপভোগ করবেন।
নাম | মন দুয়ারী। |
---|---|
পরিচালনা | জাকারিয়া সৌখিন। |
গল্প | নাসির খান ও জাকারিয়া সৌখিন। |
প্রযোজক | এসকে শাহেদ আলী। |
অভিনয়ে | অপূর্ব, নাজনীন নিহা, দিলারা জামান সহ আরও অনেকে। |
আবহ সংগীত | নাজির মাহমুদ, কনা, রেহান রাসুল ও অবন্তী সিথি। |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ৩৫ মিনিট ৪১ সেকেন্ড। |
মুক্তির তারিখ | ১৮ই ফেব্রুয়ারি , ২০২৫ ইং |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব। |
ধরন | রোমান্টিক, সামাজিক । |
ভাষা | বাংলা |
চরিত্রেঃ
অমিতঃ
জিয়াউল ফারুক অপূর্ব।নন্দিনীঃ
নাজনীন নিহাকাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, দাদিমার ফোনে ফোন আসে। আমেরিকা থেকে তার বড়নাতি কাল দেশে আসবে। সেটা শুনে দাদিমা অনেক খুশি হয়ে যায়। দাদিমা তখন বলে এয়ারপোর্ট এ তার জন্য কাউকে পাঠাবে গাড়ি দিয়ে কিন্তু অমিত বলে গুগল ম্যাপ ফলো করে সে চলতে পারবে। দাদিমা এই খুশির সংবাদ পরিবারকে সবাইকে ডেকে এনে বলে। তবে দুঃখের সংবাদ হলো অমিত দেশে আসছে দাদিমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু পরিবারের বড় মেয়ের কানে খবরটা পৌঁছায় তারই ছোট ভাই। বলে যে আমেরিকা থেকে এক ভিলেন আসছে দাদিমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। নন্দিনী কোনোভাবেই দাদিমাকে আমেরিকা যেতে দিবে না। অমিত দেশে আসার উপলক্ষে বাড়িতে বড় ধরনের রান্নার আয়োজন করা হয়। অমিত দেশে এসে গাড়ি করে রওনা দেয় রূপাদিঘীর উদ্দেশ্য যেখানে তাদের জমিদার বাড়ি।
গাড়ি চালককে অমিত বলেছিল গুগল ম্যাপ ফলো করে যাওয়ার জন্য। কিন্তু গাড়ির চালকের কথা হলো রাস্তা থাকতে গুগল ফলো করবে কেন! তো অমিতের গুগল ম্যাপ ফলো করতে গিয়ে অমিত নিজেই পরে যায় বিপদে। গাড়ি এসে থামে নদীর ধারে। তারপর গাড়ি চালক অমিতকে সেখানে রেখেই চলে যায়। অমিত রওনা দেয় নদী পথেই। দাদিমা ঘাটে তারজন্য গাড়ি পাঠায়। সঙ্গে আসে আক্কাস ও নন্দিনী। আক্কাস অমিতকে সাদরে গ্রহণ করলেও নন্দিনী সাদরে গ্রহণ করেনি। কারণ নন্দিনীর কাছে অমিত হলো ভিলেন একজন! তারই কারণে গাড়িতে নন্দিনীর হাত ধরে উঠতে গিয়ে কপালে আঘাত পেয়ে বসে অমিত! অমিতকে হাসপাতালে নেয়ার পর আক্কাস ভাইকে বলে নন্দিনী এ ঘটনা যেন কোনোভাবেই দাদিমার কানে না পৌঁছায়। তারপর আক্কাস অমিতকে নিয়ে বাড়িতে আসে। দাদিমা পরিবারের বড় নাতিকে পেয়ে অনেক খুশি হয়। অমিতকে তার ছোট দুই চাচা মোরশেদ ও জামসেদ চাচার সাথে এবং তাদের ওয়াইফের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
বাড়িতে আসার পর থেকেই সবাই ভীষণ খুশি। কিন্তু নন্দিনী খুশি না। কারণ সে কোনোভাবেই আমেরিকা যেতে দিবে না। তাই তারা প্লেন ভূত সেজে অভিনয় করে অমিতকে ভয় দেখায়। যেন সে আমেরিকা চলে যায়! দাদিমাকে সাথে না নিয়েই। এদিকে গ্রামের লোকজন আসে তার বড় নাতি অমিতকে দেখার জন্য। এলাকার মানুষ সবাই দাদিমার কথা শুনে, সম্মান করে। নন্দিনী তখন অমিতকে বলে তারপরেও কি দাদিমাকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন? অমিত তখন বলে দাদিমা তার পুরো জীবনটা এখানে কাটিয়ে দিয়েছে। বাকি জীবনটা তার বাবার সাথে আমেরিকা কাটাবে! তারপর অমিতের দাদিমা তাকে তারা দাদার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। অমিতের দাদা হলো আহসানউল্লাহ চৌধুরী আর দুই চাচার বাবা হলো আমানউল্লাহ চৌধুরী। আর তাদেরকে নিয়েই এই পরিবার।
কিন্তু অমিতের ছোট চাচা বলে যে অমিতের বাবা স্বার্থপরের মতো আমেরিকা চলে গেছে। আর তখন অমিত তার চাচার মুখের উপর কথা বলে এবং বলে তার বাবা স্বার্থপর না। ফিউচারের বেটারমেন্ট এর জন্য আমেরিকা গিয়েছে। এতে তার বাবার দোষ কোথায়? অমিতের দাদিমা তখন রেগে যায় এবং বলে এ পরিবারের রীতি নেই বড়দের মুখের উপর কথা বলা। আর সেটা অমিত ভঙ্গ করেছে! তাই অমিত সিদ্ধান্ত নেয় সে আমেরিকা চলে যাবে। অমিত ব্যাগ নিয়ে চলে যায় আর মাঝ রাস্তায় আক্কাস ভাই বলে উঠে না যাওয়ার জন্য। কারণ অমিত আসবে জেনে তার দাদী ভীষণ খুশি হয়েছে! এভাবে চলে গেলে সে ভীষণ কষ্ট পাবে। অমিত তখন আবার বাড়িতে ফিরে আসে এবং দাদাীকে বলে সে স্বার্থপর না! অমিতের ধারণা ছিল তাদের পরিবারের বাইরে তার দাদী। কিন্তু তাদের বন্ডিং যে এতোটাই শক্ত এখানে আসার পর তা পাল্টে গিয়েছে।
অমিতের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে। ডাক্তার তাকে জিজ্ঞেস করেছিল তাদের পরিবারের কারো অ্যাজমার প্রবলেম আছে কি না। তখন অমিত তার বাবার কাছ থেকে জানতে পারে তার দাদাভাইয়েরও অ্যাজমার সমস্যা ছিল। তারপর দাদিমা বলে নন্দিনীরও নাকি অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে। নন্দিনী সেটা শুনে লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে চলে যায়। দাদিমা সিদ্ধান্ত নেয় অমিতকে শিকল পড়ানোর জন্য। দাদীমা তখন বলে অমিতকে নিয়ে নন্দিনী পুরো গ্রামটা ঘুরে দেখায়। অমিতের কাছে নন্দিনী এখনও একটা পিচ্ছি মেয়ে। কিন্তু নন্দিনীর সময় বয়সী সব বান্ধবীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে নন্দিনীর মনে ভালো লাগা শুরু হয় অমিতের প্রতি। কিন্তু অমিত কমিটেড ইলিতার সাথে। তার গ্রামে থাকা ঠিক হবে না। হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেয় সে আমেরিকা চলে যাবে!
এদিকে তার দাদিমা অমিতের সাথে নন্দিনীর বিয়ের কথা ভাবছিল। কিন্তু অমিত তখন বলে সে পরশু আমেরিকা চলে যাবে। সেটা শুনে নন্দিনীর মন খারাপ হয়ে যায়। তারপর থেকে নন্দিনী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে অমিতের সামনে আর আসবে না। তারপর যাওয়ার পথে অমিতকে একটা উপহার দেয় নন্দিনী। অনেক ভালোবেসে একটি উপহার বানিয়েছে। এয়ারপোর্ট এ গিয়ে অমিতের ঝগড়া হয় ইলিতার সাথে। তখন তার সাথে ব্রেকআপ করে এবং তার বাবাকে বলে যে আমেরিকা আসবে না। অমিত সিদ্ধান্ত নেয় সে গ্রামেই থাকবে। তারপর অবশেষে অমিত ও নন্দিনীর ভালোবাসার পূর্ণতার মধ্যে দিয়েই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। অপূর্বর নাটক মানেই রোমান্সে ভরপুর। নাটকের পুরটো সময় উপভোগ করার মতো ছিল। বিশেষ করে নাটকের দৃশ্যগুলো দারুণ ছিল। নাজনীন নেহা দারুণ অভিনয় করেছে। নাটকটি দেখার সময় একটুকুও বোরিং ফিল হয়নি আসলে। ফাইনালি ভালোবাসার মানুষকে পাওয়া এবং নিজ মাতৃভূমিতে থেকে যাওয়া অমিতের। জাকারিয়া সৌখিনের নাটক মানেই রোমান্স থাকবেই। সবমিলিয়ে নাটকটি উপভোগ করলাম ভীষণ।
ব্যক্তিগত রেটিং
৯.৮/১০
নাটকটির লিংক
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত তিন বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন। নাটকটি আমি দেখেছি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে এই নাটকটি নিয়ে বর্তমানে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট ক্লিপস দেখতে পারছি। আসলে এই ক্লিপস দেখতে দেখতে এই নাটকের কিছু কিছু অংশ সম্পর্কে আমার জানা হয়ে গেছে। বিশেষ করে গুগল ম্যাপের কাহিনীটা বড় একটা হাস্যকর কাহিনী। আপনি খুব সুন্দর ভাবে এই নাটকের রিভিউটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এত সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
নাটকটি সময় করে দেখতে পারেন আশা করছি আপনি উপভোগ করতে পারবেন।
এই নাটক দু'দিন আগে আমিও দেখেছিলাম। নাটকটি দেখতে এতটাই সুন্দর যেন সিনেমাকেও হার মানিয়েছে। আমার কাছেও অনেক ভালো লেগেছে। অপূর্ব আর নিহা দারুন অভিনয় করেছে। তাছাড়া আমি অপূর্বর নাটক দেখতে সবসময়ই পছন্দ করি। আপনি সম্পূর্ণ নাটকের রিভিউ খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
মন দুয়ারী নাটকটা আমার কাছে জাস্ট অসাধারণ লেগেছে।নাটকের প্রত্যেকটা চরিত্র, কাহিনী এবং জায়গা সবগুলো ছিল পার্ফেক্ট।অনেকদিন পর একটা নাটক দেখে ভালো লেগেছে। এবং এই নাটকটি খুব অল্পদিনেই বিগত দিনের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলছে। অপূর্বর সেরা নাটক গুলোর মধ্যে এটি প্রথম কাতারে।নাটকটির খুঁটিনাটি কাহিনী গুলো আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে আজ রিভিউ আকারে শেয়ার করেছেন।ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
Twitter share
Puss tweet
নাটকটি সেদিন আমিও দেখেছি।আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আমাদের দেশের নাটক খুবই সুন্দর হয়।এ ধরনের কাহিনী সমৃদ্ধ নাটক দেখলে আসলেই বোরিং ফিল হয় না।আজকে এই নাটকের রিভিউ করলেন দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার এই নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
খুবই সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ করেছেন আপনি। আসলে নাটকের রিভিউ পোস্ট দেখলে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। যে নাটকটি আমি দেখি নাই সে নাটক দেখার সুযোগ হয়। কারণ সব সময় আপনারা সুন্দর নাটক গুলোর রিভিউ করে থাকেন। চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ। পুরো রিভিউটা পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।
এই রকম সুন্দর সুন্দর নাটক রিভিউ যত পড়ি তত ভালো লাগে।আজ ভাইয়া আপনি মন দুয়ারী নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন। অনেক সুন্দরভাবে নাটক রিভিউ শেয়ার করেছেন ভাইয়া আপনি । তবে নাটকটি এখন পর্যন্ত আমার দেখা হয়নি সময় করে অবশ্যই দেখবো নাটকটি।এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।বেশ কিছুদিন ধরেই এই নাটকের ট্রেইলার এবং কিছু অংশ আমি দেখছি যা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে।যাইহোক সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।