নাটক রিভিউ "আলতা সুন্দরী" ৪২ তম পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ৪২ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।
নাটকের নাম | আলতা সুন্দরী |
---|---|
রচনা | বৃন্দাবন দাস |
পরিচালক | সালাহউদ্দিন লাভলু |
অভিনয়ে | চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, রহমত আলী, ম ম মোরশেদ, জয় রাজ, রাশেদা চৌধুরী, মনিরা মিঠু, সাইকা আহমেদ, লারা লোটাস, পুতুল, ডায়না সহ আরো অনেকে। |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ধরণ | হাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক |
মোট পর্ব | ৬২ |
রিভিউ | ৪২ তম পর্ব |
দৈর্ঘ্য | ১৬ মিনিট |
প্ল্যাটফর্ম | ইউটিউব @cdchoicedrama চ্যানেল |
চরিত্রেঃ
- শামীম জামান (আলতা সুন্দরী/নছের)
- আর খ ম হাসান (নায়ক মেসের)
- চঞ্চল চৌধুরী (রহিম বাদশা) সহ আরো অনেকে
রহিম বাদশা গুলজার এর বাড়িতে এসে উপস্থিত। এই প্রথম গুলজার এর বউকে দেখতে পারলো। তার সাথে বসে কিছু গল্প করলো। বুঝতে পারল মেয়েটা অনেক শিক্ষিত। কিন্তু গুলজারের বউ বুঝতে পারল না তার ননদ কেন রহিম বাদশা কে দুলাভাই বলে ডাকে। রহিম বাদশা চলে যাওয়ার পর বিউটি যখন কাজ করছে, তখন বিউটিকে প্রশ্ন করে এই বিষয়টা।বিউটি বারবার এড়িয়ে চলতে চাই এই বিষয়টা। এরপর বিউটি মুখ খুলে। বিস্তারিত তার কাছে বলে। তখনই বুঝতে পারে বিউটির ভাবি। আরো অনুমান করে মূর্খ মানুষের কত রকম দোষ।
গানের দল থেকে নায়ক বাজনা বাজন্দের চলে আসা ঠিক হয়নি। উস্তাদ বসে রইল আর তারা চলে আসলো এটা বোকামি আর ওস্তাদকে অপমান করা হয়েছিল। বিষয়টা বুঝতে পারার পর গানের দলের নায়ক মেসের আর হোসেন ওস্তাদের কাছে আসে। তারা ওস্তাদকে অনেক রকম করে বুঝাতে থাকে আর মাফ চাই। উস্তাদ অনেক কথা শোনার পর রাজি হল আবারও গানের দল চালু করবে। গানের দলের রিহার্সাল শুরু করার পূর্বে তার স্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে আলোচনা করবে। উস্তাদ গানের দল চালু করবে শুনতে পেরে তারা দুইজন অনেক খুশি হল। তারা আনন্দে উস্তাদের কাছ থেকে বিদায় হয়। অনেকদিন পরে যেন ওস্তাদ এবং তার লোকজনের মনে আনন্দ হাসি ফিরে আসলো।
হাসেম জোয়ারী এ যাবৎ যত বুদ্ধি তৈরি করল কোনটা কাজে আসলো না। গুজার কে কেন্দ্র করে হাসেম জোয়ারী নতুন একটা গানের দল সৃষ্টি করবে ও মনে করেছিল। গুলজার এর বউ বাড়িতে আসার পর সেসব পরিকল্পনা শেষ হয়ে যায়। গুলজার কে দিয়ে যেন আর কোন কাজই হবে না। নিয়ে রাগারাগি হয়ে গেল হাসেম জোয়ারী আর গুলজার এর মধ্যে। তাই গল্পের স্থান ত্যাগ করে মাথা গরম অবস্থায় গুলজার চলে আসে। পথের মধ্যে রহিম বাদশার সাথে দেখা। আমি বাদশার কথাবাত্রাতে আরো রেগে গেল সে। বাড়িতে ফিরে এসে ছোট বোন বিউটির উপর গরম দেখাতে থাকে গুলজার। রহিম বাদশার মত নিম্ন ঘরের ছেলে কেন তার বাড়িতে আসবে। ভিন গ্রামের এমন একটা ছেলে কেন তার বউ এর সাথে বসে গল্প করবে। এমনটাই প্রশ্ন ছিল গুলজার এর। পক্ষান্তরে বিউটি ভাইকে সঠিক জবাব দিতে না পারলেও বিউটির ভাবি এসে সঠিক জবাব দেয়। বিউটির ভাবি তার স্বামী গুলজার কে সুন্দর একটা কথা বলে থামিয়ে দিয়েছে। রহিম বাদশা ক্লাস এইট পাস। আর তার হাজবেন্ড ক্লাস থ্রি পাস। ক্লাস থ্রি পাস তাদের মূল্য কোথায়। বিউটির ভাবি "ক্লাস থ্রি, পায়খানার মিস্ত্রি" কথাটা বলার মাত্র গুলজারের মুখ শুকিয়ে যায়। সে শুধু বংশের গৌরব করে গেছে। কিন্তু লেখাপড়ার দৌড় ক্লাস থ্রি পর্যন্ত।
পারুলকে বিয়ে করতে পেরেছে নসের। কিন্তু মনে শান্তি নেই। ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু ভালো লাগার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে তার। সে কত হাসি খুশি ছিল গানের দলে নাচ গান করে। পারুল তাকে বিয়ে করে সেই নাচ গান বন্ধ করে স্বাধীনতা ধ্বংস করে দিতে পারে না। বিষয়টা পারুলে মা বুঝতে পারে। লক্ষ্য করে দেখে জামাই দিন দিন মন খারাপ করে থাকে। তাই পারুলের মা জামাইকে বলে হাসি আনন্দে থাকতে। মেয়েকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে। কিভাবে মন খারাপ করে থাকলে তো ক্ষতি হবে। কিন্তু নছের তার মনের কষ্ট বুঝাতে চায় না।
আলতা সুন্দরী নাটকের ৪২ তম পর্বটা আমার কাছে একটু ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। এখানে হাসেম জোয়ারী গুলজার কে কেন্দ্র করে চক্রান্ত তৈরি করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সেটা পারল না। চক্রান্ত তৈরি করার মুহূর্তে গুলজারের বউ বাড়িতে এসে উপস্থিত। বিউটি রহিম বাদশাকে মিথ্যা বলে দুলাভাই বলে ডাক, সেটা আজ প্রকাশ হয়ে গেল। নাসের প্রিয় মানুষকে বউ করে পেয়েছে কিন্তু তার মনের শান্তি আনন্দটা হারিয়ে ফেলতে হয়েছে। তুমি পর্বের লাস্টে সবচেয়ে আনন্দের কথা ছিল গুলজার এর বউয়ের মুখে। সেটা হচ্ছে "ক্লাস থ্রি, পায়খানার মিস্ত্রি" কথাটা। গুলজারের এতদিনের বংশ গৌরব সব যেন এই কথার মধ্যে ধুলিস্যাৎ হয়ে গেল। সে এতদিন বংশের গৌরবে কতজনাকে মারধর করেছে। কিন্তু বউয়ের সামান্য একটা কথাই সে আহত ভঙ্গ হয়ে যায়। শিক্ষার কাছে যেন বংশ গৌরব হারিয়ে ফেলে গুলজার। তাই আমি বলতে পারি এতদিনের অভিনয়ের এমন একটা পর্যায়ে এসে গুলজারের স্ত্রী যেন অভিনয়ের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। গুলজারের অহংকার নিচে ফেলে তার শিক্ষার অহংকার বাড়িয়ে তুলছে।
রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।
X--promotion
আমার আজকের কাজ সম্পূর্ণ
নাটকটার এই পর্বটি শুরু থেকেই পড়ে আসলাম ভালোই লাগছিলো কিন্তু যখন উপরের এই কথাটি পড়লাম তখন যেন হাসিতে আর ঠিক থাকতে পারলাম না। গুলজার এর বউ তো একেবারে বাজিমাত করে দিয়েছে। যাই হোক আলতা সুন্দরী নাটকের 42 তম পর্বটি খুবই মজা করে উপভোগ করলাম। আশা করি পরবর্তী পর্বে আরো চমৎকার কিছু দেখতে পারবো। তাই আপনার পরবর্তী নাটক রিভিউ এর জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
আলতা সুন্দরী নাটকের ৪২ তম পর্বটা আপনি চমৎকার রিভিউ সম্পন্ন করেছেন। আমার কাছে ভালো লাগলো গুলজার এর স্ত্রীর উক্তিটা পড়ে। এমন সংলাপ গুলো সত্যি দর্শককে আনন্দ প্রদান করেন।
"আলতা সুন্দরী" নাটকের ৪২ তম পর্বের রিভিউটি সত্যিই দারুণ হয়েছে।বিশেষ করে গুলজারের স্ত্রীর উক্তিটি খুবই মনে ধরেছে, এমন গভীর সংলাপ গুলোই দর্শকদের মুগ্ধ করে। আপনার রিভিউ দেখে নাটকটির প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে গেল। নাটকের এমন অসাধারণ মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি আজকে আলতা সুন্দরী নাটকের ৪২ তম পর্ব শেয়ার করেছেন, এটা দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আলতা সুন্দরী নাটকটা কিন্তু খুবই সুন্দর। এই নাটকের বেশিরভাগ পর্বের রিভিউ আমার পড়া হয়েছে। নাটকটার এই পর্বেও সবাই অনেক সুন্দর অভিনয় করেছে। আমি সব সময় চেষ্টা করবো নাটকের প্রতিটা পর্বের রিভিউ পড়ার জন্য। আশা করি খুব শীঘ্রই আগামী পর্বগুলোর রিভিউ শেয়ার করবেন।
এত মিনিটের একটা নাটক মাত্র দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই পড়ে নেওয়া যায়। আমি তো মনে করি দেখার থেকে রিভিউ পড়ে নেওয়াই ভালো। তাহলে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনীটা মাত্র ২ মিনিটেই জেনে নেওয়া যায়। বেশি সময় আর অপচয় করা লাগে না দেখে। আমি তো এখন সব সময় চেষ্টা করি নাটকের রিভিউর মাধ্যমেই কাহিনীটা জেনে নেওয়ার জন্য। "আলতা সুন্দরী" নাটকের ৪২ তম পর্ব অনেক বেশি সুন্দর ছিল।
আপনি তো দেখছি প্রতি সপ্তাহেই আলতা সুন্দরী নাটকের রিভিউ শেয়ার করে যাচ্ছেন। পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলুর নাটকগুলো দারুণ হয়। যদিও এই নাটকটি আমার দেখা হয়নি। তবে আমি লাভলুর বেশ কয়েকটি নাটক দেখেছিলাম। যেমন ব্যস্ত ডাক্তার নাটকটি সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিল। যাইহোক এই নাটকের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।