'কান্না' সম্পর্কে আমার কিছু কথা।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার । ৩১ ই মার্চ, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমাদের মানবজীবনে বিভিন্ন ধরনের আবেগ রয়েছে। কান্না আমাদের জীবনে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা কান্নার মাধ্যমে আমাদের বেদনাদায়ক অনুভূতি বা আবেগ প্রকাশ করি। বেদনাদায়ক আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা বিভিন্নভাবে কান্না করি। সেটা হতে পারে তীব্র জোরে গলা ফাটিয়ে কান্না করা, স্বাভাবিক পর্যায়ে থেকে কান্না করা, কিংবা নীরবে কান্না করে চোখের লোনা জলে নদী সৃষ্টি করা। তবে কান্না যেরকমই হোক না কেন, কান্না তো কান্নাই।
আমরা বিভিন্ন কারণে কান্না করে থাকি। বিশেষ করে বিভিন্ন কারণে আমরা যদি শারীরিকভাবে খুবই আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তাহলে খুব সহজে আমাদের কান্না পাই এবং কান্না করি। কেননা, আমরা যদি শারীরিকভাবে কষ্ট পায় তাহলে তো কান্না আসাটাই স্বাভাবিক। আবার যদি কেউ কোনো কারণে কান্না করে। তাহলে সেই কান্না করা ব্যক্তির মুখের দিকে তাকালেও এমনিতেই কান্না চলে আসে। আর এটাই মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য যে, একজনের দুঃখে আরেকজন দুঃখ পায়।
আবার আমরা যখন মানসিকভাবে কষ্ট পায়, মানসিকভাবে আঘাত পায় তখন আমরা কান্নায় ভেঙে পড়ি। এই মানসিক কষ্ট পাওয়াটা বিভিন্ন ভাবে আমাদের জীবনে আসতে পারে। যেভাবেই মানসিক কষ্ট আমরা পাই না কেন, মানসিক কষ্টটা যদি তীব্রতর হয় তখনই আমরা কান্না করি। তবে মানসিক কষ্ট বা আঘাত নিয়ে অনেকেই গোপনে কাঁদে আবার অনেকে প্রকাশ্যে কান্না করে। মানসিক কষ্ট নিয়ে আমরা যেভাবেই কান্না করি না কেন চোখের জল কিন্তু অবাধে ঝরে পড়ে।
এই দুনিয়ার বুকে আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কাজ করছি। আর আমরা যে কাজগুলো করছি তার বেশিরভাগ কাজ সজ্ঞানেই করছি। আর আমাদের কাজগুলো পুণ্যের কাজও হতে পারে কিংবা পাপের কাজও হতে পারে। ইহকালে আমরা যখন পাপ কাজ করে অনুতপ্ত হয়, পাপ থেকে মাফ পাওয়ার জন্য বিনয়ের সাথে সৃষ্টিকর্তার নিকট ক্ষমা চাই, ঠিক এমন মুহূর্তেও আমরা কান্নার সম্মুখীন হই। সৃষ্টিকর্তার প্রতি তখন অগাধ আনুগত্য জন্ম হয় আমাদের মনের মাঝে। সেই আনুগত্য থেকেই বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে বেরিয়ে আসে কান্না। আর এই কান্না আসে শুধুমাত্র নিজেদেরকে পাপমুক্ত করার জন্য এবং সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য।
যাহোক কান্না নিয়ে আমি আপনাদের নিকট যে কথাটি বলতে চাই সেটা হল, আমরা যেভাবেই কান্না করি না কেন কান্না করলে আমাদের শারীরিকভাবে যেমন উপকার হয় ঠিক তেমনি মানসিকভাবেও আমরা উপকৃত হয়। কারণ, কান্না করার সময় এবং কান্না করার পরে আমাদের মনের অবস্থাটা কেমন থাকে, সেটা কি কখনো আমরা অনুভব করি? হয়তো কেউ অনুভব করে, আবার অনেকেই হয়তো অনুভব করে না। কান্না করার পরে আমি যেটা অনুভব করেছি সেটা হলো:- কান্নার শুরু থেকে কান্নার পরের সময় পর্যন্ত আমাদের মাথায় কোন ধরনের দুশ্চিন্তা থাকে না, আমাদের মন থাকে পরিষ্কার, মনের মধ্যে জন্ম হয় সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভয় এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভক্তি, সৃষ্টি হয় ধর্মের প্রতি অনুরাগ, মনে উদয় হয় সুবুদ্ধি,পিতা মাতার প্রতি সৃষ্টি হয় অগাধ অনুগত্য, আত্মীয় স্বজনের প্রতি সৃষ্টি হয় অগাধ ভালোবাসা এবং মমত্ববোধ, মনের মধ্যে জন্ম হয় এক ধরনের পবিত্রতা। এক কথায় কান্নার মধ্য দিয়ে আমাদের আত্মা বিশুদ্ধ হয়ে ওঠে, আত্মা পবিত্র ও সতেজ হয়ে ওঠে। আবার আমরা যখন কান্না করি তখন আমাদের চোখ দিয়ে জল ঝরে পড়ে। কান্নার মাধ্যমে চোখ দিয়ে যখন জল গড়িয়ে পড়ে তখন আমাদের চোখের বিশেষ উপকার হয়। বিশেষ করে আমাদের চোখের ভিতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ধুলা-ময়লা এবং রোগ জীবাণুগুলো চোখের জলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। ফলে আমাদের চোখ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমাদের আত্মাকে পরিষ্কার করতে এবং আত্মাকে বিশুদ্ধ রাখতে কান্না করার কোন বিকল্প নেই। তবে শারীরিক আঘাত পেয়ে কিংবা মানসিক কষ্ট পেয়ে কান্না করা আমাদের কারো কাম্য নয়। ইহকালীন কাজকর্ম নিয়ে আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার নিকট কান্না করব। যাতে তিনি আমাদের সকল ধরনের গুনাহ গুলো মাফ করে দেন। একই সাথে আমরা সৃষ্টিকর্তা নিকট কান্না করবো আমাদের পিতা-মাতা ও সন্তানদের জন্য, আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের জন্য। যাতে আমরা সবাই ইহকালে শান্তিতে থাকতে পারি। আবার আমাদের আত্মীয়-স্বজন যারা পরলোক গমন করেছেন তারা যেন ওপারে ভালো থাকেন সেজন্য আমরা সৃষ্টিকর্তার নিকট কান্না করব এবং তাদের জন্য শান্তি কামনা করব। আমাদের মনে রাখা উচিত কান্না করলে আমাদের মর্যাদা কমে না। বরং দুনিয়ার বুকে এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। তাই সৃষ্টিকর্তা নিকট যদি কান্না করে লাভবান হওয়া যায় তাহলে সৃষ্টিকর্তা নিকট কান্না করাটাই উত্তম।[সমাপ্ত]
একদম যথার্থই বলেছেন ভাই শারীরিক মানসিক ভাবে না কেদে ৷ আমরা কাদবো সৃষ্টি কর্তার কাছে যাতে নিজের সমস্ত পাপ এবং কি ভুলের মাশুল নেওয়ার জন্য ৷
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই ৷
আমার পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Twitter link
আপনার লেখার কিছু বিষয়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি, যেমন কান্না করলে যে অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়, তা কিছুটা হলেও মানসিক প্রশান্তি নিয়ে আসে। ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।
ভাইয়া, ভালো লেখার চেষ্টা করছি। অনেক সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্য করার জন্য প্রিয় ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।💝💞🙏
শারীরিক অসুস্থতার জন্য কান্না করা আর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পরের কান্নার মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। মানসিকভাবে যদি আমরা ভেতর থেকে আঘাত প্রাপ্ত হই আর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পরে যে কান্নাটা বের হয় সেটা অনেক বেদনাদায়ক। কান্না নিয়ে আপনার এই অভিব্যক্তি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে আপনার সুন্দর কথাগুলো শেয়ার করার জন্য।
আমার পোস্টটি পড়ে খুবই চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কান্না মানুষের জীবনে একটি অংশ। তবে কান্না অনেক রকমের আছে। কেউ আওয়াজ করে কান্না করে কেউ আবার চুপ করে কান্না করে। কান্নার মধ্যে দুঃখের কান্না একরকম হয়ে থাকে এবং। মানুষের আঘাতের কান্না অন্যরকম হয়ে থাকে। তবে কান্না করলে মনের কষ্ট এবং শরীরের কষ্টগুলো হালকা হয়ে যায়। তবে কান্না করতে হবে আল্লাহর দরবারে। মা বাবার জন্য এবং নিজের গুনাহ মাফ চাওয়ার জন্য। তবে আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জানতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি কান্না নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। তবে কান্নার মধ্যে অনেক ধরনের পার্থক্য আছে। কারণে শারীরিক অসুস্থতার কারণে এক ধরনের কান্না এবং মানুষের কষ্ট পাওয়ার জন্য আরেক ধরনের কান্না হয়। তবে আমার মতে কান্না করতে হলে উপর আল্লার কাছে কান্না করতে হবে। অনেক সুন্দর করে কান্নার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অতি চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।