প্রাচীন শিল্প কে ফিরে দেখা: ঢেকি শিল্প দিয়ে চালের আটা তৈরি
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং
আজ পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে এই ঢেকি শিল্প।এক সময় বাংলার প্রতিটি বাড়িতেই ছিল এই ঢেকি। তবে সময় এবং কালের বিবর্তনে আজ এই ঢেকি শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন তেমন একটা দেখা যায় না এই ঢেকি শিল্প। আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে এবং আধুনিক মেশিনের কারণে আজ এই শিল্প আমাদের মাঝে থেকে বিদায় নিয়েছে।এক সময় ঢেকি শিল্প দিয়ে আটা, ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি আরো অনেক কিছু ভাঙ্গানো হতো মাত্র একটি ঢেকিতেই। কিন্তু বর্তমানে সব গুলোর জন্য আলাদা আলাদা আধুনিক মেশিন বের হয়েছে। আর এখন কার মানুষ শ্রম ব্যয় করতে চান না, তাই তারা আধুনিক মেশিন দিয়ে সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন।ঢেকি শিল্প ব্যবহার করতে হলে একটু একটু শ্রম ব্যয় করতে হয়।
বেশ কিছুদিন আগে আমি আমার আম্মু কে পিঠা বানানোর জন্য বলছিলাম। তখন আম্মু আমাকে বললো বর্তমান আটা নেই, আটা বানাতে হবে।তাই আমার আম্মু পরদিন ঢেকিতে আটা বানানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়। আম্মুর ঢেকিতে আটা বানানোর কথা শুনে আমি অনেক খুশি হলাম, কেননা অনেক দিন ধরে ঢেঁকিতে আটা বানানো দেখিনি। এরপর আম্মু আঁটা তৈরি করার জন্য কিছু পরিমাণ চাল পানিতে ভিজিয়ে রাখলো।
এরপর চাল গুলো বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর, চাল গুলো ঢেকির নোটের মধ্যে ঢেলে দিলো। এখন একজন মানুষ ঢেকি চাপার জন্য ঢেকির পিছনে যায়, এবং ঢেকিটি আস্তে আস্তে চাপতে থাকে।আর আমার আম্মু আঁটা গুলো নেড়ে দিচ্ছিল এবং কিছু পরিমাণ গুড়ো আটা চালন দিয়ে চালাচ্ছিল। আসলে দীর্ঘ দিন পর এরকম দৃশ্য দেখতে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
আসলে মেশিনের আটার থেকে ঢেকির আটার স্বাদ একটু বেশি পাওয়া যায়। মেশিনের আটা দিয়ে সব রকম পিঠা হয় না। অপরদিকে ঢেকিতে তৈরি করা আটা দিয়ে সব রকম পিঠা খুব সহজেই তৈরি করা যায়। মেশিনের থেকে ঢেকিতে আটা তৈরি করতে একটু বেশি সময় লাগে।আর মেশিনের মধ্যে আটা তৈরি করতে তেমন একটা সময় লাগে না, তৎক্ষণাৎ হয়ে যায়।
বেশ কিছুক্ষণ এর মধ্যেই আটা গুলো তৈরি হয়ে যায়। পাঁচ কেজি চালের আটা তৈরি করতে প্রায় বিশ মিনিট সময় লেগেছে। ঢেকিতে কোন রকম খরচ ছাড়াই আটা গুলো তৈরি হয়ে যায়।আর ঢেকির আটার মধ্যে কোন রকম ভেজাল নেই, একদম খাঁটি চালের আটা। আসলে এই ঢেকিটি আমার দাদা সর্ব প্রথম বসিয়ে ছিল। তখন থেকে আর ঢেকিটি তোলা হয়নি। আসলে বাহির থেকে কোন আত্মীয় স্বজন বেড়াতে আসলে এই ঢেকির ছবি তুলে নিয়ে যায়। যতদিন পর্যন্ত এই ঢেকির কাঠ গুলো নষ্ট হবে না, ততদিন পর্যন্ত এই ঢেকি না তোলার ইচ্ছা আছে আমার আম্মুর।
আমি সব সময় গ্ৰাম এলাকার সৌন্দর্য গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ
Device | Redmi 10C |
---|---|
Camera | 48 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
https://twitter.com/riyad_xx2/status/1761377738441863212?t=s6PAe_as_5F-tX5QgDOaQw&s=19
ঢেকি আমি অনেক আগে গ্রামাঞ্চলে ও আমাদের বাড়ির আশেপাশে দেখেছি। বর্তমানে এসব শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। মেশিনের যুগ এসে গেছে, তাই এসব শিল্প হারিয়েছে। সবাই মেশিনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।আপনি খুব চমৎকারভাবে এই শিল্পটি তুলে ধরেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
ঢেকি শিল্প দিয়ে আগে চাল এবং আটা তৈরি করা হতো। আর এগুলো খাওয়ার সময় একটা অন্য রকম স্বাদ পাওয়া যেতো। অনেক দিন পরে আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে ঢেকি শিল্প দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।
খুবই ভালো লেগেছে ভাই আপনার এই পোষ্টটি পড়ে। অনেকদিন পরে ঢেঁকির ব্যবহার নিয়ে আপনার লেখাগুলো পড়লাম। আসলে একসময় আমাদের বাড়িতেও ঢেকি ছিল। ছোটবেলায় দাদীর সাথে, মায়ের সাথে ও ফুপুদের সাথে ঢেকির ব্যবহার করে ধান থেকে চাল ও চাল থেকে ময়দা তৈরির কাজ করতাম। তবে বর্তমান সময়ে ঢেকির ব্যবহার শুরু করা অসম্ভব। কেননা এতে অনেকটা সময় খরচ হয় এবং অনেক শারীরিক পরিশ্রম হয়।