ঢাকা কম্বাইন্ড মিলিটারী হাসপাতালে একদিন।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। আসলে ভালো থাকা সুস্থ থাকা আল্লাহ তাআলার একটি বড় নিয়ামত। কে কখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে কেউ বুঝতেও পারে না। যারা হার্টের রোগী তাদের ব্যাপারটি আরো ভয়ানক। গতকাল আমার মেজ কাকুর হার্টের রিং পরানো হয়। গতকাল সকালেই আমাকে বেরিয়ে পড়তে হয়েছিল হসপিটালের উদ্দেশ্য।
ঢাকা কম্বাইন্ড মিলিটারী হাসপাতাল আমার এখান থেকে প্রায় ১১ কিলো। বেরিয়েছিলাম সকাল আটটার দিকে। ওখানে আমার চাচাতো ভাই একাই রয়েছে। আপনারা হয়তো জানেন সি.এম.এইচ এ শুধুমাত্র মিলিটারি এবং মিলিটারিদের আত্মীয়-স্বজনের চিকিৎসা হয়। চাচাতো ভাই দশ দিন আগে ছুটি নিয়ে এসেছে। ও এখন টাঙ্গাইল ক্যান্টনমেন্টে আছে। গতকালকে ডেট ছিল রিং পরানোর।
সকাল আটটার দিকে রওনা দিয়েছিলাম আমি। সাথে নিয়েছিলাম রাহুলকে। মূলত ওর বাইক নিয়েই যেতে হয়েছিল। আসলে রোগীর পাশে চাচাতো ভাই একা একা আছে এই জন্য আমার যাওয়াটা ইম্পর্টেন্ট ছিল। ঢাকা শহরে সকালবেলা কেমন জ্যাম থাকে সেটা তো জানেনই। সকাল আটটায় বেরিয়ে আমাদের প্রায় দুই ঘন্টা সময় লেগেছিল সি.এম.এইচ এ পৌঁছতে।
বাসে গেলে হয়তো চার ঘন্টা সময় লাগতো। আমরা পরিচিত রাস্তা গুলোর শর্টকাট দিয়ে খুব দ্রুত যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এরকম না আসলে আরো অনেক বেশি সময় লাগতো। যাইহোক প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম সি.এম.এইচ এ। প্রথমবার গিয়েছিলাম এজন্য তেমন কিছু বুঝতেছিলাম না। গাড়ি পার্কিং করতেও অনেক সময় লেগেছিল। এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে গাড়ি পার্কিংয়ের স্পট খুঁজে বের করে তারপর গাড়ি পার্কিং করলাম। এরপর এমারজেন্সি বিভাগে গিয়ে খুঁজতে থাকলাম কার্ডিও সেক্টর কোন দিকে। কয়েকজনের কাছে জিজ্ঞেস করে, লেখা দেখে দেখে পৌঁছে গেলাম জায়গা মত।
ওখানে গিয়ে কাকুর সাথে দেখা হলো। দেখলাম চাচাতো ভাই একা একাই দাঁড়িয়ে আছে পাশে। ওকে দেখে বেশ চিন্তিত লাগছিল। এরপর কাকুর কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ কথা বললাম একটু সাহস দিলাম। উনি খুবই নার্ভাস ছিল। আমার আব্বুর রিং পরানোর মুহূর্তগুলোর কথা শেয়ার করলাম আর সাহস দিলাম। এরপর আমরা বাইরে এসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ততক্ষণে দুপুরে একটা বেজে গেছে। আমরা এদিকে অনেকক্ষণ যাবৎ অপেক্ষা করে মোটামুটি ক্লান্ত। এরপর আমি আর রাহুল গেলাম সি.এম.এইচ এর ক্যান্টিনে দুপুরের খাবার খেতে। অবশ্য সকাল আর দুপুরের খাবার একসাথেই খাওয়া হয়েছে।
ক্যান্টিনের খাবার খুব পছন্দ হলো আমার। মাত্র ৭০ টাকায় প্লেট ভর্তি পোলাও আর ডিম ভুনা। ভাতের পরিমাণটা অনেক বেশি ছিল আর ডিম ভুনাটাও সুস্বাদু ছিল। আমি আর রাহুল দুজন দুই প্লেট পোলাও আর ডিম নিলাম। এরপর মুরগি নিলাম। প্রত্যেকটা খাবারই আমার অনেক ভালো লাগলো। সকাল থেকে তেমন কিছু খাওয়া হয়নি। সকাল আর দুপুরের খাবারটা একসাথে খেয়েই বেরোলাম।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম থেকে আমার কার্ড দিয়ে টাকা তুললাম। টাকাগুলো আমার কার্ডেই পাঠানো হয়েছিল। টাকাগুলো তুলে আবার সেখানে চলে গেলাম। আরো অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর জানতে পারলাম এনজিওগ্রাম করার জন্য কাকুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ পরে এনজিওগ্রামের রিপোর্ট আসলো। হার্টে মোট তিনটা ব্লক রয়েছে। দুইটা ব্লক ৯৫% আর একটা ১০০%। শুনে তো আমি অবাক, এ রোগী তো খুবই রিস্কে ছিল। ডক্টর সিদ্ধান্ত দিতে বলল দ্রুত যে রিং পড়াবে নাকি সার্জারি করবে। সিদ্ধান্ত দেয়া হলো রিং পরানোর। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা হলো যেটা ১০০% ব্লক রয়েছে সেটা আগে ছাড়াতে হবে। আর এটা নিয়ে ডাক্তার ও চিন্তিত ছিল। ডাক্তার বারবার বলছিল আল্লাহ কে ডাকতে, যেন সবকিছু ঠিকঠাক হয়। ......
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

বর্তমানে হার্টের সমস্যা অনেক মানুষেরই দেখা দিচ্ছে। হার্ট ব্লক হয়ে গেলে তো রিং পরানো কিংবা ওপেন হার্ট সার্জারি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। তবে আপনার কাকু আসলেই খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিলো। দুইটা ব্লক ৯৫% আর একটা ১০০%। শুনে তো আমিও পুরো অবাক হয়ে গেলাম। যতটুকু জানি ব্লক ৮৫%-৯০% হলেই নাকি রিং পরিয়ে ফেলতে হয়। যাইহোক আপনার কাকুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনার কাকুর হার্টে অনেকগুলো ব্লক থাকায় অনেকটা রিস্কে তিনি।আপনার চাচাতো ভাই একা সেখানে থাকায় আপনি আর আপনার ভাই সকলের দিকেই সেখানে গেলেন।এরকম অবস্থায় আপনার কাকু অনেকটা ভয় পেয়েছিলেন তাই তাকে সাহস দিলেন।এরকম অবস্থায় আসলেই ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক।সার্জারি করার সিদ্ধান্ত না নিয়েই ভালো হয়েছে।সার্জারি করলে রোগীদের সমস্যায় পড়তে হয় অনেক সময়।রিং অনেকটা নিরাপদ।তারপর আপনারা ওখানে খাওয়া দাওয়া করলেন, খাবার টা আপনাদের ভালো লেগেছিল আপনাদের।ফটোগ্রাফি সুন্দর লাগছে দেখতে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনার কাকু অসুস্থ। হার্টের সমস্যা। আল্লাহপাক যেন কাকুকে ভালো করে দেন দোয়া করি। আর কাকুর অসুস্থতার মুহূর্তে আপনি যে, তার পাশে থেকে তাকে এত সুন্দর সান্তনা দিয়েছেন এবং তাকে সাহস দিলেন তার জন্য এই মুহূর্তে এটাই অনেক জরুরী ছিল। হ্যাঁ ভাইয়া বর্তমানে আমাদের দেশের রাস্তার যে অবস্থা।যেখানে এক ঘন্টার রাস্তা সেখানে তিন ঘন্টা লাগে। তবে আপনি ভালো করেছেন বাইক নিয়ে গিয়েছেন। যাবার পথে যেই ছবিগুলো তুললেন ছবিগুলো আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। বিশেষ করে রাস্তার সাথে গাছ ও আকাশটা আমার কাছে মনে হচ্ছিল একদম মিশে গেছে একসাথে। সব মিলিয়ে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
দোয়া করি আপনার কাকু তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন, এইখানকার চিকিৎসা খুব ভালো , এটা খুব ভালো লাগলো ভাই কে একটু সাপোর্ট দেয়ার জন্য আপনারা চলে এসেছেন এইখানে, বিপদে আপনজনেরাই কাজে আসে।
সত্যি ভাই খাবারটা অনেক ভালো ছিল ক্যান্টিনের। গাছপালা দিয়ে ঘেরা ঠান্ডা পরিবেশ বেশ ভালো লেগেছে আমার। তবে আজকে আমি ব্লাড দিতে গিয়েছিলাম ব্লাড লাগেনি এটা খুব কষ্ট পাইছি। এত কষ্ট করে যে কাজের জন্য গেলাম সেটাই হলো না আজকে আমার।
ভাইয়া আপনার কাকুর অসুস্থতার কথা জেনে খারাপ লাগলো। দুইটা ব্লক ৯৫% আর একটা ১০০% এটা শুনে সত্যিই অবাক হলাম। এই পরিস্থিতে আল্লাহকে ডাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। উনার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো ভাইয়া।
এতো একদম মাগনা দামে খাওয়া-দাওয়া। রোগীর অবস্থাটা তো খুবই সিরিয়াস যেহেতু ১০০% ব্লক হয়ে গিয়েছে।
ভাইয়া খুব খারাপ লাগলো আপনার কাকুর কথা পড়ে। আজকাল হার্টের রোগীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।দোয়া করি তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ। অনেক বেশী ব্যস্ততা আর টেনশনে দিনটি কাটলো আপনার।ভালো থাকবেন।
হাসপাতাল টি দেখে আমার সৃতিচারণ হচ্ছে। খুব পরিচিত হাসপাতাল আমার। এই ক্যান্টিনে প্রতি দিন যাওয়া আসা ছিলে দুবেলা।আপনার চাচার তো লাইফ রিক্সা ছিলো ভ্যাগ ভালো ওনার কিছু হয় নি।আসলে আপনজনের অসুস্থতা গুলো খুব বাজে রকমের হয়।অসহায় লাগে খুব।পোস্ট টি পড়ে ভালো লাগলো।আপনার চাচার সুস্থতা কামনা করছি।