আমার বাংলা ব্লগ। রক্তের বন্ধন। ১০% beneficiary shy-fox এর জন্য।
রক্তের বন্ধ।
![]() |
---|
বাপ-বেটার ছবিটা স্মৃতি হয়ে থাকবে আমার বাংলা ব্লগে আজীবন।
বড় ভাইয়ের ছেলে মাদ্রাসায় ছুটি পেয়েছে দশ দিনের। ওর বাবার কাছে এসেছিল বেড়াতে, কিন্তু ওর বাবা কর্মব্যস্ততার কারণে ওকে বাসায় একা থাকতে হয়েছে। কিন্তু একদিনে ছেলেটা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ভাই কে বললাম তোমার কাছে রাখার দরকার নাই, ছেলেটাকে আমার কাছে দিয়ে যাও। পরবর্তীতে আমি গিয়ে ছেলেটাকে নিয়ে আসলাম। ছেলেটাকে দেখে মনে হয়েছে যে আকাশের চাঁদ পেয়েছি হাতে। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ভাতিজাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম। সেই আরামের ঘুমটা আর যেতে পারলাম কই। চলছে নাইট ডিউটি, ২ ঘন্টা পরে উঠে চলে আসলাম অফিসে। এর পরের দিন সকালবেলায় ফোন দিয়ে বললাম আয় তোকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাব। কারণ আমি জানি এই সময়ে আমার যে পরিমাণ ডিউটি হচ্ছে, তাকে নিয়ে বাইরে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব, আমার জন্য অনেক কষ্টকর ব্যাপার।
তবে এতদিন পরে চাচার কাছে ভাতিজা বেড়াতে এসেছে, যদি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে না দেখাই তাহলে কেমন হয়।
যেই চিন্তা সেই কাজ, সকাল সাতটা বাজে ভাতিজাকে নিয়ে বের হয়ে পড়লাম। আমার পাশেই সুন্দর একটি পাথরকে, যে পার্কের অনেকগুলো ফটোগ্রাফি আপনারা দেখেছেন এর আগেও। ডাব্লিউ, টি, এ ইকো পার্কে, সকালবেলা ঠান্ডা উষ্ণ পরিবেশে ঘুরে বেড়িয়েছি ঘন্টাখানেক। স্মৃতি হিসেবে রাখার মতো কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। চিন্তা করলাম আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করি, সবার ভালো লাগবে।
রক্তের বন্ধন এমন একটা জিনিস যা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার। এটা কখনো ছিন্ন করা যায় না। রক্তের প্রতি রক্তের আলাদা আলাদা একটা টান থেকে যায়, হৃদয়ের গভীর থেকে তা সবার জানা। বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে দেখি স্নেহের ছোট ভাই ভাতিজাদের পরিবর্তনটা অনেক ভিন্ন। যখন তারা বুঝতে শুরু করে, নিজেদের বুঝ বুঝতে শুরু করে। একটা সময় গিয়ে তারা তাদের নিজের চাচাদেরকে তেমন একটা মনে রাখেনা। মনে রাখেনা তাদের অতীতের কথা গুলো। মনে রাখেনা তাদেরকে কোলে পিঠে করে মানুষ করার সময় টা কে। তারা বড় হতে হতে একটা সময় গিয়ে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। হানাহানি সৃষ্টি হয়, এমনকি একজনের প্রতি আরেক জনের ঘৃণা সৃষ্টি হয়।
যত কিছুই হোক না কেন, আপন আপনই থেকেই যায়। অনেক সময় মনে হিংসা বুকে ক্রোধ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলার সাহস পায় না। আবার কখনো কখনো এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়, যেখানে মারামারি কাটাকাটি পর্যন্ত হয়ে যায়। তবে সেখানে বেশিরভাগ ভূমি সম্পর্কিত মনোমালিন্য। কখনো কখনো মনে অনেক কষ্ট জাগে, যাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি বড় করেছি আদর মমতা দিয়ে বড় করেছি সেই আমার সামনে কিভাবে দাঁড়ায় কিভাবে বেয়াদবি করে। হ্যাঁ এটাই বাস্তবতা। আজ আমাদের সমাজ কিংবা পাড়া কিংবা গ্রাম কিংবা সারা বাংলাদেশ জুড়ে সব জায়গাতেই এমনই হচ্ছে অহরহ। কিছু কিছু কষ্ট যে কষ্টগুলো কখনো প্রকাশ করা যায় না। যা নিজের পরিবারের সদস্য থেকে পাওয়া যায়। যত দিন যাচ্ছে ততই মনে হচ্ছে প্রত্যেকটা দিন পরিবর্তন হচ্ছে সেই সাথে মানুষগুলো। তবুও কি রক্তের সম্পর্ক গুলো ছিন্ন হয়ে যায়, না। কারণ ভালোবাসা তাদের জন্য সব সময় অটুট থাকে।
![]() |
---|
হাস্যজ্জল রৌদ্রের মাঝে পুষ্প কলি স্পর্শকাতর স্নেহের ভাতিজা। ফটোগ্রাফি করতে ভুল করেনি, মনে হচ্ছে ফুটন্ত ফুল আরেকটা ফুলকে স্পর্শ করে দাঁড়িয়ে আছে।
![]() |
---|
এই ছবিটা ক্যাপচার করার পর যখন আমি দেখলাম আমার আঙ্কেলের মাঝে একটু কানা কানা ভাব আছে তখন নিজে নিজে অনেকক্ষণ হাসলাম। তারপর সে আমাকে জিজ্ঞেস করছে আপনি এত হাসছেন কেন কাকা। বললাম না এমনিতে হাসতেছি, আমার ভাতিজা আমাকে বলছে যে কাকা ছবিটা ভালো হয়নি ডিলিট করে দেন। তখন আমি বললাম এটা একটা সৌন্দর্য।
![]() |
---|
সকালবেলায় সোনালী রোদের মাঝে কাশফুল গুলো দেখে চোখ আটকে গেল আমার। এ বছরে প্রথম দেখা, কাশ ফুলের নরম ছোঁয়া হৃদয়ে দারুন একটা অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
![]() |
---|
স্নেহের ভাতিজাকে আমার শরীরের ছায়ায় দাঁড়িয়ে রেখে একটা ছবির ক্যাপচার করলাম। আপনারাই বলুন এখানে কার ছবিটা সুন্দর আসছে।
![]() |
---|
পার্কের ভিছ খানে ভাতিজা কে দাঁড় করিয়ে যখন ছবিটা ক্যাপচার করছি, তখন মনে হচ্ছে আকাশ থেকে মনে হয় যেন স্বর্গীয় দূত এসেছে। আমার কাছে ছবিটা সত্যিই অসাধারণ লেগেছে। আপনাদের কার কাছে কেমন লেগেছে জানাবেন।
![]() |
---|
আমার ছেলের, ভাতিজার মুচকি হাসিতে হৃদয়ে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেছে। যদিও সকালবেলায় পার্কে ভিতর ছিল না তেমন কোন মানুষ। নেই কোন কোলাহল। মনে হচ্ছে যেন পানির ড্রেনের পাশে ভাতিজার সাথে পরিবেশটা মিলে একাকার হয়ে আছে।
![]() |
---|
এই ফটোগ্রাফিটার কি ক্যাপশন দিবো আমি সেটাই খুজে পাচ্ছিলাম না। মনে হাজারো প্রশ্ন হাজারো কথা জেগে উঠছে। তবুও কেন জানি লিখতে পারছি না। মনে হচ্ছে যেন জীবন্ত কোন কিছু প্রমাণ করছে। কিন্তু সেটা গুছিয়ে লেখার শ্বার্ধ আমার নেই।
![]() |
---|
ঘোরাফেরা শেষ, ফিরে আসার আগে ফুলের মাঝে বসে একটা ফটোগ্রাফি নিলাম। বেশ ভালই লাগছিল পরিবেশ টা। উষ্ণ শীতল হাওয়া সুবাসিত হৃদয়ের আনন্দের ঢেউ তোলা একটা মুহূর্ত ছিল।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভাইয়া আপনি ঠিক কাজ করেছেন নিজের কাছে ভাতিজাকে নিয়ে এসে। চাচা তো বাবার মতই। আপনার ভাতিজাকে এত ব্যস্ততার মাঝেও সময় দিয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগে। এমনেতেও ছেলেমেয়েরা একটু ছুটি পেলে ঘুরাঘুরি করতে চায়। কিন্তু আমরা তখন নিজেদের ব্যস্ততার জন্য সময় দিতে পারিনা। পার্কের ভিতরের প্রতিটি জায়গায় আপনার ভাতিজার ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাতিজার সাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি সুন্দর মন্তব্য করে সাথে থাকার জন্য।
আসলে আপনি খুব ভালো একটা কাজ করেছেন আপনার ভাতিজাকে আপনার কাছে নিয়ে এসে। তারপর আপনি শত ব্যস্ততার মাঝেও ভাতিজাকে নিয়ে খুব সুন্দর জায়গায় ঘুরতে নিয়ে গেছেন দেখে আরো ভালো লাগলো। আপনার ভাতিজা নিশ্চয়ই খুব খুশি হয়েছে। অনেকদিন পর চাচা ভাতিজা একসাথে ঘুরে বেড়ালেন। পার্কটা সত্যি খুব সুন্দর ছিল। আপনাদের সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার এবং আপনার ভাতিজার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
আসলে সে অনেক খুশি। তবে সময়ের অভাবে নিজের মত করে ঘুরাতে পারেনি।
সত্যি ভাইয়া রক্তের বন্ধ হচ্ছে সবচেয়ে বড় বন্ধ। এরা বড় হয়ে যতই রক্তকে অস্বীকার, হিংসা করুক না কেনো এদের জন্য আমাদের ভালোবাসার কমতি নেই। যাাইহোক আপনি অনেক ব্যস্ততার মধ্যে আপনার ভাতিজাকে সময় দিয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। সকাল বেলা দুজনে মিলে অনেক ভালো একটা মূহুর্ত কাটিয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মূহুর্ত টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ।
আসলে ভাই যখন কাছের রক্তের মানুষগুলো তাদের প্রতিদিনের কথা স্বীকার করে তখন বেঁচে থাকাটাই কষ্টকর মনে হয়।
অসাধারণ একটা পোস্ট। আপনি ঠিক বলেছেন রক্তের বন্ধন গুলো একটু অন্যরকমই। ভালোই হয়েছে আপনি এই ছেলেটাকে অথবা আপনার ভাতিজাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনার কাছে নিয়ে এসেছেন। ছবিটা দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনার ভাতিজা খুব খুশি আপনার কাছে।
আসলে সে অনেক খুশি ছিল অনেকদিন পর এসেছে। আমিও আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি তাকে খুশি রাখার জন্য।
গ্রামের ভাষায় মুরুব্বীরা একটা কথা বলে যে রক্তের বাঁধন সবথেকে বড় বাঁধন যা নাকি কখনোই ফোটে না। এবং রক্তের বাঁধনের ব্যক্তি গুলো যদি বেইমানি করে তাও নাকি ভেবেচিন্তে করে।।
যাহোক ভাতিজিকে নিয়ে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করছেন ফটোগ্রাফি গুলা দেখেই বুঝতে পারলাম আপনার ভাতিজি খুবই খুশি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে পেরে।।
কথাটা মন্দ বলেনি একেবারেই সত্যি। আপনার কাঙ্খিত মন্তব্য দিয়ে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে চাইলেই সব সময় হাসি খুশি থাকা যায় না, ইচ্ছে করলেও ঘুরে বেড়ানো যায় না। তবুও নিজের সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
আপনি আপনার ভাতিজাকে নিজের কাছে এনে খুব ভালো কাজ করেছেন। আর হ্যাঁ রক্তের বন্ধন গুলো আসলে সবচেয়ে ব্যতিক্রম। আপনি আপনার ভাতিজার সাথে পার্কে বেশ ভালই সময় অতিক্রম করেছেন দেখছি। আপনার ভাতিজা নিশ্চয়ই খুব খুশি হয়েছে। আর আপনি তোলা ছবিগুলো খুব সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ।
রক্ত তো রক্তোই। রক্তকে অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। যত ঝড় তুফানি আসুক না কেন রক্তের প্রতি রক্তের একটা টান থেকে যায়।
একদম পারফেক্ট একটা কাজ করেছেন ভাইয়া, ভাতিজাকে নিজের কাছে এনেছেন। আসলে আমার ভাগিনাও এরকম মাদ্রাসায় থাকে অনেকদিন পরে কয়েক দিনের জন্য বাসায় আসে। আসলে এতদিন পরে বাসায় আসার পরেও যদি বাবাকে না পায় কিংবা একা থাকতে হয় তাহলে এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে। বিশেষ করে আপনি ওকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন এটা দেখে তো আরো বেশি ভালো লাগলো। কোথাও ঘুরতে গেলে বাচ্চাদের মেধারও বিকাশ ঘটে। তাছাড়া ওকে দেখেই মনে হচ্ছে ভীষণ খুশি হয়েছে। অনেকগুলো ফটোগ্রাফি ও করেছেন দেখছি সুন্দর সুন্দর। ফুল গাছের সাথে ফটোগ্রাফিটা ও ভীষণ ভালো লেগেছে।
দোয়া করবেন ওর জন্য, হাফেজি পড়তেছে। আর যারা হাফেজী পড়ে তাদেরকে মাদ্রাসা থেকে ছুটি দিতে চায় না। দারুন মন্তব্য করেছেন, শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
আমি তো আপনার এই লেখা পড়ে ভেবেছিলাম এটা আপনার ছেলে।হি হি ,আপনি আপনার ভাতিজাকে নিয়ে অনেক জায়গা ঘুড়িয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।কারন তাতে ওর একঘেয়েমি দূর হয়েছে।তাছাড়া ঠিক বলেছেন ভাইয়া, কষ্টগুলো কখনো দেখানো যায় না।সত্যিই রক্তের সম্পর্ক কখনো অস্বীকার করা যায় না ।ধন্যবাদ আপনাকে।
ছেলে মনে করেছেন তাতে ভুল করেননি, বাপ চাচা একই কথা। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।