বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ৩৬
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।
সারাদিন ঘুরতে ঘুরতে আমরা খুব ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আর সাদা পাথরের ওই এলাকাতে তেমন ভালো কোনো হোটেল ছিল না। যেসব খাবারের দোকানগুলো ছিল সেসব খাবারগুলো মোটেও ভালো ছিল না। আর তাই আমরা সেখানের কিছু শুকনো খাবার কিনে খেলাম। আসলে এই দিনটাকে গরমটা খুব একটা বেশি পড়েছিল। এছাড়াও আমরা খুব ক্লান্ত হয়ে গাড়ির ভিতর একবার ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। আর এদিকে তো আমার নারকেল খেয়ে আমার গ্যাস হয়ে গিয়েছিল। কারণ সবাই শুধু ডাবের জল খেয়েছিল কেউ ডাবের ভিতরে শাঁস খাইনি।
তখন আমি সেই কাকুকে বললাম যে, এখানে আশেপাশে কোন ভালো খাবারের রেস্টুরেন্ট আছে কিনা। কাকু যেহেতু এই সিলেট অঞ্চলের অনেকদিন কাটিয়েছেন তাই এখানের ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট গুলো ওনার জানা রয়েছে। তারপর কাকা আমাকে বলল যে আমরা আজ এমন একটা রেস্টুরেন্টে যাব যেখানে সিলেটের দূর দূরান্ত থেকে লোকজন দুপুরে খাবারের জন্য হাজির হয়। যেহেতু কাকা হোটেলটির অনেক প্রশংসা করছিল তাই আমি ভাবলাম যে এই হোটেলের খাবার খুব সুস্বাদু হবে।
হোটেলটি ছিল সিলেটের শহরের একদম প্রাণ কেন্দ্রে। আর এই সাদা পাথরের এলাকাটি থেকে ওই জায়গাটিতে যেতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আর যদি রাস্তায় জ্যাম থাকে তাহলে সময়টা দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। যেহেতু আমরা বাড়ি থেকে আসার সময় গাড়ির ভিতরে বিভিন্ন ধরনের খাবার কিনেছিলাম তাই আমরা এই সময়টুকুতে বসে গল্প করছিলাম এবং বিভিন্ন ধরনের শুকনো খাবার খাচ্ছিলাম। আসলে সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা। কারণ সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে গেলে অনেক গল্প হওয়ায় আরো অনেক মজাও হয়।
আমাদের ওই রেস্টুরেন্টটিতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এল। ততক্ষণ আমাদের সবার অবস্থা খুব খারাপ। কারণ আমাদের দুপুরে কারো ভাত খাওয়া হয়নি। রেস্টুরেন্টটির সামনে এসে আমরা গাড়ি থেকে নামলাম। রেস্টুরেন্টটির নাম হল পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট। আমরা রেস্টুরেন্টের সামনে এসেই বুঝতে পারলাম যে এখানে অনেক ভিড় রয়েছে। আর এই রেস্টুরেন্টের নাম ডাক সিলেটে বিখ্যাত। যাই হোক কাকা আগে থেকেই এই রেস্টুরেন্ট এর মালিককে কল করে আমাদের জন্য একটা বড় জায়গা রিজার্ভ করে রেখেছিলেন।
আসলে হোটেলটিতে প্রথমে নিচ তলায় প্রবেশ করে দেখি নিচ তলায় সম্পূর্ণ ভর্তির লোক। কোন জায়গায় একটুও ফাঁকা নেই। আর উপরের তলাটি রয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। আমরা সবাই মিলে উপরে গিয়ে প্রথমে বাথরুমে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিলাম। এরপর খাবার টেবিলে এসে দেখি আমাদের খাবার টেবিলটা পুরো সাজানো হয়ে গেছে।
আসলে এই রেস্টুরেন্টটি বিখ্যাত হওয়ার প্রধান কারণ হলো এখানে প্রায় ৩০ প্রকারের ভর্তা পাওয়া যায়। অবশ্য অনেকে বলেছে এর থেকে বেশি প্রকারের ভর্তাও পাওয়া যায়। যেহেতু কাকা এই রেস্টুরেন্টে অনেকবার এসেছেন এবং এখানে খাবার গুলো ওনার জানা রয়েছে তাই তিনি ভাল খাবারগুলোই আমাদের জন্য অর্ডার করলেন। আসলে এখানে এত ধরনের ভর্তা ছিল যে কোন রেখে কোনটা খাব তা ভেবে উঠতে পারছিলাম না।
আসলে এখানে যেসব ধরনের ভর্তা ছিল তার নামগুলো আমার আর মনে নেই। কিন্তু বিশেষ করে আমার শুটকির ভর্তা এবং ইলিশের লেজ ভর্তাটি অসাধারণ লেগেছিল। যদিও শুটকির ভর্তায় একটু ঝাল তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। এছাড়াও প্রতিটি ভর্তা কিন্তু একদম দুর্দান্ত ছিল। আসলে আমি মেইন কোর্স এ যাওয়ার আগে এই ভর্তা খেয়ে আমার পেট ভরে নিলাম। আসলে এত ধরনের ভর্তা আমি আগে একসাথে কখনো দেখিনি এবং একসাথে কখনো খাইনি।
পরবর্তীতে অন্যান্যরা খাবার নিলেও আমি ভর্তা খেয়ে খাবারের টেবিল থেকে উঠে গেলাম এবং পুরো রেস্টুরেন্টে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। আসলে বলতে হবে রেস্টুরেন্টের খাবারের স্বাদ অনেক ভালো। আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়েছি। আমার কাছে এই রেস্টুরেন্টের খাবারটি খুব ভালো লেগেছে। আসলে আমি এই রেস্টুরেন্টের খাবারে কোয়ালিটিকে দশের ভিতরে দশ দিতে চাই। যদিও প্রতিটা ভর্তায় ঝালের পরিমাণটা একটু বেশি ছিল। এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা পুনরায় হোটেলে গিয়ে সেদিনের মতো শুয়ে পড়লাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 12/11/2022
তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
বাংলাদেশ ভ্রমণের অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ইতিপূর্বে। ঠিক পূর্বের নাই আজকে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ ভ্রমণের আরেকটি পোস্ট। আপনার এই পোষ্টের মধ্য থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পেরে আমার অনেক ভালো লাগে। আজকেও তথ্য বহুল একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ।