অডিও বুক!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
কয়েকদিন আগে দাদা একটা পোস্ট করেছিল অডিও বুক নিয়ে। দিনে দিনে বই পড়ার চেয়ে শোনার ব্যাপার টা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি ইদানিং বই যতটা পড়ি তার থেকেও অডিও বুক শুনি। সত্যি অসাধারণ একটা ফিলিংস হয় শোনার সময়। ঐ বইটার বিভিন্ন চরিএের কন্ঠস্বর ভেসে উঠে একেবারে যেন উপলব্দি করা যায়। যাইহোক প্রথমবার কীভাবে আমার এই অডিও বুক বা স্টোরি টেইলার এর সাথে পরিচয় হয় সেটাই আপনাদের কে বলব। ঘটনাটা প্রায় দেড় বছর আগের। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের কথা। সম্ভবত ১০ ই ডিসেম্বর হবে। ঐদিন আমার মনটা খুব একটা ভালো ছিল না। ঐদিন বলতে না তার মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই আমার মন খারাপ ছিল। তো সন্ধ্যার সময় আমি ইউটিউবে ভিডিও দেখছি এবং ক্রল করছি। কিছুই ভালো লাগছিল না। তো হঠাৎ আমার সামনে একটা কিছু ভেসে উঠল।
হিমাদ্রীকিশোর দাসগুপ্তের ঐতিহাসিক হিস্টোরিক্যাল স্টোরি "চন্দ্রভাগার চাঁদ"। দেখে খুবই আগ্রহের সঙ্গে শোনা শুরু করলাম। একে একে পরিচয় হলো গল্পের বিভিন্ন চরিএ ধর্মোপদ, শিবেই, বিশু মহারানা, মহারাজ নরসিংহ দেব। খুবই আগ্রহের সঙ্গে শোনা শুরু করার পর অসাধারণ লাগতে শুরু করে আমার। আমার খুবই ভালো লাগছিল। প্রত্যকটা চরিএের আলাদা আলাদা কন্ঠস্বর এককথায় চমৎকার। পুরো গল্পটা অডিও আকারে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আকারে প্রেজেন্ট করে অডিও বুকের আকার হয়েছে ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট। এই এতোটা সময় এতটুকুও আমার বিরক্তি আসে নাই। আমি যেন মুগ্ধ হয়ে শুনেছি। কিন্তু যখন এটা শোনা শেষ করলাম আমার অজান্তেই আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো। গল্পের শেষে কিশোর ধর্মোপদোর মৃত্যু শিবেই এর সমুদ্রের গহীনে হারিয়ে যাওয়া বিশু মহারানার অজান্তেই পুএ হারানো আমার চোখে পানি এনে দেয়। আমার জীবনে শোনা প্রথম অডিও বুক ছিল এককথায় অসাধারণ।
এবার আসি ঐ অডিও বুক রিডার টিমের কথা। ওদের দুইটা ইউটিউব চ্যানেল আছে এই সংক্রান্ত। যার একটার নাম "Midnight Horror Station " এবং অন্য একটা আছে যেটার নাম "Mh2.0. এই অডিও বুক রিডার টিমে বেশ কয়েকজন আছে। তাদের মধ্যে প্রধান হলো কলকাতার একজন লেখক এবং ঐ চ্যানেলের ওনার সায়ক আমান। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত চলতে থাকে ঐ চ্যানেলে আমার আনাগোনা। একটা সময় গিয়ে এই অডিও বুক শোনা আমার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। আমি প্রায় প্রতিদিন শুনতে থাকি। আমার নিজের অজান্তেই সায়ক আমান এর একজন ফ্যান হয়ে যায় আমি। এদের চ্যানেল থেকে শোনা অডিও বুক এর লিস্ট একেবারে ছোট না। বিভূতিভূষণের বিখ্যাত উপন্যাস হীরা মানিক জ্বলে, টোবা টেক সিং, শারণ্য, ক্বারিন, সত্যি ভুতের গল্প, নামহীন শহর, রাত দশটার পরে, হৃদ মাঝারে, নকল মুখ এইরকম অনেক গুলো অডিও বুক শুনেছি এখন পযর্ন্ত আমি।
শুধুমাত্র অডিও বুক তৈরি করে না লেখক হিসেবেও সায়ক আমান বেশ ভালো। উনার বেশ কিছু লেখা অডিও বুক শুনে আমার অসাধারণ লেগেছে। এরমধ্যে রয়েছে দুইটা সাইকোলজিক্যাল থ্রীলার ঝুমঝুমিওয়ালা এবং কচু বোনের কানাই। বিশেষ করে এই ঝুমঝুমিওয়ালা টা আমার অনেক বার শোনা। এটা এমন একটা বিষয়ের উপর লেখা যেটা আমাকে খুব আকৃষ্ট করে। এখন আগের মতো শোনা হয় না। তবে মোটামুটি সপ্তাহে একটা বা দুইটা স্টোরি শুনি এখন। গতদিন দাদার ঐ পোস্ট টা দেখেই আমার এইটা মনে হলো। বই পড়ার একটা আলাদা গুরুত্ব আছে আলাদা একটা অনূভুতি আছে যেটা অডিও বুক শুনে পাওয়া যায় না। আবার অডিও বুক শোনার আবার আরেকটা মজা আছে যেটা আপনি বই পড়ে পাবেন না। আমার দুইটার অভিজ্ঞতাই আছে। আমি বলব দুইটাই ভালো।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একটা সময়ে আমি প্রচুর বই পড়তাম। বিভিন্ন গল্প কবিতা উপন্যাস এবং অ্যাডভেঞ্চার বইগুলো আরো দারুন লাগতো। দেখা যেত আমার বইয়ের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন গল্প এবং উপন্যাসের বইগুলো লুকানো থাকতো। আমি আমার ক্লাসের পড়া শেষ করে লুকিয়ে সেই বইগুলো অনেক রাত অবধি পড়তাম। অথচ মা ভাবতো আমার ছেলে অনেক পড়াশোনা করছে 😄
যাই হোক তখন বই পড়ার একটা নেশা অন্যরকম কাজ করতো।
আসলে দাদার পোস্টটা সেদিন আমিও পড়েছি। আমার এখন তেমন অডিও বুক পড়া হয়নি কারণটা হয়তো ব্যস্ততা কিংবা পারিবারিক ঝামেলা কিংবা অফিসের চাপ। সবকিছু আসলে আমি চাইলে এখন অনেক কিছু করতে পারি না, যা আমার কাছে ভালো লাগে। থাক সে সমস্ত কথা তুমি অডিও বুক নিয়ে বেশ চমৎকার বিশ্লেষণ করলে। আমিও দেখি ইউটিউবে যদি এরকম অডিও বুক পাই সে ক্ষেত্রে হয়তো শুনবো। তোমার কথাগুলো শুনে আমার বেশ আগ্রহ কাজ করছে। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে চমৎকার পোস্টটি উপস্থাপন করার জন্য।
অডিও বুক বর্তমান সময়ে সবার কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আসলে এখন বই পড়ার প্রতি মানুষের অভ্যাসটা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
তথ্যটা জেনে রাখলাম কেননা গল্পগুলো রেকর্ডিং থেকে শোনার আলাদা একটা মজা আছে।