সারাদিন সারাবেলা|||~~~
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভাল আছি। আর আপনারা সবাই সবসময় ভালো থাকবেন। এটাই প্রত্যাশা করি।
আজ 3 ফেব্রুয়ারী মনটা কেমন যেন আনচান করছিল।জানিনা কিছুই কেনো যেনো ভালো লাগছিলো না।সকাল থেকে অলস সময় কাটিয়ে দিলাম বিছানায়।এরপর বিছানা ছেড়ে ভাবলাম আমার বেশ কিছু কাপড় কাচতে হবে।তাই দেরি না করে ঝটপট ডিটারজেন্টে কাপরগুলো ভিজিয়ে দিলাম।এদিকে রাইস কুকারে ভাত তুলে দিলাম।মসুর ডাল আলু দিয়ে খুবই চমৎকার করে পালং শাক রান্না করলাম।আর ঝটপট ডিম ভুনা করে নিলাম।এরপর অনেকগুলো বাসন বেরিয়েছে সেই বাসনগুলো মাজলাম,এবং ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখলাম।তখন বেলা 11:30 মিনিট। এবার ওয়াশ রুমে গেলাম কাপড় কাচার জন্য।প্রায় দুই বালতি কাপড় কেচে ছাদে মেলে দিলাম।এবার এসে ঘরগুলো গোছালাম এবং ঝাড়ু দিলাম।আর সেইসাথে ডিজে গান শুনছিলাম।ঘরদোর গোছানো হয়ে গেলে এবার আমি গোসলে গেলাম।ছাদে গিয়ে কাপড় গুলো আবার উল্টে পাল্টে দিলাম তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য।তখন ঠিক দুপুরবেলা। তবে রান্না করার সময় গুনগুন করে নিজের মন থেকে কেমন যেন কিছু গানের কলি চলে আসছিল।দুঃখের বিষয় সেগুলো কোথাও লিখে রাখেনি।আর এখন মনে পড়ছে না।একা একা খেতে ভালো লাগছিল না।একটুখানি বাটিতে করে ভাত নিয়ে খেতে বসেছি কিন্তু বিশ্বাস করুন একদম খেতে পারলামনা সব ফেলে দিতে হলো।আমার এক বড় আপু পল্লবী।তিনি দুদিন ধরে আমাকে ফোন দিয়েছিল দেখা করার জন্য আমাদের নীলফামারীতে কুটির শিল্প মেলা লেগেছে বড় মাঠে।তিনি বারবার বলতে লাগল সাথী মেলায় আসো দেখা করি অনেকদিন দেখা হয় না। যাই হোক আজ আমি সাদা ড্রেস পড়ে বের হলাম আপুর সাথে দেখা করার জন্য।নীলফামারী পর মাঠে কুটির শিল্পের মেলায়।
আমি বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে হেঁটেই মেলা পর্যন্ত গেলাম।কিন্তু মনের ভিতর একটু কেমন যেন করছিল,ধরুন একটু অস্বস্তি।যাইহোক মেলায় আমাদের নীলফামারী সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান তৌহিদ,প্রচার সম্পাদক সুভাষ ঋষি লিংকন,পল্লবী আপার সহ আরো অনেক পরিচিত মুখ এর সাথে দেখা হল।অনেক নেত্রীরা বুকে টেনে নিয়ে আদর করছিল আমাকে।কারন আমি এখন তাদের থেকে বেশিরভাগ সময় দূরে আছি।বিশেষ করে নারী রাজনীতি আমার ভালো লাগেনা।আমাদের এদিকে নারী রাজনীতি মানেই সমালোচনা।যেটা আমি একদম নিতে পারি না।এতগুলো পরিচিত মুখ দেখতে পেয়ে বেশ ভালো লাগলো।খুবই ছোট মেলা খুব বেশি দোকানপাট নেই।তবে বেশ জমজমাট ছিল। মেলা ঢুকতেই সবার আগে চোখে পড়ল মনি আচারের দোকান।রংবাহারি এই আচারের দোকানে এমন কোন আচার নেই যে পাওয়া যায় না। মজার বিষয় হলো এই আচারের দোকান টি হলো করিম নামের এক ভদ্রলোকের। ও চিৎকার করে ডাকলো সাথী আপু আচার খাবে না।তখন সে তেতুলের আচার বড়ই আচার চালতা আচার অনেক ধরনের আচার আমাকে প্যাকেট করে দিল।কিন্তু টাকা দিতে চাইলে টাকা নিল না।এই করিমকে কোন এক সময় আমি অনেক বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছিলাম উৎসাহ দিয়েছিলাম এই ব্যবসাটি করার জন্য।আর এখন যেখানেই মেলা হয় মেলায় সবচেয়ে বড় আচারের দোকান করিমের।আমার খুব ভালো লাগে দেখে।
মেলায় বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর,আমরা কয়েকজন মিলে চা নাস্তা খেলাম।কিন্তু আমার খেতে ইচ্ছে করছিল না তারপরেও ওদের সাথে বসে জোর করে একটু খেলাম।এবং আমরা সেখানে আমাদের বইটি নিয়ে আলোচনা করলাম।এবং আরেকটি চমৎকার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা আগামীতে একটি ঈদসংখ্যা ম্যাগাজিন করব ইনশাআল্লাহ।আলোচনা শেষে সবাই সবার কাছে বিদায় নিয়ে যে যার বাসায় চলে এলাম।বাসায় এসে আমার শরীরটা কেমন যেন খারাপ হয়ে গেল।মাথা ভীষণ ঘুরছিল এবং বমি হচ্ছিল।এবার হাত মুখ ফ্রেশ করে ধুয়ে একটু রেস্ট নিয়ে এই পোস্ট লিখতে বসলাম।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে এত বেশি ভালোবাসি যে একদিন পোস্ট না করলে কেমন যেন অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করি।আমার বাংলা ব্লগ পরিবার মানে এখন একটি অভ্যাস।সকাল থেকে রাত অবধি।
আরেকটা বিষয় সারাদিন মনে পড়ছিল এবং খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম।আমার বাংলা ব্লগের সন্মানিত মডারেটর তানজিরা আপু,রূপক ভাই, তানিয়া আপু তৌহিদা আপুর বাবা গতকাল ইন্তেকাল করিয়াছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাদের কথা ভেবে আমার এত বেশি কষ্ট হচ্ছিল যে আমার বাবার মুখ বারবার আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল।মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন তার বাবাসহ পৃথিবীর সকল বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন আমিন।
মেলার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করলাম,,,
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
বিছানায় অলসতার মাঝে অনেকগুলো কাজ করেছেন। আসলে জীবনের বাস্তবতায় এগুলো মেয়েদেরই করতে হয়। আপনি গুনগুন করে গান গাইছিলেন যেটা আপনার খুবই পছন্দের কারণ কবি মানুষের মাঝে এই ধরনের গুণ থাকে। তাছাড়া কুটির শিল্প মেলায় দারুন সময় কাটিয়েছেন মাঝে মাঝে এরকম সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে কার না ভালো লাগে অনেক ভালো লেগেছে আপু।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি..
আপু অলস হয়ে বসে থাকলে আপনি তো কোন কাজ করতে পারতেন না । আসলে আপনি ঝটপট বিছানা ছেড়ে উঠেই সব কাজে মন দিয়েছেন। এটা সত্যি আপু একা একা খেতে ভালো লাগে না, তবে কি করা যাবে, না খেয়ে ও থাকা যাবে না।আপনার মেলায় অনেক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হয়েছে যেনে অনেক ভালো লাগল। আপু আপনি দেখছি অনেক ধরনের আচার এনেছেন, আচার গুলো দেখে লোভ লেগে গেল আপু।যাইহোক আপু মেলায় অনেক ভালো সময় পার করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মূহুর্তে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু, বর্তমানে বাসায় একাই আমি একাই। একা কোন কিছু করতেই ভালো লাগে না। তারপরও মাঝে মাঝে একটু বিনোদন নেওয়ার চেষ্টা করছি আর কি, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কুটিরশিল্প মেলায় অনেক হাতের কাজের জিনিস পাওয়া যায় যেগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আপনি মেলায় খুবই ভালো সময় কাটিয়েছেন যদিও আপনার শরীরটা খুব একটা ভালো ছিল না। আর মেলা মানেই আচারের দোকান। মুখে পানি চলে আসলো এতো আচার দেখে।