ঘুড়ি উৎসবে একদিন
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
বন্ধুরা আজ আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে ।আজ আমি মূলত একদিন ঘুড়ি উৎসবে কাটানো কিছু মুহূর্ত নিয়ে হাজির হয়েছি। আমাদের শহরে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে ঘুরি উৎসব হয়। এবারও সেরকম ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল ।তবে প্রথম প্রথম এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন খুবই সীমিত আকারের করা হতো। কিন্তু এখন এটি প্রচার হতে হতে এই উৎসব এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এর পরিধি ও ব্যাপক হয়েছে। এখন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসে এই ঘুড়ি উৎসবে। যার কারণে লোকজনে ভরপুর থাকে ।সেখানে যাওয়া এবং আসা খুবই কষ্টকর হয়ে যায় ।পুরো শহরের সবাই যেন ঘুরে উৎসবের অনুষ্ঠানে যেয়ে যোগ দেয় ।আশেপাশের বিভিন্ন জেলার লোকজন তো আছেই।
ঘুড়ি উৎসবে একদিন
প্রথম কয়েক বছর এই ঘুড়ি উৎসবের অনুষ্ঠান বেলা তিনটার সময় শুরু হতো। কিন্তু লোকজনের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার কারণে এবার সকাল থেকেই ঘুড়ি উৎসব ছিল। যার কারণে সারাদিনই লোকজনে ভরপুর ছিল । মূলত পদ্মা নদীর চরের উপরে এই উৎসবটির আয়োজন করা হয় ।বিশাল বড় চরের মাঠ লোকজনে একদম ভরপুর থাকে।
গত বছর আমার ঘুরি উৎসবে যাওয়া হয়েছিল না। তাই এ বছর আমি আগেই আমার হাজবেন্ড কে বলে রেখেছিলাম আমি এবার ঘুড়ি উৎসবে যাব। সেও নিতে রাজি ছিল। কিন্তু লোকজনের এত ভিড় হয় যার কারণে শেষ মুহূর্তে সে নিয়ে যেতে খুব একটা আগ্রহী ছিল না। তারপরেও অনেক জোড়াজড়ি করে আমি আমার মেয়ে রেডি হয়ে রওনা দিলাম। কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে একটা রিকশাও পাচ্ছিলাম না ।সবাই বলাবলি করছিল সবাই চলে গিয়েছে ঐ ঘুড়ি উৎসবে। কোন বাড়িতে মনে হয় লোকজন অবশিষ্ট নেই।
বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আমরা অবশেষে একটি রিকশা পেয়ে গেলাম। যদিও রিক্সাওয়ালা বলছিল যতটুক যাওয়া সম্ভব সেই পর্যন্ত সে আমাদেরকে নিয়ে যাবে। তবে ভাড়া ছিল ডাবল। যাইহোক তার কথামতো আমরা রিক্সায় উঠে বসলাম। সে কিছু দূর যাবার পরেই বলছিল আর রিক্সা যাবে না। সেখান থেকে ঘুড়ি উৎসব অনেক দূরে ছিল প্রায় দুই কিলোমিটার।
তারপর আমরা দেখলাম অনেক রিকশা যাচ্ছে।আমাদের রিক্সাও আরো একটু দূরে গেল।তারপর পুলিশ নামিয়ে দিল।পুরো শহর জ্যাম হয়ে ছিল এই উৎসবের কারণে।যার কারণে অনেক আগে থেকেই সবাইকে নামিয়ে দিচ্ছে।তখন আমার হাসবেন্ড বললো চলো বাসায় ফিরে যাই এই রিক্সায় করেই।কেননা দুই কিলোমিটার পথ বাকি আছে ।অত দূরে হেঁটে যেতে পারবে না।আমি আর আমার মেয়ে দুজনের কেউই বাসায় ফিরে যেতে রাজি ছিলাম না।
আমরা বললাম না আমরা যাব ।আমরা হাঁটতে পারব।অনেক লোকজন হেঁটে যাচ্ছিল, তাদের দেখে আমরাও হেঁটে যেতে চাইলাম।তবে শেষ মেশ হেঁটে আমরা পৌঁছেছিলাম।তবে অনেক কষ্ট হয়েছিল।অনেক কষ্টের পর যখন ওখানে গেলাম তখন বেশ ভালো লেগেছিল।আকাশ ভর্তি সুন্দর রং বেরঙের ঘুড়ি উড়ছিল।
সবাই সবার ঘুড়ি উড়াতে বেশ ব্যস্ত ছিল।ছোট বড় অনেকেই ঘুড়ি উড়াচ্ছিল।তবে যে পরিমাণ লোক জন ছিল সে পরিমাণে ঘুড়ি আকাশে ছিল না।সবাই আমার মত দেখতে এসেছে।তবে লোকজন একটু কম হলে ভালো হত।এত লোকজনের মধ্যে কোথাও যেয়ে শান্তি নেই।
এই ঘুড়ি উৎসবের ঘুড়ি উড়ানো বেশ কিছুক্ষণ দেখতে থাকলাম।এছাড়াও বিভিন্ন খাবার দোকান ছিল।রীতিমত মেলার মত হয়ে উঠেছিল জায়গাটা।ঘুড়ি উৎসবের একটা মজার ব্যাপার হলো সারাদিন ঘুড়ি উড়ানো হয় ।আর সন্ধ্যার পর ফানুস জ্বালিয়ে উৎসব শেষ করা হয়।ফানুস জ্বালানোর সেই মুহূর্ত আর একদিন শেয়ার করব।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
লোকেশন | পদ্মার পাড়, ফরিদপুর |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।


এর আগে নিউজে দেখেছিলাম ফরিদপুরে ঘুড়ি উৎসব হচ্ছে। আসলে আপু সেখানে সবাই ঘুড়ি উৎসবটা উপভোগ করতে গিয়েছে এজন্যই যে পরিমাণে লোক সেখানে গিয়েছে সেই তুলনায় ঘুড়ি আকাশে নেই।
আসলে ভাইয়া লোকজন অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে কোন কিছু দেখেই শান্তি পাচ্ছিলাম না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এজাতীয় আনন্দ-গ্রাম ও মুহূর্তগুলো আমার খুবই ভালো লাগে আপু। আমাদের গ্রামে অনেক আগে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব চলত কিন্তু এখন আর সেগুলো হয়ে ওঠেনা। এর আনন্দটা বেশ ভালো লাগে উপভোগ করতে। বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষজন জড়ো হয় তাদের বিভিন্ন ক্যাটাগরির ঘুড়ি নিয়ে।
আসলে ভাইয়া ঘুড়ি উৎসবে যোগদান করা সত্যিই অনেক আনন্দের ব্যাপার ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ঘুড়ি উৎসবের দেখি জাঁকজমক আয়োজন। সত্যিই এই উৎসবটা দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো, আসলে প্রথম প্রথম এত আয়োজন হতো না, তাই বিকাল তিনটায় শুরু হতো কিন্তু মানুষ বেশি আসার কারণে সকাল থেকেই শুরু হলো, আসলে উৎসবমুখর হওয়ার কারণে সকাল থেকে এই উৎসবের আমেজ দেখতে পেয়েছেন।খুবই ভালো লাগলো আসলে পদ্মা নদীর বিশাল চড়ে এই উৎসবটি আয়োজন করা হয়েছে আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
ভাইয়া আপনার কাছে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
অনেক ভালো লাগে আপু ঘুড়ি উৎসব গুলো দেখতে। আমাদের এখানেও ঘুড়ি উৎসব হয় প্রতি বছর। তবে এখনো শুরু হয়নি বৈশাখ মাসে শুরু হবে। ঘুড়ি উৎসবে সবাইকে অনেক বেশি আনন্দ দেয়। বিশেষ করে বাচ্চারা খুবই আনন্দ উপভোগ করেন। আমরা তো ছোট বেলায় ঘুড়ি নিয়ে অনেক খেলাধুলা করেছি। কিন্তু এখনকার বাচ্চারা ঘুড়ি উৎসব বলতে কিছু চিনেনা। তাছাড়াও ঘুড়ি কিভাবে উড়াতে হয় একদম জানেনা। আপনি খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটালেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপু এখনকার বাচ্চাদের কথা কি বলবো আমি নিজেও জীবনে ঘুড়ি উড়াইনি এবং ঘুড়ি উড়াতেও পারি না ।ছোটবেলা থেকেই শহরে কেটেছে যার জন্য এই অবস্থা। যাইহোক আমাদের শহরে প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে এই ঘুড়ি উৎসব হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলেই এই ঘুড়ি উৎসবটা এখন অনেক বেশি জনপ্রিয় ফুটে হয়ে উঠেছে । অনেক লোকজন এখানে যায় ফেসবুক খুললে দেখা যায় যে ঘুড়ি উৎসবের ছবি ।মানুষজন ফরিদপুর ঘুড়ি উৎসবে গিয়ে অনেক ছবি তুলেছে । আর মানুষের তুলনায় ঘড়ির ছবি তো কম থাকবেই কারণ এক একটা ঘুড়ির সাথে কয়েকজন করে মানুষ থাকে । খুব ভালো সময় উপভোগ করেছেন দেখেই বোঝা গেল । আমারও ইচ্ছা আছে কোন একদিন এই ঘুড়ি উৎসবে যাওয়ার ।
হ্যাঁ আপু পরেরবার চেষ্টা করবেন এই ঘুরি উৎসবে যোগ দেবার জন্য। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
পদ্মা নদীর চরে এত বড় ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন দেখে সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম। আসলে এই ঘুড়ি উৎসবে মানুষের পরিমাণ বেশি আগ্রহ হওয়ার কারণে এখন সকাল থেকেই শুরু হয়। আর ঘড়ি উৎসবে আপনি দারুন কিছু মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। সেই মুহূর্তের ফটোগ্রাফি গুলো থেকে খুবই ভালো লাগলো।
হ্যাঁ ভাই আমাদের এই শহরে এই ঘুড়ি উৎসব বেশ বড় আয়োজন করেই তৈরি করা হয়। অনেক নিউজ চ্যানেলও আসে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।