হ্যাল্লো বন্ধুরা
|| ০৬ মার্চ, ২০২৫ || রোজ: বৃহস্পতিবার ||
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সকলকে আমার আদাব/ নমষ্কার 🙏🙏। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সুস্থ আছি। আজ আপনাদের সাথে আবারো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকের পোষ্ট টি আপনারা টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছেন ইতিমধ্যে, নাটক রিভিউ পোস্ট। আজ বেশ সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করবো আপনাদের সকলের ভালো লাগবে। তো চলুন সবার আগে নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখে নেই এক নজরে.....
এক নজরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :
নাম: | সেদিন ছিলো শুক্রবার |
ডিরেকশন: | ভিকি জাহেদ |
চিত্রনাট্য : | সোহাইল রহমান |
অভিনয়ে: | তানজিম সাইয়ারা তটিনী, তাওসিফ মাহবুব, আইরিন আফরোজ ও আরো অনেকে |
প্রকাশ মাধ্যম : | চ্যানেল আই ও ইউটিউব |
দৈর্ঘ্য : | ১ ঘন্টা ২২ মিনিট |
ভাষা: | বাংলা |

নাটকের শুরুতে দেখবো একজন পুরুষ হাত পা বাঁধা অবস্থায় রক্তাক্ত হয়ে নিথর পরে রয়েছে আর পাশেই তার ওয়াইফ বসে মাংস দিয়ে ভাত খাচ্ছে। পুলিশ এসে ইনভেস্টিগেশনের জন্য তাকে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য বললে সে হুট করে অজ্ঞান হয়ে যায়। এদিকে আমরা হাসান নামের একজন মনোরোগ চিকিৎসক কে দেখতে পাই, যার নাম ডা: হাসান। আগের কেস এর দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কামাল ডা: হাসান এর কাছে এই কেস নিয়ে সাহায্য চান। কামাক সাহেব নিশ্চিত যে সেই লোক কে খুন তার স্ত্রী নোভা ই করেছে কিন্তু সে ইচ্ছে করে মানসিক ভাবে অসুস্থ হওয়ার ভান করছে। এর আগেও নোভা দুই বার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। নোভার উকিল রা এসব এভিডেন্স দেখিয়ে তার যেন শাস্তি না হয়, বরং মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় সেই ব্যবস্থা চাচ্ছে। তাই ডা: হাসানকে প্রকৃত বিষয় টি ইনভেস্টিগেশনের জন্য সহায়তা চাচ্ছেন কামাল সাহেব। নোভার বিষয় টি পুলিশের কাছে মনে হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রোণোদিত ভাবে নোভার যখন প্রয়োজন হয়, তখন নোভা পাগল সাজে ইচ্ছে করে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হয়। আবার মাস ছয়েকের মাঝেই সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়ে যায়। ডা: হাসান পুলিশ কামাল কে আসস্ত করেন যে নোভা যদি পাগল সাজার অভিনয় করে, তবে এবার সে তার কাছ থেকে পার পাবে না, ধরা পরবেই।




ডা: হাসান সেই কেস টা নেয় এবং নোভার সাথে কথা বলতে যায়। সেখানে কথার মাঝে নোভা হুট করে ডা: হাসান কে আক্রমণ করে বসে। পরে পুলিশ, ডাক্তার এসে নোভাকে ধরে শান্ত করে৷ ওদিকে দেখা যায় ডা: কামাল তার স্ত্রী কে ভীষণ ভালোবাসে। কিন্তু তার স্ত্রী শীলা পরকীয়ায় জড়িত। হাসান সাহেবের আড়ালে সে অন্য পুরুষের সাথে নিয়মিত দেখা করে রেস্টুরেন্টে এবং রাতেও ফোনে কথা বলে। শীলা মনে করেন হাসান এসবের কিছুই জানে না কিন্তু আসলে ডা: হাসান সবই জানেন কিন্তু না জানার ভান করেন। এই বিষয় টি নিয়ে ডা: হাসান নিজেও যথেষ্ট ভোগান্তির মধ্যে থাকেন, রাতে ঘুমাতে পারেন না। ওদিকে নোভার সাথে ডা:হাসান নিয়মিত চেক আপ এর উপর থাকেন। নোভার বিশ্বাস অর্জন করতে তাকে নানা ভাবে সাহায্য করেন। নোভাকে তার আচরণের জন্য বিছানার সাথে হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে রাখা হতো। সেখান থেকে ডা: হাসানের পরামর্শে তার সাথে প্রথমে রুমে স্বাধীন করা হয়, তারপর ধীরে ধীরে হাসপাতালের মাঝেও পুলিশ প্রোটেকশন এর সাথে বের হওয়ার অনুমতি নিয়ে দেন ডা: হাসান। ধীরে ধীরে নোভা ও তার হাজবেন্ড এর অনেক তথ্য এবং তার ছোট বেলারও কিছু তথ্য নোভা শেয়ার করেন হাসান সাহেবের সাথে । হাসান সাহেব নোভার বাবার সাথেও দেখা করেন। কিন্তু নোভার বাবা খুব একটা সহোযোগিতা করেন না তার সাথে। শুধু বলেন যে নোভাকে বুঝতে হলে অনেক গভীরে যেতে হবে।





এরই মাঝে হাসান সাহেবে কথায় কথায় নোভার সাথে শেয়ার করে যে তার স্ত্রী পরোকীয়ায় লিপ্ত। নোভা জিজ্ঞেস করে যে সেকথা তাকে কেনো বলছে। তখন হাসান সাহেব বলে যে সেই কথাগুলো কারোর সাথে শেয়ার করতে পারছিলো না। তবে নোভাকে বিশ্বস্ত মনে হয়েছে তাই তার সাথে শেয়ার করলো। এভাবে ধীরে ধীরে অনেকটা সময় পরে নোভা শেয়ার করে যে সে আর তার হাজবেন্ড একসাথে ভীষণ সুখে ছিলো। তারা সন্তান নেয়ার জন্যও চেষ্টা করছিলো। অফিসে টেন্ডার বিষয়ক কোনো ঝামেলায় কারোর সাথে তার হাজিবেন্ড এর ঝামেলা হচ্ছিলো। তখন নোভাকেও রাস্তায় মাঝে মাঝেই তিনজন মাক্স ম্যান ফলো করতো। ঘটনার দিন নোভা বাহিরে থেকে বাসায় এসে দেখে তিনজন মাক্স ম্যান তার হাজবেন্ড কে বেধে রেখেছে। টেন্ডারে সাইন করবে নাকি নোভাকে মেরে ফেলবে এমন হুমকি দেয়ায় তার হাজবেন্ড উত্তেজিত হয়ে যায়। পরে সেই মাক্স ম্যান নোভার সামনে নোভার হাজবেন্ড কে গুলি করে মেরে ফেলে। পরে হাসান সাহেব নোভাকে বলে যে সে বিশ্বাস করে নোভা তার হাজবেন্ড কে খুন করে নি। তবে পুলিশের পুরো সন্দেহ নোভার উপর ই, তাই নোভাকে সাবধানে থাকতে বলে, কী কী করতে হবে সেসব বলে দেয়। এবং নোভার পক্ষে যা যা মেডিকেল ডকুমেন্টস প্রয়োজন সেসব রেডি করে পুলিশের কাছে সাবমিট করেন। কিন্তু নাটক টি যেহেতু ভিকি জাহিদের,, তাই যেখানে গল্প শেষ বলে মনে হয়, সেখান থেকেই গল্পের আসল টুইস্ট শুরু হয় এবং আসল কাহিনী সামনে আসে! কি সেই কাহিনী? নোভাই কি আসল খুনী? ডা: হাসান ই বা কেন সাহায্য করলো নোভাকে?? জানতে হলে নাটকটি দেখে ফেলতে হবে!



ব্যক্তিগত মতামত:
নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। নাটকটি একটি পুরোদম সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার নাটক। যারা ভিকি জাহেদ এর নাটক দেখে অভ্যস্ত তারাই বুঝতে পারবেন। লাস্টের দিকে গিয়ে যখন মনে হবে যে নাটক শেষ, কাহিনী বোঝা হয়ে গিয়েছে-- তখন ই ভিকি জাহেদ এর আসল খেলা শুরু হয়। নাটক শেষে এমন এন্ডিং হয় যা পুরো নাটকে কেউ কল্পনাও করতে পারে নি। এই নাটকের শেষ টিও এমনই হয়েছে। যারা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার পছন্দ করেন, আমি সবাইকেই নাটকটি দেখার জন্য অবশ্যই সাজেস্ট করবো। আশা করছি নাটকটি অবশ্যই ভালো লাগবে।
ব্যাক্তিগত রেটিং : ৯.৮ /১০
নাটকের লিংক :
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼



VOTE @bangla.witness as witness
OR @rme as your proxy


আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কয়দিন থেকে ভাবছিলাম নাটকটি দেখবো। আপনি দারুন ভাবে রিভিউ উপস্থাপন করেছেন। নাটক রিভিউ পড়তে অনেক ভালো লাগে। ভালো লাগলো আপু।
সময় করে দেখবেন আপু। যদি আপনার থ্রিলার পছন্দ হয়ে থাকে, তবে ভীষণ ভালো লাগবে নাটকটি।
আপু আপনি দারুণ একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। বাংলা রোমান্টিক নাটক গুলো সময় করে দেখে নেই। তবে এই নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। নাটকের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে নাটক টি দারুণ। সময় করে নাটক টি দেখে নিবো।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
এটি রোমান্টিক নাটক না ভাই।
এই নাটকটার কাহিনী অনেক বেশি সুন্দর ছিল। এই নাটকটার মধ্যে অনেক সুন্দর একটা বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আর এটা দেখে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। খুব সুন্দর করে আপনি নাটকটার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে কাহিনী টাকে সবার মাঝে উপস্থাপন করেছেন।
পুরো কাহিনী তো আমি বলিই নি ভাইয়া। আপনি কোন সুন্দর বিষয় টি ফুটিয়ে তোলার কথা বলছেন, আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না...
আসলে আপু আপনি যেটুকু উপস্থাপন করেছেন, আমি ওইটুকুই ভালো লেগেছে বলেছি। আর নাটকের যেটুকু বিষয় তুলে ধরেছেন, ওইটাই সুন্দর বিষয় ফুটিয়ে তোলার কথা বলেছি।
ও আচ্ছা ভাই !
একেবারে অসাধারণ একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি৷ আপনার কাছ থেকে সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দেখে খুব ভালো লাগলো৷ যেভাবে আপনি আজকে এই সুন্দর নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তা যেরকম সুন্দর হয়েছে তেমনি এখানে এই নাটকের মধ্য দিয়ে আপনার কাছ থেকে এত অসাধারণ একই নাটক সম্পর্কে জানতে পারলাম আমি যেন মনে হচ্ছে নাটকটি এখনই দেখে নিলাম৷ অবশ্যই আমি সময় করে নাটকটি দেখে নিব৷
আশা করছি নাটকটি দেখলে আপনার ভালো লাগবে।