একাল আর সেকাল //by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- একাল আর সেকাল
- ২৭, এপ্রিল ,২০২৪
- শনিবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " একাল আর সেকাল " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই যেন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ায় অতীতের অনেক কিছুই আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হয়তো কখনো সেই সোনালী অতীতগুলো স্মরণ করা হয় না। যখন একান্ত নিরিবিলিতে গল্পের মধ্যে হারিয়ে যাই তখন সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। সেই সময় খুবই মিস করি সেই সোনালী অতীতগুলো। মানুষের সুযোগ সুবিধার যে চাহিদা সেটা হয়তো প্রতিনিয়ত সহজ হচ্ছে। সেই প্রিয় দিনগুলো কিন্তু খুবই সুন্দর ছিল। যখন প্রযুক্তির স্পর্শ পাইনি। আজকে সেই দিনের কিছু ঘটনা বহুল মুহূর্ত স্মরণ করব।
এই প্রচন্ড গরমের মধ্যেই সেই সোনালী অতীতে কত সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছি যেটা শুধু এখন স্মৃতি। সেই সময় বিদ্যুৎ ছিল না । প্রচন্ড গরমে তখন একটি উপায় ছিল সন্ধ্যার পরে বাড়ির উঠানের উপর পাটি বিছিয়ে শুয়ে থাকা। আমরা যখন ছোট্ট ছিলাম দাদা দাদি সেই পাটির উপর পাশে শুয়ে অনেক ধরনের গল্প এবং শাস্ত্র বলতো। তার পাশাপাশি হাত পাখা দিয়ে বাতাস দিত। সেই হাতপাখা তালের পাতা দিয়ে তৈরি। গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাওয়া কতই না সুন্দর মুহূর্ত ছিল। সন্ধ্যার সময় বই নিয়ে পড়া শেষে খাওয়া-দাওয়া করে । এই গল্প শোনার জন্য বায়না ধরা । সেই সময় গল্পের জগতটা আমার কাছে মনে হতো যেন ভিন্ন এক জগত রয়েছে সেই ভাবনাগুলো কতই না সুন্দর ছিল।
বর্তমান যুগে যেটা আর দেখা যায় না। দাদা দাদির কাছ থেকে গল্প শোনার যে চাওয়াটা হয়তো বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই দিনগুলো হারিয়ে ফেলেছে। মোবাইল ল্যাপটপ যেগুলোর মাধ্যমে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চার া গেমস বিভিন্ন ধরনের কার্টুন ভিডিও দেখায় ব্যস্ত । সেই দিন গুলো তাদের ভাবনায় আসার কোন সুযোগ নেই। আমার কাছে মনে হয় এইতো সেদিনের কথা এত দ্রুত সেই সোনালী অতীত হারিয়ে ফেলবো কখনো ভাবি নি। সেই সময় ভূতের গল্পগুলো শুনতে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো আবার ভয় পেতাম। বিশেষ করে আমার দাদা দাদীর কাছ থেকে এই গল্পগুলো বেশি শুনতে পেতাম। সেই সময় বাড়িঘর খুব কম ছিল। অনেক জায়গা জঙ্গল সেই জায়গাগুলোতে ভয়ানক ভূতের ঘটনা ঘটত।
আবার এমন কিছু ঘটনা শুনেছি যেগুলো সত্যিই সাহসিকতার একটি মনোভাব তৈরি হয়ে যেত। আমার বাড়ির পাশের দাদা সে নাকি কবিরাজ ছিল। বিভিন্ন জায়গায় কবিরাজি করতে গিয়ে গভীর রাতে বাড়ি আসার সময় দুষ্ট জ্বীন অনেক ঝামেলা করত। সেই দুষ্টু জিনের সাথে মারামারি করেছে এরকম ঘটনা মুরুব্বিদের কাছ থেকে অনেক শুনেছি ।আসলে সেই ঘটনাগুলো সত্য কিনা জানিনা কিন্তু আমার কাছে এই ধরনের ঘটনা শুনতে অনেক ভালো লাগতো। বর্তমান ভুত এফএম শোনার মাধ্যমে ভূতের অনেক ঘটনা শুনতে পাই। ভূত এফএম শোনার মাধ্যমে অনেক ইনজয় করতাম মাঝে মাঝে ভয় লাগতো। সেই ঘটনার প্রেক্ষাপট যেন আমার জীবনের সাথে মিলে গিয়েছে। রাতের অন্ধকারে মনে হতো এই যেন পাশেই সেই ঘটনার বাস্তবিক বিষয়টি অবস্থান করছে।
তাছাড়া গ্রামের সমবয়সীরা বিকেলে একসঙ্গে হয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলায় মেতে উঠতাম। কানে মাটি ঝাড়লোটি, ইচিং বিচিং চিচিং চা, বউচি, গোল্লাছুট, পাটিসাপটা, কুতকুত,খাপড়ি, স্যান্ডেল চুরি, তারপর ঘাসের মধ্যে ছোট্ট পাথরের টুকরা বা শুকনা জিনিস লুকিয়ে সেটা আবার খোঁজাখুঁজি করা সেই খেলা গুলো এখন দেখতেই পাই না। আবার পুকুরে গোসল করার মাধ্যমে কর্মি গাছের ডগা দিয়ে পানির মধ্যে খোঁজাখুঁজি তাছাড়া গুল্লাছুট এই এ সকল খেলা গুলো বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে দেখতে পায় না। আমার কাছে মনে হয় সেদিনকার ঘটনা। বর্তমান গ্রামের পরিবেশ শহরের মতো হয়ে গেছে শহরের দেখা যায় কোন বাড়িতে দুর্ঘটনা বা কিছু ঘটলে পাশের বাসার লোকজন শুধু তাকিয়ে দেখে কখনো সহায়তার জন্য সেখানে ছুটে যায় না। বর্তমান গ্রামের পরিবেশ ঠিক তেমনটাই হয়ে গেছে । সবাই নিজেদের বাড়ির পরিবেশ শহরের মতো করে তুলছে। গ্রামের বাড়ি গুলোতে আগে সব পাশ দিয়েই যাতায়াত করা যেত কিন্তু এখন চাইলে সেটা আর সম্ভব না।
শুধু স্কুলে ছোট ছোট বাচ্চারা লেখাপড়ার মাধ্যমে একসঙ্গে হতে পারে । তাছাড়া খেলাধুলা করার যে মন মানসিকতা সেই বিষয়টি আর পরিলক্ষিত নেই। ছোট থেকেই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। সেই খেলার সময় তাদের মধ্যে আর নেই। সেজন্য মাঝে মাঝে সেই কথাগুলো মনে পড়লে খুবই মিস করি, ফিরে যেতে মন চায় সেই দিনগুলোতে। সেজন্য বলি একাল আর সেকাল।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
সত্যি ভাইয়া দাদা-দাদী কিংবা বয়স্ক কারো কাছ থেকে গল্প শোনার সেই আনন্দটা এখন আর নেই। সব কিছুই বদলে গেছে এখন। অনুভূতি গুলো কেন জানি বেরঙিন হয়ে গেছে। আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।