একুশে ফেব্রুয়ারি বিষয়ে কিছু আলোচনা ।
আজ - ৮ই, ফাল্গুন, ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | সোমবার | বসন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান এবং ভারত বিভক্ত হয়ে যায়। এরপর পাকিস্তানের ছিল দুটি অংশ এক হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তান আর অন্যটি হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তান। বিভিন্ন কারণে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মৌলিক বিষয়গুলোর অনেক পার্থক্য ছিল। ভাষা ও সংস্কৃতি সব কিছুতেই পার্থক্যগুলো পরিলক্ষিত ছিল। এরপর ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের সরকার ঘোষনা দেয় যে পুরো পাকিস্তানের এক এবং একমাত্র ভাষা হবে উর্দু। আর এই ঘোষণার পর পূর্ববাংলায় অবস্থানরত সকল জনগণ এবং বাংলা ভাষাভাষী কেউ এই অন্যায় সিদ্ধান্তকে মেনে নেয়নি। পূর্ব বাংলায় প্রত্যেকে এই অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। বাঙালির এমন আক্রমনাত্মক দেখে পাকিস্তানের সরকার নানাভাবে বাংলা ভাষাভাষী আন্দোলনকারীদের আটকানো অনেক চেষ্টা করে এমনকি ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু বাঙালি সে ধারা অমান্য করে মিছিল-সমাবেশ গড়ে তুলে। আর সেই সমাবেশে পুলিশের সংঘর্ষের মাধ্যমে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার সহ আরো অনেক তরুণ নিহত হয়। পাকিস্তানিরা ভেবেছিল এই সংঘর্ষের মাধ্যমে বাঙালি ভয় পাবে আন্দোলনে পিছিয়ে যাবে। কিন্তু বাঙালিকে পরাজিত করা এত সহজ নয়। পুলিশের সংঘর্ষে তরুণদের নিহত হওয়ার ফলে বাঙালি আরো তীব্র প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। তখন বাধ্য হয়ে পাকিস্তানের সরকার বাঙ্গালীদের বাংলা ভাষায় ফিরিয়ে দেয়।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আর এভাবে বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই বাংলা ভাষা।
আর এই ৫২ আন্দোলনই ছিল বাঙালির ৭১ এর মূল প্রেরণা। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর একুশে ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় ভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর ২০১০ বিশ্ব এটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। আর এরপর থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বাংলার তরুণদের সেই রক্তক্ষয়ি নির্মম ইতিহাস কখনো ভুলার নয়। এদিনটি আমাদের বাঙ্গালীদের আনন্দের এবং বেদনার। আনন্দের এ কারণে বলছি কেননা তখনকার ওই রক্ত ক্ষয় আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের এই মনের ভাষা, প্রাণের ভাষা, বাংলা ভাষা পেয়েছি। তার সাথে সাথে এই দিনটি অনেক বেদনার কেননা এ আন্দোলনে অনেক তরুণ নিহত হয়েছে, অনেক মার কোল খালি হয়েছে, অনেক বোন ভাই হারা হয়েছে, অনেক বউ তার স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হয়েছে।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
তো খুবই সংক্ষিপ্ত ভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি এই ইতিহাসটিকে আমি আমার মত করে আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সে ছোটবেলা থেকে একাডেমিক বই-পুস্তকে এই ভাষা দিবস সম্পর্কে পড়ে আসছি। কিন্তু সেগুলো শুধু পরীক্ষার জন্যই পড়াহতো। কিছুই বুঝতাম না খুবই বিরক্ত লাগত। বিভিন্ন সাল-তারিখ নাম এগুলো মুখস্ত করতে, মনে রাখতে খুবই কষ্ট হতো। কিন্তু এখন যত বড় হচ্ছি তত বেশি উপলব্ধি করছি এসব ইতিহাস সম্পর্কে জানা আমাদের জীবনে কতটুকু প্রয়োজন। কত কষ্টের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের বাংলা ভাষা। ছোটবেলায় এ দিনটিকে অর্থাৎ একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্কুলে নানাভাবে উদযাপন করা হতো। সকাল সকালে স্কুলে চলে যেতে হতো শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য। স্কুল জীবন পার করে আসার পর শহীদ মিনারে আর ফুল দেয়া হয়নি। আজ কেন জানি খুব বেশি করে মনে পড়ছে স্কুল জীবনের সেই সুমধুর স্মৃতিগুলোকে। খুব বেশি ইচ্ছা করছে শহীদ মিনারে ফুল দিতে। হয়তো মনের কোণে দেশপ্রেমের সেই সুপ্ত ইচ্ছা গুলোর কারণে এমনটা হচ্ছে।
আমি মনে করি প্রত্যেক নাগরিকেরই পূর্বের সব রক্তক্ষয় ইতিহাস সম্পর্কে জানা প্রয়োজন । কিভাবে আমাদের দেশে স্বাধীনতা এসেছে কিভাবে আমরা আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলাকে ফিরে পেয়েছি। শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্য কিংবা পড়ার জন্য পড়ার নয় বরং ভালোবেসে জানার আগ্রহ থেকে পূর্বের ইতিহাস গুলো পড়া প্রয়োজন। যখন আমরা জানতে পারব যে কত কষ্টের বিনিময়ে আমরা এই ভাষা পেয়েছি তখন আমাদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে।
আজকের আলোচনায় পর্যন্তই। সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বিস্তারিত অনেকেই জানে না। জানার চেষ্টাও করে না। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের অবশ্যই এই গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার। এমন অনেক লোক আছে যারা ২১শে ফেব্রুয়ারি এটা বুঝে তবে মাতৃভাষা দিবস কোনটা এটা জানে না।
আর কিছু ভদ্র সমাজের লোক আছে যারা শহীদ মিনারকে গানের আসর বানায়। সেখানে দেখা যায় সবাই জুতা পড়ে শহীদ মিনারের উপর। তবে এরাই কিন্ত আবার ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারী ঠিকই ফুল দিতে যায়, তবে এটা একটা ফ্যাশন। যাইহোক, আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু শেখার আছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্ট আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
জি ভাইয়া,আমাদের প্রত্যেকটা বাঙালি প্রয়োজন পূর্বে ইতিহাস গুলো জানা।এই ইতিহাস জানা আমাদের খুবই প্রয়োজন মাতৃভাষা জন্য হাজারো তরুণ জীবন দিয়েছে। এই ভাষার ইতিহাস সম্বন্ধে যদি আমরা না জানি তাহলে বাঙালি বলাই আমাদের জন্য লজ্জাজনক।পৃথিবীর বুকে শুধুমাত্র আমাদের বাংলাদেশের মানুষ ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছে আন্দোলন করেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি। তাইতো এই ভাষা দিবস আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে পেরে সত্যিই আমি গর্বিত।ভাষা দিবসে শ্রদ্ধার সাথে হাজারো তরুণ নাম মনে করছি রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার নাম না জানা অনেক তরুণ এই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে তাদের ঋণ আমরা কখনো শোধ করতে পারব না। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই মাতৃভাষা দিবসকে আনন্দ এবং দুঃখের সাথে স্মরণ করি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় নিয়ে পোষ্টটি পড়ার জন্য।
একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে অনেক কিছু জানা ছিল। কিন্তু এতটা বিস্তারিত আমার জানা ছিল না। আপনার পোস্ট পড়ে আরো বেশি বিস্তারিত কিছু জানতে পারলাম। অনেক ভাইয়ের বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই বাংলা ভাষা। মূলত ভাষা শহীদ ভাইদের রক্তের কারণেই আমরা আজকে আমাদের মাতৃভাষা পেয়েছি। তা না হলে আমরা আমাদের নিজেদের ভাষা ফিরে পেতাম না। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানাই।
আমি খুবই সংক্ষিপ্ত ভাবে ইতিহাসটি সকলের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আজকের আলোচনাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম।
আজ মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি আমাদের প্রত্যেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটির জন্য সকল শহীদদের প্রতি আন্তরিক ভাবে শ্রদ্ধা এবং স্মরণ করি। বীর মুক্তিযুদ্ধা সেই বীর সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা বাংলায় আমরা কথা বলতে পারছি। তাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা মায়ের মুখের ভাষাতে কথা করতে পারছি। আপনি খুবই সুন্দরভাবে মাতৃভাষা দিবসে নিয়ে আলোচনা করলেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আজকের আলোচনাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি ভাষাভাষী মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পর আমরা পেয়েছি আমাদের এই মাতৃভাষা। যারা এই বাংলা ভাষা অর্জনের জন্য শহীদ হয়েছেন সে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আপনি তুলে ধরেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। আপনার এই পোষ্ট পড়ার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম। ভাইয়া আপনার এই পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আপনি দারুণভাবে এর প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছেন। একটি দেশের ভাষা সে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। পৃথিবীতে এমন কোন রাষ্ট্র নিয়ে যে রাষ্ট্র ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে বাংলাদেশে একমাত্র দেশ। আন্দোলনকে ভালো হয় মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার। আপনি সে প্রেক্ষাপটটি দারুন ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।
এত সুন্দর করে ভাষায নিয়ে আমাদের মাঝে আলোচনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এ তথ্যটি থেকে বোঝা যায় আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।এই তথ্যটি ইউকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ে সুন্দর মতামত করার জন্য।
1952 সালের ভাষা আন্দোলনে তরুণদের জীবনের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষা বাংলা কে । সেই মাতৃভাষা বাংলা উপলক্ষে আজকে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস হিসেবে আমরা পালন করে থাকি । আর এটাকে বিশ্ববাসী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জয়গান করে থাকেন । আমরা এই বাংলা ভাষাকে পেয়ে খুবই গর্বিত। আপনি বিষয়টি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা রইল ভাই ।
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই আমি আপনার সঙ্গে একমত। আমরা আমাদের এই মাতৃভাষাকে অনেক সহজেই উপহার হিসেবে পেয়ে গেছি তবে আমাদের শহীদ ভাইদের কাছে এই বিষয়টি অত সহজ ছিল না। তারা তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই মাতৃভাষা উপহার দিয়ে গেছেন এটি হয়তোবা পৃথিবীর আর কোনো ইতিহাস নেই। আপনার আলোচনাটা সত্যি অনেক যুক্তিশীল ছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।এই দিনটিতে আমাদের সকলের উচিত ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করা।তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি।ভাষা আন্দোলন এর সময়কার ইতিহাস তুলে ধরার জন্য এবং নিজের ছোটবেলায় শহীদ দিবসের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community