ছুটির দিনে কোন্নগর বারোমন্দির ঘাটে কিছুক্ষণ। ট্রাভেল পোস্ট৷
কোন্নগর বারোমন্দির ঘাটে কিছুক্ষণ
আজ বিকালে ঘুরতে গিয়েছিলাম গঙ্গার পাড়ে। আপনাদের আগেই বলেছিলাম আমি গঙ্গা পারের বাসিন্দা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মাঝে মাঝে সময় কাটানোর জন্য ঘুরে আসি গঙ্গার ধারে। সেখানে একটি বিশেষ জায়গা আছে। ঘুরতে গেলে সেই জায়গার জুড়ি মেলা ভার। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও মানুষ সেখানে আসেন ছুটির দিন বা রবিবারে কিছু সময় কাটাতে। গঙ্গার ধারে বারোটি শিব মন্দির দ্বারা জায়গাটি আবৃত। এছাড়াও বিভিন্ন দেব দেবীর মন্দির এবং সুসজ্জিত প্রকৃতি এখানে মানুষকে টেনে রাখে অনেক সময়। জায়গাটির নাম কোন্নগর বারোমন্দির ঘাট। পশ্চিমবঙ্গবাসীর মধ্যে অনেকেই হয়তো কখনো ভুলে গেছেন এই গঙ্গার ঘাটে। আমার বাড়ির নিকটবর্তী হয় আমি মাঝে মাঝে এখানে গিয়ে সময় কাটিয়ে আসি।
আজ রবিবার ছিল। অর্থাৎ ছুটির দিন। তাই আজ বিকেল বেলা হাঁটতে হাঁটতে চলে গেছিলাম এই বার মন্দির ঘাটে। এখানে গিয়ে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে আসলাম। বারোটি টি শিব মন্দির এই জায়গাটিকে বেশ সুন্দর করে রেখেছে। মন্দিরগুলো বহু প্রাচীন।
শোনা যায় কলকাতার হাটখোলার বিখ্যাত দত্ত পরিবারের গুরুবংশ ছিল হুগলি জেলার কোন্নগরে। তাই এই জায়গায় সেই বাড়ির এক মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। তার সূত্র ধরে হাটখোলার দত্ত রায় এই ঘাট প্রতিষ্ঠা করেন প্রায় ২০০ বছর আগে। তখন থেকেই এই বারোমন্দির ঘাট কোন্নগরে গঙ্গার ধারে শোভাবর্ধন করে আসছে। আজ মন্দিরগুলি পুরসভা দ্বারা সারানোর পর একেবারে ঝকঝক করে। জায়গাটিতে আলো দিয়ে সুন্দর ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের দিকে কোন ত্রুটি সাধারণত চোখে পড়ে না। তাই আজও বারোমন্দির ঘাট প্রচুর মানুষকে টেনে নেয় ছুটির দিনে। এছাড়াও প্রতিদিন বিকালের পর সেখানে বহু মানুষ জনের ভিড় জমে। বর্তমানে সেখানে শুরু হয়েছে গঙ্গা আরতি। প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলা প্রদীপ জ্বেলে গঙ্গাকে আরতি করে বরণ করা হয় নিয়ম মেনে। প্রচুর মানুষের ভিড় হয় সেই আরতি দর্শন করবার জন্য।
কোন্নগর বারোমন্দির ঘাটে আমি আজ বিকেলে কিছুটা সময় কাটালাম। এখন আপনাদের সামনে সেই বারোমন্দির ঘাটের কিছু ছবি তুলে আনব। সেই জায়গাটি কতটি সুন্দর এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তা আপনারা ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন। এখানে শিবের মন্দির ছাড়াও আছে জগন্নাথ মন্দির। এলাকায় রয়েছে বিশাল একটি ষাঁড় অর্থাৎ নন্দীর মূর্তি। শিশুদের খেলবার জন্য এই জায়গাটি যথাযথ এবং খুব সুন্দর। গঙ্গার দিকে নেমে যাওয়া প্রশস্ত ঘাট মানুষের নজর আলাদা করে আকর্ষণ করে বৈকি।
ভ্রমণ বিষয়ক এই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগলে কমেন্টের মাধ্যমে নিশ্চয়ই পাশে থাকবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1865824144987685100?t=GfLkdt5PT5T4LZ0sENvY0A&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
$PUSS promotion-
ছুটির দিন মানেই ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়ার মহা আয়োজন। ছুটির দিনে ঘুরতে কিন্তু সত্যি অনেক ভালো লাগে ভাইয়া। আর যদি এরকম সুন্দর কোন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া হয় তাহলে আনন্দটা আরো বেড়ে যায়। অনেক ভালো লাগলো আপনার এই ট্রাভেল পোস্ট দেখে।
একদম ঠিক বলেছেন আপু। ছুটির দিনে বিকেল বেলা এমন ঘুরতে যেতে খুব ভালো লাগে। আর এমন গঙ্গার ধারে গিয়ে বসতে তো আরো ভালো লাগে। আমি মাঝে মাঝেই তাই যাই। খুব ভালো লাগলো আপনি মন্তব্য করলেন বলে।