একটি সুন্দর সাজানো ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরের বিভিন্ন জায়গার ফটোগ্রাফি।
একটি সুন্দর সাজানো-গোছানো ফ্ল্যাটের ফটোগ্রাফি
গতকাল আমার পরিচিত এক দাদা কাম বন্ধুর ফ্ল্যাটে গিয়েছিলাম তাঁর ডাকেই। আগেও একবার গেছিলাম। সেবার গিয়েই তার সুন্দর সাজানো-গোছানো ফ্ল্যাটটি অনুধাবন করেছিলাম ভীষণ ভালোভাবে। বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে সাজিয়ে এবং সুন্দর করে সব জিনিসপত্রগুলি রাখা তা যেন কিছুক্ষণের জন্য ক্যানভাসে ছবি আঁকার মত ভালো লেগে যায় চোখে। কিন্তু প্রথমবার গিয়ে ছবি তোলা হয়নি সেভাবে। গতকাল দুপুরবেলা পৌঁছে গিয়েছিলাম সেই দাদার বাড়ি। সেখানে দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে বিকেল বেলা আবার বাড়ি ফিরে আসি। এর ফাঁকেই আমার ক্যামেরায় বন্দি করেছি তার সাজানো ফ্ল্যাটের কিছু অংশ। আজ ফটোগ্রাফি পোস্ট হিসাবে সেই ছবিগুলোই আপনাদের সামনে একে একে তুলে আনছি।
প্রথম ছবি
দাদার ফ্ল্যাটে গিয়ে আমি বুঝেছিলাম তার রুচিজ্ঞান অত্যন্ত উচ্চমার্গের। একটি পাঁচতারা হোটেলে উচ্চ পদে কাজ করার জন্য তিনি সুন্দর করে ঘর গোছানো বা সাজানোয় সিদ্ধহস্ত। সেই ছাপ তার ঘরের আনাচে-কানাচে। তার বাড়িতে সমস্ত সৌন্দর্যের মধ্যে সব থেকে সুন্দর জিনিসটি হল আন্তরিকতা। কলকাতায় এলেই যেভাবে আমার সঙ্গে দেখা করবার জন্য তিনি
জোরাজুড়ি করেন, তা আজকালকার যুগে খুবই বিরল।
দ্বিতীয় ছবি
দুপুরে মধ্যাহ্নভোজে ছিল প্রচুর আইটেম। সেখানে শুক্ত, ডাল থেকে শুরু করে চিকেন, মাটন সবরকম পদই তারা রান্না করেছিলেন আমার জন্য। তাই আড্ডার সাথে সাথে দুপুরের খাওয়া-দাওয়াও ছিল ভীষণ সুন্দর।
তৃতীয় ছবি
মানুষ মানুষের বাড়ি যাবে, এই প্রথা যেন উঠেই গেছে আজকাল। তারমধ্যেও এই দাদা যেভাবে কলকাতায় এলেই আমাকে ডেকে পাঠান একবার দেখবার জন্য, তা আমাকে মুগ্ধ করে বারবার। আমি ভাবি, আজকের পৃথিবীতেও মানুষ ভালবাসতে জানে।
চতুর্থ ছবি
তার সাজানো গোছানো ফ্ল্যাটে এক একটি সাজানো তাক দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি বারবার। হয়তো সমগ্র ফ্ল্যাটটা ছবি তুলে রাখা সম্ভব নয়, কিন্তু তাও যা যা ভালো লেগেছে তার ক্যামেরা বন্দী করে আজকের পোস্টে পরিবেশন করলাম আপনাদের সকলের মাঝে।
পঞ্চম ছবি
এই পোস্টের শুরুতেই যে রাধা কৃষ্ণের মূর্তিটি দেখলেন, তা আনা হয়েছে বাইরে থেকে। সাজিয়ে গুছিয়ে ধাতুর রাধাকৃষ্ণ রাখা আছে ঘরের ভেতর। সবদিক থেকে সেই মূর্তি আমার খুব ভালো লেগেছে।
ষষ্ঠ ছবি
বাড়ি সাজানো একটি আর্ট। প্রতিটি কোণ সাজানোর ভেতর দিয়ে মানুষের মানসিকতা এবং মনোভাব প্রকাশ পায়। তার বাড়িতেও আমি ঘর সাজাবার জিনিসগুলির মাধ্যমে বেশ কিছু বার্তা পেলাম। খারাপ কাজ না করা অথবা খারাপ কথা না বলার মধ্যে দিয়ে যে অঙ্গীকার প্রকাশ পায়, তাকে যেন ঘরের প্রতিটি কোণে তুলে রাখা যায় সযত্নে। বিশেষ করে দাদার সেই ফ্ল্যাটে এটিই বেশি করে বোঝা গেল সবকিছু দেখে।
সপ্তম ছবি
বাড়ির কয়েকটি তাকে সাজানো আছে পুরনো দিনের ভিনটেজ কার। বিভিন্ন পুরনো দিনের গাড়ির মডেল ঘরের শোভা যেন এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। সাথে রাখা আছে খুব সুন্দর এই বাইকটিও।
অষ্টম ছবি
এই দেয়ালটি আমার বিশেষ করে ভালো লেগেছিল। এর মধ্যে লেগে আছে মানব জীবনের বেশ কিছু বার্তা। দেখুন তো খুঁজে পান কিনা। আমি তো অনেক কথা বললাম। তাই সবশেষে এই দেয়ালটা রেখে দিলাম শুধুমাত্র আপনাদের জন্য। যদি বুঝতে পারেন নিশ্চয়ই আমাকে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1848443316418842695?t=DDSe032HA-8tQS3kqmkD8g&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা নিজেও অত্যন্ত ছিমছাম মানুষ৷ আজকের দিনে দাদার মতো মানুষ পাওয়া যায় না যেন৷ উনি যেমন ভালো কবিতা লখেন তেমনিই সফিস্টিকেটেড৷ আমার সাথে যদিও দেখা হয়নি কখনও তবে কথা তো হিয়েছে বেশ কয়েকবার৷ খুব স্বল্পভাষী ও মিষ্টিভাষী দাদা৷ তুমি গিয়েছ আর ওনারা তোমায় চমৎকার সব খাবার খাইয়েছে জেনে খুশি হলাম। বাঙালি তবে বাঙালিয়ানা ভুলে যায়নি বলো?
না। বাঙালী আছে বাঙালীতেই৷ তবে কিছু পরিবর্তন এসেছে এও সত্য৷ তবে দাদা সত্যিই ভালো মানুষ। বৌদিও খুব ভালো।
আপনার পোষ্ট মানেই ভিন্নকিছু।যেখান থেকে অনেক কিছু জানা ও শেখা যায়।আজকের পোস্টটি থেকে পুরোনো দিনের অনেক কিছু দেখতে পেলাম।আসলে আপনার সেই দাদার রুচি আমাকে মুগ্ধ করেছে।বিভিন্ন উদ্ভিদ ও ভাস্কর্য দিয়ে ঘর সাজানোর কাজটি আসলেই ভালো লাগার বিষয়।দারুণ ফটোগ্রাফি করেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার পোস্ট তোমার ভালো লেগেছে এটাই আমার প্রাপ্তি। ফ্ল্যাটটি সত্যিই বড় সঙ্গে সুন্দর করে সাজানো৷ ভালো থেকো।
দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা কোন রুচিশীল শৈল্পিক মানুষের ফ্ল্যাট। এতো দারুণভাবে সাজিয়ে তুলেছে সত্যি সেটা প্রশংসনীয়। আর আপনার ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার ছিল ভাই। দারুণ করেছেন ফটোগ্রাফি গুলো। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।।
আমার ফটোগ্রাফি আপনার ভালো লাগায় ও এমন সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবার জন্য অনেক ভালোলাগা ভাই
প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে ফ্ল্যাট টা খুব সুন্দর এবং সাজানো গোছানো। শেষের ফটোগ্রাফির দেয়াল টা আসলেই চমৎকার। দেয়ালের পাশে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান্ট বেশ ভালো লাগছে দেখতে। আপনার সেই দাদা নিশ্চয়ই অনেক রুচিশীল সম্পন্ন মানুষ। তবে শেষের দেয়ালটাতে কি বার্তা রয়েছে সেটা খুঁজে পেলাম না।
ওই দেওয়ালে একটি মডেল রাখা আছে। ঠিক দুটো ছবি আগেই দেখুন সেটা দেওয়া আছে। সেখানে একজন আরেকজনকে টেনে তুলবার চেষ্টা করছে। সেই মডেলটির ভেতর অনেক অন্তর্নিহিত জীবনের কথা মিশে আছে।
ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে উনি অত্যন্ত রুচিশীল একজন মানুষ। এত সুন্দর, এত চিন্তা করে সাজানো বাড়ি! দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
হ্যাঁ ভাই। উনি অত্যন্ত রুচিশীল একজন ব্যক্তি। সব থেকে বড় কথা উনি বাংলাদেশের একটি পাঁচতারা হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার।