তিক্ত এক অভিজ্ঞতার গল্প [benificiary ১০% @shy-fox]|
আজ - ১৭ পৌষ| ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শীতকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- একটি অভিজ্ঞতার গল্প
- আজ ১৭ই পৌষ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
আমরা সকলেই ট্রেন ভ্রমণ করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। ছোটবেলায় যখন ক্লাস টু তে পড়তাম তখন একটি কবিতা শুনেছিলাম কবি শামসুর রহমানের, সেই কবিতাটি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগতো মূলত সেই কবিতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল ট্রেন কিভাবে যায় এবং কিভাবে তার গন্তব্যে পৌঁছে। ছোটবেলায় এই কবিতাটি আমার আম্মু খুবই চমৎকার ভাবে আবৃত্তি করে আমার মাঝে মাঝে শুনাত। আসলে প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা আম্মু যখন রান্না করত তখন রান্নার পাশে বসে আমি পড়তাম। ঠিক তখন আম্মু মাঝে মাঝে কবিতাটি আবৃত্তি করতো আমার এত ভালো লাগতো আমি আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না। তারপরে যখন এসএসসি পাশ করলাম তখন কুষ্টিয়া তে ভর্তি হয়েছিলাম তখন প্রায় সপ্তাহে দু একবার ট্রেনে যাওয়া। অনেকদিন হলো ট্রেন ভ্রমণ হয় না। যদিও কিছুদিন আগে গাজীপুর থাকতাম কিন্তু কখনো ট্রেনে করে যাওয়ার চিন্তা মাথার মধ্যে আসেনি। গাজীপুর থেকে চলে এসেছি অনেকদিন আগে, বাসায় এসে অনেকদিন ছিলাম অবশেষে সকলের পরামর্শ ক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে বিএসসিতে ভর্তি হব ঢাকাতে। অনেকদিন বাসায় থাকার পরে কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিসেম্বর মাস শেষের দিন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করব। যেহেতু অনেকদিন ট্রেনে কোথাও যাওয়া হয় না তাই আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলাম এবার যদি ঢাকাতে যাই তাহলে ট্রেনে করে যাব।
সেই ধারণা থেকেই আমি আগের দিন রাত্রে আমার ব্যাগ পত্র গুছিয়ে রেখেছিলাম। ব্যাগ পত্র গুছিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে খুব সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে হবে সেই অনুযায়ী আমি ফোনের এলাম সেট করে দিয়েছিলাম। আমার ট্রেন ছিল সকাল ৯ টায়। কিন্তু তার আগের দিন রাত্রে আমি অনেক রাত অব্দি বাহিরে ছিলাম বাহিরে থাকার কারণে ঘুমাতে আমার প্রায় রাত তিনটা বেজে গিয়েছিল। তিনটার সময় ঘুমিয়ে আমি আর সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠতে পারিনি। যদিও ফোনের অ্যালার্ম বেজেছিল কিন্তু আমি ফোনের অ্যালার্ম বন্ধ করে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম যার কারণে আমি ঘুম থেকে উঠেছি প্রায় সকাল দশটায়। সকাল ১০ টায় ঘুম থেকে উঠে ভাবলাম যেহেতু আমি সকাল 9 টায় ট্রেন মিস করেছি আবার ট্রেন সময় দুপুরে একটাই সে তো আমি খুব ভালোভাবেই স্টেশনে পৌঁছে যেতে পারবো। সে ধারণা থেকে আমি সকালবেলা উঠে ফ্রেশ হয়ে গোসল খাওয়া-দাওয়া করে ব্যাক পত্র নিয়ে ঢাকা যাবার উদ্দেশ্যে রওনা করি। স্টেশনে পৌঁছে যায় অনেক আগেই যেহেতু দুপুর ১ টায় ট্রেনের সময় ছিল আমি ১২:৪৫ এ সেখানে গিয়ে পৌঁছাই। আমি অপেক্ষা করতে থাকি ট্রেনের জন্য স্টেশনে বসে সময় যাচ্ছিল না, এভাবে একা একা কখনো ট্রেন ভ্রমণ করিনি যার কারণে নিজের মধ্যে খুবই খারাপ লাগছিল। তবুও বসেছিলাম বসে বসে ট্রেনের অপেক্ষা করছিলাম।
আমি তখন অবধি ভাবতে পারিনি যে ট্রেন এতটা দেরি করে আসবে। ১২:৪৫ বাজার পরে তখন পর্যন্ত ট্রেন আসার নামে কোন খোঁজ নেই। মূলত তখন পর্যন্ত ঘন্টা হয়নি আমি ভেবেছিলাম হয়তোবা ১ টা মধ্যে অথবা ১:১৫ এর মধ্যে ট্রেন চলে আসবে। আমি সেই অনুযায়ী অপেক্ষা করতেই থাকি অপেক্ষা করতে করতে একটা সময় ২ টা বেজে যায়। তবুও স্টেশনে এখন পর্যন্ত ট্রেন আসেনি। নিজের মধ্যে এতটা খারাপ লাগছিল বলে বোঝাতে পারবো না খারাপ লাগার পাশাপাশি অনেক বেশি রাগ হচ্ছিল। চলে গেলাম স্টেশন মাস্টারের কাছে সেখানে গিয়ে ট্রেন আসার খবর জানতে চাইলাম তিনি বলল কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবে আপনারা কেউ ধৈর্য হারা হবেন না। অবশেষে আবার প্ল্যাটফর্মে বসে থাকতে থাকতে অপেক্ষা আমি ধৈর্য হারা হয়ে গিয়েছি। এরপরে দুপুর ২:৩০ যখন বাজলো তখন দেখতে পারলাম ট্রেন স্টেশনে এসে থামল। কিন্তু আমি ট্রেনের দিকে তাকিয়ে অনেকটাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম এতটা ভিড় আমি কখনো দেখিনি। এই ভিড়ের মধ্যে ট্রেনে ওঠা আমার জন্য একদম কষ্ট হয়ে পড়েছে আমি ট্রেনে না ওঠে স্টেশনের ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকলাম। এবং মনে মনে ভাবছিলাম কিভাবে ওঠা যায় অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম এর মধ্যে আমি কখনোই উঠতে পারবো না। যেহেতু ট্রেনে উঠতে পারলাম না সেহেতু সেখানেই বসেছিলাম অনেক বেশি রাগান্বিত হয়ে।
এরপরে চোখের সামনে ঘটে গেল একটা দৃশ্য যেটা দেখে আমি অনেক বেশি হেসেছিলাম। একটা ছেলে কোনভাবেই ট্রেনের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারেনি যার কারণে সে জানালা দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে। কয়েকবার চেষ্টা করেছে কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে অবশেষে দু থেকে তিনবার চেষ্টার পরে সে জানালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পেরেছে এটা দেখে আমার ট্রেনে ওঠার ইচ্ছাটা একদম নিজ থেকেই মরে গিয়েছিল। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আজ আর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করবো না বাসায় ফিরে যাব। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ কোন কিছু না ভেবে আমি আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করি।
স্টেশনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম, কি করবো সেটা ভেবেই পাচ্ছিলাম না। অবশেষে আমি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটো গাড়ি ধরে বাসার রওনা করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। কিন্তু মনে মনে ভাবছিলাম বাসায় গেলে হয়তো আব্বু আম্মু রাগ করবে। এসে দেখি আব্বু এবং আম্মু বসে আছে এবং আমাকে দেখে তারা হেসে দিয়েছে। তারপরে পুরো ঘটনা তাদের কাছে বললাম তারা বলল ভালই হয়েছে,ভিড়ের মধ্যে যাস নাই ভালই হয়েছে। অবশেষে আমি একটু স্বস্তি পেয়ে নিজের রুমে গিয়ে আরামের একটি ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। তারপরে ফ্রেশ হয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করে অনেকটা সময় সেখানে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে অনেক রাত্রে বাসায় ফিরে এসেছিলাম। এখানেই আমি আমার আজকের এই তিক্ত এক অভিজ্ঞতার গল্প শেষ করছি। আশা করছি এই গল্পটি আপনাদের কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | অভিজ্ঞতার গল্প |
---|---|
বিষয় | তিক্ত এক অভিজ্ঞতা |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness

OR
ঈদের মধ্যে টিভিতে দেখতাম ট্রেনে অনেক ভিড় হয় আর আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আবারো দেখা হয়ে গেল। খুব খারাপ লাগছে আপনার খুব ইচ্ছা ছিল ট্রেনে ভ্রমণ করা কিন্তু সেটা আর হলো না। কি আর করার পরের বার যেনো আপনার ট্রেন ভ্রমনের ইচ্ছে পূরণ হয়।
আমিও জানতাম না যে ট্রেনে এরকম ভিড় হয় সত্যিই আমি সেদিন অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এরকম ভীর আমি কখনোই দেখিনি মূলত ভিড় হওয়ার কারণ ছিল ট্রেন দেরি করে স্টেশনে এসেছিল তাই সকল মানুষ এদিকে ঝুকেছিল।
আসলে ভাইয়া ঈদের সময় হয়তো এতোটা ভীর থাকে। আপনি ঠিক করেছেন এতো ঝুকি নিয়ে ট্রেনে না যেয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন।সত্যি ভাইয়া সময়ের চেয়ে জীবনের মূল অনেক। যাইহোক পরবর্তী কোন সময় ট্রেনে করে যাবেন।
আমি কোথায় যেন দেখেছিলাম ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরার থেকে দেরি করে বাড়ি ফেরা অনেক ভালো। আসলে সেদিন ট্রেনে অনেক ভিড় ছিল যার কারণে আমি সেই ঝুঁকিটা নিতে পারেনি বাসায় চলে গিয়েছিলাম পরবর্তীতে আবার একই ট্রেনে রওনা দিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।