ভিড়ের মধ্যে ফোন উধাও
আজ--০৯ ফাল্গুন | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |শনিবার | বসন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- ভিড়ের মধ্যে ফোন উধাও
- আজ--০৯মফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- শনিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
আজ আমি আপনাদের মাঝে নিজেদের সঙ্গেই ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার গল্প শেয়ার করতে চলছি। তবে সত্যি বলতে এটা কখনোই ভাবি নি যে নিজেদের সঙ্গেও এরকম একটা ঘটনা ঘটে যেতে পারে। শুধুমাত্র যে বর্তমান সময়েই এরকম কিছু হচ্ছে তা কিন্তু নয় ফোন চুরির ঘটনা এর আগেও অনেক রকম ভাবেই শুনেছি তবে নিজেদের সঙ্গে যে এরকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে সেটা কখনোই ভাবতে পারেনি। গত পরশুদিন অফিস শেষ করেই এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে গাউছিয়া মার্কেটে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও আমার নিজের তেমন কিনা কাটার কোন কিছু ছিল না বড় ভাই নিজেদের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কেনাকাটা করবে যার কারণে একা একা যেতে নাকি তার ভালো লাগছিল না সে আমাকে সাথে নিয়ে মার্কেটে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত পরশু দিন কাজের তীব্রতা ও খুবই কম ছিল সারাদিন বসে ছিলাম যেহেতু কাজকর্ম নেই অফিসে তাই আমরা একটু আগে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে ছিলাম আমরা প্রায় পাঁচটার মধ্যেই অফিস থেকে বের হয়ে গাউছিয়া মার্কেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। রওনা যখন দিয়েছিলাম তখন খুব একটা বেশি ভিড় ছিল না যদিও আমাদের ফ্যাক্টরি থেকে গাউছিয়া মার্কেটে যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না বাসে করে যেতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে বাসের মধ্যে জ্যাম মোটামুটি ভালোই ছিল।
যথারীতি আমরা দুজন গাউছিয়া মার্কেটে গিয়ে অনেকটা সময় ঘোরাঘুরি করে ভাই তার বাসার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনলো এরপরে আমরা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে অনেকটা সময় গল্প করলাম গল্প করার একপর্যায়ে সন্ধ্যের পরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম বাসায় চলে যাব মূলত আমি আর ভাই দুজনেই সিদ্ধান্ত নিলাম যেহেতু আউট করা হয়নি তাই প্রথমে আমাদেরকে অফিসে যেতে হবে অফিসে গিয়ে আউট দিয়ে তারপরে যে যার মত বাসায় চলে যাব। আর আমার বাসা ফ্যাক্টরির মধ্যেই যার কারণে আমার আর নতুন করে ফ্যাক্টরি থেকে বের হওয়ার সেরকম কোন ইচ্ছে নেই। যাইহোক সন্ধ্যের পর পর সব জায়গাতেই একটু তীব্র যান দেখা দেয় ঢাকা শহরে। সত্যি বলতে সন্ধার পরেই সকল অফিস ছুটি হয় যার কারণে রাস্তায় অনেক বেশি জ্যাম হয় আর বিশেষ করে বাসে আরো বেশি জ্যামের তীব্রতা দেখা দেয়। যথারীতি গাউছিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে আমরা একটা বাসে উঠে পড়ি বাসে প্রচন্ড রকমের জ্যাম ছিল। যেহেতু বাসের মধ্যে প্রচন্ড রকমের জ্যাম ছিল যার কারণে আমরা সিটে বসতে পারিনি আমরা দুজন দাঁড়িয়ে ছিলাম বাসের মধ্যে। প্রচন্ড গরমে ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছিলাম।
বাসের মধ্যে যে ফ্যান দেওয়া আছে সেই ফ্যান এদিকে ওদিকে বিকট শব্দে ঘোরাঘুরি করছে তারপরেও যখন নিজের দিকে ফ্যানের বাতাস লাগছে তখন ক্ষণিকের জন্য গা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল তখন বেশ ভালোলাগা কাজ করছিল। কিন্তু রাস্তায় এতটা বেশি জ্যাম ছিল যে বাস কিছুটা সময় যাচ্ছিল আর অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে ছিল। এভাবেই অনেকটা সময় কেটে গিয়েছিল। এরপরে কিছুটা যাওয়ার পর বড় ভাই একটা সিট পায়, এরপরে বড় ভাই আমাকে সিটে বসতে বলে কিন্তু আমি সিটে না বসে তাকেই সিটে বসিয়ে দেই। বড় ভাই সিটে বসে দুই থেকে পাঁচ মিনিট সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরে এক অসুস্থ মহিলা বাসে ওঠে। অসুস্থ মহিলা বাসে ওঠা দেখে বড় ভাই সিট থেকে উঠে সেই অসুস্থ মহিলাকে বসতে দেয় সন্দেহে একটা ভালো মন মানসিকতার পরিচয় এ ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল।
এরপরে বড় ভাই উঠে আবার সেই আগের মতই দাঁড়িয়ে থাকে। সামনের কিছুটা যাওয়ার পরে আবার বাসের মধ্যে জ্যামের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় এতটা বেশি জ্যাম যে একটু এদিকে ওদিকে নাড়াচাড়া হওয়ার মত অবস্থায় ছিল না। যথারীতি ১০ থেকে ১৫ মিনিটের পথ আসতে আমাদের প্রায় 40 থেকে 45 মিনিট লেগে গিয়েছে। এরপরে ফ্যাক্টরির সামনে এসে আমরা নেমে পড়ি। নেমে পড়ার দু মিনিট পরেই ভাই বলে আমার পকেট থেকে ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে। একথা শুনে রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে মানে...?? আপনি আগে থেকেই বুঝতে পারেন নি। এ কথা আমি ভাইকে জিজ্ঞেস করার পরে ভাই আমাকে বলল আমি কোনভাবেই বুঝতে পারিনি কখন আমার পকেট থেকে ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে। এরপরে আমি আমার পকেটে হাত দিয়ে দেখি আমার ফোনটা মোটামুটি ঠিকঠাকই আছে। এরপরে আমি ভাইকে জিজ্ঞেস করি দেখেন আপনার ওয়ালেট আছে কিনা এরপরে সে সবকিছু চেক করে বলে সবকিছুই ঠিকঠাক আছে শুধুমাত্র ফোনটা হারিয়ে গিয়েছে। এরপরে ভাইয়ের প্রচন্ড রকমের মন খারাপ হয়ে গেল যেহেতু ভিড়ের মধ্যে ফোন হারিয়ে গিয়েছে আর সেই ফোন কখনোই ফিরে পাওয়া সম্ভব নয় এটা আমরা দুজনেই বুঝতে পারছিলাম। যদিও আমি ভাইকে বলি আপনি যদি চান তাহলে বাসে গিয়ে খোঁজ করতে পারি যদিও বাস তখনও আমাদের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল কিন্তু ভাই এটা জানায় যে এই ফোন আর ফিরে পাওয়া কখনোই সম্ভব নয়।
প্রচন্ড রকমের মন খারাপ নিয়ে ভাই ফ্যাক্টরির মধ্যে প্রবেশ করল। যদিও ফোনটা সে বেশিদিন হয়েছে কেনেনি সবেমাত্র কয়েক মাস হয়েছে নতুন ফোনটা আসে কিনেছে আর কয়েক মাস পরে, সেই ফোনটা তার হারিয়ে গেল কষ্ট লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আমারও বেশ খারাপ লাগছিল কারণ দুজনে এক সঙ্গে গেলাম অনেক হাসি খুশি ছিলাম পুরোটা সময় কিন্তু হঠাৎ করেই বড় ভাইয়ের ফোনটা এরকমভাবে হারিয়ে যাওয়া তে খারাপ লেগেছে অবশ্যই। ফ্যাক্টরির মধ্যে প্রবেশ করে ভাই যতই আমাদের সঙ্গে হাসাহাসি করুক কিন্তু বুঝতে পারছিলাম তার মনটা খুব একটা বেশি ভালো নেই। এরপরে সে আর বেশিক্ষণ অফিসে থাকেনি খুব দ্রুতই অফিস থেকে বের হয়ে গিয়েছে। যেহেতু ভাইয়ের ফোন হারিয়ে গিয়েছে, কি আর করার অনেকবার ভাইয়ের নাম্বারে ফোন দিয়েছি কিন্তু নাম্বার অফ অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন যখন ফোনটা চুরি হয়ে গিয়েছে সাথে সাথেই সেই চোর ফোনটা অফ করে দিয়েছে। পরের দিন গিয়ে হয়তো ভাই থানায় জিডি করেছে দেখা যাক ফোনটা পাওয়া যায় কিনা তবে আমার মনে হচ্ছে এই ফোন আর ফিরে পাওয়া যাবে না যদিও বা ফোন পাওয়া যায় তাহলে হয়তো বা কিছুটা দেরি হবে।
কারণ ফোন হারিয়ে গিয়ে সেই ফোনটা ফিরে পেয়েছে এরকম ঘটনা ঘটেছে খুবই কম। আমি আমার জানামতে যতদূর জানি এবং বুঝি হারিয়ে যাওয়া ফোন ফিরে পাওয়াটা অনেকটাই কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। আমার এক বন্ধুর ফোন হারিয়ে গিয়েছিল সে অনেকদিন আগে থানায় গিয়ে অনেক ঘুরাঘুরি করেছে সেই বেচারা টা কিন্তু কোনোভাবেই তার ফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি। সত্যি বলতে শখের কোন জিনিস হারিয়ে গেলে নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আর সেটা তো ফোন যেটা আমাদের কাছে সব সময় থাকে যেটা ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলাচল করা একদমই অসম্ভব হয়ে পড়ে। শখের কোন জিনিস যখন হারিয়ে যায় তখন অনেকটাই অসহায় মনে হয় যদি আপনার কোন শখের জিনিস হারিয়ে যায় তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন এটা কতটা কষ্টের। বর্তমান সময় মানুষ আসলে অন্যের জিনিসপত্র আত্মসাৎ করাতে অনেক বেশি সুখ অনুভব করে কিন্তু এই মানুষগুলো যদি কাজকর্ম করে জীবন অতিবাহিত করে তাহলেই হয়তো বা তার সংসার আরো ভালোমতো চলবে কিন্তু তারা কাজ করতে নারাজ।
তবে এটা মানতে হবে বর্তমান সময়ে ছিনতাই এবং পকেটমার অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়াতে মাঝে মাঝেই দেখি এখানে ওখানে ছিনতাই আত্মসাৎ করা হচ্ছে যেটা দেখে নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লাগছে। জানিনা কবে এরকম দুর্দশা পরিস্থিতি থেকে আমরা পরিত্রাণ পাবো তবে আশা করি খুব দ্রুত এই দুর্দশা থেকে আমরা পরিত্রান পাব। আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে, আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | ভিড়ের মধ্যে ফোন উধাও |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness

OR
0.00 SBD,
0.01 STEEM,
0.01 SP
আপনার অভিজ্ঞতাটি সত্যিই দুঃখজনক, বিশেষ করে যখন এমন একটি ঘটনা কাছের কারও সঙ্গে ঘটে। ঢাকা শহরের ভিড়ে ফোন চুরি হয়ে যাওয়া এখন অনেক সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা খুবই হতাশাজনক। আপনার বড় ভাইয়ের জন্য সত্যিই খারাপ লাগছে, কারণ নতুন কেনা ফোন হারানো মানে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, বরং মানসিকভাবে এক ধরনের ধাক্কা।